উদারনীতিবাদ এবং মার্কসবাদের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো || WB Class 12 Political Science Question Answer & Notes

0

 

উদারনীতিবাদ এবং মার্কসবাদের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো || WB Class 12 Political Science Question Answer & Notes
WB Class 12 Political Science Question Answer & Notes


আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় বা উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় কয়েকটি প্রধান রাজনৈতিক মতাদর্শের (WBCHSE Class 12 Political Science Question Answer Chapter 1 In Bengali )  একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় "উদারনীতিবাদ এবং মার্কসবাদের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো || WBCHSE Class 12 Political Science Question Answer & Notes" এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। 


উদারনীতিবাদ এবং মার্কসবাদের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো || WB Class 12 Political Science Question Answer & Notes


রাষ্ট্রের কার্যকলাপ এবং রাষ্ট্রের প্রকৃতি সম্পর্কে উদারনীতিবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ মতবাদ। সামন্ততান্ত্রিক স্বৈরাচারী শাসন এবং বিভিন্ন বাধা-নিষেধের পরেও ১৭ শতকে ইংল্যান্ডে বিপ্লবের মাধ্যমে উদারনীতিবাদের জন্ম হয়। উদারনীতিবাদের মূল কথা হলো সাধারণত রাষ্ট্রের কার্যকলাপ এবং রাষ্ট্রের কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে ব্যক্তির স্বাধীনতার নীতি প্রতিষ্ঠা করা। 

             অপরদিকে রাষ্ট্র সম্পর্কে মার্কসবাদ হল একটি বিজ্ঞানসম্মত এবং মৌলিক মতবাদ।  মার্কস তার নির্দিষ্ট কোনো একটি গ্রন্থে মার্কসীয় চিন্তাধারা প্রকাশ করেননি। তিনি মূলত বিভিন্ন ধরনের গ্রন্থ রচনা করে তার মার্কসীয় রাষ্ট্রচিন্তা প্রকাশ করেছেন।  এক্ষেত্রে লেলিনের রচিত State And Revolution গ্রন্থে মার্কসীয় রাষ্ট্রচিন্তাকে সমৃদ্ধ করেছে। 
এই দুই ধরনের রাষ্ট্রচিন্তার মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন- 

দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্যঃ- 

মার্কসীয় তত্ত্বে শ্রেণীগত দৃষ্টিভঙ্গিতে রাষ্ট্রের প্রকৃতিকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। মার্কসীয় ধারণা অনুসারে শ্রেণী বৈষম্য মূলক সমাজে রাষ্ট্র হল শ্রেণী শাসনের হাতিয়ার। ঐতিহাসিক বস্তবাদের মাধ্যমে মার্কসবাদীরা দেখিয়েছেন যে, দাস প্রভুরা,সামন্ত প্রভুরা এবং পুজিঁপতি মালিকরা কিভাবে রাষ্ট্রের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থে রাষ্ট্রকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।  অপরদিকে উদারনীতি বাদে রাষ্ট্রকে কখনোই এভাবে উপস্থাপিত করা হয়নি উদারনীতি বাদে মতবাদ অনুসারে রাষ্ট্র হলো শ্রেণীমঙ্গলের প্রকাশ। 

বিপ্লবের প্রশ্নের পার্থক্যঃ- 


মার্কসীয় তত্ত্বে বিপ্লবের মাধ্যমে রা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।  পুঁজিবাদী থেকে সমাজতন্ত্রের উত্তরণের পূর্বে বিপ্লব অনিবার্য বলে রাষ্ট্র সম্পর্কে মার্কসীয় তত্ত্বের ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু অপরপক্ষে উদারনীতিবাদীরা এরূপভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের কথা বলেননি। উদারনীতিবাদীরা মূলত শান্তিপূর্ণভাবে সাংবিধানিক উপায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় হাত বদলের কথা বলেছেন। 

অবাধ বাণিজ্য নীতি প্রশ্নের পার্থক্যঃ- 


মার্কসীয় মতবাদ অনুসারে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর উৎপাদন ব্যবস্থায় ব্যক্তি মালিকানার অবসান ঘটবে এবং সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবে। তখন সেই সমাজতান্ত্রিক সমাজে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পুরোপুরিভাবে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কিন্তু অপরদিকে উদারনৈতিক রাষ্ট্র তত্ত্বে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে 'অবাধনীতি' অনুসরণের পক্ষে জোড়ালো সওয়াল করা হয়।

প্রাকৃতিক অধিকার সম্পর্কিত পার্থক্যঃ- 


মার্কসীয় তত্ত্বে প্রাকৃতিক অধিকার স্বীকার করা হয়নি। ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিকানার অবসানের লক্ষ্যে মার্কসীয় তত্ত্বের সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে। 
অপরদিকে উদারনৈতিক মতবাদে মানুষের প্রাকৃতিক অধিকারের কথা স্বীকার করা হয়েছে। উদারনীতিবাদীদের মতে ব্যক্তির জীবন, সম্পত্তির মতেই ব্যক্তির প্রাকৃতিক অধিকার গুলি সংরক্ষণ করার জন্যই মানুষ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের সৃষ্টি করেছে।  উদারনীতিবাদীরা প্রাকৃতিক অধিকার তত্ত্বের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছিল। 

রাষ্ট্রের ভূমিকার প্রশ্ন পার্থক্যঃ- 


উদারনীতি বাদে রাষ্ট্রের কর্মপতিকে সীমিত করে এক নূন্যতম কর্মসূচি সম্পন্ন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়। অপরদিকে মার্কসীয় তথ্যের রাষ্ট্রের কর্মপরিদিকে এভাবে সংকুচিত করতে চাওয়া হয়নি।  পুঁজিবাদী ব্যবস্থার পতনের পরে গড়ে ওঠা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে এক্ষেত্রে সাম্যবাদে উত্তরণের সোপান বলে মনে করা হয়েছে।

ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রশ্নে পার্থক্যঃ-


উদারনৈতিক রাষ্ট্র দর্শনের মূল কথা হল ব্যক্তি স্বাধীনতা। উদারনীতিবাদীরা বিশ্বাস করেন, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ব্যক্তির জন্য ব্যক্তি রাষ্ট্রের জন্য নয়। উদারনীতিবাদে এইভাবে ব্যক্তি জীবনে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের প্রতি তীব্র বিরোধিতা করা হয়। অপরদিকে মার্কসীয় মতবাদে ব্যক্তির চেয়ে সমাজতান্ত্রিক সমষ্টিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
উপসংহার, পরিশেষে বলা যায়- রাষ্ট্রের প্রকৃতি সম্পর্কে উদারনৈতিক মতবাদ এবং মার্কসীয় ধ্যান ধারণা দুটি ভিন্নধর্মী দর্শনের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। রাষ্ট্র সম্পর্কে এই দুটি ধারণার ক্ষেত্রে মৌলিক স্বাতন্ত্র রয়েছে।।

আশাকরি, দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিবর্তন এবং কয়েকটি মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসাবে যে উদারনীতিবাদ এবং মার্কসবাদের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো || WBCHSE Class 12 Political Science Question Answer & Notes" উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে তা তোমাদের কাজে লাগবে।।

Tags : 

দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উওর | দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় কয়েকটি প্রধান রাজনৈতিক মতাদর্শের বড় প্রশ্ন উত্তর | pol science notes | pol science suggestion | pol science question answer | pol science saq | pol science pdf | pol science question answer 2023 |wb class 12 political science question answer  | wb class xii political science question answer | hs political science  question answer & notes in Bengali | wbbse class 12 political science chapter 1 question answer in Bengali 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top