একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় সমাজের ঘটনাপ্রবাহের প্রশ্ন উত্তর || WB Class 11 History Question Answer & Suggestion 2023

0

 

একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় সমাজের ঘটনাপ্রবাহের প্রশ্ন উত্তর || WB Class 11 History Question Answer & Suggestion 2023
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় সমাজের ঘটনাপ্রবাহের প্রশ্ন উত্তর

আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় (wb class 11 history question answer chapter 6 in Bengali) সমাজের ঘটনা প্রবাহ ( wb class 11 history question answer and suggestion 2023) থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ class 11 history mcq question answer, modern Indian history saq question answer, and wb class 11 history LA Question Answer And History Notes তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এর আগের পোস্টে আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস সাজেশন 2022-23 তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম। এবং তারপর আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস সাজেশন 2022-23 হিসেবে যে সমস্ত প্রশ্ন রেখেছিলাম, আর তার বেশিরভাগ প্রশ্নের উত্তর আমাদের ওয়েবসাইটে করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা চাইলে তার উওর সেখান থেকে দেখে নিতে পারো।।


একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় সমাজের ঘটনা প্রবাহ প্রশ্ন উত্তর | WB Class 11 History MCQ Question Answer

একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় সমাজের ঘটনা প্রবাহ প্রশ্ন উত্তর | WB Class 11 History MCQ Question Answer
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় প্রশ্ন উওর

একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় সমাজের ঘটনা প্রবাহ প্রশ্ন উত্তর | WB Class 11 History MCQ Question Answer

1. ভারতে বর্ণপ্রথার সূচনা হয়েছিল—

A- ঋগ্‌বৈদিক যুগে

B- পরবর্তী বৈদিক যুগে

C- মহাকাব্যের যুগে 

D- প্রতিবাদী আন্দোলনের যুগে 

উওর : ঋগ্‌বৈদিক যুগে


2. গ্রিসের নগর-রাষ্ট্রগুলির মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছিল—

A- এথেন্স

B- স্পার্টা

C- থিবস

D- বিওসিয়া

উওর : স্পার্টা


3. সর্বপ্রথম দাসবাজার গড়ে উঠেছিল—

A এথেন্সে

B- স্পার্টায়

C- ডেলস-এ

D- কিওস-এ

উওর : স্পার্টায়


4. পতিত ক্ষত্রিয় বলা হয়—

A- ব্রাত্যদের

B- নিষাদদের

C- চণ্ডালদের

D- বহিরাগত কয়েকটি অনার্য জাতিকে

উওর : বহিরাগত কয়েকটি অনার্য জাতিকে


5. অর্থশাস্ত্রে কয় প্রকার বিবাহরীতির উল্লেখ আছে? -

A- ৪ প্রকার

B- ৫ প্রকার

C- ৮ প্রকার 

D- ১২ প্রকার

উওর :  ৮ প্রকার 


6. নারী সর্বোচ্চ কী পরিমাণ স্ত্রীধন নিজের কাছে রাখতে পারত? 

A- ২০০০ পণ 

B- ৩০০০ পণ 

C- ৪০০০ পণ 

D- ৬০০০ পণ

উওর : ২০০০ পণ 


7. নেফারতিতি ও ক্লিওপেট্রা কোন্ দেশের নারী ছিলেন?

A- গ্রিসের

B- মিশরের

C- পারস্যের

D- রোমের 

উওর : মিশরের।


8.ক্লিওপেট্রা কীভাবে আত্মহত্যা করেন?

A- বিষপান করে।

B- সর্পাঘাতে

C- তরবারির আঘাতে

D- আগুনে ঝাঁপ দিয়ে

উওর : সর্পাঘাতে


9. রানি দুর্গাবতী কীভাবে আত্মহত্যা করেন? 

A- বিষপান করে

B- তরবারির আঘাতে

C- আগুনে ঝাঁপ দিয়ে

D- সর্পাঘাতে

উওর : তরবারির আঘাতে


10. রাজিয়া যুদ্ধে কার হাতে বন্দি হয়েছিলেন?

A-আইতিগিনের

B- আলতুনিয়ার

C- বলবনের

D- জুনাইদির

উওর : আলতুনিয়ার


11. প্রাচীন গ্রিসের ক্রীতদাসদের নিয়োগ করা হত—

[i] গৃহকার্যে [ii] খনির কাজে

[iii] কৃষিকাজে [iv] শিক্ষাদানের কাজে

A-[i], [ii], [iii] সঠিক এবং [iv] ভুল।

B-[ii], [iii], [iv] সঠিক এবং [i] ভুল।

C-[i], [iii], [iv] সঠিক এবং [ii] ভুল।

D- [i], [ii], [iv] সঠিক এবং [iii] ভুল।

উওর : A- [i], [ii], [iii] সঠিক এবং [iv] ভুল।


12. স্পার্টার সমাজে প্রধান স্তরগুলি ছিল—

[i] 'স্প্যার্টিয়েট [ii] পেরিওকয়

[iii] হেলট [iv] মেটিক

বিকল্পসমূহ,

A- [i], [ii], [iii] সঠিক এবং [iv] ভুল।

B- [ii], [iii], [iv] সঠিক এবং [i] ভুল।

888

C- [i], [iii], [iv] সঠিক এবং [ii] ভুল। D- [i], [ii], [iv] সঠিক এবং [iii] ভুল।

উওর : A- [i], [ii], [iv] সঠিক এবং [iii] ভুল।


13. বৈদিক সমাজে ‘পঞ্চম শ্রেণি’র অন্তর্ভুক্ত ছিল—

[i] শূদ্র [ii] মুচি [iii] মেথর [iv] বৈশ্য

বিকল্পসমূহ, 

A-[i], [ii] সঠিক এবং [iii], [iv] ভুল। 

B- [ii], [iii] সঠিক এবং [i], [iv] ভুল।

C- [iii], [iv] সঠিক এবং [i], [ii] ভুল। D- [i], [iv] সঠিক এবং [ii], [iii] ভুল।

উওর : B- [ii], [iii] সঠিক এবং [i], [iv] ভুল।


14. মেগাস্থিনিসের ‘সপ্তজাতিতত্ত্বে’ উল্লিখিত অন্যতম জাতি হল—

[i] বৈশ্য [ii] ক্ষত্রিয় [iii] দার্শনিক [iv] কৃষক

বিকল্পসমূহ •

A-[i], [ii] সঠিক এবং [iii], [iv] ভুল। B- [ii], [iii] সঠিক এবং [i], [iv] ভুল।

C-[iii], [iv] সঠিক এবং [i], [ii] ভুল। D- [i], [iv] সঠিক এবং [ii], [iii] ভুল।

উওর : C-[iii], [iv] সঠিক এবং [i], [ii] ভুল


15. ভারতীয় জাতিব্যবস্থার সূচনালগ্নে সমাজ-বহির্ভূত অন্ত্যজ জাতি ছিল— [i] শূদ্র [ii] মেথর [iii] ব্রাত্য [iv] নিষাদ

