ক্লিওপেট্রা কে ছিলেন? ক্লিওপেট্রার জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো || WB Class 11 History Question Answer & Suggestion 2022

0

ক্লিওপেট্রা কে ছিলেন? ক্লিওপেট্রার  জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো || WB Class 11 History Question Answer & Suggestion 2022



একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর ||  wb class 11 history question answer chapter 6
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর

আজকের এই ব্লগ পোস্টে আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় ( wb class 11 history question answer chapter 6 ) " সমাজের ঘটনা প্রবাহ " এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " ক্লিওপেট্রা কে ছিলেন? ক্লিওপেট্রার  জীবন " সম্পর্কে বিস্তারে আলোচনা করবো। তোমাদের সামনের ইতিহাস পরিক্ষার জন্য " রানি দুর্গাবতী কে ছিলেন? রানী দুর্গাবতীর কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো। " প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশ্নটি তোমাদের WB Class 11 History Exam 2020 তে এসেছিল। আমি এর আগের ব্লগ পোস্টে এর উওর শেয়ার করেছি। যদি তোমাদের সামনের ইতিহাস পরিক্ষায় রানী দূর্গাবতীর জীবনী সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন না আসে, তাহলে " ক্লিওপেট্রা কে ছিলেন? ক্লিওপেট্রার  জীবন সম্পর্কে আলোচনা " নিয়ে প্রশ্ন আসতে পারে। তাই এই প্রশ্নটি তোমাদের মন দিয়ে পড়া উচিৎ।।  

ক্লিওপেট্রা কে ছিলেন? ক্লিওপেট্রার  জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমিকাঃ প্রাচীন যুগের প্রভাবশালী নারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন - টলেমি বংশের রাজকন্যা ক্লিওপেট্রা। তিনি ছিলেন অন্যতম একজন উল্লেখযোগ্য মিশরীও নারী, যিনি তার বুদ্ধি এবং সাহসিকতার দ্বারা মিশরের শাসন ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন।। 

পরিচয়ঃ ক্লিওপেট্রা ছিলেন মিশরের শাসক টলেমি বংশের রাজকন্যা তিনি ছিলেন টলেমি বংশের শাসক,দ্বাদশ টলেমির কন্যা। ক্লিওপেট্রা 69 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার নাম ছিল সপ্তম ক্লিওপেট্রা কিন্তু তিনি ইতিহাসে ক্লিওপেট্রা নামেই অধিক পরিচিত। ক্লিওপেট্রা ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অত্যন্ত সুন্দরী এবং মেধাবী। অত্যন্ত মেধাবী হওয়ার কারণে ক্লিওপেট্রা খুবই উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। এছাড়াও তিনি মাত্র 18 বছর বয়সেই মিশরের সিংহাসন লাভ করেছিলেন। 


চারিত্রিক ত্রুটিঃ ক্লিওপেট্রা অত্যন্ত সুন্দরী হওয়ার কারণে তিনি তার সৌন্দর্যকে নানাভাবে কাজে লাগিয়েছিলেন। তিনি বারবার প্রেমের জোয়ারে ভেসে গিয়েছিলেন এবং তার জীবনের প্রেম ভালোবাসার নানা জোয়ার ভাটা দেখা যায়। তার জীবনর একাধিক পুরুষের আগমন ঘটেছিল এবং সেজন্য রোমান কবি হোরাস তাকে 'পাগল' এবং লুকান তাকে 'মিশরের লজ্জা বলে' অভিহিত করেছিলেন।

style="color: red;">সিংহাসন লাভঃ মিশরের প্রচলিত শাসনব্যবস্থার নিয়ম অনুযায়ী একজন রাজা কখনোই একা মিশরের শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করতে পারতো না। তার সঙ্গে একজন সঙ্গী অথবা সঙ্গিনী থাকতে হতো এবং যৌথভাবে মিশরের শাসন পরিচালনা করতে হতো। 

