একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর |
আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় ( wb class 11 history question answer chapter 5 in Bengali) অর্থনীতির বিভিন্ন দিক ( wb class 11 history question answer and suggestion 2023) থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ class 11 history mcq question answer, modern Indian history saq question answer, and wb class 11 history LA Question Answer And History Notes তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এর আগের পোস্টে আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস সাজেশন 2022-23 তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম। এবং তারপর আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস সাজেশন 2022-23 হিসেবে যে সমস্ত প্রশ্ন রেখেছিলাম, আর তার বেশিরভাগ প্রশ্নের উত্তর আমাদের ওয়েবসাইটে করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা চাইলে তার উওর সেখান থেকে দেখে নিতে পারো।।
একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় সমাজের ঘটনা প্রবাহ প্রশ্ন উত্তর | WB Class 11 History MCQ Question Answer
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উওর |
একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় সমাজের ঘটনা প্রবাহ প্রশ্ন উত্তর | WB Class 11 History MCQ Question Answer
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
1. কোন্ প্রাচীন সভ্যতায় ক্রীতদাসপ্রথা সবচেয়ে ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল?
A- রোমান
B- মিশরীয়
C- সুমেরীয়
D- ভারতীয়
উওর : রোমান
2. রোমের বেশির ভাগ ক্রীতদাসই ছিল—
A- দেশীয়
B- উচ্চশিক্ষিত
C- স্বাধীন
D- বিদেশি
উওর : বিদেশি
3. পালিয়ে যাওয়া ক্রীতদাসকে কী বলা হত? -
A- ভার্নি
B- গ্ল্যাডিয়েটার
C- প্যাট্রিসিয়ান
D- ম্যানুমিসিও
উওর : ম্যানুমিসিও
4. মিশরের অধিকাংশ ক্রীতদাসই ছিল—
A- শ্রমিক
B- কৃষক
C- শিল্পী
D- গৃহভৃত্য
উওর : গৃহভৃত্য
5. মৌর্য যুগে ভারতে কোনো ক্রীতদাস ছিল না বলে অভিমত দিয়েছিলেন -
A- কৌটিল্য
B- ফা-হিয়েন
C- মেগাস্থিনিস
D- হিউয়েন সাঙ
উওর : মেগাস্থিনিস
6. হুইলার মনে করেন যে, হরপ্পা সভ্যতায় ভূমিদাসে পরিণত হয়েছিল—
A- কৃষকরা
B- শ্রমিকরা
C- শিল্পীরা
D- কারিগররা
উওর : কৃষকরা
7. ঋগবেদে দাস বা 'দস্যু’ বলা হয়েছে—
A- অনার্যদের
B- ক্ষত্রিয়দের
C- বৈশ্যদের
D- শূদ্রদের
উওর : অনার্যদের
৪. সুলতানি আমলে সুলতানের খাস ক্রীতদাসদের বলা হত—
A- বন্দেগান-ই-চাহেলগান
B- বন্দেগান-ই-খাস
C- দবির খাস
D- দেওয়ান-ই-খাস
উওর : বন্দেগান-ই-খাস
9. সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ শিখরে অবস্থান করতেন—
A- ডিউক
B- ব্যারন
C- নাইট
D- রাজা
উওর : রাজা
10. ‘কমিটেটাস' প্রথার প্রচলন ছিল—
A- ফ্রান্সে
B- জার্মানিতে
C- আরবে
D- ইংল্যান্ড
উওর : জার্মানিতে
11. সামন্ততন্ত্রে বীর যোদ্ধাদের বলা হত—
A- শিভালরি
B- টুবাদুর
C- নাইট
D- ফাইটার
উওর : নাইট
12. চাৰ্চ কর্তৃক আদায়িকৃত ধর্মকরের নাম ছিল -
A- টাইলে।
B- টাইথ
C- গ্যাবেলা
D- ভিংটিয়েমে
উওর : টাইথ
13. ইত্তাপ্রথা প্রবর্তন করেন—
A-কুতুবউদ্দিন আইবক
B- রাজিয়া
C- ইলতুৎমিস
D- বলবন
উওর : ইলতুৎমিস
14. মধ্যযুগের ইউরোপের নগরগুলি ছিল—
A- সুপরিকল্পিত
B- অপরিকল্পিত
C- সুন্দর
D- সুসজ্জিত
উওর : অপরিকল্পিত
15. সিন্ধু সভ্যতার যুগের সামুদ্রিক বন্দরটি আবিষ্কৃত হয়েছে—
A-মহেন-জো-দারোতে
B- আলমগীরপুরে
C- হরপ্পায়
D- লোথালে
উওর : লোথলে
16. প্রাচীন যুগে কোন্ কোন্ দেশে ক্রীতদাসপ্রথার যথেষ্ট অস্তিত্ব ছিল?
