নবম শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর |
আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা দশম শ্রেণির ভূগোল প্রথম অধ্যায় 'বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ' (WBBSE Class 10 Geography Chapter 1 Question Answer in Bengali ) এর কিছু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ 2 মার্কের ১৫ টি প্রশ্ন উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।।আজকের এই ব্লগে মাধ্যমিক ভূগোল প্রথম অধ্যায় বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে। এই প্রশ্ন গুলো তোমাদের সামনের মাধ্যমিক পরক্ষীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ক্লাস 10 ভূগোল প্রথম অধ্যায় বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপের এই প্রশ্ন গুলি মন দিয়ে পড়ো।।
দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর || বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ অধ্যায়ের
প্রশ্নঃ নদী অববাহিকা কী??
উওরঃ নদী অববাহিকা বলতে কোনো একটি নদী যে অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং সেই নদীর বিভিন্ন উপনদী ও শাখানদী যে সমস্ত অঞ্চলে প্রবাহিত হয়েছে, সেই সমগ্র অঞ্চলেটাকে নদী অববাহিকা বলে। যেমন ভারতের গঙ্গা নদীর অববাহিকা হলো ভারতের বৃহত্তম ও আমাজন নদীর অববাহিকা হল পৃথিবীর বৃহত্তম নদী অববাহিকা।
প্রশ্নঃ নদীর ধারণ অববাহিকা কাকে বলে??
উওরঃ নদীর ধারণ অববাহিকা বলতে সেই প্রধান অঞ্চলটাকে বোঝায়,যে উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে নদী প্রথম ছোট ছোট জলধারা গুলি থেকে জল সংগ্রহ করে তার প্রথম প্রবাহ শুরু করে বা তার প্রবাহকে বাড়ায় এবং তার জলের প্রবাহকে অব্যাহত রাখে, সেই অঞ্চল টাকে ওই নদীর ধারণ অববাহিকা বলে।।
প্রশ্নঃ জলবিভাজিকা কাকে বলে?
প্রশ্নঃ জলবিভাজিকা হল এমন এক উচ্চভূমি যা দুটি নদী অববাহিকা বা দুটি নদী গোষ্ঠীকে আলাদা করে রাখে। মউচ্চভূমি দুটি বা তার বেশি নদী গোষ্ঠী বা নদী অববাহিকা কে আলাদা করে রাখে, মাঝখানের সেই উচ্চভূমিকে জলবিভাজিকা বলে।। জলবিভাজিকা রূপে প্রধানত উঁচু উঁচু পর্বত কোন শিলা পাহাড় ইত্যাদি গুলি কাজ করে।।
প্রশ্নঃ নদীর ষষ্ঠ ঘাতের সূত্র কী??
উওরঃ নদীর ষষ্ঠ ঘাতের সূত্র হল নদীর গতিবেগ এর সঙ্গে তার বহন ক্ষমতার এক সূত্র যেটি 1842 খ্রিষ্টাব্দে w.hopkins আবিষ্কার করেছিলেন। নদীর ষষ্ঠ ঘাতের সূত্র টি হল,
যদি কোনো কারণে নদীর জলের পরিমান বেড়ে গিয়ে তার গতিবেগ দ্বিগুণ হয়ে যায়,তাহলে সেই নদীর বহন ক্ষমতা ৬৪ গুণ বাড়বে। নদীর গতিবেগ এর সঙ্গে তার বহন ক্ষমতার এই সম্পর্ককেই ষষ্ঠ ঘাতের সূত্র বলে।
প্রশ্নঃ প্রপাত কূপ বা প্লাঞ্জপূল কাকে বলে??
উওরঃ প্রপাত কূপ অথবা প্লাঞ্জপূল হল জলপ্রপাতের ক্ষয় কার্যের ফলে গঠিত এক প্রকার ভূমিরূপ যা জলপ্রপাতের নিচে গঠিত হয়ে থাকে। জলপ্রপাতের জল যখন অনেক উপর থেকে প্রবল বেগে নিচে গড়িয়ে পড়ে তখন সেই জলরাশি জলপ্রপাতের যে নির্দিষ্ট অংশে বেশি পরিমাণে পড়ে সেখানে কোমল শিলা অবস্থান করায় কোমল শিলা জলপ্রপাতের সেই জলের আঘাত সহ্য করতে পারে না। যার ফলে সেই কোমল শিলা ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে একপ্রকার গর্ত বা হাঁড়ির মতো ভূমিরুপ সৃষ্টি করে।। জলপ্রপাতের ক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট সেই হাঁড়ির মতো ভূমিরূপকেই প্রপাতকূপ বা প্লাঞ্জপূল বলে।
প্রশ্নঃ মন্থকূপ কী বা পটোহল কাকে বলে??
