ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি কী? || রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের যোগ্যতা, পদ্ধতি,কোটা, বেতন ও মেয়াদ |
দ্বাদশ শ্রেণী রাষ্ট্রবিজ্ঞান সপ্তম অধ্যায় ভারতের শাসন বিভাগের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি কি? বা ভারতের রাষ্ট্রপতি কিভাবে নির্বাচিত হন?,
রাষ্ট্রপতি হতে গেলে কী কী যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন?, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোটা কাকে বলে, ভাতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়, দ্বিতীয় পর্যায় এবং তৃতীয় পর্যায় সহ ভারতের রাষ্ট্রপতির কার্যকালের মেয়াদ এবং তার বেতনসম্পর্কে সমস্ত কিছুই আজকের এই ব্লগে আলোচনা করা হবে।।
আজকের বিষয়ঃ
• ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি কি? বা ভারতের রাষ্ট্রপতি কিভাবে নির্বাচিত হন?
• রাষ্ট্রপতি হতে গেলে কী কী যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন?
• রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোটা কাকে বলে? বা কোটা কিভাবে নির্ধারণ করা হয়?
• রাজ্য বিধানসভার নির্বাচিত সদস্যদের ভোট সংখ্যা নির্ণয়
• ভারতীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোটসংখ্যা নির্ণয়
• একক হস্তান্তর যোগ্যমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোটা নির্ধারণ
• ভারতীয় রাষ্ট্রপতির মাসিক বেতন ও কার্যকাল
• রাষ্ট্রপতি হতে গেলে কী কী যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন?
• রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোটা কাকে বলে? বা কোটা কিভাবে নির্ধারণ করা হয়?
• রাজ্য বিধানসভার নির্বাচিত সদস্যদের ভোট সংখ্যা নির্ণয়
• ভারতীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোটসংখ্যা নির্ণয়
• একক হস্তান্তর যোগ্যমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোটা নির্ধারণ
• ভারতীয় রাষ্ট্রপতির মাসিক বেতন ও কার্যকাল
ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি কী? || রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের যোগ্যতা, পদ্ধতি,কোটা, বেতন ও মেয়াদ
ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি বা ভারতে রাষ্ট্রপতি কিভাবে নির্বাচিত হবেন সেই বিষয়টি নির্দিষ্ট কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি হল -
প্রথমত -রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতাঃ
রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য একজন ব্যক্তির নির্দিষ্ট কয়েকটি বৈশিষ্ট যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। সেগুলি হলো-
আরও পড়ে দেখো👇
• ভারতের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো
• প্রথমত রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।
• দ্বিতীয়ত সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই ৩৫ বছর বয়স্ক হতে হবে।
• তৃতীয়ত রাজ্য সরকার অথবা কেন্দ্রীয় সরকারের কোন লাভজনক পদে সেই ব্যক্তিকে কর্মরত থাকা যাবে না।
• চতুর্থত সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই লোকসভায় নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে।
• পঞ্চমত,১৯৯৭ সালে প্রণীত একটি আইন অনুসারে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য সেই ব্যক্তির নাম অন্ততপক্ষে ৫০ জন নির্বাচক কর্তৃক প্রস্তাবিত এবং 50 জন নির্বাচক কর্তৃক সমর্থিত হতে হবে।এছাড়াও সর্বশেষে রয়েছে, প্রার্থীকে তার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ১৫০০০ টাকা জামানাত রাখতে হবে।
ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রথমত একজন ব্যক্তির মধ্যে এই ছয়টি যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন যদি তার মধ্যে উপরিক্ত কয়েকটি যোগ্যতা থাকে, তবে তিনি রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।।
ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি বা ভারতে রাষ্ট্রপতি কিভাবে নির্বাচিত হন?
ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি মূলত তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়।
• প্রথম ধাপটি হলো প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের রাজ্য বিধানসভা অথবা রাজ্য আইনসভার ভোট সংখ্যা নির্ণয়।
• দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোট সংখ্যা নির্ণয়।
• এবং সর্বশেষ রয়েছে একক হস্তান্তরযোগ্য সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা কোটা নির্ণয়।
ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ হিসেবে রাজ্য বিধানসভার নির্বাচিত সদস্যদের ভোট সংখ্যা নির্ণয়ঃ
ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রথম ধাপ হলো ভারতের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের রাজ্য বিধানসভার নির্বাচিত সদস্যদের ভোট সংখ্যা নির্ণয়। রাজ্য বিধানসভা অথবা রাজ্য আইনসভার প্রত্যেক নির্বাচিত সদস্যদের ভোট সংখ্যা নির্ণয় করার জন্য সর্বপ্রথম সেই অঙ্গরাজের মোট জনসংখ্যাকে রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা দিয়ে ভাগ করতে হবে। এরপর সেই ভাগফলকে পুনরায় এক হাজার দিয়ে ভাগ করতে হবে। এরপর ভাগশেষ যদি ৫০০ বা তার বেশি হয় তবে যে ভাগফল আসবে,তার সঙ্গে 1 যোগ করতে হবে এবং এক যোগ করে যে সংখ্যা পাওয়া যাবে তাই হবে সেই রাজ্য বিধানসভার প্রত্যেক নির্বাসিত সদস্যদের ভোট মূল্য।
সুতরাং, মোটজনসংখ্যা ÷ রাজ্য বিধানসভার নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা = ভাগফল
আবার., ভাগফল ÷ 1000
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্যায়ে হিসেবে পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোট সংখ্যা নির্ণয়ঃ
ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্যায় হল পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোট সংখ্যা নির্ণয়। এই পর্যায়ে ভারতের মোট অঙ্গরাজ্যের প্রতিটি বিধানসভার নির্বাচিত সদস্যদের ভোটসংখ্যাকে একত্রে যোগ করতে হবে। এরপর যে যোগফল পাওয়া যাবে সেই যোগফলকে ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ বা রাজ্যসভা এবং নিম্ন কক্ষ বা লোকসভার মোট সদস্য সংখ্যা দ্বারা ভাগ করতে হবে। এখানে ভাগশেষ যদি ভাজক সংখ্যার অর্ধেক বা তার বেশি হয় তবে ভাগফলের সঙ্গে এক যোগ করে যে সংখ্যা পাওয়া যাবে,তা হবে পার্লামেন্টের প্রতিটি নির্বাচিত সদস্যদের ভোটের মূল্য।
সুতরাং,সমস্ত রাজ্য বিধানসভা গুলির সদস্যদের ভোটের মোট মূল্য ÷ ভারতীয় সংসদ পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের সদস্যদের মোট সংখ্যা
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তৃতীয় পর্যায়ে হিসেবে একক হস্তান্তরযোগ্য সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বঃ
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের একটি তৃতীয় বা সর্বশেষ পর্যায় এই পর্যায়ে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তৃতীয় পর্যায়ে একটি কোটা তৈরি করা হয় এবং সেই কোটা পযর্ন্ত যেউ প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোট পৌঁছতে পারে, তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোটা কি বা কোটা কিভাবে তৈরি করা হয়?
রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য যতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন, তাদের প্রত্যেককেই প্রত্যেক ভোটদানকারী অর্থাৎ সংসদ এবং বিধায়ক ভোট দিয়ে থাকেন। একজন ভোটদাতা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে যতজন প্রার্থী থাকবেন, তাদেরকে ভোটদাতা নিজের পছন্দমত প্রথম পছন্দ,দ্বিতীয় পছন্দ, তৃতীয় পছন্দ, চতুর্থ পছন্দ এইভাবে তার ভোট দিয়ে থাকেন। এভাবে যখন প্রার্থী রয়েছেন, তাদের সকলের প্রথম পছন্দের ভোটগুলিকে একত্রে যোগ করা হয়। এইভাবে যে যোগফল পাওয়া যায় সেই যোগফল কে দুই দিয়ে ভাগ করা হয় এবং ভাগফলের সঙ্গে এক যোগ করে যে সংখ্যা পাওয়া, যায় তাকে কোটা বলা হয়।
বিষয়টিকে একটি উদাহরণের সাহায্যে বোঝানো যেতে পারে। ধরা যাক, রাষ্ট্রপতি-পদের প্রার্থীর সংখ্যা চার। প্রার্থীরা হলেন রাম, শ্যাম, যদু ও মধু | প্রথম গণনায় দেখা গেল সকলের প্রথম পছন্দের মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা এক লক্ষ | অতএব, কোটা হল ১,০০,০০০ + ২ + ১ = ৫০,০০১।
কোটার সাহায্য কিভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হয়?
