![]() |
হাতির বদলে ছাতি বড় প্রশ্নোত্তর 2023 |
এই ব্লগে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অথবা উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা আমার বাংলা গ্রন্থটির হাতির বদলে ছাতি রচনার কয়েকটি বড় প্রশ্ন উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা হাতির বদলে ছাতি গল্পটি থেকে যে কয়েকটি বড় প্রশ্ন উওর 2023 শেয়ার করলাম, তার বাইরে কোনো প্রশ্ন আশাকরি থাকবে না।।
Class 12 Bengali- হাতির বদলে ছাতি বড় প্রশ্নোত্তর 2023 || উচ্চমাধ্যমিক আমার বাংলা বড় প্রশ্ন উওর
প্রশ্নঃ পঁচিশ-তিরিশ বছর আগেকার কথা"-পঁচিশ-তিরিশ বছর আগেকার কথাটি সংক্ষেপে আলোচনা করো।
অথবা
"বিশ্বাস করো,বানানো গল্প নয়"- লেখক যে কাহিনী সম্পর্কে বলেছেন তা আলোচনা করো।
অথবা
"বিশ্বাস করো,বানানো গল্প নয়"- লেখক যে কাহিনী সম্পর্কে বলেছেন তা আলোচনা করো।
উওরঃ লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের রচিত ছাতির বদলে হাতি রচনায় পঁচিশ-তিরিশ বছর আগের একটি গল্প বলেছেন যা বর্তমান যুগের মানুষ কখনো হয়তো বিশ্বাস করবে না। সে প্রসঙ্গেই তিনি বলেছেন "বিশ্বাস করো বানানো গল্প নয়।"
গল্পটি হল গারো পাহাড়তলী এক গারো ব্যবসায়ী চেংম্যানের। চেংম্যন একদিন ব্যবসার মালপত্র কিনতে হালুয়াঘাট বন্দরে গিয়েছিল। চেংম্যানের বাড়ি ফেরার সময় সেখানে প্রবল ধারে বৃষ্টি আসে। বৃষ্টি তো এমন যা থামার নাম নিচ্ছিল না। তাই বাধ্য হয়েই চেংম্যান হালুয়াঘাটের মহাজন মনমোহন মহাজনের গদির ঝাপের তলায় আশ্রয় নিয়েছিল। চেংম্যানের এই অসহায় পরিস্থিতি দেখে মনমোহন মহাজন কলকাতা থেকে কিনে আনা তার একটি নতুন ছাতা সে চেংম্যানকে নিতে বলে। যদিও চেংম্যানের কাছে সেই ছাতা কেনার পয়সা তখন ছিল, না কিন্তু মনমোহন মহাজনের কোথায় সেটা তাকে নিতে হয়। মনমোহন মহাজন তাকে বলেন, ছাতা না নিলে ব্যবসার মালপত্র সমস্ত কিছুই ভিজে যাবে। আর ছাতার পয়সার ব্যাপারেও তাকে ভাবতে হবে না। মনমোহন মহাজনের এই কথা শুনে চেংম্যান সেদিন সেই ছাতা নিয়েই বাড়ি ফিরে। এরপর ছাতার পয়সা নেওয়ার কথা বললে মনমোহন মহাজন নানা বাহানা করে তা এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। এভাবে কয়েক বছর চলার পর একদিন হাটে মনমোহন মহাজন চেংম্যান কে পাকড়াও করে। তখন মহাজন একটি হিসাব নিকাশের খাতা বের করে দেখান যে,চেমম্যান যে মহাজনের কাছ থেকে ছাতা নিয়েছিল সেই ছাতার চক্রবৃদ্ধি সুদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় এক হাজার টাকা,যা একটি হাতির মূল্যের সমান। একটি ছাতার মূল্য যে একটি হাতির মূল্যের সমান হতে পারে, এই কাহিনী বর্তমান যুগের কারো কাছেই বিশ্বাসযোগ্য নয় -এখানে লেখক সেই কাহিনী বলেছেন।
