![]() |
একাদশ শ্রেণির বাংলা তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর |
উওরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের রচিত তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পটির মোটেও কোনো সাধারণ গল্প নয়। তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পটি হল চালাক চতুর শহুরে বাবুদের গ্রামে বসবাসকারী সহজ সরল মানুষদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং সুযোগ বুঝে সেই প্রতিশ্রুতি ভেঙে ফেলার গল্প। এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং প্রতিশ্রুতি ভাঙ্গার গল্পেরই এক চরিত্র হলো নিরঞ্জন।
• তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের আমরা গল্পকথকের বন্ধু মুনির মাধ্যমে জানতে পারি যে- নিরঞ্জন হলো যামিনীর মায়ের দূরসম্পর্কের এক বোনপো, যে বেশ কিছু বছর আগে যামিনীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শহরে চলে যায়। কিন্তু সে চলে যাওয়ার পর, বেশ কিছু বছর পার হয়ে গেল সে আর কখনো ফিরে আসে না। অন্যদিকে যামিনী মা এবং যামিনী তার অপেক্ষাতেই দিন গুণতে থাকেন।।
• অন্যদিকে যামিনীর দূরসম্পর্কের আত্মীয় মুনি তার দুই বন্ধু সহকারে হঠাৎ করে একদিন তেলেনাপোতা এসে হাজির হয়। মুণির এক বন্ধু অর্থাৎ আমাদের গল্প কথকে তেলেনাপোতা মৎস্য শিকারের লোভ দেখিয়ে নিয়ে আসা হয়। একটি পুকুর পাড়ে মৎস্য শিকারের সময় যামিনীর সঙ্গে আমাদের গল্পকথকের প্রথম দেখা হয়। এর পরেই জানতে পারা যায় যে যামিনী হলো গল্পকথক এর বন্ধু মুণির দূরসম্পর্কের আত্মীয়। একদিন যামিনীদের বাড়িতে খাওয়া-দাওয়ার পর হঠাৎ করেই যামিনী তার মুণিদাকে কাছে ডেকে নিয়ে বলেন যে তার মা নিরঞ্জন নামের কারোর আসা নিয়ে খুবই উদগ্রীব হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে যামিনীর মুখে অবস্থায় এবং মনির বিরক্তির ইত্যাদিতে কৌতুহলী হয়ে আমাদের গল্পকথক নিরঞ্জনের সম্পর্কে জানতে চান। এরপর গল্পকথক নিরঞ্জনের সম্পর্কে সবকিছু জানার পর মুণির সঙ্গে যামিনীর মায়ের ঘরে যান। সেখানে গল্পকথক যামিনীর মুখের করুন অবস্থা এবং যামিনীর মায়ের তারচেয়েও খারাপ এবং অসহায় অবস্থা প্রত্যক্ষ করেন। গল্পকথক এর পায়ের শব্দ শুনে যামিনীর মা মনে করেন যে নিশ্চয়ই এবার নিরঞ্জন এসেছে তার মেয়েকে বিয়ে করতে। বৃদ্ধা চোখে দেখতে পাওয়ায় তিনি গল্পকথককে নিরঞ্জন ভেবে বৃদ্ধা যামিনী সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলেন। বৃদ্ধা গল্পকথককে বলেন যে,যদি সে যামিনীকে বিয়ে না করে তাহলে বৃদ্ধা মরেও শান্তি পাবেন না। এতদিন ধরে সে নিরঞ্জনের আসার অপেক্ষায় এবং নিজের মেয়েকে নিরঞ্জনের হাতে তুলে দেওয়ার অপেক্ষাতেই সেই মৃত্যুপুরীতে দিন গুনছিলেন। এসব কথার মধ্যে বৃদ্ধা খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। বৃদ্ধার আবেগপ্রবণ হয়ে পড়া এবং অন্যদিকে জামিনির মুখের করুন এবং অসহায়তার পরিস্থিতিতে গল্পকথক একদমই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এরূপ পরিস্থিতিতে গল্পকথক নিজের আবেগকে সামলাতে না পেরে তিনি নিজেকেই নিরঞ্জনের জায়গায় নিয়ে যান এবং গল্পকথক যামিনীর মাকে দিয়ে ফেলেন যে, তিনি যামিনীকে বিয়ে করবেন। এবং এভাবেই আমাদের গল্পকথক হঠাৎ করেই নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।