রানি দুর্গাবতী কে ছিলেন? রানী দুর্গাবতীর কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো। || WB Class 11 History Question Answer & Suggestion 2022
WB Class 11 History Question Answer & Suggestion 2022 |
আজকের এই ব্লগ পোস্টে আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় ( wb class 11 history chapter 6 ) " সমাজের ঘটনা প্রবাহ " এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " রানি দুর্গাবতী কে ছিলেন? রানী দুর্গাবতীর কার্যাবলী " সম্পর্কে বিস্তারে আলোচনা করবো। তোমাদের সামনের ইতিহাস পরিক্ষার জন্য " রানি দুর্গাবতী কে ছিলেন? রানী দুর্গাবতীর কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো। " প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশ্নটি তোমাদের WB Class 11 History Exam 2020 তে এসেছিল।তাই এই প্রশ্নটি তোমাদের মন দিয়ে পড়া উচিৎ।।
রানি দুর্গাবতী কে ছিলেন? রানী দুর্গাবতীর কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো।
ভূমিকাঃ রানী দুর্গাবতী ছিলেন মধ্যযুগের একজন বিশিষ্ট নারী। ভারতে মুঘল শাসন কালে যে সমস্ত আঞ্চলিক শক্তি গুলির অস্তিত্ব ছিল, তার মধ্যে গন্ডোয়ানা ছিল অন্যতম। মধ্যপ্রদেশের সাগর,দামো,মান্ডালা নর্মদা উপত্যকার বেশ কিছু অঞ্চল নিয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। গন্ডোয়ানার রাজধানী ছিল গড়-কান্টাকা। রানী দুর্গাবতী ছিলেন গন্ডোয়ানার শাসনকর্তা।।
রানী দুর্গাবতীর কার্যাবলী সম্পর্কে জানার আগে, রানী দুর্গাবতী সম্পর্কে আমাদের কিছুটা জেনে নেওয়া দরকার।
• রানী দুর্গাবতী ছিলেন চান্দেল্ল বংশীয় রাজা " কিরাত রাই " এর কন্যা। রানী দুর্গাবতী ছোটবেলা থেকেই বুদ্ধিমান, সাহসী এবং বিচক্ষন ছিলেন।।
• রানী দুর্গাবতী বিবাহযোগ্য হলে গন্ডোয়ানা শাসক সংগ্রাম শাহের পূত্র দলপৎ শাহের সঙ্গে 1542 খ্রিস্টাব্দে রানী দুর্গাবতীর বিবাহ হয়। এবং তাদের দুজনের বিবাহের পর দুর্গাবতী গন্ডোয়ানার রানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।।
WB Class 11 Philosophy এর বিভিন্ন অধ্যায়ের MCQ Question এর ওপর Free Online Mock Test দিতে নিচের লিঙ্ক গুলো ওপর ক্লিক করো👇👇
1- Class 11 Philosophy Free Online Mock Test Part - 1
2- Class 11 Philosophy Free Online Mock Test Part - 1
3- Class 11 Philosophy Free Online Mock Test Part - 1
রানী দুর্গাবতী সিংহাসন লাভঃ দলপৎ শাহের সঙ্গে দুর্গাবতীর বিবাহের ঠিক ৬-৭ বছর পর,যখন তাদের সন্তানদ বীরনারায়ণের বয়স মাত্র ৫, তখন হঠাৎ করেই দলপৎ শাহ অসুস্থ হয়ে যান। এবং তার কিছু সময় পরেই দলপৎ শাহের মৃত্যু ঘটে।এরূপ পরিস্থিতিতে বীরনারায়ণের পক্ষে সিংহাসন সামলানো অসম্ভব ছিল। সেকারনেই রানী দুর্গাবতী বাধ্য হয়েই তিনি গন্ডোয়ানার শাসন ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নেন। এবং গন্ডোয়ানা রানী হিসেবে তিনি সিংহাসনে বসে, গন্ডোয়ানা শাসনকার্য পরিচালনা করতে থাকেন।।।
ক্লাস 11 ইতিহাসের আরও নোট পড়তে নিচের লিঙ্কের ওপর ক্লিক করো👇👇