[i] রোমান সাম্রাজ্য [ii] গ্রিসে [iii] মিশরে [iv] চিনে
A-[i], [ii], [iii] সঠিক এবং [iv] ভুল।
B- [ii], [iii], [iv] সঠিক এবং [i] ভুল।
C- [i], [iii], [iv] সঠিক এবং [ii] ভুল। D- [i], [ii], [iv] সঠিক এবং [iii] ভুল।
উওর : A-[i], [ii], [iii] সঠিক এবং [iv] ভুল।
17. রোমে ক্রীতদাস হত
[i] যুদ্ধবন্দিরা [ii] দরিদ্র্যরা [iii] ঋণশোধে ব্যর্থ ব্যক্তিরা [iv] মহাজনের সন্তানরা
বিকল্পসমূহ •
A- [i], [ii], [iii] সঠিক এবং [iv] ভুল।
B- [ii], [iii], [iv] সঠিক এবং [i] ভুল। C- [i], [iii], [iv] সঠিক এবং [ii] ভুল।
D- [i], [ii], [iv] সঠিক এবং [iii] ভুল।
উওর : A- [i], [ii], [iii] সঠিক এবং [iv] ভুল।
18. রোমের বিক্রয়যোগ্য ক্রীতদাসদের চিহ্ন ছিল——
[i] হাতে মালা
[ii] পায়ে সাদা চকের দাগ
[iii] নাকে ফুটো [iv] গলায় বোর্ড
বিকল্পসমূহ
A-[ii]. [iv] সঠিক এবং [i], [lli] ভুল।।
B- [ii], [iii] সঠিক এবং [i], [iv] ভুল।
C- [il, [ii] সঠিক এবং [iii], [iv] ভুল।
D- [i]. [iv] এবং [ii], [ill] ভুল।
উওর : A-[ii]. [iv] সঠিক এবং [i], [lli] ভুল।।
19. ক্রীতদাস প্রথার সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ শব্দ হল—
[1] অ্যাগোরা [ii] ম্যানুমিসিও
[iii] লিবারটাস [iv] সতুরনালিয়া
বিকল্পসমূহ •
A- [i], [ii], [iii] সঠিক এবং [iv] ভুল
B- [ii], [iii], [iv] সঠিক এবং [i] ভুল।
C- [i]. [ill], [iv] সঠিক এবং [ii] ভুল।
D- [i]. [ii]. [iv] এবং [iii] ভুল।
উওর : B- [ii], [iii], [iv] সঠিক এবং [i] ভুল।
20. রোমের ক্রীতদাসরা মুক্তি পেতে পারত—
[1] অর্থ প্রদান করে [ii] কুস্তিতে জয়লাভ করে [iii] গ্ল্যাডিয়েটর হিসেবে জয়লাভ করে [iv] প্রভুর প্রাণরক্ষা করে
বিকল্পসমূহ •
A-[i]. [ii], [iii] সঠিক এবং [iv] ভুল।
B- [ii], [ili]. [iv]ঠক এবং [i] ভুল।
C- [i]. [iii]. [iv] [ঠক এবং [ii] ভুল।
D- [i]. [[i]. [iv] সঠিক এবং (III) ভুল।
উওর : C- [i]. [iii]. [iv] [ঠক এবং [ii] ভুল।
21. প্রাচীন মিশরে অভিজাত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিল—
[i] রাজপরিবার [ii] পুরোহিতশ্রেণি
[iii] ভিজিয়ার [iv] ব্যাবসায়ী
বিকল্পসমূহ •
A- [i], [ii]. [ill] সঠিক এবং [iv] ভুল B- [ii]. [iii], [iv] সঠিক এবং [i] ভুল।
C- [i]. [ii]. [iv] সঠিক এবং [ii] ভুল। D- [i]. [ii], [iv] সঠিক এবং [iii] ভুল।
উওর : D- [i]. [ii], [iv] সঠিক এবং [iii] ভুল।
22. প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যে-
A- ক্রীতদাসপ্রথা সবচেয়ে ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল।
B- রোমের ক্রীতদাসরা বিভিন্ন নাগরিক অধিকার ভোগ করত
C- ক্রীতদাসরা তাদের উপার্জিত অর্থ সন্তানদের জন্য রেখে যেত
D- রোমান প্রভুরা ক্রীতদাসদের বিক্রি করতে পারলেও হত্যা করতে পারত না
উওর : ক্রীতদাসপ্রথা সবচেয়ে ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল।
23- রোমে সত্তুরনালিয়া উৎসবে—
A- পালিয়ে যাওয়া ক্রীতদাসরা ধরা দিত
B- ক্রীতদাস ও তার প্রভুর মধ্যে সহমর্মিতা গড়ে উঠত
C- ক্রীতদাসদের বিভিন্ন নাগরিক অধিকার দেওয়া হত
