নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর |
আজের এই পোস্টের মাধ্যমে নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় উনবিংশ শতকের ইউরোপ রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত (WBBSE Class 9 History Question Answer & Notes in Bengali ) অধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ 4 মার্কের প্রশ্ন 'মেটারনিক তন্ত্র বা মেটারনিক ব্যবস্থা কাকে বলে? মেটারনিক ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো বা টীকা লেখো।' এর উওর ( WBBSE Class 9 Question Answer & Suggestion 2023 ) তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। আর আমরা প্রতিদিন তোমাদের জন্য নোটস শেয়ার করে যাবো। তাই তোমরা আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিদিন ভিজিট করতে থাকো।।
মেটারনিক তন্ত্র বা মেটারনিক ব্যবস্থা কাকে বলে? মেটারনিক ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো বা টীকা লেখো।
উওরঃ নেপোলিয়ন বোনাপার্টের পতনের 1815 খ্রিষ্টাব্দের ভিয়েনা সম্মেলনের অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর প্রিন্স মেটারনিক ইউরোপের বা বিশেষ করে অস্ট্রিয়ার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ১৮১৫ এর ভিয়েনা সম্মেলন থেকে শুরু করে ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দ পযর্ন্ত যে কূটনৈতিক ব্যবস্থার প্রচলন করেছিলেন, তাই ইতিহাসে মেটারনিক ব্যবস্থা মেটারনিক বা তন্ত্র নামে পরিচিত।
Read More👇
What Is Car Insurance? Best Car Insurance Plan & Companies সম্পর্কে জানতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন।
What Is Car Insurance | Types Of Car Insurance | Best Car Insurance Plan For You
প্রিন্স মেটারনিক এর মেটারনিক তন্ত্র বা মেটারনিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের কারণঃ
প্রিন্স মেটারনিকের মেটারনিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করার পেছনে একাধিক কারণ ছিল। প্রিন্স মেটারনিক এটা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন যে, বহুজাতিক বৃদ্ধি ও বহুভাষা ভিত্তিক অস্ট্রীয় সাম্রাজ্যে যদি গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রবল হয়ে ওঠে তাহলে, অস্ট্রীয় সাম্রাজ্যের অস্তিত্ব কখনোই টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই তিনি অস্ট্রীয়ার যাএ মধ্যে গণতান্ত্রিক এবং জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্যই তিনি মেটারনিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন।। এবং বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করার মাধ্যমে তিনি ইউরোপ বিশেষ করে অস্ট্রিয়ার অভ্যন্তরে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করেছিলেন।।
মেটারনিক ব্যবস্থার বিভিন্ন দিকঃ
প্রিন্স মেটারনিক মেটারনিক তন্ত্র বা মেটারনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে অস্ট্রীয়ার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে তার উন্নতি সাধন করতে চেয়েছিলেন। তিনি মনে প্রাণে এটা বিশ্বাস করতেন যে যদি অস্ট্রিয়ায় গণতান্ত্রিক, জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রবেশ করে তাহলে অস্ট্রীয়ার অস্তিত্ববেশিদিন থাকবে না। এজন্য তিনি বিভিন্নভাবে জাতীয়তাবাদী ভাবধারা,বিপ্লবী এবং গণতান্ত্রিক ভাবধারা দমন করার চেষ্টা করেছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণঃ
জাতীয়তাবাদী, গণতান্ত্রিক এবং বিপ্লবী ভাবধারা বন্ধ করার জন্য তিনি সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ জারি করেছিলেন। তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যুব সমাজের মধ্যে বিপ্লবী চেতনার উন্মেষ ঘটানোর একমাত্র কেন্দ্রস্থল। সেখান আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে জাতীয়তাবাদী, গণতান্ত্রিক এবং বিপ্লবী ভাবধারার শুরু হয়। তাই এই সমস্ত কিছুকে বন্ধ করতে হলে সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয় গুলির ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ জারি করা উচিত।।
বইপত্রের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণঃ
প্রিন্স মেটারনিক বিপ্লবী গণতান্ত্রিক এবং জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রসার রোধ করার জন্য অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন পাঠ্য পুস্তকের ওপর নিয়ন্ত্রণ জারি করার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন বাইরের দেশ থেকে যে সমস্ত উদারনৈতিক মতবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে পাঠ্যপুস্তক রচনা হতো,অথবা প্রবেশ করতো সেই সমস্ত উদারনৈতিক মতবাদ প্রচারমূলক পুস্তকের বিরুদ্ধেও তিনি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। এছাড়াও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।।
কার্লসবাড ডিক্রিঃ
প্রিন্স মেটারনিক বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলন গুলির দমন করে অভ্যন্তরীণ শান্তি শৃঙ্খলা এবং উন্নতির জন্য কার্লসবাড ডিক্রি জারি করেছিলেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত উদারপন্থী অধ্যাপকদের বরখাস্ত করেছিলেন যাতে তারা ছাত্রমন্ডলীর মধ্যে আর সেরকম কোনো ভাবধারা প্রচার করতে না পারে।।
তীব্র দমননীতিঃ
প্রিন্স মেটারনিক অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে বিভিন্ন তীব্রতম নীতি প্রয়োগ করার পাশাপাশি তিনি ইতালি এবং জার্মানিতেও বিভিন্ন ধরনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। এছাড়া অভ্যন্তরে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক বিরোধের বিভিন্ন সুযোগ নিয়ে তিনি বিভাজন ও শাসন নীতি অবলম্বন করেছিলেন।
প্রাক বিপ্লব অবস্থার রক্ষণাবেক্ষণঃ
গণতান্ত্রিক এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলন থেকে সমস্ত রক্ষা করবার জন্য এবং প্রাক বিপ্লব অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেছিলেন এবং প্রয়োজনে সামরিক সাহায্য প্রেরণের ব্যবস্থাও করেছিলেন।
উপসংহারঃ
প্রিন্স মেটারনিক অস্ট্রিয়ার অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে তার উন্নতির জন্য 1815 থেকে 1848 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত,মেটারনিক যে মেটারনিক ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছিলেন, তা অনেক ক্ষেত্রেই ইউরোপে সাফল্য লাভ করেছিল এবং তার ফলেই ইউরোপের প্রায় 30 বছর শান্তি বজায় ছিল। এবং সেই সময় ইউরোপে আর্থসামাজিক এবং সাংস্কৃতিক যথেষ্ট উন্নতি ঘটেছিল।।
Tags :