উওরঃ মন্থকূপ বা পটোহল হলো নদীর ক্ষয় কার্যের ফলে গঠিত একপ্রকার ভূমিরূপ। নদীর উচ্চ গতিতে যখন নদীর ক্ষয় করার ক্ষমতা অনেক বেশি থাকে, তখন নদীর জলের সঙ্গে মিশে থাকা বিভিন্ন কঠিন শিলা, বা শিলাখণ্ড জল প্রবাহের সময় নদীগর্ভে বারবার আঘাত করার পরে নদীগর্ভে অনেক ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়।।। এরকম ছোট ছোট গর্ত গুলি পরবর্তীতে ঠিক একই ভাবে আরো বেশি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে আরো গভীর এবং বড় আকার ধারণ করে। তখন সেই বড় এবং গভীর গর্ত গুলোকে মন্থকূপ অথবা পটোহল বলে।। যেখানে অসংখ্য পটোহল একসঙ্গে গড়ে ওঠে, তাকে পটোহল কলোনি বলে।।
প্রশ্নঃ পলল শঙ্কু ও পলল ব্যজনী কী??
উওরঃ পলোল শঙ্কু এবং পলোল ব্যজনী হচ্ছে পার্বত্য অংশে নদীর সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত দুটি ভিন্ন প্রকৃতির ভূমিরূপ। নদী যখন পর্বতের পাদদেশে এসে পৌঁছায় তখন সেই পাদদেশে অঞ্চলে নদী নুড়ি, কাকর, বালি ইত্যাদি জিনিস সঞ্চয় করতে থাকে। যার ফলে একসময় পর্বতের পাদদেশে ত্রিকোণাকৃতি ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়।।
পর্বতের পাদদেশে নদী বিভিন্ন ক্ষয়জাত পদার্থ গুলির সঞ্চয় করে যে ত্রিকোণাকৃতি ভূমিরূপ গঠন করে, তাকে পলোল শঙ্কু বলা হয়। এরপর যখন অনেক গুলি পলোল শঙ্কু মিলিত হয় এবং পলোল শঙ্কুর উপর দিয়ে সামান্য জলধারা প্রবাহিত হয়, তখন তাকে দূর থেকে দেখতে যখন হাত পাখার মতো দেখতে হয়। তখন সেরূপ ভূমিরূপকে পলল ব্যজনী বলে।।
প্রশ্নঃ খাড়ি কাকে বলে?
উওরঃ খাড়ি হল প্রশস্ত নদীর মোহনা। নদী যখন উচ্চগতি, মধ্যগতি নিম্নগতি সম্পূর্ণটা শেষ করে তার মোহনা অংশ পৌঁছায়,সেখানে নদী যখন সাগরে গিয়ে মিলিত হয় সেই অঞ্চলটা বিশাল চওড়া বা ফানেল আকৃতির হয়।। এরুপ চওড়া বা ফানেল আকৃতির নদীর মোহনাকে খাড়ি বলে।।
প্রশ্নঃ গিরিখাত কাকে বলে?
উওরঃ উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের নদীর নিম্ন ক্ষয়ের মাত্রা খুব বেশি থাকায়, নদী খুব বেশি পরিমাণে তার উপত্যাকায় নিম্ন ক্ষয় করে নদী উপত্যকাকে সংকীর্ণ ও গভীর প্রকৃতির করে তোলে। পার্বত্য অঞ্চলের নদীর নিম্ন ক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট অতি গভীর ও সংকীর্ণ নদী উপত্যকাকে গিরিখাত বলা হয়।।
প্রশ্নঃ ক্যানিয়ন কাকে বলে?
উওরঃ উচ্চ পার্বত্য শুষ্ক অঞ্চলে নদী উচ্চ গতিতে নদী তার উপত্যকায় খুব বেশি পরিপার্শ্ব ক্ষয় খুব কম করে এবং নিম্নক্ষয় বেশি করার মাধ্যমে নদী উপত্যকায় ইংরেজি I আকৃতির গিরিখাত সৃষ্টি করে। নদী উপত্যকায় সৃষ্ট আই আকৃতির গভীর শুষ্ক উপত্যকাকেই ক্যানিয়ন বলা হয়।
• মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন হল পৃথিবীর বিখ্যাত ক্যানিয়ন।
প্রশ্নঃ ব-দ্বীপ কী?
উওরঃ বদ্বীপ হলো নদীর মোহনা অংশে নদীর বিভিন্ন ক্ষয়জাতপদার্থ গুলি সঞ্চয়ের ফলে গঠিত এক প্রকার ভূমিরূপ। নদী যখন তার উচ্চ গতি এবং মধ্য গতি শেষ করে নদী তার নিম্নগতিতে তার মোহনা অঞ্চলে প্রবেশ করে, তখন নদী তার সাথে বয়ে আনা বিভিন্ন ক্ষয়জাতপদার্থ গুলি তার মোহনা অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে সঞ্চয় করার ফলে মাত্রাহীন 'ব' বা গ্রিক অক্ষর ডেল্টা এর মতো ভূমিরূপ গঠিত হয়, তাকে বদ্বীপ বলা হয়।।
প্রশ্নঃ অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ কাকে বলে??
