মহাশ্বেতা দেবীর ভাত গল্পে উচ্ছবের চরিত্রটি সম্পর্কে আলোচনা করো || উচ্চমাধ্যমিক বাংলা দ্বিতীয় অধ্যায় ভাত গল্পের বড় প্রশ্ন উওর

0

 

মহাশ্বেতা দেবীর ভাত গল্পে উচ্ছবের চরিত্রটি সম্পর্কে আলোচনা করো || উচ্চমাধ্যমিক বাংলা দ্বিতীয় অধ্যায় ভাত গল্পের বড় প্রশ্ন উওর

আজকের এই ব্লগে আমরা উচ্চমাধ্যমিক বাংলা দ্বিতীয় অধ্যায় অথবা দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় অধ্যায় ( WB Class 12 Bengali Question Answer & Suggestion 2023 ) ভাত গল্পের একটি বড় প্রশ্ন 'মহাশ্বেতা দেবীর ভাত গল্পে উচ্ছবের চরিত্রটি সম্পর্কে আলোচনা করো' এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।।

মহাশ্বেতা দেবীর ভাত গল্পে উচ্ছবের চরিত্রটি সম্পর্কে আলোচনা করো

ভূমিকাঃ- আধুনিক যুগের লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী রচিত 'ভাত' গল্পটি রচিত হয়েছে মূলত, বাদা অঞ্চলের স্বজন পরিবার হারানো এবং গ্রাম থেকে কলকাতার এক বড় বাড়িতে আসা ব্যক্তি,যার নাম উচ্ছব।। গল্পের শুরুতেই আমরা উচ্ছবের চরিত্র সম্পর্কে কিছুটা জানতে পারি। যেমন-  উচ্ছবের বড় বড় চাওনি, পরনে লুঙ্গী, বন্য চেহারা ইত্যাদি। কিন্তু এছাড়াও ভাত গল্পে আমরা উচ্ছবের চরিত্র সম্পর্কে যে সমস্ত কথাগুলি জানতে পারি, তাহল- 

দারিদ্র্য ও ভাতের কাঙালঃ- 

গল্পে আমরা জানতে পারি যে,উচ্ছব ছিল বাদা অঞ্চলের মানুষ। সেখানে উচ্ছব সে তার ছোট্ট একটি পরিবার নিয়ে বেশ সুখে শান্তিতেই ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই মাতলা নদীর বন্যায় উচ্ছব তার স্ত্রী-সন্তানকে হারিয়ে প্রায় পাগল হয়ে যায়। সবাইকে হারানোর পর উচ্ছব সবাইকে ফিরে পাবার আশায় শূন্য ভিটেতে অনেকদিন কাটিয়ে দেওয়ায়, লঙ্গরখানার যে খিচুড়ি হচ্ছিল, সেই খিচুড়ি তার আর খাওয়া হয়ে ওঠে না। এদিকে সতীশবাবুর কাছে ভাত চেয়েও না পাওয়ায় কয়েকদিন সরকার প্রদত্ত চাল চিবিয়ে কাটিয়ে দিয়ে শেষে, গ্রামের এক দূরসম্পর্কের আত্মীয় কলকাতায়া কাজ করা বাসিনীর কাছে চলে আসে। কারণ উচ্ছব ভেবেছিল যে কলকাতায় ভাতের অভাব নেই।। তাই উচ্ছব নিজের পরিবারকে এবং নিজের ঘরবাড়ি হারানোর পরেও ভাত খাওয়ার আশায় সে কলকাতায় চলে আসে।। বাসিনীর মনিববাড়িতে পাঁচ রকম চালের ভাত রান্না হয় শুনে ‘ভাতের আহিংকে উচ্ছবের ‘চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসে।

Read More👇

What Is Car Insurance? Best Car Insurance Plan & Companies সম্পর্কে জানতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন।

What Is Car Insurance | Types Of Car Insurance | Best Car Insurance Plan For You

 