প্রশ্নঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের হাতির বদলে ছাতি রচনা অবলম্বনে গারো পাহাড়িদের ওপর জমিদারদের শোষণ ও অত্যাচার বর্ণনা করো।
উওরঃ- সুভাষ মুখোপাধ্যায় রচিত আমার বাংলা গ্রন্থের একটি অংশ হলো হাতির বদলে ছাতি গল্পটি। হাতির বদলে ছাতি রচনায় মূলত সুভাষ মুখোপাধ্যায় গারো চাষীদের ওপর তৎকালীন সময়ের জমিদার মহাজনরা কিভাবে শোষণ অত্যাচার চাতাতেন তা তুলে ধরেছেন। এক্ষেত্রে আমরা কয়েকটি কাহিনীর মাধ্যমে গারো পাহাড়ীদের ওপর জমিদারদের শোষণ অত্যাচারের সেই ভয়াবহ রূপ সম্পর্কে জানতে পারি। যেমন-
সাধারণ প্রজাদের অবস্থাঃ
গারো চাষিরা সারা বছর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ধান চাষ করলেও সেই ধান তারা নিজেরা ঘরে তুলতে পারতো না। কারণ ধান চাষের পরেই নিজের খামারে তোলার আগেই সেই ধান চাষেকে জমিদারের খামারে তুলতে হতো। সমস্ত ধারদেনা মেটানোর পরেই চাষী সামান্য অংশ তার ঘরে তুলতে পারতো। চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান চাষীকে দিতেই হতো, সেই সঙ্গে চাষির যদি কোন ঋণ থাকতো তাহলে তা তাকে তার ধান দিয়ে মেটাতে হতো। যদি কোন চাষীর এক টাকা ঋণ হতো তাহলে সেই চাষীকে এক মন ধান দিয়ে তার শোধ করতে হতো। সেই সঙ্গে ছিল অতিরিক্ত কর। অর্থাৎ চুক্তি অনুসারে এবং তার ধার ধেনা শোধ করার পরেও চাষীকে কিছু অতিরিক্ত কর দিতে হতো। তাই এখানে লেখক খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি কথাটা ব্যবহার করেছেন। এভাবে চাষী সারা বছ কষ্ট করে যে ফসল ফলাতেন, তার কোনো অংশই চাষী তার ঘরে তুলতে পারততেন না। সবশেষে চাষীকে শুধুমাত্র খরের গাদা নিয়ে ঘরে ফিরতে হতো।
নানকার প্রজাদের অবস্থাঃ
গারো পাহাড়িদের সাধারণ চাষীদের অবস্থার তুলনায় সেখানকার নানকার নামের অবস্থা আরো খারাপ ছিল। কারণ, জমির উপর প্রকৃতপক্ষে তাদের কোন মালিকানা ছিল না। জমিদাররা তাদের জমি জরিপ করে আড়াই টাকা করে কর ধার্য করতো। এবং সেই কর না দিতে পারলে তাদের জমিদাররা কাছারিতে নিয়ে গিয়ে পিছমোড়া করে বেঁধে মারধর করতো এবং গুদাম ঘরে আটকে রাখতো। নানকার চাহিদের নিজের জমির কোনো ফসলের বা আম কাঁঠালের ওপর কোন অধিকার ছিল না। কাছারিতে এভাবে অত্যাচার করার পর নিলাম ডেকে সেই নানকার চাষির সমস্ত সম্পত্তি দখল করতেন জমিদাররা। জমিদারদের এইসব অত্যাচারের কথাই লেখক হাতির বদলে ছাতি রচনায় শুনিয়েছেন।
প্রশ্নঃ “পাহাড়ের নীচে যেদিন থেকে লালনিশান খুঁটি গেড়েছে। সেই দিন থেকে তাদের চোখ ফুটেছে।”— চোখ ফোটার ফলে 'তাদের' কী কী পরিবর্তন ঘটেছে তা ‘ছাতির বদলে হাতে রচনা অবলম্বনে লেখো।