বিকল্পসমূহ •

A- [i], [ii] সঠিক এবং [iii], [iv] ভুল।

B-[ii], [iii] সঠিক এবং [i], [iv] ভুল।

C- [iii], [iv] সঠিক এবং [i], [ii] ভুল।

D- [i], [iv] সঠিক এবং [ii], [iii] ভুল।

উওর : A- [i], [ii] সঠিক এবং [iii], [iv] ভুল।


16. প্রাচীন গ্রিসের অধিকাংশ ক্রীতদাস আসত—

A- যুদ্ধবন্দিদের মধ্য থেকে

B- জলদস্যুদের আক্রমণে বন্দি হওয়া মানুষদের মধ্য থেকে


C- ঋণ পরিশোধে অক্ষম ব্যক্তিদের মধ্য থেকে 

D- বিদেশ থেকে আমদানি করে

উওর : যুদ্ধবন্দিদের মধ্য থেকে


17. কৃষিকাজে নিযুক্ত গ্রিসের ক্রীতদাসরা—

A- ধানচাষ করত

B- পশুচারণ করত

C- প্রভুর গোলাঘরের রক্ষণাবেক্ষণ করত 

D- আঙুরের রস ও জলপাইয়ের তেল নিষ্কাশন করত

উওর : আঙুরের রস ও জলপাইয়ের তেল নিষ্কাশন করত


18. গ্রিসের পেরিওকয়দের সম্পর্কে বলা যায় যে - 

A- তারা ছিল গ্রিসের সর্বাধিক শোষিত শ্রেণি

B- তারা স্বাধীন নাগরিক ও হেলটদের মধ্যবর্তী স্তরে অবস্থান করত 

C- পেরিওকয় ও ক্রীতদাসরা সমপর্যায়ভুক্ত ছিল।

D- তারা সেনাবাহিনীতে যোগদানের অধিকার পোষ

উওর : তারা স্বাধীন নাগরিক ও হেলটদের মধ্যবর্তী স্তরে অবস্থান করত।


19. প্রাচীন ভারতে -

A- হরপ্পা সভ্যতার যুগে জাতিব্যবস্থার উদ্ভব ঘটেছিল

B- জাতিব্যবস্থা থেকে বর্ণপ্রথার উদ্ভব হয়েছিল। 

C- বৈদিক বর্ণপ্রথা থেকে জাতিব্যবস্থার উদ্ভব ঘটেছিল

D- গুপ্তযুগে জাতিব্যবস্থার উদ্ভব ঘটেছিল 

উওর : বৈদিক বর্ণপ্রথা থেকে জাতিব্যবস্থার উদ্ভব ঘটেছিল


20- প্রাচীন ভারতে ব্রাত্য ও নিষাদ ছিল—

A- বৈদিক বর্ণপ্রথার অন্তর্ভুক্ত দুটি জাতি

B- সমাজ-বহির্ভূত দুটি জাতি

C- শূদ্রবর্ণের দুটি শাখা

D- পঞ্চম শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত

উওর : সমাজ-বহির্ভূত দুটি জাতি


21- 

21. রাজপুত জাতির উৎপত্তি সম্পর্কিত ‘অগ্নিকুল তত্ত্ব অনুসারে

A- রাজপুতরা ছিল হল খাঁটি আর্য জাতির সন্তান

B-  রাজপুতরা ছিল বিদেশি জাতির বংশধর 

C- রাজপুতরা ছিল মিশ্রজাতি

D- বশিষ্ঠ মুনির যজ্ঞ থেকে রাজপুতদের উৎপত্তি হয়েছিল 

উওর : বশিষ্ঠ মুনির যজ্ঞ থেকে রাজপুতদের উৎপত্তি হয়েছিল


22. হেলটরা ছিল_____ক্রীতদাস।

A- এথেন্সের

B- স্পার্টার

C- এটিকার

D- সিসিলির

উওর : স্পার্টার


23.  দাসবাজারে হাজির করা ক্রীতদাসের বিবরণ লেখা থাকত তাঁর - 

A- বুকে ঝোলানো বোর্ড-এ

B- হাতে ধরা কার্ডে

C-  কার্ডে 

D- বিক্রেতার খাতায়

উওর : বুকে ঝোলানো বোর্ড-এ


24. স্পার্টার সামাজিক কাঠামোতে

সবচেয়ে নির্যাতিত ছিল- 

A- পেরিওকয় 

B- মেটিক

C- স্প্যার্টিয়েট

D- হেলট

উওর : হেলট


25. ভারতে বৈদিক সমাজে___টি বর্ণের অস্তিত্ব ছিল।

A- ৪ 

B- ৫ 

C- ৮ 

D- ১২

উওর : ৪


26. ‘ব্রাত্য’ জাতির ধর্ম ছিল - 

A- বৈদিক ধর্ম 

B- বৌদ্ধধর্ম 

C- শৈবধর্ম

D- বৈষ্ণবধর্ম

উওর : শৈবধর্ম


27- সুলতানি যুগের একমাত্র নারী শাসক ছিলেন - 

A- মমতাজ

B- নূরজাহান

C- লাডলি বেগম

D- রাজিয়া

উওর : রাজিয়া


WB Class 11 History Question Answer & Notes 2023 || একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর

ক্রীতদাস বলতে কি বোঝো? প্রাচীনকালে ক্রীতদাস সৃষ্টির বিভিন্ন পদ্ধতি গুলি সম্পর্কে আলোচনা || একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর


ক্রীতদাস বলতে কি বোঝো? প্রাচীনকালে কিভাবে ক্রীতদাস সৃষ্টি বা তৈরি করা হতো? || একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর

ক্রীতদাস বলতে কী বোঝায়? 

উওর : যখন কোনো ব্যক্তির মধ্যে সেই সমস্ত লক্ষন আরোপ করা হয়, যার মাধ্যমে তাকে একপ্রকার সম্পত্তি বলে বিবেচনা করা হয়, তখন তাকেই ক্রীতদাস বলা হতো।।  সাধারণভাবে সম্পত্তি বলতে যা বোঝায়, তার সকল বা আংশিক বৈশিষ্ট্য যদি কোন ব্যক্তির মধ্যে লক্ষ্য করা যায় তবে সেই ব্যক্তিকে ক্রীতদাস বলে গণ্য করা হয়।

অর্থাৎ খুব সাধারণভাবে ক্রীতদাস বলতে যেকোনো ধরনের সামাজিক, ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় অধিকারহীন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়।। ক্রীতদাস একজন বা একাধিক মালিকের সম্পত্তি বলে বিবেচিত হতো। প্রাচীনকালে মিশরিয়, রোম সাম্রাজ্যে ব্যাপকভাবে ক্রীতদাসপ্রথার অস্তিত্ব ছিল।।

প্রাচীনকালে কিভাবে ক্রীতদাস সৃষ্টি বা তৈরি হতো? বা প্রাচীনকালে ক্রীতদাস সৃষ্টির বিভিন্ন পদ্ধতি গুলির আলোচনাঃ

প্রাচীনকালে বিভিন্ন সাম্রাজ্যে যে ক্রীতদাসপ্রথার অস্তিত্ব ছিল, সেখানে ক্রীতদাসরা বিভিন্নভাবে তৈরি হতো।  একজন সাধারণ ব্যক্তি থেকে একজন ক্রীতদাসে পরিণত হওয়ার নানা উপায় ছিল। একজন সাধারণ ব্যক্তি থেকে ক্রীতদাসে পরিণত হওয়ার নানা পদ্ধতি গুলির মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি হলো -

যুদ্ধবন্দিঃ প্রাচীন কালে বিভিন্ন সাম্রাজ্যে ক্রীতদাস তৈরি করার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপায়টি হলো যুদ্ধবন্দীদের ক্রীতদাসে পরিণত করা। একটি রাজ্যেকে যদি কোনো রাজা জয় করতো,তাহলে রাজা সেই রাজ্যের সৈনিকদের বন্দি করে নিয়ে যেত। এবং পরবর্তীকালে তাদের ক্রীতদাসে পরিণত করা হতো। প্রাচীনকালের ক্রীতদাসদের একটি বড় অংশ মূলত এভাবেই সৃষ্টি হতো। 

আরও পড়ে দেখো👇

প্রাচীন গ্রীসের ক্রীতদাস প্রথা বা ব্যবস্থায় ক্রীতদাসদের বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম সম্পর্কে আলোচনা

ঋণের টাকা শোধ করতে না পারাঃ

ক্রীতদাস তৈরীর আরও একটি  উপায় ছিল ঋণের টাকা শোধ করতে না পারা। অনেক সময় দেখা গেছে,একজন ব্যক্তি যদি কোনো উচ্চবিত্ত ব্যক্তির কাছ থেকে বহু টাকা ঋণ নিয়ে তা শোধ না করতে পারতো, তাহলে সেই ব্যক্তিকে সে মালিকের হয়ে ক্রীতদাস হিসেবে কাজ করতে হতো।

অপহরণঃ প্রাচীনকালে এমন কিছু অসাধু লোকজন ছিল,যারা সাধারণ মানুষদের অপহরণ করে ক্রীতদাস বাজারে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতো। এরূপভাবে নানা ব্যক্তি সেই ব্যবসায়এ যোগদান করেছিল। এরকমভাবে শহরের নির্জন পথে যাতায়াতকারী বিভিন্ন ব্যক্তিকে বিভিন্ন সময় অপহরণ করে নেওয়া হতো এবং তাদের এরপর ক্রীতদাস সাজিয়ে দাস বাজারে বিক্রি করে দেওয়া হতো।। মূলত এভাবেও ক্রীতদাস তৈরি হতো।।

জন্মসূত্রে ক্রীতদাসঃ একজন মালিকের অধীনে যে ক্রীতদাসরা কাজ করতো বা সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হতো, তাদের সন্তানরাও জন্মসূত্রে ক্রীতদাসে পরিণত হতল। এর ফলে জন্মসূত্রেও অনেক ক্রীতদাস তৈরি হতো। জন্মসূত্রে যারা ক্রীতদাসে পরিণত হতো,তাদের অবস্থাও সেই মালিকের অধীনে কাজ করা তার পিতা-মাতার মতোই দুর্দশায় ভরা থাকতো।।

অর্থের অভাবঃ প্রাচীনকালে কিছু কিছু সাম্রাজ্যে এক ধরনের প্রথা ছিল যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির যদি বিপুল পরিমাণ অর্থের অভাব দেখা দেয়, তাহলে সেই ব্যক্তি নিজের সন্তানকে বা নিজের পরিবারের কাউকে ক্রীতদাস হিসেবে কারোর কাছে বিক্রি করতে পারবে।প্রাচীনকালে অনেক মানুষের বিপুল পরিমাণ অর্থের অভাব থাকায় তারা অনেক সময়ই নিজের সন্তানদের বা পরিবারের সদস্যদের একজন মালিকের অধীনে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করে দিতো।।

দাস বাজারঃ যুদ্ধবন্দীদের বিক্রি করে দেওয়ারর জন্য,  বিভিন্ন ব্যক্তিকে অপহরণ করে চড়া দামে বিক্রি করার জন্য প্রাচীনকালে বিভিন্ন সাম্রাজ্যে বিভিন্ন দাস বাজার গড়ে উঠেছিল। সেই সমস্ত বাজারে বিভিন্ন মূল্যে দাস কেনাবেচার কাজকর্ম চলতো। প্রাচীনকালে যে সমস্ত দাস বাজার ছিল সেখানে দাসদের উপস্থিত করে তাদের গলায় একটি বোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হতো। সেই বোর্ডে সেই ক্রীতদাসের বিভিন্ন বিবরণ সম্পর্কে লিখে রাখা হতো। এরপর সেই বিবরণ দেখে কোনো ব্যক্তি প্রচুর পরিমাণে অর্থ খরচ করে ক্রীতদাসদের কিনে নিয়ে যেতো। এবং তাদের নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করতো।।

একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় সমাজের ঘটনা প্রবাহ || WB Class 11 history chapter 6 questions and answers in bengali


একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর || প্রাচীন গ্রীসের ক্রীতদাস প্রথা বা ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর

ক্রীতদাসদের বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম সম্পর্কে আলোচনা করো || প্রাচীন গ্রীসের ক্রীতদাস প্রথা বা ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো

ভূমিকাঃ প্রাচীন গ্রিসের সমাজ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে সেখানকার ক্রীতদাস ব্যবস্থা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত ছিল। গ্রিসের দাস-প্রভুরা তাঁদের অধীনস্থ ক্রীতদাসদের বিভিন্ন ধরনের কাজে নিয়োজিত করত। এবং মূলত ক্রীতদাসদের বিভিন্ন ধরনের কাজ কর্মের জন্যই তাদের প্রভুরা নিশ্চিন্তে জীবনযাপন করতে পারতো। কারণ ক্রীতদাসদের কাজের প্রভুদের এক পয়সা খরচ করতে হত না। অন্যদিকে ক্রীতদাসদের নানা ধরনের কাজ কর্মের জন্য তাদের সম্পত্তির পরিমাণ দিনের পর দিন বেড়েই যেত।। বিভিন্ন পরিশ্রমসাধ্য ও উৎপাদনমূলক কাজকর্মে ক্রীতদাসদের নিয়োগ করা হতো। যেমন- 

গৃহকাজেঃ গ্রিসের বেশির ভাগ ক্রীতদাসের প্রভুর গৃহকাজে নিযুক্ত করা হতো। হোমার, হেসিয়ড, অ্যারিস্টট্ল প্রমুখের রচনা থেকে গৃহকাজে নিযুক্ত ক্রীতদাসদের উল্লেখ পাওয়া যায়। ধনী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের গৃহকাজের জন্যও ক্রীতদাস থাকত। তবে সাধারন ভাবেই ধনী ব্যক্তির পরিবারের বেশিসংখ্যক এবং তার থেকে কম ধনী ব্যক্তির পরিবারে কম সংখ্যক ক্রীতদাস নিযুক্ত থাকতো। অর্থনৈতিক দিক স্বাচ্ছন্দ কোনো কোনো ধনী পরিবারের গৃহকাজে পঞ্চাশজন পর্যন্ত ক্রীতদাস নিযুক্ত থাকতো। কোনো প্রভুর গৃহের কাজে নিযুক্ত ক্রীতদাসদের মূলত রান্নাবাড়া করা,বাগান পরিষ্কার করা, জল তোলা, কাপড় কাচা,প্রভুর স্নানের জল তুলে দেওয়া,ঘর ছাড়া মোছা, রান্নার কাজে সাহায্য করা, শস্য ঝাড়াই বাছাই করা, প্রভুর মালপত্র বহন করা, বাজার করা, গৃহের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সমস্ত রকম কাজকর্ম করা ইত্যাদি কাজগুলোই তাদের করতে হতো।।

খনি ও কারখানায় শ্রমিক হিসেবেঃ অনেক সময় নানা প্রভুরা তার অন্তর্গত ক্রীতদাসদের গৃহকর্মের পাশাপাশি বিভিন্ন খনি,শিল্প  কারখানার বিভিন্ন ধরনের পরিশ্রমসাধ্য কাজকর্মে তাদের নিয়োগ করতো। প্রভুর পরিচালিত হস্তশিল্পের উৎপাদনে, পাথর সংগ্রহ বা আকরিক খনিজ উৎপাদনের কাজে প্রচুর ক্রীতদাস শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। কোনো কোনো প্রভুর হস্তশিল্পের কারখানাগুলিতে শতাধিক দাস শ্রমিক কাজ করতো। 

ভাড়াটে ও বন্ধকি ক্রীতদাস হিসেবেঃ যখন কোনো অনেক ক্রীতদাসদ সংগ্রহ করতে নিতো, এবং সেই ব্যক্তি নিজের যাবতীয় কাজকর্মে ক্রীতদাসদের নিয়োগ করার পরেও কিছু অতিরক্ত ক্রীতদাস থেকে যেত, তখন সেই ব্যক্তি তার অন্তর্গত ক্রীতদাসদের অন্য কোনো ব্যক্তির কাছে ভাড়া খাটিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতো। এভাবে একজন ক্রীতদাস একজন মালিকের হয়ে অন্য আরেকজনের কাজকর্ম করে দিত। কিন্তু এর বিনিময়ে ক্রীতদাস কোনো অর্থই লাভ না করতে পারতো না।। আবার বন্ধকি ব্যাবসার ক্ষেত্রেও ক্রীতদাসদের ব্যবহার করা হতো। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি তার থেকেও ধনী ব্যক্তির কাছ থেকে যদি কখনো ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে না পারতো, তাহল তার ক্রীতদাস বন্ধক রেখে সে তার ঋণ পরিশোধ করতো।।

কৃষিকাজঃ গ্রিসে ক্রীতদাসদের প্রভুর কৃষি কাজেও নিযুক্ত করা হতো বলে। সাধারণ ও ধনী উভয় কৃষকরাই চাষের কাজে ক্রীতদাস নিয়োগ করত। কবি হেসিয়ডের কাব্য থেকে জানা যায় যে, ক্ষুদ্র কৃষকও ক্রীতদাসের সহায়তায় তার জমি চাষ করত। ক্রীতদাসরা জমিতে চাষবাস করত, শস্য মাড়াই করত, আঙুরের রস ও জলপাইয়ের তেল নিষ্কাশনের কাজ করত এবং উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে বহন করে বাজারে নিয়ে যেত। চাষের মরশুমে ভাড়াটে দাস এনেও কৃষিকাজে নিয়োগ করা হত।

কিছু সম্মানজনক পদে কাজ করার সুযোগঃ তবে সবসময় যে গ্রিসের ক্রীতদাসদের পরিশ্রমসাধ্য নানা ধরনের কাজ করতে হতো, তেমন কোনো বিষয় ছিল না। অনেক সময় সুশিক্ষিত, বীর, বুদ্ধিমান ও নানা ধরনের বিশেষ কাজ জানা ক্রীতদাসদের প্রভু নিজের পরিবারের গৃহ শিক্ষক হিসেবে, হিসাবরক্ষক, নিজের ব্যক্তিগত পরামর্শদাতা, নগরলক্ষী এবং রাজমিস্ত্রি হিসেবেও তাদের নিয়োগ করা হতো।।

একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর  || WB Class 11 History Question Answer & Notes

গ্রিসের স্পার্টার সমাজ জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর

গ্রিসের স্পার্টার সমাজ জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর

ভূমিকাঃ প্রাচীন গ্রিসে আনুমানিক ১৫০০ এর নগররাষ্ট্র বা পলিসের অস্তিত্ব ছিল।। প্রাচীন গ্রীসের এতসংখ্যক পলিস বা নগর রাষ্ট্রের মধ্যে এথেন্স এবং স্পার্টা ছিল অন্যতম। প্রাচীন গ্রিসের নগর রাষ্ট্র অথবা পলিস গড়ে উঠেছিল মূলত পাঁচটি গ্রাম নিয়ে। পাঁচটি গ্রাম নিয়ে গড়ে ওঠা সেই নগর রাষ্ট্র বা পলিসের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল তাদের রণনৈপন্য এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলা। প্রাচীন স্পার্টার সমাজজীবন মূলত তিনটি স্তরে বিভক্ত ছিল। যথা- স্প্যার্টিয়ট, হেলট এবং পেরিকয়। স্পার্টায় সমাজ জীবন যে তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল, তাদের প্রত্যেকের জীবন যাপন ছিল সম্পূর্ণ ভাবে আলাদা। যেমন - 

স্প্যাটিয়েটঃ

স্প্যাটিয়েটরা হলো স্পার্টার স্বাধীন নাগরিক। স্প্যাটিয়েটরা সমাজের সবচেয়ে উপরে বসবাস করতো। স্প্যাটিয়টরা মূলত সবচেয়ে বেশি অধিকার ভোগ করতো এবং সবচেয়ে বেশি সুখে স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করতো। স্প্যাটার নাগরিকত্ব হওয়ার মটেই সহজ ছিল না। স্প্যাটার নাগরিক হতে গেলে বেশ কিছু শর্ত ছিল। যেমন- 

• স্পার্টা ছিল একটি অভিজাততান্ত্রিক নগর রাষ্ট্র। এখানকার নাগরিকত্ব লাভের প্রধান শর্ত ছিল নিজ মালিকানায় জমি থাকা। 

•  সাধারণ ভোজনালয়ের জন্য অর্থ প্রদানের সামর্থ্য এবং যৌবনে সামরিক শিক্ষাগ্রহণ ছিল নাগরিকত্ব লাভের অন্যতম শর্ত। তাই স্বাভাবিকভাবেই স্পার্টায় নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ গণতান্ত্রিক এথেন্সের চেয়ে কম ছিল। 

স্পার্টায় নারীরা নাগরিকত্ব পেত না। অর্থাৎ নারীদের নাগরিক বলে গণ্য করা হতো না। ফলে স্পার্টায় নাগরিকের সংখ্যা হেলট ও পেরিওকয়দের তুলনায় কম ছিল।

৪৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে স্পার্টায় মাত্র ৮ হাজার নাগরিক ছিল বলে হেরোডোটাস জানিয়েছেন। ৩৭১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এই সংখ্যা ১ হাজারে নেমে আসে বলে জানা যায়।

নাগরিকদের পেশাঃ সৈনিক হিসেবে কাজ করাই ছিল নাগরিকদের একমাত্র পেশা। প্রচুর ভূসম্পত্তির মালিক এই নাগরিকরা হেলটদের দিয়ে তাদের জমি চাষ করতো। স্পার্টিয়েটদের প্রচুর পরিমাণ জমি থাকলেও সেই জমিতে তাদের নিজেদের কোনো কাজ করতে হতো না। তারা হেলট বা ক্রীতদাসদের মাধ্যমে নিজেদের যাবতীয় কাজ করিয়ে নিজেদের আর্থিক অবস্থা দিনের-পর-দিন মজবুত করে নিত। যার ফলে তাদের জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নেমে আসতো।।