ক্লিওপেট্রা প্রথম জীবনে তার পিতার দ্বাদশ টলেমির সঙ্গে সিংহাসনে বসে মিশনের শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। কিন্তু দ্বাদশ শ্রেণীর মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসার মতো সেরকম কেউ ছিল না। অন্যদিকে মিশরের শাসন ব্যবস্থার নিয়ম অনুযায়ী ক্লিওপেট্রা একা নিজেও মিশরের শাসন পরিচালনা করতে পারতেন না। সেই কারণেই তিনি নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগান। তিনি নিজের আট বছরের ছোটো ভাই ত্রয়োদশ টলেমিকে বিবাহ করেন এবং তিনি তার ভাইকে পাশে রেখে মিশরের শাসনকার্য পরিচালনা করার দায়িত্ব নেন।।

কিন্তু তিনি তার ভাই ত্রয়োদশ টলেমির সঙ্গে বেশিদিন মিশরের শাসন কার্য সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেননি। কারণ -

রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার এবং ক্লিওপেট্রার প্রণয়ঃ

• মিশর সিংহাসনে বসার ঠিক কয়েক বছর পরেই রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার মিশর আক্রমণ করেন। এই আক্রমণে মিসরের সেনাবাহিনীর ওপর রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার যুদ্ধে জয় লাভ করে। এবং সেই যুদ্ধে ত্রয়োদশ টলেমির মৃত্যু হয়। এরপর ক্লিওপেট্রাকে জুলিয়াস সিজার রোমে নিয়ে আসেন এবং রোমে আসার পর জুলিয়াস সিজার ও ক্লিওপেট্রার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর ফলে জুলিয়াস সিজার ক্লিওপেট্রাকে পুনরায় মিশরের শাষক হিসেবে নিযুক্ত করেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ব্রুটাস নামে এক আততায়ী জুলিয়াস সিজার কে হত্যা করে। এর ফলে ক্লিওপেট্রা রোম থেকে পুনরায় মিশরে চলে আসেন।।


ক্লাস 11 ইতিহাসের আরও নোট পড়তে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করো👇

রানি দুর্গাবতী কে ছিলেন? রানী দুর্গাবতীর কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো। 

চতুর্দশ টলেমিকে বিবাহঃ

• মিশরে আসার পর ক্লিওপেট্রা নিজের ওপর ভাই চতুর্দশ টলেমিকে বিবাহ করেন এবং তিনি আবারও মিশরের শাসন কর্তা হিসেবে নিজের দায়িত্ব তুলে নেন। কিন্তু এক বছরের মধ্যেই তিনি তার ভ্রাতা চতুর্দশ টলেমিকে হত্যা করেন এবং জুলিয়াস সিজারের ঔরসজাত সন্তান পঞ্চদশ টলেমির সঙ্গে যৌথভাবে মিশর শাসন করতে থাকেন। 

মার্ক অ্যান্টনির সঙ্গে বিবাহঃ

কিন্তু কিছু বছর পরে আবারও জুলিয়াস সিজারের বন্ধু এবং রোমান সেনাপতি মার্ক অ্যান্টনি মিশর অভিযান করেন।।কিন্তু তিনি নিজেও ক্লিওপেট্রার প্রেমে আবদ্ধ হন এবং এরপর মিশরের সিংহাসনে বসার উদ্দেশ্যে তিনি ক্লিওপেট্রাকে বিবাহ করেন। কিন্তু এরপরেই ক্লিওপেট্রার জীবনে কালো মেঘের ছায়া নেমে আসে।।

অ্যাকটিয়ামের যুদ্ধঃ মার্ক অ্যান্টনিকে ক্লিওপেট্রাকে বিবাহ করার রোমান সাম্রাজ্যের পরবর্তী শাসক "অক্টাভিয়াস" এতে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। কারণ মার্ক অ্যান্টনি কিছুদিন আগেই তার বোন অক্টাভিয়া মাইনরকে বিবাহ করেছিলেন। এবং এই কাজের জন্য তিনি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে মিশর আক্রমণ করেন। তার এই আক্রমণে এন্টনি এন্ড ক্লিওপেট্রা নৌবহর ধ্বংস হয়। এবং এতে মার্ক অ্যান্টনিকে যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাদল ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং কিভাবে তা একা হয়ে পড়েন। অ্যাকটিয়ামের যুদ্ধ রোমান সম্রাট অক্টাভিয়াস বিজয় লাভ করলে, ক্লিওপেট্রার সন্তান ও জুলিয়াস সিজারের ঔরসজাত সন্তান পঞ্চদশ টলেমি এবং অ্যান্টনির ঔরসজাত সন্তান আলেকজান্ডার হেলিয়সকে হত্যা করেন। এরপর তিনি তাকে বিবাহ করার উদ্যোগ নেন।।