উত্তর » লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায় সাধারণভাবে গারো পাহাড়ের অধিবাসীদের সম্বন্ধে এবং বিশেষভাবে সে অঞ্চলের এবং পঞ্চাশটা গ্রামের ডালুদের সম্বন্ধে একথা বলেছেন। ডালুরাই লেখককে জানিয়েছে যে, আগে তারা নানাভাবে অত্যাচারিত অসম্মানিত হলেও ‘সে-দিন আর নেই।' এ প্রসঙ্গেই লেখক প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন।
দিনের পর দিন শোষিত-নিপীড়িত-অত্যাচারিত হতে থাকা ডালু তথা গারো-পাহাড়িরা কমিউনিস্ট পার্টির ছত্রছায়ায় এসে জেগে উঠেছিল। দুমনাকুড়া, ঘোষপাড়া, ভুবনকুড়া, নওয়াপাড়া প্রভৃতি গ্রামের চাষিরা একজোট হয়ে জানিয়েছিল যে, তাদের খেতের ধান তারা আর জমিদারের খামারে তুলবে না। সত্যি সত্যি তারা তা আর তোলেওনি। জমিদাররা পুলিশ-কাছারি কোনো কিছু করেই তাদের শায়েস্তা করতে পারেননি। জমিদাররা তাই এই আন্দোলনের কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানতে বাধ্য হয়েছিলেন।
ক্রমে চেতনাসম্পন্ন হয়ে ওঠে ডালু তথা গারো-পাহাড়িরা নিজেদের প্রাপ্য সম্মানও আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। তথাকথিত ভদ্রলোকেরা তাই তাদের আর তুই-তোকারি করতে বা অন্যভাবে অশ্রদ্ধা করতেও সাহস পায় না। থানায় পুলিশও। তাদের চেয়ারে বসতে দেয়।
পাহাড়ের লালনিশান তাদের জীবনযাত্রায় অনেক ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করেছে। লেখকের বর্ণনা অনুসরণে দেখা যায়, এই লালনিশান গারো-পাহাড়িদের ঐক্যবদ্ধ করে তুলেছে হাল-বলদের অভাবের কারণে তাই তারা গাঁতা পদ্ধতিতে অর্থাৎ সম্মিলিতভাবে চাষাবাদ শুরু করেছে এবং গরিব চাষির কাজ অন্যরা বিনা পারিশ্রমিকে করতে শুরু করেছে। এসব কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনই ডালু এবং গারো পাহাড়ের অন্যান্য উপজাতির মধ্যে লেখক সুনিপুণভাবে লক্ষ ক্রম পর্যালোচনা করেছেন।
প্রশ্নঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের 'ছাতির বদলে হাতি' রচনা অবলম্বনে গারো পাহাড়ের অধিবাসীদের ওপর মহাজনদের শোষণ বর্ণনা করো।
উত্তরঃ লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাঁর ‘ছাতির বদলে হাতি' রচনায় গারো পাহাড়ের অধিবাসীদের ওপর মহাজনদের শোষণের ছবি তুলে ধরতে গিয়ে কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন।
গারো পাহাড়তলির ব্যবসায়ী চেংমান একবার হালুয়াঘাট বন্দরে ব্যবসার সওদা করতে এসে ফেরার পথে প্রবল বর্ষায় আটকে পড়ে মহাজন মনমোহনের গদির ঝাঁপের তলায় আশ্রয় নেয়। বৃষ্টি কমার কোনো লক্ষণ না দেখে মনমোহন কলকাতা থেকে কেনা একটি নতুন ছাতা তাকে একপ্রকার জোর করেই গছিয়ে দেন। এরপর আশ্বাসের সুরে চেংমানকে তিনি এও জানান যে, পয়সার ব্যাপারে সে যেন বিন্দুমাত্র চিন্তা না করে। এরপর হাটবারে যেদিনই মনমোহনের সঙ্গে চেংমানের দেখা হয়, সেদিনই সে তাঁকে ছাতার দাম নিতে অনুরোধ করে। যদিও মনমোহন প্রতিবারই তাকে ছাতার দাম অর্থাৎ পাওনাগণ্ডা মিটিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করতে নিষেধ করেন। কয়েক বছর পর হাটেই একদিন মনমোহন তাই যখন চেংমানকে পাকড়াও করে তাঁর দেনা মিটিয়ে দিতে বলেন, তখন আকাশ থেকে পড়ে সে। লাল খেরোর খাতা খুলে মনমোহন তাকে জানান যে, ছাতার দাম এবং তার চক্রবৃদ্ধি সুদসহ বর্তমানে এক হাজার টাকা প্রাপ্য, যে টাকা একটা হাতির দামের সমতুল্য।