ভারতের বিভিন্ন রাজপুত বংশের পরিচয় দাও। | একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর

WB Class 11 History Question Answer Chapter 6 | একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় বড় প্রশ্ন উওর

ভারতের বিভিন্ন রাজপুত বংশের পরিচয় দাও। | একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর

ভূমিকা : হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর পর উত্তর ভারতের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন রাজপুত জাতির অস্তিত্ব ছিল।  ভারতের রাজপুত বংশ গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বংশ ছিল,যেমন - চৌহানবংশ, চালুক্য বংশ, গাহড়বাল, চান্দেল্য, পারমার, চেদী ইত্যাদি।।

ভারতের বিভিন্ন রাজপুত বংশের পরিচয়

▪ চৌহানবংশঃ চৌহানবংশের অস্তিত্ব ছিল দিল্লি ও আজমীরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে। বিগ্রহ রাজার আমলে চৌহান বংশের যোদ্ধারা দিল্লি, পূর্ব পাঞ্জাব, দক্ষিণ রাজপুতানা প্রভৃতি অঞ্চল জয় করার মাধ্যমে চৌহান বংশকে একটি শক্তিশালী রাজপুত বংশে পরিণত করে। চৌহান বংশের শেষ শাসক এবং উত্তর ভারতের এক শক্তিশালী হিন্দু রাজা তৃতীয় পৃথ্বীরাজ চৌহান কালিঞ্জর,রোহিলখন্ড,মনবা প্রভৃতি স্থান জয় করেন।কিন্তু পরবর্তীতে তিনি তরাইনের যুদ্ধে 1192 খ্রিস্টাব্দে তুর্কি আক্রমণ কারী মুহাম্মদ ঘুরীর কাছে পরাজিত হন। 

এক্ষেত্রে উল্লেখ করা দরকার যে, কনৌজের গাহড়বাল বংশের শেষ রাজা জয়চন্দ্র তৃতীয় পৃথ্বীরাজ চৌহানকে পরাজিত করার ক্ষেত্রে মোহাম্মদ ঘুরীকে বিশেষভাবে সাহায্য করেছিল।।কিন্তু পরবর্তীকালে জয়চন্দ্র নিজেও মুহাম্মদ ঘুরীর কাছে পরাজিত হয়েছিল।

▪ চালুক্যবংশ : পশ্চিম ভারতে রাজবংশ গুলির মধ্যে একটি অন্যতম রাজপুত বংশ ছিল গুজরাতের চালুক্য বংশ। মনে করা হয়,৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে রাষ্ট্রকূট বংশের শেষ রাজা চতুর্থ অমোঘবর্ষকে পরাজিত করে তৈলপ চালুক্য বংশের প্রতিষ্ঠা করেন। চালুক্য বংশের রাজধানী ছিল আনহিলবার। চালুক্য বংশের একজন অন্যতম রাজা ছিলেন জয়সিংহ। চালুক্য বংশের সঙ্গে দিল্লির চৌহান বংশের দীর্ঘ সংঘর্ষ ছিল। চৌহান বংশের সঙ্গে দীর্ঘ সংঘর্ষে লিপ্ত থাকার কারণে, চালুক্য বংশের শক্তি অনেকটাই কমে যায়।।

▪ গাহড়বাল বংশ : কনৌজের গাহড়বাল বংশ ছিল ভারতের একটি অন্যতম রাজপুত বংশ। গাহড়বাল রাজপুত বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন চন্দ্রদেব। চন্দ্রদেব 1090 খ্রিষ্টাব্দে গাহড়বাল বংশের প্রতিষ্ঠা করেন। গাহড়বাল বংশের অন্যতম রাজা ছিলেন গোবিন্দ্রচন্দ্র। গোবিন্দ্রচন্দ্র উত্তর প্রদেশ ও বিহারের বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে গাহড়বাল বংশকে একটি শক্তিশালী রাজপুত বংশে পরিণত করে। 

দিল্লি ও আজমীরের চৌহান রাজবংশের সঙ্গে গাহড়বাল রাজবংশের দীর্ঘ সংঘর্ষ ছিল। এই সংঘর্ষের দরুন, গাহড়বার বংশের শেষ রাজা জয়চন্দ্র তৃতীয় তরাইনের যুদ্ধে মোহাম্মদ ঘুরিকে বিশেষভাবে সাহায্য করেছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে জয়চন্দ্র নিজেও মোহাম্মদ ঘুরীর হাতে পরাজিত এবং নিহত হয়েছিল।

▪ চান্দেল্য বংশ : খ্রিস্টীয় নবম শতকে যশোবর্মন বুন্দেলখন্ড চান্দেলা বংশের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যশোবর্মন দিল্লি ও আজমিরের চৌহান রাজপুত বংশের রাজা পৃথ্বীরা কে একবার পরাজিত করেছিলেন। বুন্দেলখন্ডের চান্দেল্য বংশের একজন অন্যতম রাজা ছিলেন পরমাদদেব। চান্দেল্য বংশের শেষ রাজা ছিলেন পেরামল।।

▪ পারমার বংশ : ভোজ নামে এক ব্যক্তি খ্রিষ্টীয় একাদশ শতকে মালবে পারমার নামক রাজপুত বংশের প্রতিষ্ঠা করেন।। এই রাজপুত বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন ভোজ। সুদক্ষ, যোদ্ধা, সুশাসক ছিলেন রাজা ভোজ। তিনি তার রাজ্যের সংস্কৃতি সংস্কৃত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং ভোজ নামে একটি হ্রদ ও খনন করেছিলেন।

▪ অন্যকিছু রাজপুতবংশ : এছাড়াও সে যুগের অন্যান্য কিছু রাজপুত বংশ গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল্য জব্বলপুরের কলাচুরি বংশ কাথিয়াবাড়এর সোলাঙ্কি বংশ, গোদাবরী তীরবর্তী অঞ্চলের চেদী বংশ   প্রভৃতি। তবে রাজপুত জাতির যথেষ্ট বৃহত্তর ও শক্তিশালী হওয়া সত্বেও তারা সবসময়ই নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে লিপ্ত থাকতো। যার ফলে তাদের নিজেদের শক্তি ক্ষয় হয়ে তারা ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়তো। সেই সুযোগে তুর্কি আক্রমণ কারীরা উত্তর ও মধ্য ভারতে আক্রমণ করলে,ধীরে ধীরে রাজবংশ গুলির একে একে পতন ঘটে।

একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় 'সমাজের ঘটনা প্রবাহ || WB Class 11 history chapter 6 question answers in bengali

একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | WB Class 11 History Question Answer & Notes
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর

স্পার্টায় পেরিওকয়দের সামাজিক অবস্থা, তাদের কাজ এবং নাগরিকদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আলোচনা করো

ভূমিকাঃ প্রাচীন গ্রিসের পলিস বা নগর রাষ্ট্রগুলির মধ্যে এথেন্স এবং স্পার্টা ছিল অন্যতম। প্রাচীন গ্রিসের নগর রাষ্ট্র অথবা পলিস গড়ে উঠেছিল মূলত পাঁচটি গ্রাম নিয়ে। পাঁচটি গ্রাম নিয়ে গড়ে ওঠা সেই নগর রাষ্ট্র বা পলিসের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল তাদের রণনৈপন্য এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলা। প্রাচীন স্পার্টার সমাজজীবন মূলত তিনটি স্তরে বিভক্ত ছিল। যথা- স্প্যার্টিয়ট, হেলট এবং পেরিওকয়। স্পার্টার সমাজে পেরিওকয়রা ছিল মূলত হেলট এবং স্বাধীন নাগরিকদের মধ্যবর্তী স্তরের মানুষ।। তাই স্বাভাবিকভাবেই পেরিওকয়দের জীবন ছিল স্প্যার্টিয়েটদের থেকে কিছু খারাপ এবং হেলটদের থেকে কিছুটা ভালো।।

স্পার্টায় পেরিওকয়দের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থানঃ 

স্পার্টায় পেরিওকয়দের স্থান ছিল স্বাধীন নাগরিক ও হেলটদের মধ্যবর্তী স্তরে। পেরিওকয়রা স্পার্টার স্বাধীন নাগরিকদের বসতির নিকটবর্তী অঞ্চলেই বসবাসের অধিকার পেয়েছিল। সম্ভবত নিজেদের আত্মরক্ষার কথা ভেবে এবং ক্রীতদাস হেলটদের সঙ্গে নিজেদের দূরত্ব ও ব্যবধান বজায় রাখতে নাগরিকরা তাদের নিকটবর্তী অঞ্চলে পেরিওকয়দের বসবাসের অধিকার দিয়েছিল। স্পার্টার নগর-রাষ্ট্র সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সেখানে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার পেরিওকয়ের বসবাস ছিল যা সেখানকার মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।

পেরিওকয়দের নানা ধরনের কার্যঃ

 স্পার্টায় হেলটরা যেভাবে কোনো একজন প্রভু বা স্বাধীন নাগরিকের অধীনে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতো,পেরিওকয়দের সেরকম ভাবে কারোর অধীনে থেকে কাজ করতে হত না। কিন্তু তাদেরও বিভিন্ন ধরনের কাজ কর্মে নিজেদের নিযুক্ত রাখতে হতো। যেমন- 

