নবম শ্রেণির বাংলা কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর || WBBSE Class 9 Bengali Question Answer & Suggestion 2023

0

 

নবম শ্রেণির বাংলা কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর || WBBSE Class 9 Bengali Question Answer & Suggestion 2023
কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা নবম শ্রেণির বাংলা কবিতা ( WBBSE Class 9 Bengali Question Answer & Suggestion 2023 ) মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কবিতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বড় প্রশ্ন উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।। এর আগে ক্লাস 9 বাংলা প্রথম অধ্যায় কলিঙ্গদেশের ঝড়-বৃষ্টি কবিতার MCQ Question Answer এবং কলিঙ্গদেশের ঝড়-বৃষ্টি কবিতার ছোট বা SAQ প্রশ্ন উওর গুলো শেয়ার করেছি। তোমরা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে সেই প্রশ্ন উওর গুল্প দেখে নিও।।


নবম শ্রেণির বাংলা কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর || WBBSE Class 9 Bengali Question Answer & Suggestion 2023


প্রশ্নঃ- ‘বিপাকে ভবন ছাড়ি প্রজা দিল রড়।।'— ‘রড়' ব্দের অর্থ কী? কোথাকার প্রজার কথা বলা হয়েছে? তাদের বিপাকের স্বরূপ আলোচনা করো।

উওরঃ- মধ্যযুগের কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টিতে রড় শব্দের অর্থ হলো দৌড় বা ছুট। আলোচ্য প্রশ্নে যেখানকার প্রজাদের কথা বলা হয়েছে তারা হলেন কলিঙ্গদেশের প্রজা।।কালকেতু ও ফুল্লরার মাধ্যমে দেবী চণ্ডী গুজরাটে নিজের পূজা প্রচার করলেও সেখানে যেহেতু তার পূজা করার মত কেউ ছিলনা, সেই কারণে দেবী চণ্ডী পাশের কলিঙ্গদেশের প্রজাদের গুজরাতে নিয়ে আসার জন্য পরিকল্পনা করেন। দেবী চণ্ডী কলিঙ্গদেশের টানা সাতদিন ধরে ঝড়-বৃষ্টি সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটানোর ফলে কলিঙ্গদেশে প্রজারা দারুণ বিপাকে পড়তে হয়েছিল। যেমন - 

প্রথমতঃ  সাতদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ার ফলে সমগ্র কলিঙ্গ দেশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। এর ফলে সমস্ত কলিঙ্গদেশের পথ, মাঠ এবং শষ্যের খেত জলের নিচে চলে গেছিল। দ্বিতীয়তঃ কলিঙ্গদেশের আকাশ ঘন কালো মেঘে এমন ভাবে আবৃত হয়ে পড়েছিল যে, কলিঙ্গদেশে দিনের বেলাতেই এতো ঘন অন্ধকার নেমে নেমে এসেছিল যে, যার ফলে সেখানে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। এবং সে অন্ধকারে এতটাই ছিল যে, কলিঙ্গদেশের প্রজারা কেউ নিজের অঙ্গ পযর্ন্ত দেখতে পাচ্ছিল না।।তৃতীয়তঃ কলিঙ্গদেশের ঝড়-বৃষ্টি তাণ্ডবে ডুবে গিয়েছিল সমস্ত সবুজ। কলিঙ্গদেশের সমস্ত শষ্যে ক্রমশই মাটিতে উলটে পড়তে থাকে।এছাড়াও এরপর নিরন্তন বৃষ্টিপাতের জল সকল সঞ্চিত ফসলের মধ্যে পচন ধরায়। এবং এভাবে কলিঙ্গদেশের সমস্ত খাদ্যশস্য নষ্ট হয়ে যায়।চতুর্থতঃ- দেবী চণ্ডীর আদেশে কলিঙ্গদেশে এক টানা সাতদিন ধরে বৃষ্টিপাত হওয়ার পরে এবং অন্যদিকে দেবী চণ্ডীর আদেশে সমস্ত নদ-নদী কলিঙ্গদেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে কলিঙ্গদেশে দেশে দেখা যায় প্রবল বন্যা এবং সেই বন্যার জলে সমস্ত ঘরবাড়ি,ফসলের ক্ষেত পথ,মাঠ সবকিছুই জলের তলায় চলে যায়।এবং সবশেষে দেবী চণ্ডীর আদেশে বীর হনুমান সমস্ত মঠ অট্টালিকা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে থাকেন। এবং এর ফলে কলিঙ্গদেশ সমস্ত দিক থেকেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এবং কলিঙ্গদেশের প্রজারা এই ভাবেই চরম বিপাকের মুখে পড়ে।।

