![]() |
শিকার কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা বা উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা জীবনানন্দ দাশের শিকার কবিতার (wb class 12 Bengali Question Answer & Suggestion 2023 ) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বড় প্রশ্ন উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এর আগে আমরা উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা জীবনানন্দ দাশের শিকার কবিতার MCQ Question Answer গুলো শেয়ার করেছিলাম। তোমরা চাইলে শিকার কবিতার সেই MCQ & SAQ প্রশ্ন উওর গুলো আমাদের ওয়েবসাইট থেকে দেখে নিতে পারো।
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা শিকার কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর || দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন উত্তর এবং সাজেশন 2023
প্রশ্নঃ শিকার কবিতায় কবি ভোরের প্রকৃতির জীবনে যে বর্ণনা দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় সংক্ষেপে আলোচনা করো
উত্তরঃ- জীবনানন্দ দাশের রচিত শিকার কবিতায় একটি বাদামি হরিণ এর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কবিতার ভোরের পটভূমি তৈরি হয়েছে। শিকার কবিতায় সেই হরিণের মৃত্যু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভোরবেলার যে নানা দৃশ্য বা প্রকৃতি ও জীবন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তা হলো- সেখানে আকাশের রং ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল। চারদিকের পেয়ারা আর নোনার গাছ টিয়ার পালকের মতো সবুজ। একটি তারা তখনও আকাশে রয়েছে। হিমের রাতে শরীর গরম করার জন্য দেশোয়ালিরা সারারাত মাঠে যে আগুন জ্বেলেছিল, শুকনো অশ্বত্থপাতায় তা তখনও জ্বলছিল। ভোরের সূর্যের আলোয় আগুনের শিখা তার আগের রাতের জ্যোতি হারিয়েছে—“তার রঙ কুঙ্কুমের মতো নেই আর,/হয়ে গেছে রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো।” সকালের আলোয় শিশিরভেজা বন ও আকাশ যেন “ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো” ঝিলমিল করছে।
Read More👇
What Is Car Insurance? Best Car Insurance Plan & Companies সম্পর্কে জানতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন।
What Is Car Insurance | Types Of Car Insurance | Best Car Insurance Plan For You
এইভাবে সূর্যের প্রথম আলোয় উদ্ভাসিত এক উজ্জ্বল প্রকৃতির ছবিকে জীবনানন্দ তুলে ধরেছেন তাঁর কবিতার মাধ্যমে। শিকারির বন্দুকের গুলিতে সুন্দর বাদামি হরিণের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে যে 1 নৃশংস দৃশ্য তৈরি হয় তার পটভূমিতে প্রকৃতির এই নির্মল ছবি যেন সেই নৃশংসতাকেই আরও নির্মম করে তোলে। প্রকৃতির এই রূপ মানুষের হৃদয়হীনতার স্বরূপকে তুলে ধরতেই সাহায্য করে। প্রাণবন্ত হরিণের ‘উষ্ণ,লাল মাংস’-তে রূপান্তর, নাগরিক সভ্যতার হাতে প্রকৃতির ধ্বংসের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।
প্রশ্নঃ- 'আগুন জ্বলল আবার' - আবার শব্দটি প্রয়োগের তাৎপর্য কী? এখানে এই ঘটনা কিসের ইঙ্গিত দিয়েছে?