ধরা যাক, রাম পেয়েছেন ৪৫,০০০, শ্যাম পেয়েছেন ৩৫,০০০, যদু পেয়েছেন ১১,০০০ এবং মধু পেয়েছেন ৯,০০০ মূল্যের ভোট। তাহলে দেখা যাচ্ছে, কোনো প্রার্থী কোটা পাননি। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী সবচেয়ে কম প্রথম পছন্দের ভোট যিনি পেয়েছেন অর্থাৎ মধুকে বাদ দিতে হবে এবং মধুর প্রাপ্ত ৯০০০ ভোটকে দ্বিতীয় পছন্দ অনুযায়ী রাম, শ্যাম ও যদুর কাছে হস্তান্তর করতে হবে। ধরা যাক, ৯০০০ ভোটের মধ্যে রাম পেয়েছেন ৫,০১০ দ্বিতীয় পছন্দের ভোট, শ্যাম পেয়েছেন ২,০০০ দ্বিতীয় পছন্দের ভোট এবং যদু পেয়েছেন ১,৯৯০ দ্বিতীয় পছন্দের ভোট। এর ফলে রাম-এর প্রথম ও দ্বিতীয় পছন্দের ভোটের যোগফল দাঁড়াচ্ছে ৫০,০১০, শ্যাম-এর প্রথম ও দ্বিতীয় পছন্দের ভোটের যোগফল দাঁড়াচ্ছে ৩৭,০০০ এবং যদুর প্রথম ও দ্বিতীয় পছন্দের ভোটের যোগফল দাঁড়াচ্ছে ১২,৯৯০। সুতরাং, রাম কোটা সংখ্যক ভোট পাওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীরূপে ঘোষিত হবেন।
যদি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন ক্ষেত্রেই কোটা সংখ্যক ভোট না পাওয়া যায়, দ্বিতীয় পছন্দের ভোটের ভিত্তিতে কোটা সংখ্যক ভোটে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হয়। এবং এইভাবে রাষ্ট্র নির্বাচিত হয়ে থাকে।।
প্রশ্নঃ ভারতের রাষ্ট্রপতি কয় বছরের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন?
উওরঃ ভারতের রাষ্ট্রপতি পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন। অর্থাৎ ভারতের রাষ্ট্রপতির কার্যকালের মেয়াদ হল পাঁচ বছর।
প্রশ্নঃ ভারতের রাষ্ট্রপতির বেতন কত?
উওরঃ ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ভারতের রাষ্ট্রপতির যে মাসিক বেতন ঠিক করা হয়েছে তা হল ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। রাষ্ট্রপতি এই মাসিক বেতন ছাড়াও বিভিন্ন বেতন ভাতা ও সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন।।
আশাকরি যে, ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি কী? || রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের যোগ্যতা, পদ্ধতি,কোটা, বেতন ও মেয়াদ সম্পর্কে যে নোটটি শেয়ার করা হলো, তা তোমাদের কাজ লাগবে।
Tags : HS Political Science Question Answer 2023 | WBCHSE Class 12 Political Science Question Answer 2023 | দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর | উচ্চ মাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর | ভারতের শাসন বিভাগ প্রশ্ন উত্তর 2023