D- ক্রীতদাসদের অর্থসম্পদ প্রদান করা হত
উওর : ক্রীতদাস ও তার প্রভুর মধ্যে সহমর্মিতা গড়ে উঠত
24- কোনো ক্রীতদাস তার প্রভুর প্রাণ রক্ষা করলে-
A- ক্রীতদাসটি প্রচুর অর্থ পেত
B- ক্রীতদাসটি বড়ো পুরস্কার পেত
C- ক্রীতদাসটি দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে পারত
D- ক্রীতদাসটি প্ল্যাডিয়েটর যোদ্ধা হিসেবে গণ্য হত
উওর : ক্রীতদাসটি দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে পারত
25. ডেলোস ছিল একটি বড়ো____ ক্রয়বিক্রয় কেন্দ্র।
A কৃষিপণ্য
B- গবাদিপশু
C- ভূমিদাস
D- ক্রীতদাস
উওর : ক্রীতদাস
26- দর্শকদের মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্যে ক্ষুধার্ত হিংস্র পশুর সঙ্গে লড়াই করত।
A- ম্যানুমিসিওরা
B- গ্ল্যাডিয়েটাররা
C- প্লেবিয়ানবা
D- ভার্নিরা
উওর : গ্ল্যাডিয়েটাররা
27- মুক্তিপ্রাপ্ত ক্রীতদাসকে
বলা হত।
A- ম্যানুমিসিও
B- লিবারটাস
C- গ্লাডিয়েটার
D- ভার্নি
উওর : লিবারটাস
28- দাসপ্রথাকে 'ম্লেচ্ছপ্রথা' বলে অভিহিত করেছেন।
A- কাত্যায়ন
B- যাজ্ঞবন্ধ্য
C- কৌটিল্য
D- মনু
উওর : কৌটিল্য
29. যে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিম্ন সামন্ত তার ঊর্ধ্বতন সামন্তের প্রতি
আনুগত্য জানিয়ে ফিফ বা জমি লাভ করত তাকে বলা হত___
A- ব্যারন
B- শিভালরি
C- স্কুটেজ
D- ইনভেস্টিচার
উওর : ইনভেস্টিচার
30. টাইলে ছিল এক ধরনের __ কর
A- ধর্ম
B- সম্পত্তি
C- উৎপাদন
D- আয়
উওর : সম্পত্তি
31. সামন্তপ্রভুদের দুজনের মধ্যে অনুষ্ঠিত তলোয়ার-যুদ্ধ___নামে পরিচিত ছিল।
A- ইনভেস্টিচার
B- ফাইট
C- টুর্নামেন্ট
D- ডুয়েল
উওর : ডুয়েল
32. ম্যানরের দরিদ্র কৃষকরা নামে পরিচিত ছিল।
A- ক্রফটার
B- ভিলেন
C- সার্ফ
D- করাট
উওর : ভিলেন
ম্যানর ব্যবস্থা বা ম্যানর প্রথা কাকে বলে? ম্যানর ব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর
একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় ( Class 11 history chapter questions and answers in bengali ) অর্থনীতির বিভিন্ন দিক অধ্যায়ের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর ( Class 11 history chapter 5 questions and answers ) দেবো। এবং সেইসঙ্গে একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড় প্রশ্ন উত্তর হিসাবে একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়( Class 11 history questions answers chapter 5 ) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " ম্যানর ব্যবস্থা বা ম্যানর প্রথা কাকে বলে? ম্যানর ব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য কি কি " প্রশ্নটির উওর একাদশ শ্রেণির ইতিহাস নোট হিসাবে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
ম্যানর ব্যবস্থা বা ম্যানর প্রথা কাকে বলে? ম্যানর ব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।
