দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা প্রথম অধ্যায় 'কে বাঁচায় কে বাঁচে' গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর || WBBSE Class 12 Bengali Question Answer & Suggestion 2023

0

 

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা প্রথম অধ্যায় 'কে বাঁচায় কে বাঁচে' গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর || WBBSE Class 12 Bengali Question Answer & Suggestion 2023


দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা প্রথম অধ্যায় 'কে বাঁচায় কে বাঁচে' গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর || WBBSE Class 12 Bengali Question Answer & Suggestion 2023

কে বাঁচায় কে বাঁচে ছোট গল্পে মৃত্যুঞ্জয় চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা করো

ভূমিকাঃ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পটির কেন্দ্রীয় চরিত্র হলেন একজন বিবাহিত, মধ্যবিত্ত চাকরিজীবী যুবক মৃত্যুঞ্জয়। মৃত্যুঞ্জয় ছিলে অত্যন্ত সহজ সরল, নিরীহ,শান্ত,এবং ভদ্র স্বভাবের একজন ভালো মানুষ। কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পে আমরা মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্রের যে বৈশিষ্ট্য গুলি লক্ষ্য করতে পারি তা,,হল -

আবেগপ্রবণঃ 

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত 'কে বাঁচায় কে বাঁচে' গল্পের গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়। মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্রের যে বৈশিষ্ট্যটি আমরা সর্বপ্রথম দেখতে পাই, সেটি হলো তার আবেগ প্রবণতা। মৃত্যুঞ্জয় যখন একদিন অফিস যাওয়ার পথে রাস্তায় আকস্মিকভাবে অনাহারে মৃত্যুর দৃশ্য দেখে ফেলে, তখন সেই দৃশ্য মৃত্যুঞ্জয়কে মানসিক দিক থেকে অত্যন্ত আঘাত প্রদান করে। অত্যন্ত আবেগ প্রবন মৃত্যুঞ্জয় এই স্বাভাবিক দৃশ্যটা দেখেও প্রচণ্ড আঘাত পায় এবং এ থেকেই আমরা তার আবেগ প্রবণতার দিকটি জানতে পারি

জাগ্রত বিবেকঃ 

মৃত্যুঞ্জয়ের বিবেক যে ঠিক কতটা জাগ্রত সেটা আমরা এই কথা থেকেই বুঝতে পারি, যখন মৃত্যুঞ্জয় অফিস যাওয়ার পথে দুর্ভিক্ষের ফলে বা অনাহারের ফলে মৃত্যুর মতো একটি দৃশ্য দেখে, তখন সেটা তাকে মানসিক দিক থেকে এতটাই কষ্ট দেয় যে, সেই মৃত্যুর ঘটনা মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক চিন্তা ভাবনাকে কোনো না কোনোভাবে জড়িয়ে ফেলে। এবং এরপর মৃত্যুঞ্জয়ের ভেতর থেকে এক অদ্ভুত অপরাধ বোধের সৃষ্টি হয় এবং সেই অপরাধবোধ থেকে মৃত্যুঞ্জয় ধীরে ধীরে মানসিক দিক এবং শারীরিক দিক থেকে সম্পূর্ণ ভাবে পাল্টে যেতে শুরু করে।

পরদরদীঃ 

মৃত্যুঞ্জয় যখন অফিস যাওয়ার পথে অনাহারে মানুষের মৃত্যু দেখে ত?খন সেই বিষয়টা মৃত্যুঞ্জয়কে ভেতর থেকে এতটাই দুর্বল করে ফেলে যে, মৃত্যুঞ্জয় সিদ্ধান্ত নেয় সে একবার না খেয়ে থাকবে। শুধুমাত্র মৃত্যুঞ্জয় নয়, মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রীও একই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেইসঙ্গে এক মাসের পুরো মাইনেটাই তিনি ত্রাণ তহবিলে দান করেন যাতে তাদের জন্য মৃত্যুঞ্জয় কিছু করতে পারেন।

বাস্তব বুদ্ধি সম্পন্নঃ

মৃত্যুঞ্জয় অনাহারে মৃত্যু ঘটে ঘটতে থাকার মানুষদের কিছুটা সাহায্য করার জন্য নিজে এ নিজের স্ত্রীর এক বেলা খাওয়া কমিয়ে সেই খাদ্য দান করেছিল, এবং নিজের এক মাসের মাইনের পুরোটাই ত্রাণ তহবিলে দান করেছিল। কিন্তু তার কিছু সময় পরেই মৃত্যুঞ্জয় এটা বুঝতে পেরেছিল যে,,মৃত্যুঞ্জয় যথাসর্বস্ব দিয়ে দান করলেও সে কিছুই করতে পারবেনা।

সামরিক কালের ভবঘুরেঃ 

অফিস যাওয়ার পথে অনাহারে মৃত্যু হতে দেখা বিষয়টি মৃত্যুঞ্জয়কে ভেতরথেকে এমন ভাবে নাড়িয়ে দেয় যে, মৃত্যুঞ্জয় অনাহারে মরে যাওয়া মানুষদের বাঁচানোর জন্য নিজের সর্বস্ব দান করে ফেলে. এবং এভাবেই তাদের নিয়ে ভাবতে ভাবতে মৃত্যুঞ্জয় একসময় মানসিক দিক থেকে এতটাই পরিবর্তিত হয়ে পড়ে যে,, সেও এক সময় সেই অন্নপ্রার্থীদের একজন হয়ে যায় এবং খাদ্যের খোঁজে যেখানে সেখানে ঘুরতে থাকে। এবং এরকমভাবে মৃত্যুঞ্জয় এককালে সামরিক কালের জন্য একজন ভবঘুরেতে পরিণত হয়।

তাই সবশেষে বলা যায়, কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্রটি দুর্ভিক্ষ পীড়িত মানুষের প্রতিবাদে প্রতিরোধ,, ব সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করতে না পারলেও সে মধ্যবিত্ত মানুষের খোলস ত্যাগ করে সর্বহারা শ্রেণীর মধ্যে বিলীন হয়ে যেতে পেরেছিল। এবং মৃত্যুঞ্জয়ের এই কাজটাও কোনো ক্ষেত্রে কম ছিলনা।।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top