• পেরিওকয়রা শাসকগোষ্ঠীর রাজকীয় জমিজমা চাষ করত, শিল্পোৎপাদন ও বাণিজ্যের কাজ সম্পন্ন করত।

• পেরিওকয়রা রাষ্ট্রের কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্য-সংক্রান্ত কাজগুলি সম্পন্ন করার ফলে স্বাধীন নাগরিকরা নিশ্চিন্তে

রাষ্ট্রের রাজনীতি ও প্রশাসনে পূর্ণ সময় ব্যয় করতে পেরেছিল। 

• পেরিওকয়রা নাগরিকদের তত্ত্বাবধানে স্পার্টার সেনাবাহিনীতে 

স্পার্টায় স্বাধীন নাগরিক অথবা স্প্যার্টিয়েটদের পেরিওকয়দের সম্পর্কঃ

স্পার্টায় পেরিওকয়দের স্থান স্বাধীন নাগরিক ও হেলটদের মধ্যবর্তী স্তরে থাকায়, স্বাধীন নাগরিকের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক মোটামুটি ভাবে ভালোই ছিল।। যেমন- 

• স্পার্টার সমাজে হেলটদের যেভাবে বিভিন্ন দিক থেকে নির্যাতিত হতে হতো, পেরিওকয়দের সেরকম ভাবে কখনোই নির্যাতিত হতে হতো না।।

• নাগরিকদের কাছ থেকে তারা যথেষ্ট সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও সহানুভূতি পেত।

• দেশের কৃষি, শিল্প, সামরিক কাজকর্ম প্রভৃতিতে অংশ নিয়ে  পেরিওকয়রা দেশের নাগরিকদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিত।

• পেরিওকয়দের সহযোগিতার বিনিময়ে নাগরিকরাও তাদের রক্ষার দায়িত্ব পালন করত।

• পেরিওকয়রা স্প্যার্টিয়েটদের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে নিজেদের শান্তি, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা পেয়েছিল।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে পেরিকয়দের প্রতি বঞ্চনাঃ

স্প্যার্টায় পেরিওকয়রা স্বাধীন নাগরিকদের মতো না হওয়ার কারণে স্প্যার্টিয়েটদের দ্বারা কিছু ক্ষেত্রে তাদের বঞ্চিত হতে হতো।। যেমন- 

• পেরিওকয়রা মূলত শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা অর্থনৈতিক শোষণের শিকার হতো। পেরিওকয়দের হাতে থাকা কৃষিজমিগুলি ছিল নাগরিকদের জমির তুলনায় খুবই অনুর্বর ছিল। 

• পেরিওকয়দের ওপর বিভিন্ন ধরনের করের বোঝা চাপিয়ে সর্বদা তাদের দুর্বল করে রাখার চেষ্টা করা হতো। 

• স্পার্টায় পেরিওকয়দের রাজনৈতিকভাবে স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার লাভে বঞ্চিত ছিল।

• পেরিওকয়দের স্বাধীন নাগরিকদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করার অধিকার ছিল না।। 

তারপরও, স্পার্টায় পেরিওকয়দের জীবন মোটামুটি ভালোই ছিল। সেকারণেই পেরিওকয়রা স্প্যার্টিয়েটদের

বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পথে পা বাড়ায়নি।


প্রাচীনকালের বিভিন্ন প্রকার স্ত্রীধন সম্পর্কে আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর 

WB Class XI History Question Answer & Notes | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর

প্রাচীনকালের বিভিন্ন প্রকার স্ত্রীধন সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমিকাঃ মনু এবং অন্যান্য কিছু শাস্ত্রকার নারীকে বাল্যকালে পিতৃগৃহে যৌবনে বা বিয়ের পর স্বামীর গৃহে এবং বার্ধক্য অবস্থায় পুত্রের অধীনে থাকার কথা বলেছেন। এরূপ অবস্থায় নারীর সামাজিক অবস্থান কীরুপ ছিল তা বলা মুশকিল। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র নারীর কর্তৃত্ব তার গৃহেই। এরুপ পরিস্থিতিতে নারীর অর্থনৈতিক অধিকার কতটা তা বলা মুশকিল। কিন্তু এরূপ পরিস্থিতিতেও নারী কিছু অর্থনৈতিক অধিকার ভোগ করতো। এবং নারীর সেই অর্থনৈতিক অধিকার ছিল তার স্ত্রী ধন। খুব সংক্ষেপে স্ত্রীধন বলতে বোঝায় নারীর নিজস্ব সম্পত্তি। নারীর এই সম্পত্তি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। 

মনুসংহিতা এবং যাগ্যবল্ক্যস্মৃতিতে উল্লেখিত স্ত্রীধনঃ 

স্মৃতিশাস্ত্র এবং যাগ্যবল্ক্যস্মৃতিতে বিভিন্ন ছয় প্রকার স্ত্রীধন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। যেমন -

• অধ্যগ্নি 

• অধ্যবাহনিক

• প্রীতিদত্ত 

• পিতৃদও 

• মাতৃদত্ত

• ভাত্রীদত্ত

অধ্যগ্নিঃ অধ্যগ্নি বলতেন সেই প্রকাশ স্ত্রীধনকে বোঝায়, যা সেই নারীর বিবাহের সময় অগ্নিকে সাক্ষী রেখে তাকে উপহার দেওয়া হয়। 

অধ্যবাহনিকঃ বিবাহের পর যখন কন্যা তার স্বামীর গৃহে যাত্রা করে, তখন তাকে যে সমস্ত সম্পদ প্রদান করা হয়, তাকে বলা হয় অধ্যবাহনিক।

প্রীতিদত্তঃ বিবাহের সময় বা বিবাহের আগে তার কন্যা তার আত্মীয়স্বজন বা পরিজনদের কাছ থেকে যে সমস্ত সম্পদ উপহার হিসেবে পেত, তাকে বলা হয় অথবা প্রীতিদত্ত।

পিতৃদত্তঃ কন্যা তার পিতার কাছ থেকে যে সমস্ত সম্পত্তি বা উপহার লাভ করতো তাহল, পিতৃদত্ত।

মাতৃদত্তঃ কন্যা তার মায়ের মাধ্যমে যে সমস্ত সম্পত্তি লাভ করতো,তাহল মাতৃদত্ত। এক্ষেত্রে কন্যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মায়ের কাছ থেকে গয়না ও পোশাক-আশাক পেত। 

ভ্রাতৃদওঃ কন্যা যখন তার ভ্রাতা অর্থাৎ দাদা বা ভাইয়ের কাছ থেকে যে সমস্ত সম্পত্তি লাভ করতো, তাহল ভ্রাতৃদও।।

কাত্যায়নস্মৃতিতে উল্লেখিত স্ত্রীধনঃ 

উপরোক্ত কিছু স্ত্রীধন ছাড়াও কাত্যায়নস্মৃতিতে আরো কয়েকটি স্ত্রীধন এর উল্লেখ করা হয়েছে। যেগুলো হলো - 

• কুমারী অবস্থায় নারী যে সমস্ত উপহার পেত,তাকে বলা হত সৌদায়িল স্ত্রীধন। 

• অন্যদিকে পিতা-মাতা, স্বামী ও আত্মীয়দের কাছ থেকে নারীর যে সমস্ত উপহার পেতে তাকে বলা হতো অন্বাধেয়।

• এবং বিবাহের সময় পাত্র পক্ষ কর্তৃক কন্যাকে যে সমস্ত উপর দেওয়া হতো তাহলে শুল্ক স্ত্রীধন।।

অর্থশাস্ত্রে উল্লেখিত স্ত্রীধনঃ কৌটিল্যের রচিত অর্থ শাস্ত্রে বিভিন্ন প্রকার স্ত্রীধনের কথা বলা হয়েছে। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র গ্রন্থে' মূলত চার প্রকার স্ত্রীধন এর কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো - • শুল্ক 

• অধিবেদনিক।

• অন্বাধেয়

• বন্ধুদও

সীমাবদ্ধতাঃ এতো প্রকার স্ত্রীধনের ওপর নারীর অধিকার থাকলেও নারী ঠিক কত পরিমাণ স্ত্রীধন নিজের কাছে রাখতে পারবেন সেই নিয়ে নানারকম বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।। কাত্যায়মস্মৃতি এবং অর্থশাস্ত্রে বলা হয়েছে নারী শুধু মাত্র 2000 রৌপমুদ্রা নিজের কাছে রাখতে পারবেন। কারণ স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রীর প্রাপ্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তিকে স্ত্রীধন হিসেবে মেনে নিলেও, তিনি নিজের নারীর নিজের উপার্জিত অর্থকে স্ত্রীধন হিসেবে মেনে নেননি। পারিবারিক সম্পত্তিতেও নারীর অধিকার ছিল না।।

• স্বামীর সম্পত্তিতে নারীর কোনো অধিকার না থাকলেও স্ত্রীধনের উপর স্বামীর কিছু কিছু অধিকার ছিল। স্ত্রী যথেচ্ছভাবে নিজের সম্পত্তি দান করতে চাইলে স্বামীকে তাকে অস্বীকার করতে পারতেন। 

• স্বামীর প্রয়োজনের সময় স্ত্রীর সম্পত্তি গ্রহণ ও বিক্রি করতে পারতো।

• এছাড়াও স্ত্রীর কাছে যদি 2000 পনের বেশি স্ত্রীধন জমে থাকে, তাহলে সেই অতিরিক্ত অর্থ স্বামীর হেফাজতে রক্ষিত হতো।