ভূমিকাঃ ম্যানর প্রথা অথবা ম্যানর ব্যবস্থা হল ইউরোপের সামন্ততন্ত্রের সঙ্গে জড়িত একটি দিক। ম্যানার ব্যবস্থার অপর নাম হল সিনোরীয় ব্যবস্থা। তৎকালীন ইউরোপের সামন্ততন্ত্রে বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করতো। সামন্ততন্ত্রের অধীনে বসবাসকারী সেই সমস্ত গ্রামীন মানুষদের নিয়ে গঠিত এক বা একাধিক গ্রাম নিয়ে সামন্তপ্রভুদের যে শাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠতো তাই ম্যানর প্রথা বা ম্যানর ব্যবস্থা নামে পরিচিত।।
ইউরোপের সেই ম্যানর ব্যবস্থা বা ম্যানর প্রথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ছিল। যেমন -
ম্যানর প্রভুঃ ম্যানর ব্যবস্থা একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল ম্যানর প্রভুর অস্তিত্ব। ম্যানর ব্যবস্থার সবচাইতে ক্ষমতাশালী অথবা ম্যানর ব্যবস্থার সবচেয়ে উপরে অবস্থানকারী ব্যক্তিকে ম্যানর প্রভু বলা হতো। ম্যানর প্রভু ম্যানর ব্যবস্থা সাহায্যে তার অধীনস্থ কৃষক,সাধারণ মানুষ, জমির উৎপাদন, শিল্প, বাণিজ্য,বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম, শাসন ইত্যাদির দেখাশোনা করতেন।।
ম্যানর হাউসঃ প্রতিটি ম্যানর ব্যবস্থায় একটি করে ম্যানর হাউস থাকতো। ম্যানর হাউস হল ম্যানর প্রভু বা সামন্ত প্রভুদের আবাসস্থল। সামন্ত প্রভুরা তার আত্মীয় পরিজন ও কর্মচারীদের নিয়ে ম্যানর হাউসে বসবাস করতেন। ম্যানর হাউস গুলি আকৃতিতে হতো বিশাল। সেখানে বসবাস করার জন্য ম্যানর হাউস গুলির মধ্যে নানা ধরনের ব্যবস্থা বা সুযোগ সুবিধা করা হতো।।
জমিঃ ম্যানর ব্যবস্থা গড়ে উঠতো একটি বা একাধিক গ্রাম নিয়ে এবং সেই গ্রামগুলিতে বিপুল পরিমাণ কৃষিজমি,পশুচারণ জমি,পতিত জমি জঙ্গল,জলাভূমি কৃষকদের বাসগৃহ, শ্রমিক ও কারিগরদের বাসগৃহ, গির্জা ইত্যাদি থাকতো। সামন্ত প্রভুরা সেই সমস্ত জমিকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতো। সেই সব জমিতে যেসব ফসল উৎপাদিত হতো, সেখান থেকে সামন্ত প্রভুরা কর বা খাজনা হিসেবে ভোগ করতো। যার ফলে সামন্তপ্রভুরা বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পত্তির মালিক হতো।।
চাষবাসঃ ম্যানর ব্যবস্থা ছিল সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার অর্থনৈতিক দিক। সামন্তপ্রভুরা নিজের অধীনে যেসব কৃষকদের রাখতো, সেই সমস্ত কৃষকরা ম্যানর ব্যবস্থায় যে সমস্ত জমি ছিল, সেখানে তাদের খাটিয়ে বিভিন্ন কৃষি পণ্য উৎপাদন করতো। এবং কৃষকেরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে সামন্ততন্ত্রের অর্থনীতিকে সচল রাখতো।। প্রথমদিকে মূলত ম্যানরগুলির চাহিদা অনুযায়ী ই উৎপাদন কার্য করা হতো। কিন্তু পরবর্তীকালে ম্যানর ব্যবস্থার উৎপাদন বাড়ানো হয়।।
স্বয়ংসম্পূর্ণতাঃ প্রতিটি ম্যানর ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রতিটি ম্যানরে বিভিন্ন পেশার মানুষ বসবাস করতো। যার ফলে বিভিন্ন পেশায় কাজকর্ম করার জন্য ম্যানরের যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন হয়ে যেত। তাছাড়াও প্রত্যেকের প্রয়োজনীয় সামগ্রীও ম্যানরেই উৎপাদিত বা তৈরি করা হতো।। বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন করতো বলে তাদের কোনো কিছুর অভাব হতো না। যার ফলে প্রতিটি ম্যানর ই ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং সাজানো গোছানো।