রানী দুর্গাবতীর কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনাঃ সিংহাসনে বসার পর রানী দুর্গাবতী যথাযথভাবে রাজকার্য পরিচালনা করতে থাকেনম রানী দুর্গাবতী তাঁর তীক্ষ্ণ বুদ্ধি এবং বিচক্ষণতা সাহায্যে গন্ডোয়ানার শাসনব্যবস্থাকে ঠিক রাখেন।
রানী দুর্গাবতী সিংহাসনে বসার পর, বেশকিছু কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছেন।যেমন-
মধ্যযুগের ভারতের একজন শাসিকা হয়েও দুর্গাবতী যে অসামান্য কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন তা এককথায় অতুলনীয়।
• দলপৎ শাহের মৃত্যুর পর গণ্ডোয়ানার চরম দুর্দিনে, যখন গন্ডোয়ানা শাসনব্যবস্থার ভবিষ্যত অজানা ছিল, তখন একজন নারী হয়েও তিনি নিজ দেশের শাসন ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নেন।
• নিজের রাজ্যেকে বিভিন্ন বহিরাগত শক্তির আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে রানী দুর্গাবতী কখনোই ভয় পাননি। বিভিন্ন বহিরাগত আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি সামরিক দক্ষতার পরিচয় দেন।
• বীজ বাহাদুরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পরেও গন্ডোয়ানা রাজকোশে প্রবল অর্থ সংকট দেখা দেয়। এরূপ পরিস্থিতিতে রাজকোশকে পূনরায় শক্তিশালী তুলতে রানী দুর্গাবতী তার তীক্ষ্ণ বুদ্ধি প্রয়োগ করেন। তিনি জোতজারদের কাছ থেকে বল প্রয়োগ করে অর্থ আদায়ের নির্দেশ দেন। এরফলে কিছুদিনের মধ্যেই গন্ডোয়ানার রাজকোশ পুনরায় শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এছাড়াও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে তিনি নিজ রাজকোশ সমৃদ্ধ করেন।
• মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার চেষ্টায় রানি দুর্গাবতী যে অসাধারণ বীরত্বের পরিচয় দিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন এমন নজির ইতিহাসে খুব বেশি পাওয়া যায় না। মোঘল আক্রমণের সময় রানী দুর্গাবতী নিজের মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু শেষ দিকে যখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে যুদ্ধ জয় তার পক্ষে সম্ভব নয়,তখন তিনি অপমানিত হয়ে বেঁচে থাকার থেকে মৃত্যুকেই শ্রেয় বলে মনে করেছিলেন। এজন্যই তিনি 1564 খ্রিস্টাব্দের 24 শে জুন যুদ্ধক্ষেত্রে ছুরিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ ত্যাগ করেন।
• মোগলদের হাতে গণ্ডোয়ানার পরাজয় দিয়ে রানি দুর্গাবতীর কৃতিত্বের বিচার করা অনুচিত হবে। কবি নজরুলের ভাষায় “তোমার মহাবিশ্বে কিছুই হারায় নাকো কভু।” মোগলদের হাতে গণ্ডোয়ানার স্বাধীনতা লুপ্ত হলেও রানি দুর্গাবতীর বীরত্বের কাহিনি হারিয়ে যায়নি। বীরাঙ্গনা দুর্গাবতী আজও ইতিহাসে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়। তাঁর আত্মাহুতির দিনটিকে (২৪ জুন) ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ‘শহিদ দিবস' হিসেবে পালন করা হয়।
তাই,মধ্যে যুগের একজন নারী হিসেবে রানী দুর্গাবতী তার জীবনে যে অসামান্য কৃতিত্বের ছাপ রেখে গেছেন,তা সবসময় ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।।