স্ত্রীধনের উত্তরাধিকারঃ স্ত্রীর কাছে যে পরিমাণ স্ত্রীধন থাকতো স্বাভাবিকভাবেই সেই স্ত্রীধনের বা সম্পত্তির কেউ-না-কেউ উত্তরাধিকার হতো।

• যাগ্যবল্ক উল্লেখ করেছেন যে স্ত্রীধনের উপর পিতা, স্বামী বা পূত্রের কোনো অধিকার ছিল না। 

• নারদস্মৃতিতে বলা হয়েছে স্ত্রীর মৃত্যুর পর তাঁর মেয়ে মায়ের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে। 

• কাত্যায়ন স্মৃতিতে বলা হয়েছে যে স্ত্রীর যদি স্ত্রী যদি কোনো কন্যা সন্তান না থাকে তাহলে মায়ের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে তার পুত্র। এবং স্ত্রীর যদি কোনো সন্তান না থাকে তাহলে সেই স্ত্রীধনের উত্তরাধিকারী হবে তার স্বামী।

প্রসঙ্গত উল্লেখ করা দরকার যে, প্রাচীনকালে যখন নারীরা সমাজে নানাভাবে তাদের অধিকার হারিয়েছিল বা তাদের অধিকার নানাভাবে সংকুচিত হয়েছিল, তখন তাদের বিধিবদ্ধ অর্থনৈতিক অধিকার কতটা বাস্তবায়িত হয়েছিল সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। সমাজের উচ্চ স্তরের নারীরা যে সমস্ত অর্থনৈতিক অধিকার ভোগ করতো সমাজের নিম্ন স্তরের নারীর যে সেই অধিকার ভোগ করতে পারত না?এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।।

প্রাচীন ভারতীয় সমাজে নারীর গার্হস্থ্য জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর 

প্রাচীন ভারতীয় সমাজে নারীর গার্হস্থ্য জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর 

প্রাচীন ভারতীয় সমাজে নারীর গার্হস্থ্য জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমিকাঃ প্রাচীন যুগে অর্থাৎ ঋকবৈদিক যুগ,পরবর্তী বৈদিক যুগ, মৌর্য ও মৌর্য পরবর্তী যুগ এবং গুপ্ত ও গুপ্ত পরবর্তী যুগে একেক সময়ে নারীদের গার্হস্থ্য জীবন একেক রকমের ছিল। কোনো কোনো যুগে নারীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ, প্রশাসনিক কাজে অংশগ্রহণ, ধর্মচর্চা সাহিত্যচর্চা,অন্দরমহলে গার্হস্থ্য জীবন পরিচালনা ইত্যাদি করার সুযোগ পেত আবার কখনো তারা অনেক কিছুই করার অধিকার পেত না।। যেমন - 

ঋক বৈদিক যুগঃ ঋক বৈদিক যুগে নারীরা পরিবারের গার্হস্থ্য কর্ম পরিচালনায় একাধিপত্য ভোগ করতেন।

• ঋক বৈদিক যুগে মূলত নারীরাই পরিবারের যাবতীয় দায়িত্ব সামলাতেন।

• তাদের বিভিন্ন রকম কাজ করতে হতো। পরিবারের সকলের সদস্যের নানা রকম ভাবে দেখাশোনা করতে হতো। 

• তিনবেলা গৃহদেবতার পুজো করা, ব্রত উদযাপন,উপবাস প্রকৃতি কাজগুলি মূলত নারীকেই করতে হতো।

•  নারীকে সবসময়ই তার স্বামী বা শ্বশুর-শাশুড়ির নির্দেশ মেনে যাবতীয় কাজ কর্ম করতে হতো। এবং তাদের সেবায় নিজেকে সবর্দা ব্যস্ত রাখতে হতো।

• বিশেষ প্রয়োজনে স্বামী যদি বাইরে থাকতেন, তাহলে স্ত্রীকে সংযত জীবন যাপন করতে হতো।

পরবর্তী বৈদিক যুগে নারীর গার্হস্থ্য জীবনঃ ঋক বৈদিক যুগে নারীর গার্হস্থ্য জীবন যেরকম ছিল, পরবর্তী বৈদিক যুগেও নারীদের গার্হস্থ্য জীবন মোটামুটি ভাবে সেরকমই ছিল।।কিন্তু পরবর্তী বৈদিক যুগে নারীদের সামাজিক মর্যাদা কিছুটা কমে গিয়েছিল এবং তার প্রভাব পড়েছিল নারীদের পারিবারিক ও গার্হস্থ্য জীবনে।

• পরবর্তী বৈদিক যুগের কিছু রচনার মধ্যে নারীদের সম্পর্কে নানা অসম্মানজনক কথা বলা হয়েছে। যেমন ঐতরেয় ব্রাহ্মণ - এ কন্যাকে পরিবারের পিতা-মাতার দুঃখের উৎস বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে মৈত্রায়ণী সংহিতায় নারী, সুরা ও পাষাকে একই পর্যায়ভুক্ত করা হয়েছে।

• বৌদ্ধায়ান ধর্মসূত্রে নারীর স্বাধীন সত্তাকে অস্বীকার করে বলা হয়েছে, নারী বাল্যকালে পিতার অধীনে,যৌবনে স্বামীর অধীনে এবং বার্ধক্যে পুত্রের অধীনে থাকবে। বৌদ্ধায়ান ধর্মসূত্রে এও বলা হয়েছে যে,,বন্ধা স্ত্রীকে বিবাহের ১০ বছর পর এবং কেবলমাত্র কন্যা সন্তানের জন্মদাত্রী স্ত্রীকে বিবাহের ১২ বছরের মধ্যে পরীত্যাগ করা যাবে। অর্থাৎ পরবর্তী বৈদিক যুগে আমরা গার্হস্থ্য জীবনে নারীদের কোনো  স্বাধীনতা লক্ষ্য করতে পারিনা।।

• মহাভারতের বনপর্ব বলা হয়েছে যে,, যোজ্ঞানুষ্ঠান, শ্রদ্ধানুষ্ঠান, পূজা অথবা উপবাসের মাধ্যমে নয় শুধুমাত্র স্বামীর সেব করার মাধ্যমেই নারীরা স্বর্গলাভ করতে পারে। অর্থাৎ পরবর্তী বৈদিক যুগে আমরা নারীরা গার্হস্থ্য জীবনের নান অধিকার যে হারিয়ে ফেলেছিলেন, তা লক্ষ্য করতে পারি। 

মৌর্য এবং মৌর্য পরবর্তী যুগের নারীদের গার্হস্থ্য জীবনঃ মৌর্য যুগ এবং মৌর্য পরবর্তী যুগের নারীদের সামাজিক মর্যাদা কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় তার প্রভাব তাদের গার্হস্থ্য জীবনেও পড়েছিল। 

• মৌর্য যুগে নারীরা গার্হস্থ্য কাজকর্ম পরিচালনার পাশাপাশি নিত্য, সঙ্গীত হস্তশিল্পকর্ম,, প্রভৃতির চর্চা করতেন।

• অতিথিদের সেবা-যত্ন করাই নারীর প্রধান কর্তব্য ছিল। 

• মৌর্য যুগের এবং মৌর্য পরবর্তী যুগের গৃহকর্মের সঙ্গে সঙ্গে নারীরা স্বামীর সঙ্গে বসে যজ্ঞানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারতেন তবে পারিবারিক জীবনে নারীর অবস্থান নির্ধারণ করতে গিয়ে শাস্ত্রকার মনু বৌদ্ধায়ান ধর্মসূত্রে  বাল্যকালে নারীকে পিতা এবং বিয়ের পর স্বামী এবং বার্ধক্যে পূত্রের অধীন বলে অভিহিত করেছেন। 

• মৌর্য পরবর্তী যুগের নারীকে গৃহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, সংসারের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় করা,স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ি এবং নিজের সন্তানের যত্ন নেওয়া ইত্যাদি কাজ করতে হতো।

গুপ্ত যুগে নারীদের গার্হস্থ্য জীবনঃ 

 • গুপ্ত যুগে নারীদের কাজকর্ম মূলত গৃহস্থের অন্তরেই সীমাবদ্ধ ছিল। গুপ্তযুগের লেখক কালিদাসের অভিজ্ঞানশকুন্তলম নাটকে শকুন্তলার মাধ্যমে গুপ্ত যুগের নারীদের গার্হস্থ্য জীবন সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন। 

 • বাৎসায়ন উল্লেখ করেছেন যে গুপ্ত যুগের নারীদের মূলত তার পরিবারের বিভিন্ন রকম কাজকর্ম করা, গবাদিপশুর দেখাশোনা করা, গুরুজনের সেবা করা,অতিথিদের আপ্যায়ন করা, সংসারের জন্য প্রয়োজনীয় কাজকর্ম গুলোই করতে হতো। 

 • এছাড়াও প্রতিদিনের সাংসারিক খরচের হিসাব রাখার জন্য নারীর মধ্যে গণিতের প্রাথমিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন হলে উল্লেখ করা হয়েছে।

গুপ্ত পরবর্তী যুগে নারীদের গার্হস্থ্য জীবনঃ 

গুপ্ত যুগের পর ভারতীয় সমাজে নারীর গার্হস্থ্য জীবন গুপ্ত পরবর্তী যুগে মোটামুটি ভাবে একই ছিল। কিন্তু এই যুগে নারীদের গার্হস্থ্য জীবনে কিছুটা পরিবর্তন আসে। 

• বিভিন্ন শাস্ত্রকারদের সামাজিক বাধা নিষেধের ফলে গুপ্ত পরবর্তী যুগে নারীদের জীবন গৃহ বা অন্দরমহলে আরো বেশি করে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল।