উওরঃ- জীবনানন্দ দাশের রচিত শিকার কবিতায় আগুন জ্বলে ওঠার ঘটনা দুবার রয়েছে। প্রথমত আগুন জানিয়েছিল দেশোয়ালি মানুষেরা যারা হিমের রাতে সারারাত নিজেদের শরীর গরম রাখার জন্য মাঠে আগুন জ্বালিয়ে রেখেছিল। মোরগের ফুলের লাল আগুন ভোর হওয়ার পরেও জ্বলেছিল কিন্তুম সকাল হতেই সেই আগুন হয়ে ওঠে অনেক বিবর্ণ এবং স্লন। রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো স্লান হয়ে যাওয়া সেই আগুনে ছিল ভোরের সংকেত,জীবনের জাগরণের আভাসা। একটি হরিণ সারারাত ধরে চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে নেওয়ার পর সারারাত ধরে অন্ধকারে সুন্দরীর বন থেকে অর্জুনের বনে ঘুরে ঘুরে ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল। যখনই ভোরের আলো বেরিয়ে আসে তখনই সেই বন থেকে বেরিয়ে আসে। এবং কবি বাতাবিলেবুর মতো সবুজ ঘাস খাওয়ার পর নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে সে নিজের ঘুমহীন ক্লান্ত বিহ্বল শরীরটাকে স্রোতের মধ্যে ভাসিয়ে দেয়। কিন্তু তাকে আঘাত দেওয়ার জন্য সেখানেই অপেক্ষা করছিল শিকারির দল। তাকে দেখতে পাওয়া মাত্রই একটা অদ্ভুত শব্দ হয় এবং এই শব্দের পরেই নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মত লাল হয়ে ওঠে। অর্থাৎ বন্দুকের গুলির আঘাতে সেই বাদামি হরিণ সেখানেই মরে যায়। এরপরে দ্বিতীয়বার আগুন জ্বলে ওঠে। কিন্তু সেই আগুনে জীবনের কোনো জাগরণ ছিল না বরং সেখানে ছিল মৃত্যু। সেই আগুন বিনাশের নামমাত্র। সে জ্বলন্ত আগুনে উষ্ণ লাল হরিণের মাংস তৈরি হয়ে এলো। আবার শব্দের সাহায্যে এই দ্বিতীয়বারের আগুন জ্বলার কথাই কবিতায় বলা হয়েছে।।
প্রশ্নঃ শিকার কবিতায় সেই সুন্দর বাদামি হরিণটির যে কাহিনী ফুটে উঠেছে তা আলোচনা করো।
উওরঃ- মহাপৃথিবী থেকে নেওয়া জীবনানন্দ দাশের শিকার কবিতায় কবিতাটি রচিত হয়েছে এক সুন্দর বাদামি হরিণের জীবনের এক করুন কাহিনীকে কেন্দ্র করে।। সভ্যতা থেকে অনেক দূরে এক বনে যখন রাতের অন্ধকার পেরিয়ে ভোরের সংকেত দেখা যায় তখনই এক সুন্দর বাদামি হরিণ, যে-কিনা সারারাত ধরে চিটাবাঘিণীর গ্রাস থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে সুন্দরীর বন থেকে অর্জুনের বনে ঘুরে ঘুরে নিজেকে রক্ষা করেছিল, কিন্তু অন্ধকার না কাটা পর্যন্ত যেহেতু সে সুরক্ষিত নয় সেজন্যই হরিণ ভোর হওয়ার অপেক্ষা করতে থাকে। এবং ভোর হওয়ার পরেই সেই হরিণ ভোরের আলোয় বাইরে বেরিয়ে আসে।। বাইরে বেরিয়ে আসার পরে সেই হরিণ ভোরের আলোয়, কচি বাতাবি লেবুর মতো সবুজ, সুগন্ধি ঘাস ছিঁড়ে খায়। তারপরে নেমে যায় নদীর শীতল জলে, তার ঘুমহীন ক্লান্ত শরীরকে সতেজ করার জন্যে, বিহ্বল শরীরটাকে স্রোতের মতো একটা শীতল আবেশ দেওয়ার জন্য। অন্ধকারের জরায়ু থেকে জন্ম নেওয়া ভোরের রোদের মতোই জীবনের উল্লাস খুঁজে নিতে চেয়েছিল। হরিণটি। কিন্তু যেই নদীর জলে হরিণটি নিজের গা ভাসিয়ে দিয়েছিল সেই সেই নদীর তীরেই অপেক্ষা করছিল শিকারীর দল। যখন শিকারি হরিণটিকে দেখতে পায় তখনই বনের মধ্যে একটা অদ্ভুত শব্দ হয় এ।বং মুহূর্তের মধ্যেই সেই নদীর জল মচকাফুলের মত লাল হয়ে ওঠে। অর্থাৎ বন্দুকের গুলির আঘাতে হরিণের মৃত্যু হয় এবং হরিণের রক্তে লাল হয়ে ওঠে নদীর জল। এরপর এই কবিতায় দ্বিতীয়বার আগুন জ্বালানোর ঘটনা দেখতে পাওয়া যায়। এবং সেই আগুনেই তৈরি হয়ে আসে হরিণের উষ্ণ লাল রঙের মাংস।।