দুর্ভাগ্যপীড়িতঃ- 

ভাত গল্পে আমরা উচ্ছব চরিত্রটির দুর্ভাগ্যের কথা দুই ভাবে জানতে পারি। প্রথমত এক ঝড়-বৃষ্টির রাতে মাতাল মাতলা নদীর প্রবল ঢেউতে ভেসে যায় উচ্ছবের স্ত্রী এবং তিন সন্তান এবং ঘরবাড়ি ভেসে যায়। বন্যার সময় সরকার থেকে যখন লঙ্গরখানায় খিচুড়ি খাওয়ানো হয়েছিল উচ্ছব শেষ সময়েও খিচুড়ি খেতে পারে না। যার ফলে উৎসবের কপালে প্রবল অন্ন কষ্ট দেখা যায়। কিন্তু সেসব কষ্ট কাটিয়ে উচ্ছব যখন দূর সম্পর্কের আত্মীয় বাসিনী যেখানে কাজ করে, অর্থাৎ  কলকাতায় এক বড়ো বাড়িতে ভাত খাওয়ার আশায় আসে,;তখন সেখানে উচ্ছব দীর্ঘ পরিশ্রম করার পরেও তার ভাত খাওয়ায় এক বিপত্তি দেখা যায়।। বড়বাড়ির কর্তা ক্যান্সার রোগে মারা যাওয়ায় সেদিন সেই বাড়িতে যে সমস্ত রান্না হয়েছিল, সেগুলো ফেলে দেওয়ার কথা ওঠে। কিন্তু উচ্ছব বাসিনীর কাছ থেকে ভাতের হাড়ি টা নিয়ে স্টেশনে চলে যায় এবং স্টেশনে গিয়ে উচ্ছব মনের প্রাণের সুখে ভাত খায়। কিন্তু বড় বাড়ির লোকেরা বা পুলিশের লোক উচ্ছবক ভাতের হাড়ি চুরি করার অপরাধে বুঝে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়।। সুতরাং এখান থেকেই আমরা উচ্ছব চরিত্রটির দুর্ভাগ্যের কথা জানতে পারি।।

বাস্তববুদ্ধির অভাবঃ- 

গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র উচ্ছব মধ্যে আমরা কিছু ক্ষেত্রে বাস্তব বুদ্ধির অভাব লক্ষ্য করতে পারি। এক ভয়ঙ্কর ঝড় বন্যার রাতে উচ্ছব যখন তার স্ত্রী এবং তিন সন্তান সহ সমস্ত ঘরবাড়ি হারিয়ে ফেলে, তখন ঘরবাড়িসহ নিজের পরিবারকে হারানোর যন্ত্রণায় উচ্ছব মানসিক দিক থেকে এতটাই ভেঙে পড়ে এবং পাল্টে যেতে শুরু করে যে, প্রথমদিকে লঙ্গরখানা থেকে যে খিচুড়ি দেওয়া হয়েছিল, উচ্ছব সেই খিচুড়ি খাওয়ার কথা ভুলে গিয়েছিল। উচ্ছব প্রবল অন্য কষ্টে ভোগার ফলে, যখন সরকার থেকে ঘর তৈরি করতে সাহায্য করার ঘোষণা করা হয়, তখন উচ্ছব সেটা জানতে পেরেও উচ্ছব শুধুমাত্র ভাত খাওয়ার আশায় কলকাতায় চলে আসার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছিল।।

পরদুঃখে কাতরঃ- 

ভাত গল্পে উচ্ছব চরিত্রটির সবচাইতে আকর্ষণীয় দিক হলো, উচ্ছব ছিল খুবই সাধারন মনের একজন মানুষ। উচ্ছব ছিল দয়ালু গোছের মানুষ। পরিবারকে হারিয়ে তাই সে প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া স্বার্থপর সতীশ মিস্তিরির হরকুল, পাটনাই ধানে মড়ক লেগেছিল দেখে সে তার কান্না গোপন করে রাখতে পারেনি।

পরিণতিঃ- সতীশ মিস্তিরির দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে, পরিবারের শোকে পাগল হয়ে ভাতের আশায় উচ্ছব কলকাতায় গেলেও সেখানে সেই ভাত খাওয়ার জন্যই তার জেল হয়। তার ভাগ্য এ ক্ষেত্রেও তার সঙ্গে বিরূপতা করল।

সবশেষে বলা যায়, আশাপূর্ণা দেবী রচিত ভাত গল্পে উচ্ছব চরিত্র সম্পর্কিত নানা ঘটনা এবং উচ্ছব চরিত্রের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য গুলি গল্পে উচ্ছব চরিত্রটি এবং গল্পটিকে একটি অন্য মাত্রা দিয়েছে।।


আশাকরি যে, আজকের এই ব্লগের উচ্চমাধ্যমিক বাংলা দ্বিতীয় অধ্যায় অথবা দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় অধ্যায় ভাত গল্পের বড় প্রশ্নের 'মহাশ্বেতা দেবীর ভাত গল্পে উচ্ছবের চরিত্রটি সম্পর্কে আলোচনা করো' উওরটি তোমাদের ভালো লাগবে।।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top