•  গুপ্ত পরবর্তী যুগে নারীদের প্রধান কাজ কর্মের মধ্যে ছিল পরিবার বা সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম করা, স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ি এবং সন্তানের দেখাশোনা করা হয় বা গুরুজনের সেবা করা। 

•  গুপ্ত পরবর্তী যুগে নারীদের আরেকটি প্রধান কাজ ছিল সংসার কল্যাণের জন্য উপোস,পূজা এবং ধর্মপালন করা।।

ক্লিওপেট্রা কে ছিলেন? ক্লিওপেট্রার  জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো || WB Class 11 History Question Answer & Suggestion 2022


একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর ||  wb class 11 history question answer chapter 6
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর

ক্লিওপেট্রা কে ছিলেন? ক্লিওপেট্রার  জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমিকাঃ প্রাচীন যুগের প্রভাবশালী নারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন - টলেমি বংশের রাজকন্যা ক্লিওপেট্রা। তিনি ছিলেন অন্যতম একজন উল্লেখযোগ্য মিশরীও নারী, যিনি তার বুদ্ধি এবং সাহসিকতার দ্বারা মিশরের শাসন ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন।। 

পরিচয়ঃ ক্লিওপেট্রা ছিলেন মিশরের শাসক টলেমি বংশের রাজকন্যা তিনি ছিলেন টলেমি বংশের শাসক,দ্বাদশ টলেমির কন্যা। ক্লিওপেট্রা 69 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার নাম ছিল সপ্তম ক্লিওপেট্রা কিন্তু তিনি ইতিহাসে ক্লিওপেট্রা নামেই অধিক পরিচিত। ক্লিওপেট্রা ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অত্যন্ত সুন্দরী এবং মেধাবী। অত্যন্ত মেধাবী হওয়ার কারণে ক্লিওপেট্রা খুবই উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। এছাড়াও তিনি মাত্র 18 বছর বয়সেই মিশরের সিংহাসন লাভ করেছিলেন। 

চারিত্রিক ত্রুটিঃ ক্লিওপেট্রা অত্যন্ত সুন্দরী হওয়ার কারণে তিনি তার সৌন্দর্যকে নানাভাবে কাজে লাগিয়েছিলেন। তিনি বারবার প্রেমের জোয়ারে ভেসে গিয়েছিলেন এবং তার জীবনের প্রেম ভালোবাসার নানা জোয়ার ভাটা দেখা যায়। তার জীবনর একাধিক পুরুষের আগমন ঘটেছিল এবং সেজন্য রোমান কবি হোরাস তাকে 'পাগল' এবং লুকান তাকে 'মিশরের লজ্জা বলে' অভিহিত করেছিলেন।

সিংহাসন লাভঃ মিশরের প্রচলিত শাসনব্যবস্থার নিয়ম অনুযায়ী একজন রাজা কখনোই একা মিশরের শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করতে পারতো না। তার সঙ্গে একজন সঙ্গী অথবা সঙ্গিনী থাকতে হতো এবং যৌথভাবে মিশরের শাসন পরিচালনা করতে হতো। 

ক্লিওপেট্রা প্রথম জীবনে তার পিতার দ্বাদশ টলেমির সঙ্গে সিংহাসনে বসে মিশনের শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। কিন্তু দ্বাদশ শ্রেণীর মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসার মতো সেরকম কেউ ছিল না। অন্যদিকে মিশরের শাসন ব্যবস্থার নিয়ম অনুযায়ী ক্লিওপেট্রা একা নিজেও মিশরের শাসন পরিচালনা করতে পারতেন না। সেই কারণেই তিনি নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগান। তিনি নিজের আট বছরের ছোটো ভাই ত্রয়োদশ টলেমিকে বিবাহ করেন এবং তিনি তার ভাইকে পাশে রেখে মিশরের শাসনকার্য পরিচালনা করার দায়িত্ব নেন।।

কিন্তু তিনি তার ভাই ত্রয়োদশ টলেমির সঙ্গে বেশিদিন মিশরের শাসন কার্য সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেননি। কারণ -

রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার এবং ক্লিওপেট্রার প্রণয়ঃ

• মিশর সিংহাসনে বসার ঠিক কয়েক বছর পরেই রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার মিশর আক্রমণ করেন। এই আক্রমণে মিসরের সেনাবাহিনীর ওপর রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার যুদ্ধে জয় লাভ করে। এবং সেই যুদ্ধে ত্রয়োদশ টলেমির মৃত্যু হয়। এরপর ক্লিওপেট্রাকে জুলিয়াস সিজার রোমে নিয়ে আসেন এবং রোমে আসার পর জুলিয়াস সিজার ও ক্লিওপেট্রার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর ফলে জুলিয়াস সিজার ক্লিওপেট্রাকে পুনরায় মিশরের শাষক হিসেবে নিযুক্ত করেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ব্রুটাস নামে এক আততায়ী জুলিয়াস সিজার কে হত্যা করে। এর ফলে ক্লিওপেট্রা রোম থেকে পুনরায় মিশরে চলে আসেন।।

চতুর্দশ টলেমিকে বিবাহঃ

• মিশরে আসার পর ক্লিওপেট্রা নিজের ওপর ভাই চতুর্দশ টলেমিকে বিবাহ করেন এবং তিনি আবারও মিশরের শাসন কর্তা হিসেবে নিজের দায়িত্ব তুলে নেন। কিন্তু এক বছরের মধ্যেই তিনি তার ভ্রাতা চতুর্দশ টলেমিকে হত্যা করেন এবং জুলিয়াস সিজারের ঔরসজাত সন্তান পঞ্চদশ টলেমির সঙ্গে যৌথভাবে মিশর শাসন করতে থাকেন। 

মার্ক অ্যান্টনির সঙ্গে বিবাহঃ

কিন্তু কিছু বছর পরে আবারও জুলিয়াস সিজারের বন্ধু এবং রোমান সেনাপতি মার্ক অ্যান্টনি মিশর অভিযান করেন।।কিন্তু তিনি নিজেও ক্লিওপেট্রার প্রেমে আবদ্ধ হন এবং এরপর মিশরের সিংহাসনে বসার উদ্দেশ্যে তিনি ক্লিওপেট্রাকে বিবাহ করেন। কিন্তু এরপরেই ক্লিওপেট্রার জীবনে কালো মেঘের ছায়া নেমে আসে।।

অ্যাকটিয়ামের যুদ্ধঃ মার্ক অ্যান্টনিকে ক্লিওপেট্রাকে বিবাহ করার রোমান সাম্রাজ্যের পরবর্তী শাসক "অক্টাভিয়াস" এতে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। কারণ মার্ক অ্যান্টনি কিছুদিন আগেই তার বোন অক্টাভিয়া মাইনরকে বিবাহ করেছিলেন। এবং এই কাজের জন্য তিনি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে মিশর আক্রমণ করেন। তার এই আক্রমণে এন্টনি এন্ড ক্লিওপেট্রা নৌবহর ধ্বংস হয়। এবং এতে মার্ক অ্যান্টনিকে যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাদল ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং কিভাবে তা একা হয়ে পড়েন। অ্যাকটিয়ামের যুদ্ধ রোমান সম্রাট অক্টাভিয়াস বিজয় লাভ করলে, ক্লিওপেট্রার সন্তান ও জুলিয়াস সিজারের ঔরসজাত সন্তান পঞ্চদশ টলেমি এবং অ্যান্টনির ঔরসজাত সন্তান আলেকজান্ডার হেলিয়সকে হত্যা করেন। এরপর তিনি তাকে বিবাহ করার উদ্যোগ নেন।।

ক্লিওপেট্রার মৃত্যুঃ অ্যাকটিয়ামের যুদ্ধে রোমান সম্রাট অক্টাভিয়াসের জয়লাভ করার পর তিনি ক্লিওপেট্রাকে বিবাহ করার উদ্যোগ নেন।  কিন্তু অক্টাভিয়াসের এই সিদ্ধান্তে ক্লিওপেট্রা মোটেও রাজি ছিলেন না। জীবনে একাধিক পুরুষের আগমন তাকে ভেতর থেকে ঘাত-প্রতিঘাতে ভেতর থেকে ভেঙ্গে ফেলে। এবং এই কারণেই ক্লিওপেট্রা অত্যন্ত শোকাহত হয়ে মাত্র 39 বছর বয়সে অ্যাসপ নামক তীব্র বিষাক্ত সাপের কামড়ে আত্মহত্যা করেন।। অন্যদিকে এই ঘটনার পরে মার্ক অ্যান্টনি নিজেও তরবারির আঘাতে আত্মহত্যা করেছিলেন। বর্তমানে মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরের ক্লিওপেট্রা এবং মার্ক অ্যান্থনির মৃতদেহ সমাধি রয়েছে।।

কৃতিত্বঃ ক্লিওপেট্রা তাঁর রাজত্বকালে নানা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। যেমন- 

• প্রাচীন যুগের একজন নারী হয়েও শাসন ক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্যে তিনি পুরুষদের বিরুদ্ধে শাসন লড়াই-এ অবর্তীন হন। 

• যুদ্ধক্ষেত্রেও তিনি অসীম সাহস ও বীরত্বের পরিচয় দেন। ও মিশরের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য তাঁর অনুরাগ ও প্রয়াস ছিল সম্পূর্ণ আন্তরিক। 