প্রতিটি ম্যানরেই, সামন্তপ্রভুরা ম্যানরের উন্নতির জন্য রাস্তাঘাট,বাড়িঘর, শিল্প-কারখানা,খামারবাড়ি, চার্চ, যাজকদের ঘর,কবরখানা ইত্যাদি তৈরি করে থাকতো। যার ফলে ম্যানরের বসবাসকারী কারোরই কোনো অভাব হতো না।।
ম্যানর ব্যবস্থা বা ম্যানর প্রথা কাকে বলে? ম্যানর ব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর
একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর |
ম্যানর ব্যবস্থা বা ম্যানর প্রথা কাকে বলে? ম্যানর ব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।
ভূমিকাঃ ম্যানর প্রথা অথবা ম্যানর ব্যবস্থা হল ইউরোপের সামন্ততন্ত্রের সঙ্গে জড়িত একটি দিক। ম্যানার ব্যবস্থার অপর নাম হল সিনোরীয় ব্যবস্থা। তৎকালীন ইউরোপের সামন্ততন্ত্রে বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করতো। সামন্ততন্ত্রের অধীনে বসবাসকারী সেই সমস্ত গ্রামীন মানুষদের নিয়ে গঠিত এক বা একাধিক গ্রাম নিয়ে সামন্তপ্রভুদের যে শাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠতো তাই ম্যানর প্রথা বা ম্যানর ব্যবস্থা নামে পরিচিত।।
ইউরোপের সেই ম্যানর ব্যবস্থা বা ম্যানর প্রথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ছিল। যেমন -
ম্যানর প্রভুঃ ম্যানর ব্যবস্থা একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল ম্যানর প্রভুর অস্তিত্ব। ম্যানর ব্যবস্থার সবচাইতে ক্ষমতাশালী অথবা ম্যানর ব্যবস্থার সবচেয়ে উপরে অবস্থানকারী ব্যক্তিকে ম্যানর প্রভু বলা হতো। ম্যানর প্রভু ম্যানর ব্যবস্থা সাহায্যে তার অধীনস্থ কৃষক,সাধারণ মানুষ, জমির উৎপাদন, শিল্প, বাণিজ্য,বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম, শাসন ইত্যাদির দেখাশোনা করতেন।।
ম্যানর হাউসঃ প্রতিটি ম্যানর ব্যবস্থায় একটি করে ম্যানর হাউস থাকতো। ম্যানর হাউস হল ম্যানর প্রভু বা সামন্ত প্রভুদের আবাসস্থল। সামন্ত প্রভুরা তার আত্মীয় পরিজন ও কর্মচারীদের নিয়ে ম্যানর হাউসে বসবাস করতেন। ম্যানর হাউস গুলি আকৃতিতে হতো বিশাল। সেখানে বসবাস করার জন্য ম্যানর হাউস গুলির মধ্যে নানা ধরনের ব্যবস্থা বা সুযোগ সুবিধা করা হতো।।
জমিঃ ম্যানর ব্যবস্থা গড়ে উঠতো একটি বা একাধিক গ্রাম নিয়ে এবং সেই গ্রামগুলিতে বিপুল পরিমাণ কৃষিজমি,পশুচারণ জমি,পতিত জমি জঙ্গল,জলাভূমি কৃষকদের বাসগৃহ, শ্রমিক ও কারিগরদের বাসগৃহ, গির্জা ইত্যাদি থাকতো। সামন্ত প্রভুরা সেই সমস্ত জমিকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতো। সেই সব জমিতে যেসব ফসল উৎপাদিত হতো, সেখান থেকে সামন্ত প্রভুরা কর বা খাজনা হিসেবে ভোগ করতো। যার ফলে সামন্তপ্রভুরা বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পত্তির মালিক হতো।।