প্রশ্নঃ- জীবনানন্দ দাশের শিকার কবিতায় যে নির্মম সত্যের প্রকাশ ঘটেছে, তা নিজের ভাষায় লেখ
উওরঃ- মহাপৃথিবী কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া জীবনানন্দ দাশের শিকার কবিতায় মূলত বিভিন্ন ধরনের নির্মম সত্যের প্রকাশ ঘটেছে। জীবনানন্দ দাশ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী মানুষের যে অবক্ষয় ও অবসাদ ঘটেছিল,তিনি তাঁর নিখুঁত উপস্থাপনা তার শিকার কবিতায় করেছেন। কবিতায় তুলে ধরা হয়েছে মানুষের সেই অবক্ষয়, অবসাদ এবং সভ্য সমাজের নানা কুৎসিত দিকগুলি। বন্য পরিবেশে মুখে সিগারেটের ধোঁয়া, টেরিকাটা মাথা নিয়ে এই মানুষেরা তাদের নির্মমতার প্রকাশ ঘটিয়েছে। একটি সুন্দর বাদামি হরিণ যে কিন সারা ধরে চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে কখনো সুন্দরীর এবং কখনও অর্জুনের বনে লুকিয়ে ছিল এবং যখন ভোরের আলো ফুটে ওঠে তখন সে যখন বাঁচার তাগিদে বেরিয়ে এসে বাতাবি লেবুর মত সুন্দর সুগন্ধি ঘাস খায়, এবং এরপর যখন সে নিজের ক্লান্ত শরীর টাকে নদীর জলে একটু ভাসিয়ে দেয়, তখন সেখানে অপেক্ষা করতে থাকা শিকারি এরকম একটি সুন্দর বন্য পরিবেশকে হটাৎ করেই অশান্ত করে ও ভয়ানক করে তোলে। শিকারীর দল সেই সুন্দর বাদামি হরিণ থাকে দেখামাত্রই বনে অদ্ভুত শব্দ হয় এবং সেই সঙ্গে সঙ্গেই নদীর জল লাল হয়ে ওঠে। বন্দুকের গুলিতে মৃত্যু ঘটে হরিণের। আর এর মাধ্যমেই দেখা যায় মানুষের বর্বরতা। ধোঁয়া সেবনকারী, টেরিকাটা মানুষের দল তাদের রসনাতৃপ্তির জন্য বন্দুকের গুলিতে সৌন্দর্যের প্রতীককে বিদ্ধ করল। জীবন সংগ্রামে হরিণটিও বাঁচতে চেয়েছিল। ভোর হলে যখন সে ভাবে চিতাবাঘিনীর আর ভয় নেই, এবার দু-একটা ঘাস মুখে দেওয়া যেতে পারে; কিংবা ক্লান্তি কাটাতে নদীর শীতল জলে শরীর ভিজিয়ে নেওয়া যেতে পারে ঠিক তখনই তথাকথিত মানুষের হাতে তার মৃত্যু ঘটল। যাদের উচিত ছিল হরিণকে রক্ষা করা তারাই কিনা তার মৃত্যুর কারণ। মানুষের চেতনায় আঘাত করতে চেয়েছেন কবি। আলোচ্য কবিতায় জীবনানন্দ দাশ মানুষের চেতনাহীনতার এই নির্মম সত্যকেই তুলে ধরেছেন।
আশাকরি, উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা জীবনানন্দ দাশের শিকার কবিতার (WB Class 12 Bengali Question Answer & Suggestion 2023 ) যে কয়েকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ 4 টি বড় প্রশ্ন উওর শেয়ার করা হয়েছে, তা তোমাদের কাজে লাগবে।।
Tags : উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা শিকার কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা শিকার কবিতার বড় প্রশ্ন উওর | WB Class 12 Bengali Question Answer | HS Bengali Suggestion 2023 | দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা শিকার কবিতার প্রশ্নোত্তর