প্রশ্নঃ- ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কবিতায় মেঘ কীভাবে গগনমণ্ডল ছেয়ে ফেলেছে তা উল্লেখ করো। ঝড়-বৃষ্টির ফলে কলিঙ্গবাসীর জীবনে যে বিপন্নতা তৈরি করেছিল তার পরিচয় দাও।
অথবা, 
'প্রলয় গণিয়া প্ৰজা ভাবয়ে বিষাদ।'— কোন্ পরিস্থিতিতে প্রজাদের এ কথা মনে হয়েছিল? সেই পরিস্থিতির বিবরণ নিজের ভাষায় লেখো।


উত্তরঃ-প্রশ্নের এই অংশটি কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোচ্য অংশে কলিঙ্গদেশে কীভাবে বিপর্যয় নেমে এসেছিল তার পরিচয় পাওয়া যায়।

গুজরাটে নিজের পূজা প্রচার করলেও সেখানে যেহেতু তার পূজা করার মত কেউ ছিলনা, সেই কারণে দেবী চণ্ডী পাশের কলিঙ্গদেশের প্রজাদের গুজরাতে নিয়ে আসার জন্য পরিকল্পনা করেন।  এজন্য দেবী চণ্ডী প্রথমত ধারণা সাহায্যে কলিঙ্গের আকাশের ঈশান কোনে কালো মেঘ সঞ্চার করেন এরপর উত্তরে বাতাসের সংস্পর্শে এসে সেই মেঘ খুবই দ্রুত পরিমাণে তীব্র আকার ধারণ করে এবং তা অল্প সময়ের মধ্যেই কলিঙ্গদেশের সমস্ত আকাশে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর মুহূর্তের মধ্যে কলিঙ্গদেশের আকাশে এতোটাই অন্ধকার হয়ে পড়ে যে, কলিঙ্গদেশের প্রজারা নিজেরাই নিজেদের অঙ্গ পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছিল না। এভাবেই দেবী চণ্ডী ছলনায় কলিঙ্গদেশের মেঘ গগনমন্ডল ছুয়ে ফেলেছিল। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রবলবেগে বৃষ্টি শুরু হয় এবং সেই বৃষ্টির সঙ্গে চলতে থাকে ভয়ঙ্কর শব্দের বজ্রপাত। এরুপ উপস্থিতিতে কলিঙ্গদেশের সমস্ত প্রজারাই বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল।। কলিঙ্গদেশের প্রজাদের জীবনের যে বিপন্নতা বা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল,তা হল - 

• মূলত দেবী চণ্ডী নিজের ছলনাতেই কলিঙ্গদেশের প্রজাদের জীবনে সেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিলেন। 

• ঘন ঘন মেঘের গর্জন, বজ্রপাত এবং সেইসঙ্গে প্রবল ঝড়-বৃষ্টির প্রজাদের গৃহত্যাগ কারণে প্রজারা ভীত হয়ে ঘর ছেয়ে পালাতে শুরু করেছিল। 

• চারিদিকে ঝড়-বৃষ্টির জন্য শুধু হুড় হুড় দুড় দুড় শব্দ শোনা যায়। ধুলোয় চারিদিক আচ্ছাদিত হয়ে পড়ে। সবুজ ঢেকে যায় ধুলোতে আর জমির শস্য ঝড়-বৃষ্টির দাপটে উলটে পড়ে যেতে থাকে।

• চারি মেঘ থেকে ঘন অষ্টগজরাজ তাদের শুড়ের সাহায্যে যেন জলবর্ষণ করে চলেছিল। ভয়ানক বৃষ্টিপাতের ফলে কলিঙ্গদেশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জলস্থলের বিভেদ যায় মুছে।

