![]() |
wb class 11 philosophy question answer and suggestion 2022 |
আজকের এই ব্লগ পোষ্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর ভারতীয় দর্শন শেষ অধ্যায় " সমসাময়িক ভারতীয় দর্শন " অধ্যায়ের " কর্মযোগ বলতে কী বোঝায়? কর্মযোগ সম্পর্কিত বিবেকানন্দের দার্শনিক ধারণা ব্যাখ্যা করো। সকাম ও নিষ্কাম কর্মের মধ্যে পার্থক্য কী? স্বামী বিবেকানন্দ কিভাবে নিষ্কাম কর্মকে ব্যাখ্যা করেছেন?" প্রশ্নটির উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।।
কর্মযোগ বলতে কী বোঝায়? কর্মযোগ সম্পর্কিত বিবেকানন্দের দার্শনিক ধারণা ব্যাখ্যা করো। || স্বামী বিবেকানন্দ কে অনুসরণ করে কর্মযোগের আদর্শটি সংক্ষেপে আলোচনা করো
উওরঃ আমরা যাই করি না কেন তাই হলো কর্ম। কিন্তু সেই কর্ম যখন আমাদের মোক্ষলাভকে কেন্দ্র করে হয় অথবা এই ঈশ্বর প্রাপ্তিকে কেন্দ্র করে হয়, তখন তা হয় কর্মযোগ। অর্থাৎ যে কর্মের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরকে পাওয়ার চেষ্টা করি অথবা মোক্ষলাভ করার চেষ্টা করি,, তা হলো কর্মযোগ।।এবং এই কর্মযোগ একমাত্র নিষ্কাম কর্মের মাধ্যমে সম্ভব।।
নিষ্কাম কর্মঃ কর্মকর্তা যখন মনে করেন, এই বিশ্বজগৎ স্বয়ং ঈশ্বরের কর্মক্ষেত্র এবং বিশ্বের সমস্ত কর্মই ঈশ্বরের কর্ম - এবং এই ভাবনার জন্য কর্মকর্তা যখন তার নিজের কোনো কর্মফলের আশা না করে জগত বা মানব কল্যাণে জন্য কর্ম করেন, তখন তাকে বলা হয় নিষ্কাম কর্ম।।
কর্মযোগ সম্পর্কিত বিবেকানন্দের দার্শনিক ধারণা ব্যাখ্যা করো। বা স্বামী বিবেকানন্দকে অনুসরণ করে কর্মযোগের আদর্শটি সংক্ষেপে আলোচনা:-
স্বামী বিবেকানন্দ এই কর্মযোগকে তিনি নতুন ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।।স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর কর্মযোগ সম্পর্কিত দার্শনিক চিন্তা ভাবনা কর্মযোগ গ্রন্থের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। কর্মযোগ গ্রন্থে রয়েছে আটটি অধ্যায়। এবং সেই আটটি অধ্যায়ে স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর দার্শনিক চিন্তা ভাবনাকে ব্যাখ্যা করেছেন।।
এই নোটের PDF File টির Download করতে চাইলে নিচের পোস্টে ভিজিট করো।👇
PDF File Download Like :- Download
এছাড়াও স্বামী বিবেকানন্দ গীতায় নিষ্কাম কর্ম সম্পর্কিত যে তিনটি সারকথা রয়েছে - সেই তিনটির তিনটি সারকথার আদর্শ আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন। নিষ্কাম কর্মের সেই তিনটি সারকথা হলো -
কর্মফলের আকাঙ্ক্ষাঃ নিষ্কাম কর্মের মূলকথা হলো কর্মফলের আশা ত্যাগ করে কর্ম করে যাওয়া হয়। নিষ্কাম কর্মের কর্মকর্তা যে কর্ম করছে, সেই কর্মের ফল কেমন হবে তা, কর্মকর্তা কখনোই আশা করেন না। এক্ষেত্রে কর্মকর্তাকে নিজের কর্মের সমস্ত কর্মফলের আশা ত্যাগ করতে হয়।কর্তৃত্বাভিমান ত্যাগঃ কর্তৃত্বাভিমান বলতে বোঝায় - আমার কর্মের জন্য আমাকে এই ফল পেতে হবে - এই ধারনা। নিষ্কাম কর্মের ক্ষেত্রে এই ধারণাকে ত্যাগ করতে হবে। সহজ কথায় কর্মফলের কোনো আশক্তি কর্মে যেন না থাকে।
কর্মফল ভোগকারীঃ নিষ্কাম কর্মের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাকে সবসময় এটা মনে রাখতে হবে যে- সে যেই কর্মটি করছে সেটা, তার নিজের ইচ্ছায় নয়। সেটা হল ঈশ্বরের ইচ্ছায় কর্ম সম্পাদন। এক্ষেত্রে কর্মকর্তা শুধু ঈশ্বরের প্রতিনিধি মাত্র। তাই নিষ্কাম কর্ম কামনাশূন্য হলেও তা কখনোই উদ্দেশ্যহীন নয়। এবং এক্ষেত্রে কর্মকর্তাকে সবসময় ই তার কর্মের ফল ঈশ্বরের উপর অর্পণ করতে হয়।।
এবং নিষ্কাম কর্মের কর্মের এই তিনটি মূল কথার মাধ্যমে যখন কর্ম করা হয়, তখন তা হয় জগতের মঙ্গলের জন্য কর্ম করা। এবং এই কর্মের মাধ্যমেই একমাত্র মোক্ষ লাভ করা সম্ভব। স্বামী বিবেকানন্দের মতে কর্মফলের জন্য নয় কর্মের জন্য কর্ম করা উচিত।
স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন আমাদের প্রথম কর্তব্য হলো - নিজের প্রতি ঘৃণা নয়, নিজের প্রতি বিশ্বাস প্রদর্শন করা, তবেই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করা সম্ভব। এবং যখন আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে পারবো,তখনই আমরা নিষ্কাম কর্ম করতে পারবো।এবং নিষ্কাম কর্মের অর্থই হলো জগতের কল্যাণ এবং মোক্ষলাভ করা।।