দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ভারতবর্ষ গল্পের বড় প্রশ্ন উওর || 'সেই সময় এলো এক বুড়ি' -বুড়িটির চেহারার পরিচয় দাও। গল্পের শেষে বুড়িটির ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করো।

0

 
'সেই সময় এলো এক বুড়ি' -বুড়িটির চেহারার পরিচয় দাও। গল্পের শেষে বুড়িটির ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করো।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ভারতবর্ষ গল্পের বড় প্রশ্ন উওর || 'সেই সময় এলো এক বুড়ি' -বুড়িটির চেহারার পরিচয় দাও। গল্পের শেষে বুড়িটির ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করো।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ভারতবর্ষ গল্পের বড় প্রশ্ন উওর


উওরঃ- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের লেখা ভারতবর্ষ ছোটগল্প থেকে গৃহীত আলোচ্য উক্তিটি এক অত্যন্ত বৃদ্ধার সম্পর্কে করা হয়েছে। দুরন্ত শীতে অকাল দুর্যোগে যখন চার দোকানে বসে সবাই তর্ক বিতর্ক নিয়ে ব্যস্ত ছিল, তখন হঠাৎ করেই চায়ের দোকানে  এক থুত্থুরে ভিখারিনীকে আসতে দেখা যায়। সেই ভিখারিনী বুড়ির ছিল এক কুঁজ। রাক্ষসের মত দেখতে সেই বৃদ্ধা যাএ ছিল মাথাভর্তি সাদা চুল। এছাড়াও সেই বৃদ্ধার গায়ে ছিল একখানা নোংরা কাপড় এবং তার সারা শরীরে জড়ানো ছিল একটা চিটচিটে তুলোর কম্বল। এবং সবশেষে কুজোর ভারে সঠিক ভাবে হাঁটতে না পারায়, হাঁটতে যাতে সাহায্য করতে পারে সেজন্য তার হাতে ছিল একটি লাঠি।।

এই চেহারা নিয়ে বুড়ি পিচের রাস্তার উপর বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে চায়ের দোকানে এসে প্রবেশ করে। এবং তার ক্ষয়ে যাওয়া ছোট্ট মুখের বলিরেখা গুলো বেশ স্পষ্ট ছিল, যা তার বেশি বয়সের বেশি দিকেই ইঙ্গিত করেছিল।।

চায়ের দোকান থেকে বেরিয়ে বুড়ি বাজারের একটি বটতলায় গিয়ে আশ্রয় নেয়।। কিন্তু কিছু সময় পরেই জগা এটা বুঝতে পারে যে বুড়ি কোন সাড়াশব্দ করছে না অর্থাৎ বুড়ির নির্ঘাত মরেছে। সবাই বুড়িকে মৃত বলে ঘোষণা করার পর বুড়ির একটা ব্যবস্থা করার জন্য চৌকিদার সাহেবের কথায় বুড়িকে নদীর ধারে ফেলে দিয়ে আসা হয়।। কিন্তু কিছু সময় পরেই দেখা যায় কয়েকজন মুসলিম সেই বুড়িকে মুসলিম ধর্মাবলম্বী বলে, তার সঠিক কবরের ব্যবস্থা হয়নি বলে তারা সেই বুড়িকে আবার সেখানেই নিয়ে আসে। এবং এরপরেই হিন্দুদের সঙ্গে তাদের ঝামেলার সৃষ্টি হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই হিন্দু এবং মুসলিম দের মধ্যে বুড়ির মৃতদেহটিকে নিয়ে সৃষ্টি হওয়া ঝামেলা খুব বড় আকার ধারণ করতে শুরু করে। কিন্তু শেষ পর্যায়ে আশ্চর্যজনকভাবে দেখা যায়,পিচের রাস্তার ওপর বাঁশের মাচায় শুয়ে থাকা সেই বুড়ির মৃতদেহটি নড়েচড়ে ওঠে। তারপর সে বসার চেষ্টা করে বা সে উঠে বসে। এবং তারপর দাঁড়িয়ে দুই দিকে লক্ষ করে। চৌকিদার তাকে জিজ্ঞেস করে -'বুড়িমা,তুমি মরোনি!'- তখন সেই বৃদ্ধা চৌকিদারকে জবাব দেয়-  মর্! মর তুই। তোর চৌদ্দগুষ্টি মরুক' বলে একটি হাস্যরস যুক্ত মন্তব্য করেন। এরপর দুই দিকে অর্থাৎ হিন্দু এবং মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের লোকেরা চেঁচিয়ে বলে ওঠে -বুড়ি, তুমি মরোনি?'- তখন এর উত্তরে বুড়ি বলে -'তোরা মর। তোরা মর মুখপোড়া।' এরপর যখন একজন বুড়িকে জিগ্যেস করে যে, বুড়ি হিন্দু নাকী মুসলমান, তখন সেই বৃদ্ধা জবাব দেয় -চোখের মাথা খেয়েছিস! নিজেরা দেখতে পারছিস না আমি কি?- এই বক্তব্যের মাধ্যমে সেই বৃদ্ধা সেই ভিড়কে সরিয়ে নড়বড় করে রাস্তা দিয়ে চলে যায় এবং বৃদ্ধা তার এই মন্তব্যের মাধ্যমে দীর্ঘকালীন ঘুম থেকে জেগে ওঠা দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অচেতন ভারতবাসীকে জাগিয়ে তোলেন।

Tags : উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা ভারতবর্ষ গল্পের প্রশ্ন উত্তর | Class 12 Bengali Question Answer | WB Class 12 Bengali Suggestion 2023 | ক্লাস 12 বাংলা ভারতবর্ষ গল্পের প্রশ্ন উওর 2023 | দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ভারতবর্ষ গল্পের প্রশ্নোত্তর

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top