ডালু উপজাতির গ্রাম কুমারগাঁতির ব্যবসায়ী নিবেদন সরকার তার মুদিখানার মশলাপাতি কেনার জন্য কয়েক বছর ধরে টাকা ধার করে চলেছিল মহাজন কুটিশ্বর সাহার কাছ থেকে। সেই ধারের টাকা তুলতে কুটিশ্বর সাহা নিবেদনের ছেষট্টি বিঘে জমি দেনার দায়ে কেড়ে নিয়েছিলেন।
আর-এক ধুরন্ধর মহাজন এক চাষিকে বাকিতে একটি কোদাল বিক্রি করেছিলেন। সেই টাকা তুলতে তিনি সেই চাষির কাছ থেকে পনেরো বিঘা জমি কেড়ে নেন।
স্থানীয় মানুষদের কাছে শোনা এই তিনটি সত্য ঘটনার উল্লেখের মধ্য দিয়েই লেখক মহাজনদের শোষণের ইতিহাস তাঁর রচনায় তুলে ধরেছেন।
প্রশ্নঃ "চেংমানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে"- চেংমান কে? কেন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল?
উওরঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখা আমার বাংলা প্রবন্ধের একটি গল্প হলো হাতির বদলে ছাতি। হাতিত বদলে ছাতি গল্পটি মূলত গারো পাহাড়ের অধিবাসীদের ওপর সেই অঞ্চলের জমিদার মহাজনদের শাসন অত্যাচারের কাহিনী। মহাজনদের দ্বারা শোষিত হওয়া গারো পাহাড়ের এমনই এক সামান্য ব্যবসায়ী ছিলেন চেংম্যান।
চেংমানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার কারণটি ছিল-
গারো পাহাড়তলির ব্যবসায়ী চেংমান একবার হালুয়াঘাট বন্দরে ব্যবসার সওদা করতে এসে ফেরার পথে প্রবল বর্ষায় আটকে পড়ে মহাজন মনমোহনের গদির ঝাঁপের তলায় আশ্রয় নেয়। বৃষ্টি কমার কোনো লক্ষণ না দেখে মনমোহন কলকাতা থেকে কেনা একটি নতুন ছাতা তাকে একপ্রকার জোর করেই গছিয়ে দেন। এরপর আশ্বাসের সুরে চেংমানকে তিনি এও জানান যে, পয়সার ব্যাপারে সে যেন বিন্দুমাত্র চিন্তা না করে। এরপর হাটবারে যেদিনই মনমোহনের সঙ্গে চেংমানের দেখা হয়, সেদিনই সে তাঁকে ছাতার দাম নিতে অনুরোধ করে। যদিও মনমোহন প্রতিবারই তাকে ছাতার দাম অর্থাৎ পাওনাগণ্ডা মিটিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করতে নিষেধ করেন। কয়েক বছর পর হাটেই একদিন মনমোহন তাই যখন চেংমানকে পাকড়াও করে তাঁর দেনা মিটিয়ে দিতে বলেন, তখন আকাশ থেকে পড়ে
Tags : হাতির বদলে ছাতি বড় প্রশ্নোত্তর | উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা হাতির বদলে ছাতি প্রশ্ন উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা হাতির বদলে ছাতি প্রশ্ন উত্তর | আমার বাংলা বড় প্রশ্ন উত্তর 2023