• খ্রিস্টপূর্ব যুগের এক নারী হয়েও ঘটনাবহুল জীবনের জন্য ক্লিওপেট্রা বর্তমান যুগেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বিশ্ব জুড়ে ইতিহাসের হাজারো রহস্যের উন্মোচন হলেও ক্লিওপেট্রা যেন আজও রহস্যময়ী হয়েই থেকে গিয়েছেন। ‘চেয়ে সব কিছুই পাওয়া এবং চেয়ে কিছুই না পাওয়া’— যদি দুটোই জীবনের চরম ট্র্যাজেডি হয়, তবে ক্লিওপেট্রা জীবন নাটকের রঙ্গমঞ্চে আজীবন সেই চরম ট্রাজেডির নায়িকা। এই নায়িকাকে নিয়ে যুগে যুগে তৈরি হয়েছে বহু কল্পকাহিনি, নানা ভাস্কর্য, অঙ্কিত হয়েছে নানা চিত্র। উইলিয়াম শেকসপিয়র রচিত কালজয়ী নাটক ‘অ্যান্টনি ক্লিওপেট্রা' এবং জর্জ বার্নার্ড শ রচিত নাটক ‘সিজার ক্লিওপেট্রা’ তাঁকে নিয়েই রচিত হয়েছে। ক্লিওপেট্রাকে নিয়ে সাহিত্য রচনা করেছেন হেনরি হ্যাগার্ড, ড্রাইডেন প্লুটার্ক, ড্যানিয়েল ও আরও অনেকে।

একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় সমাজের ঘটনা প্রবাহের প্রশ্ন উওর || WB Class 11 History Question Answer & Suggestion 2022


WB Class XI History Question Answer & Notes | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর
WB Class 11 History Question Answer & Suggestion 2022

রানি দুর্গাবতী কে ছিলেন? রানী দুর্গাবতীর কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো। 

ভূমিকাঃ রানী দুর্গাবতী ছিলেন মধ্যযুগের একজন বিশিষ্ট নারী। ভারতে মুঘল শাসন কালে যে সমস্ত আঞ্চলিক শক্তি গুলির অস্তিত্ব ছিল, তার মধ্যে গন্ডোয়ানা ছিল অন্যতম। মধ্যপ্রদেশের সাগর,দামো,মান্ডালা নর্মদা উপত্যকার বেশ কিছু অঞ্চল নিয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। গন্ডোয়ানার রাজধানী ছিল গড়-কান্টাকা। রানী দুর্গাবতী ছিলেন গন্ডোয়ানার শাসনকর্তা।।

রানী দুর্গাবতীর কার্যাবলী সম্পর্কে জানার আগে, রানী দুর্গাবতী সম্পর্কে আমাদের কিছুটা জেনে নেওয়া দরকার।

• রানী দুর্গাবতী ছিলেন চান্দেল্ল বংশীয় রাজা " কিরাত রাই " এর কন্যা। রানী দুর্গাবতী ছোটবেলা থেকেই বুদ্ধিমান, সাহসী এবং বিচক্ষন ছিলেন।।

• রানী দুর্গাবতী বিবাহযোগ্য হলে গন্ডোয়ানা শাসক সংগ্রাম শাহের পূত্র দলপৎ শাহের সঙ্গে 1542 খ্রিস্টাব্দে রানী দুর্গাবতীর বিবাহ হয়। এবং তাদের দুজনের বিবাহের পর দুর্গাবতী গন্ডোয়ানার রানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।।

WB Class 11 Philosophy এর বিভিন্ন অধ্যায়ের MCQ Question এর ওপর Free Online Mock Test দিতে নিচের লিঙ্ক গুলো ওপর ক্লিক করো👇👇

1- Class 11 Philosophy Free Online Mock Test Part - 1 
2- Class 11 Philosophy Free Online Mock Test Part - 1 
3- Class 11 Philosophy Free Online Mock Test Part - 1 

রানী দুর্গাবতী সিংহাসন লাভঃ দলপৎ শাহের সঙ্গে দুর্গাবতীর বিবাহের ঠিক ৬-৭ বছর পর,যখন তাদের সন্তানদ বীরনারায়ণের বয়স মাত্র ৫, তখন হঠাৎ করেই দলপৎ শাহ অসুস্থ হয়ে যান।  এবং তার কিছু সময় পরেই দলপৎ শাহের মৃত্যু ঘটে।এরূপ পরিস্থিতিতে বীরনারায়ণের পক্ষে সিংহাসন সামলানো অসম্ভব ছিল। সেকারনেই রানী দুর্গাবতী বাধ্য হয়েই তিনি গন্ডোয়ানার শাসন ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নেন। এবং গন্ডোয়ানা রানী হিসেবে তিনি সিংহাসনে বসে, গন্ডোয়ানা শাসনকার্য পরিচালনা করতে থাকেন।।

রানী দুর্গাবতীর কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনাঃ   সিংহাসনে বসার পর রানী দুর্গাবতী যথাযথভাবে রাজকার্য পরিচালনা করতে থাকেনম রানী দুর্গাবতী তাঁর তীক্ষ্ণ বুদ্ধি এবং বিচক্ষণতা সাহায্যে গন্ডোয়ানার শাসনব্যবস্থাকে ঠিক রাখেন। 

রানী দুর্গাবতী সিংহাসনে বসার পর,  বেশকিছু কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছেন।যেমন- 

মধ্যযুগের ভারতের একজন শাসিকা হয়েও দুর্গাবতী যে অসামান্য কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন তা এককথায় অতুলনীয়। 

•দলপৎ শাহের মৃত্যুর পর গণ্ডোয়ানার চরম দুর্দিনে, যখন গন্ডোয়ানা শাসনব্যবস্থার ভবিষ্যত অজানা ছিল, তখন একজন নারী হয়েও তিনি নিজ দেশের শাসন ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নেন। 

• নিজের রাজ্যেকে বিভিন্ন বহিরাগত শক্তির আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে রানী দুর্গাবতী কখনোই ভয় পাননি। বিভিন্ন বহিরাগত আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি সামরিক দক্ষতার পরিচয় দেন।

• বীজ বাহাদুরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পরেও গন্ডোয়ানা রাজকোশে প্রবল অর্থ সংকট দেখা দেয়। এরূপ পরিস্থিতিতে রাজকোশকে পূনরায় শক্তিশালী তুলতে রানী দুর্গাবতী তার তীক্ষ্ণ বুদ্ধি প্রয়োগ করেন। তিনি জোতজারদের  কাছ থেকে বল প্রয়োগ করে অর্থ আদায়ের নির্দেশ দেন। এরফলে কিছুদিনের মধ্যেই গন্ডোয়ানার রাজকোশ পুনরায় শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এছাড়াও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে তিনি নিজ রাজকোশ সমৃদ্ধ করেন। 

•  মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার চেষ্টায় রানি দুর্গাবতী যে অসাধারণ বীরত্বের পরিচয় দিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন এমন নজির ইতিহাসে খুব বেশি পাওয়া যায় না। মোঘল আক্রমণের সময় রানী দুর্গাবতী নিজের মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু শেষ দিকে যখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে যুদ্ধ জয় তার পক্ষে সম্ভব নয়,তখন তিনি অপমানিত হয়ে বেঁচে থাকার থেকে মৃত্যুকেই শ্রেয় বলে মনে করেছিলেন। এজন্যই তিনি 1564 খ্রিস্টাব্দের 24 শে জুন যুদ্ধক্ষেত্রে ছুরিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ ত্যাগ করেন।

•  মোগলদের হাতে গণ্ডোয়ানার পরাজয় দিয়ে রানি দুর্গাবতীর কৃতিত্বের বিচার করা অনুচিত হবে। কবি নজরুলের ভাষায় “তোমার মহাবিশ্বে কিছুই হারায় নাকো কভু।” মোগলদের হাতে গণ্ডোয়ানার স্বাধীনতা লুপ্ত হলেও রানি দুর্গাবতীর বীরত্বের কাহিনি হারিয়ে যায়নি। বীরাঙ্গনা দুর্গাবতী আজও ইতিহাসে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়। তাঁর আত্মাহুতির দিনটিকে (২৪ জুন) ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ‘শহিদ দিবস' হিসেবে পালন করা হয়। তাই,মধ্যে যুগের একজন নারী হিসেবে রানী দুর্গাবতী তার জীবনে যে অসামান্য কৃতিত্বের ছাপ রেখে গেছেন,তা সবসময় ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।।

আশাকরি যে; একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় ( wb class 11 history question answer chapter 5 in Bengali) সমাজের ঘটনা প্রবাহ ( wb class 11 history question answer and suggestion 2023) থেকে শেয়ার করা,class 11 history mcq question answer, modern Indian history saq question answer, and wb class 11 history LA Question Answer And History Notes তোমাদের কাজে আসবে।।Tags : 

একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় | একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর | একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড় প্রশ্ন উত্তর | একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্নোত্তর তৃতীয় অধ্যায় | সমাজের ঘটনাপ্রবাহ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | class 11 history question answer | wb class 11 history question and answer | class 11 history | class 11 history suggestion 2022 | Class 11 history chapter 6 questions and answers in bengali | WB Class 11 history chapter 6 questions and answers in bengali | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | WB Class 11 History MCQ & SAQ Question Answer | wb class xi history question answer | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর ষষ্ঠ অধ্যায় | WB Class 11 History Question Answer & Notes | Class 11 History MCQ | Class 11 History SAQ Question Answer | Class 11 History Notes | Class 11 History Suggestion | WB Class XI History Question Answer & Notes | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | WB Class 11 History Question Answer & Notes | Class 11 History 8 Mark Question Answer | wb Class 11 History Notes | WB Class 11 History Suggestion 2022 | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস 2022 | wb class 11 history question answer & suggestion 2023

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top