উওরঃ নদীর মধ্যগতি কিংবা নিম্ন গতিতে নদীবাক অত্যাধিক বেড়ে গেলে অনেক সময় বাক দুটির মধ্যবর্তী অংশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে নদী সোজা বয়ে চলে।। এবং বাকটি পরিত্যক্ত হয়ে ঘোড়ার খুরের মতো বিলের সৃষ্টি করে।। সেই পরিত্যক্ত বাকটি ঘোড়ার খুরের মতো হয় বলে একে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বলা হয়।
প্রশ্নঃ প্লাবনভূমি কাকে বলে?
উওরঃ নদী যখন তার উচ্চগতি ও মধ্যগতি শেষ করে নিম্নগতিতে পৌঁছায়, তখন নদীর ক্ষয় ক্ষমতা এবং বহনক্ষমতা একদম শেষ হয়ে যায়। যার ফলে নদী তার নিম্নগতিতে নদী গর্ভে বিভিন্ন পদার্থ গতি সঞ্চয় করতে থাকে। এর ফলে নদী গর্ভ ভরাট হয়ে যায় এবং নদীর জল ধারণ ক্ষমতা অনেকটাই কমে।। এরপর বর্ষার সময়ে নদীতে থাকা অতিরিক্ত জল তার দুই কূল ছাপিয়ে প্লাবনের সৃষ্টি করে। প্লাবনের ফলে নদীর উভয় তীরে সূক্ষ বালি পলি, কাদা প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে যে নতুন ভূমিরূপ সৃষ্টি করে,তাকে প্লাবনভূমি বলা হয়।
প্রশ্নঃ স্বাভাবিক বাঁধ লিভি কী?
উওরঃ নিম্নগতিতে নদীগর্ভে বিভিন্ন ক্ষয়জাত পদার্থ গুলি সঞ্চয় হওয়ার ফলে নদীর জল ধারণ ক্ষমতা আগের তুলনায় অনেকটাই কমে যায়। এরপর বর্ষার সময় নদীর অতিরিক্ত জল প্লাবনের সৃষ্টি করে এবং প্লাবনের সময়ে নদীর বিভিন্ন পদার্থগুলি সঞ্চিত হয়ে যে নদী দুই পাড় থেকে সামান্য উঁচু বাঁধের মতো ভূমিরূপ সৃষ্টি করে,তাকে লিভি বা স্বাভাবিক বাঁধ বলে।
প্রশ্নঃ নিক পয়েন্ট কাকে বলে?
উওরঃ ক্ষয়চক্র অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শেষ পর্যায়ে পৌছাবার আগেই সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের উন্নয়ন ঘটলে বা সমুদ্রজলতলের পরিবর্তন ঘটলে নদীঢালের সামঞ্জস্য নষ্ট হয় । এর ফলে নদী তার ঢালের সামঞ্জস্য পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য নতুনভাবে তার ক্ষয়কার্য দ্রুত গতিতে শুরু করে । এই নতুন ঢাল ও পুরানো ঢাল মিলনস্থলে একটি খাঁজ সৃষ্টি হয় । এই খাঁজকেই নিক পয়েন্ট (Knick Point) বলে ।
প্রশ্নঃ আবদ্ধ শৈলশিরা কী ?
উওরঃ পার্বত্য অঞ্চলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নদীর প্রবাহপথ মোটেই সোজা হয়না । কারন পার্বত্য প্রবাহে নদীর সামনে একের পর এক শিলাখণ্ড এসে উপস্থিত হয়। যার ফলে নদীকে শিলাখণ্ড পেরিয়ে বেঁকে প্রবাহিত হতে হয়। এরুপ আকাবাকার প্রবাহের জন্য নদীর একটি পাড় অপর পাড়কে আড়াল করে রাখে। ফলে নদীর গতিপথ সোজাসুজি বেশী দূর পর্যন্ত দেখতে পাওয়া যায় না। দূর থেকে মনে হয় যেন শৈলশিরাগুলি আবদ্ধ বা শৃঙ্খলিত অবস্থায় রয়েছে, যে কারণে এদের আবদ্ধ শৈলশিরা বা শৃঙ্খলিত শৈলশিরা (Interlocking Spur) বলে ।
আশাকরি, আজকের ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দশম শ্রেণির ভূগোল প্রথম অধ্যায় 'বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ' ( WBBSE Class 10 Geography Chapter 1 Question Answer in Bengali ) এর যে গুরুত্বপূর্ণ 2 মার্কের ১৫ টি প্রশ্ন উওর গুলো তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম, তা তোমাদের ভালো লেগেছে।
Tags :