ক্লিওপেট্রার মৃত্যুঃ অ্যাকটিয়ামের যুদ্ধে রোমান সম্রাট অক্টাভিয়াসের জয়লাভ করার পর তিনি ক্লিওপেট্রাকে বিবাহ করার উদ্যোগ নেন।  কিন্তু অক্টাভিয়াসের এই সিদ্ধান্তে ক্লিওপেট্রা মোটেও রাজি ছিলেন না। জীবনে একাধিক পুরুষের আগমন তাকে ভেতর থেকে ঘাত-প্রতিঘাতে ভেতর থেকে ভেঙ্গে ফেলে। এবং এই কারণেই ক্লিওপেট্রা অত্যন্ত শোকাহত হয়ে মাত্র 39 বছর বয়সে অ্যাসপ নামক তীব্র বিষাক্ত সাপের কামড়ে আত্মহত্যা করেন।। অন্যদিকে এই ঘটনার পরে মার্ক অ্যান্টনি নিজেও তরবারির আঘাতে আত্মহত্যা করেছিলেন। বর্তমানে মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরের ক্লিওপেট্রা এবং মার্ক অ্যান্থনির মৃতদেহ সমাধি রয়েছে।।

কৃতিত্বঃ ক্লিওপেট্রা তাঁর রাজত্বকালে নানা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। যেমন- 

• প্রাচীন যুগের একজন নারী হয়েও শাসন ক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্যে তিনি পুরুষদের বিরুদ্ধে শাসন লড়াই-এ অবর্তীন হন। 

• যুদ্ধক্ষেত্রেও তিনি অসীম সাহস ও বীরত্বের পরিচয় দেন। ও মিশরের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য তাঁর অনুরাগ ও প্রয়াস ছিল সম্পূর্ণ আন্তরিক। 

• খ্রিস্টপূর্ব যুগের এক নারী হয়েও ঘটনাবহুল জীবনের জন্য ক্লিওপেট্রা বর্তমান যুগেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বিশ্ব জুড়ে ইতিহাসের হাজারো রহস্যের উন্মোচন হলেও ক্লিওপেট্রা যেন আজও রহস্যময়ী হয়েই থেকে গিয়েছেন। ‘চেয়ে সব কিছুই পাওয়া এবং চেয়ে কিছুই না পাওয়া’— যদি দুটোই জীবনের চরম ট্র্যাজেডি হয়, তবে ক্লিওপেট্রা জীবন নাটকের রঙ্গমঞ্চে আজীবন সেই চরম ট্রাজেডির নায়িকা। এই নায়িকাকে নিয়ে যুগে যুগে তৈরি হয়েছে বহু কল্পকাহিনি, নানা ভাস্কর্য, অঙ্কিত হয়েছে নানা চিত্র। উইলিয়াম শেকসপিয়র রচিত কালজয়ী নাটক ‘অ্যান্টনি ক্লিওপেট্রা' এবং জর্জ বার্নার্ড শ রচিত নাটক ‘সিজার ক্লিওপেট্রা’ তাঁকে নিয়েই রচিত হয়েছে। ক্লিওপেট্রাকে নিয়ে সাহিত্য রচনা করেছেন হেনরি হ্যাগার্ড, ড্রাইডেন প্লুটার্ক, ড্যানিয়েল ও আরও অনেকে।


Tags : WB Class XI History Question Answer & Notes | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | WB Class 11 History Question Answer & Notes | Class 11 History 8 Mark Question Answer | wb Class 11 History Notes | WB Class 11 History Suggestion 2022 | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস 2022 | wb class 11 history question answer & suggestion 2022


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top