• সারাদেশ জলমগ্ন হয়ে পড়ায় সঞ্চিত সকল শস্যে পচন ধরে যায়।

• ঝড়-বৃষ্টি-বজ্রপাতের প্রাবল্যে ঘরের চাল ভেদ করে শিল পড়তে থাকে মেঝেতে। নিরন্তর সাত দিন বৃষ্টিপাত, তার সঙ্গে দেবীর আদেশে নদনদীগুলিও কলিঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। ফলে সেদেশে বন্যা দেখা দেয়। ঘরবাড়িগুলি ‘দলমল' করতে থাকে।।

• দেবীর আদেশে হনুমান কলিঙ্গের সকল মঠ, অট্টালিকা ভেঙে ফেলতে থাকেন। এইভাবে ঝড়-বৃষ্টি কলিঙ্গবাসীর জীবনে বিপন্নতা ডেকে এনেছিল।

প্রশ্নঃ- ‘নিরবধি সাত দিন বৃষ্টি নিরন্তর।/আছুক শস্যের কার্য হেজ্যা গেল ঘর।।'— পঙ্ক্তিটির অর্থ কী? প্রসঙ্গসহ উক্তিটির তাৎপর্য লেখো।

উওরঃ- মধ্যযুগের কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কবিতা থেকে গৃহীত প্রশ্নের পঙ্ক্তিটির

অর্থ হলো- কলিঙ্গদেশে এক টানা সাতদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিপাত এবং সেইসঙ্গে বিভিন্ন নদ-নদীর কলিঙ্গদেশে উপর দিয়ে বয়ে চলার ফলে কলিঙ্গ দেশে জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এবং সেই জলে কলিঙ্গদেশে সঞ্চিত বিভিন্ন শষ্যের ঘরের মধ্যে জল ঢুকে পড়ায় সমস্ত শষ্য হেজে যায় বা শষ্যের মধ্যে পচন ধরে যায়।।কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তী রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি নামক কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি নেওয়া হয়েছে। দেবী চণ্ডীর ছলনায় কলিঙ্গদেশে নেমে আসে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তাতে সেদেশের ভয়ানক ক্ষতি হয়—সেই প্রসঙ্গেই কবি উক্তিটি করেছেন।

• দেবী চণ্ডীর ইচ্ছানুসারে হঠাৎ করেই কলিঙ্গদেশের আকাশের ঈশানকোণে দেখা দেয় ঘন কালো মেঘ। উত্তুরে বাতাসের সংস্পর্শে সেই মেঘ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র আকাশে। ক্রমে শুরু হয় ভয়ানক মেঘের গর্জন আর বিদ্যুতের ঝলকানি। মুহূর্তের মধ্যে দশদিক কম্পিত করে শুরু হয় ঝড় ও বজ্রপাত সহ প্রবল বৃষ্টিপাত। ঝড়-বৃষ্টির তাণ্ডবে সমস্ত সবুজ ধুলোয় আচ্ছাদিত হয়। খেতের ফসল উলটে পড়ে মাটিতে। অষ্ট গজরাজ যেন শুঁড়ের সাহায্যে চারি মেঘ থেকে জলবর্ষণ করে চলে। পথঘাট জলমগ্ন হয়ে পড়ে। কবি বলেছেন—

“করি-কর সমান বরিষে জলধারা। জলে মহী একাকার পথ হইল হারা।।

একটানা সাত দিন এমন প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে কলিঙ্গদেশে জলস্থলের বিভেদ ঘুচে যায়। পর্বতসমান জলের স্রোতে বাড়িঘরগুলি ভেসে যেতে থাকে। এই অবস্থায় খেত থেকে তুলে আনা সকল ফসল জলে ডুবে যায়। ফলে ফসলে পচন ধরে। তাই কবি বলেছেন— “আছুক শস্যের কার্য হেজ্যা গেল ঘর।।”


আশাকরি, নবম শ্রেণির বাংলা (WBBSE Class 9 Bengali Question Answer & Suggestion 2023 ) মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর লেখা কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কবিতার যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বড় প্রশ্ন উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে, তা তোমাদের কাজে লাগবে।।

Tags : কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | নবম শ্রেণির বাংলা কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর | ক্লাস 9 বাংলা কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | wbbse class 9 Bengali question answer 2023

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top