ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সুভাষচন্দ্র বসু ও আজাদ হিন্দ ফৌজের অবদান লেখো।

0

 

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সুভাষচন্দ্র বসু ও আজাদ হিন্দ ফৌজের অবদান লেখো।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সুভাষচন্দ্র বসু ও আজাদ হিন্দ ফৌজের অবদান লেখো।



আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় বা উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং উপনিবেশ সমূহ (WBCHSE Class 12 History Question Answer & Suggestion 2023) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সুভাষচন্দ্র বসু ও আজাদ হিন্দ ফৌজের অবদান লেখো।' প্রশ্নটির উওর ( wb class 12 modern history notes ) তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এবং উচ্চমাধ্যমিক সহ অন্যান্য ক্লাসের নোটস (class 12 history notes and suggestion ) পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে থাকো।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সুভাষচন্দ্র বসু ও আজাদ হিন্দ ফৌজের অবদান লেখো।

ভূমিকাঃ ভারতের স্বাধীনতা লাভের পেছনে যাদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি তাদের মধ্যে সুভাষচন্দ্র বসু হলেন উল্লেখযোগ্য এবং সে কারণে সুভাষচন্দ্র বসু এবং তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আজাদ হিন্দ বাহিনী বা আজাদ হিন্দ ফৌজের নাম সারা জীবনই ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রতিষ্ঠা ও সঠিক গঠনঃ 

অনেকেই মনে করেন যে আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রতিষ্ঠাতা হলেন সুভাষচন্দ্র বসু। কিন্তু আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হলেন প্রখ্যাত ভারতীয় বিপ্লবী রাজবিহারী বসু। তিনি ব্যাংককে থাকাকালীন, প্রবাসী ভারতীয়দের নিয়ে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ১৫ই জুন ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লীগ বা ভারতীয় স্বাধীনতা সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন যার সভাপতি ছিলেন রাজবিহারী বসু নিজেই। এরপর ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ১ লা সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করা হয়। 

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজের পুনর্গঠনঃ 

নেতাজী ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে ভারত ছাড়েন। এরপর তিনি জার্মানি এবং জাপান হয়ে তিনি সিঙ্গাপুরে আসেন এবং সেখানে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৪ই জুলাই রাসবিহারী বসু নেতাজির হাতে আজাদ হিন্দ বাহিনীর নেতৃত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেন। এরপর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আজাদ হিন্দ বাহিনী পুনর্গঠনের কাজে হাত দেন। তিনি আজাদ হিন্দ বাহিনীকে কয়েকটি ব্রিগেডে ভাগ করেন। যেমন-গান্ধী ব্রিগেড,আজাদ ব্রিগেড, নেহেরু ব্রিগেড,লক্ষ্মী স্বামীনাথনের নেতৃত্বে তিনি তুলে দেন ঝাসির রানী ব্রিগেড এবং সব গঠন হয় সুভাষ ব্রিগেড।  এই পাঁচটি ব্রিগেডের সেনাধ্যক্ষ ছিলেন সাহনওয়াজ খান এবং গুরুবক্স সিং ধিলান এবং প্রেম কুমার সেহগল। 

আজাদ হিন্দ বাহিনীর ভারত আক্রমণঃ

জাপানসহ আরো আটটি রাষ্ট্র দ্বারা স্বীকৃত  হওয়ার পর জাপানের সহযোগিতায় এই বাহিনী সর্বপ্রথম রেঙ্গুনে আসে এবং সেখানে সুভাষচন্দ্র বসুর সামরিক কেন্দ্র স্থাপিত হয়। এরপর সুভাষচন্দ্র বসু তারা আজাদ হিন্দ বাহিনীকে নিয়ে মণিপুরের কোহিমা শহরে আক্রমণ করে সেটি দখল করেন।  এরপর তারা মনিপুরের রাজধানী ইমপোর্ট শহরের দিকে অগ্রসর হন আজাদ হিন্দ বাহিনী অভিযান চালিয়ে ভারতের সীমানা থেকে প্রায় ১৫০ মাইল অভ্যন্তর পর্যন্ত ব্রিটিশ শাসন মুক্ত করতে সক্ষম হয়। 

আজাদ হিন্দ বাহিনীর পরাজয়ঃ

আজাদ হিন্দ বাহিনী প্রথম দিকে যেভাবে তাদের আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিল তাতে ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসন উৎখাত হওয়ার সম্ভব না ছিল প্রবল। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের শক্তি কমতে হয়ে  শুরু করলে আজাদ হিন্দ বাহিনী সম্পূর্ণ ভাবে জাপানের সাহায্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অন্যদিকে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সেনাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্য, অস্ত্রশস্ত্রের অভাব, পাহাড়ি অঞ্চলের বিষাক্ত পোকামাকড়, ম্যালেরিয়া, প্রচন্ড শীত ইত্যাদির কারণে তারাও খুবই দুর্বল হয়ে পড়তে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত সুভাষচন্দ্র বসু এক বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হয়ে গেলে আজাদ হিন্দ বাহিনী সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ে এবং অনেক সেনাই ব্রিটিশ সরকারের হাতে ধরা পড়ে। এবং এভাবে আজাদ হিন্দ বাহিনীর মহান উদ্দেশ্য অসফল হয়। 

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সুভাষচন্দ্র বসু এবং আজাধীন বাহিনীর গুরুত্বঃ

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ক্ষেত্রে সুভাষচন্দ্র বসু যদি না থাকতেন তাহলে হয়তো  ভারতের স্বাধীনতা লাভের ইতিহাস আলাদা হতো। ভাত কে স্বাধীনতা পাইয়ে দেওয়ার জন্য সুভাষচন্দ্র বসু ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে ভারত থেকে জার্মানিতে যান এবং সেখানে জার্মানি রাষ্ট্রপ্রধান হিটলারের কাছে সাহায্য চান। হিটলার এবং মুসোলিঞ্জ সুভাষচন্দ্র বসুকে ভারতের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সাহায্য দান করার কথা বললেও বাস্তবে তা হয়নি। এরপর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ভারতের স্বাধীনতা লাভের জন্য জাপানে আসেন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিদেকি তোজোর কাছে সাহায্য চান। জাপান নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে সবদিক থেকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দান করে। এবং জাপানের প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু তার আজাদ হিন্দ বাহিনীকে নিয়ে ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। যদিও সুভাষচন্দ্র বসু এবং তার আজাদ হিন্দ ফৌজের সেই উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছিল কিন্তু তবুও তা ভারতের স্বাধীনতা লাভের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ- 

• সুভাষচন্দ্র বসু এবং আজাদ হিন্দ বাহিনীর সেই আক্রমণে তারা ভারতের আংশিক স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে পেরেছিলেন। 

• সেই আক্রমণে দ্বারা ভারতে ব্রিটিশ সরকারের ভীত অনেকটাই নড়বড় হয়ে পড়েছিল। 

• আজাদ হিন্দ বাহিনীর সেনাদের নিজেদের দেশের প্রতি সেই আত্ম বলিদান দেখে পরবর্তীতে ভারতে জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম আরো শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। এবং তা বিভিন্ন সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।।


Tags : 

Class 12 history notes | hs history suggestion  class 12 history question answer and suggestion 2023 | modern indian history question answer | modern Indian history notes | history question answer of modern India | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উওর এবং সাজেশন | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং উপনিবেশসমূহ অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর | wb class 12 History question answer  | hs History question answer | উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং উপনিবেশসমূহ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top