চাষবাসঃ ম্যানর ব্যবস্থা ছিল সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার অর্থনৈতিক দিক। সামন্তপ্রভুরা নিজের অধীনে যেসব কৃষকদের রাখতো, সেই সমস্ত কৃষকরা ম্যানর ব্যবস্থায় যে সমস্ত জমি ছিল, সেখানে তাদের খাটিয়ে বিভিন্ন কৃষি পণ্য উৎপাদন করতো। এবং কৃষকেরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে সামন্ততন্ত্রের অর্থনীতিকে সচল রাখতো।। প্রথমদিকে মূলত ম্যানরগুলির চাহিদা অনুযায়ী ই উৎপাদন কার্য করা হতো। কিন্তু পরবর্তীকালে ম্যানর ব্যবস্থার উৎপাদন বাড়ানো হয়।।
স্বয়ংসম্পূর্ণতাঃ প্রতিটি ম্যানর ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রতিটি ম্যানরে বিভিন্ন পেশার মানুষ বসবাস করতো। যার ফলে বিভিন্ন পেশায় কাজকর্ম করার জন্য ম্যানরের যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন হয়ে যেত। তাছাড়াও প্রত্যেকের প্রয়োজনীয় সামগ্রীও ম্যানরেই উৎপাদিত বা তৈরি করা হতো।। বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন করতো বলে তাদের কোনো কিছুর অভাব হতো না। যার ফলে প্রতিটি ম্যানর ই ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং সাজানো গোছানো।
প্রতিটি ম্যানরেই, সামন্তপ্রভুরা ম্যানরের উন্নতির জন্য রাস্তাঘাট,বাড়িঘর, শিল্প-কারখানা,খামারবাড়ি, চার্চ, যাজকদের ঘর,কবরখানা ইত্যাদি তৈরি করে থাকতো। যার ফলে ম্যানরের বসবাসকারী কারোরই কোনো অভাব হতো না।।
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর || WB Class 11 History Question Answer & Notes 2023
WB Class XI History Question Answer & Notes |
সামন্ততন্ত্র বলতে কী বোঝায় অথবা সামন্ততন্ত্র কাকে বলে? || পশ্চিম ইউরােপে সামন্ততন্ত্রের উদ্ভবের কারণ
খুব সাধারণভাবে সামন্ততন্ত্র বলতে বোঝায় এমন এক শাসনব্যবস্থাকে, যা মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থেকে অথবা রাজার শাসনের অধীনে থেকে কোনো একটি অঞ্চলের শাসন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এক্ষেত্রে সেই অঞ্চলে শাসন ব্যবস্থা যে নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে বলা হয় সামন্ত প্রভু। সামন্ত প্রভু রাজার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে অথবা রাজার অধীনে থেকে সেই নির্দিষ্ট অঞ্চলের শাসনব্যবস্থাকে নিজের ইচ্ছামত পরিচালনা করে।। এরকম ব্যবস্থাকেই সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থা বলা হয়। নবম শতক থেকে পশ্চিম ইউরোপে সামন্ততন্ত্রের উদ্ধব ঘটে। এবং এরপর থেকেই ইউরোপের সামন্ততন্ত্র ছড়িয়ে পড়ে। মনে করা হয় দশম ও একাদশ শতকের মধ্যে ইউরোপে সামন্ততন্ত্রের বিকাশ ঘটেছিল। ইউরোপের সামন্ততন্ত্রের উদ্ধবের বেশ কিছু কারণ ছিল। যেমন -
অনুগত পৃষ্ঠপোষক সম্পর্কঃ প্রাচীন রোমের এক ধরনের প্রথা ছিল,যেই প্রথার মাধ্যমে সাধারণ জনগন, ধনী অভিজাত ব্যক্তিদের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করতেন এবং সেই আনুগত্যের বদলে সেই ক্ষমতাশীল ব্যক্তি জনসাধারণের শান্তি এবং নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব নিতেন। এই প্রাচীন রোমের এই সম্পর্ক অনুগত পৃষ্ঠপোষক সম্পর্ক নামে পরিচিত ছিল। আনুগত্য পৃষ্ঠপোষক সম্পর্ক ধীরে ধীরে চারদিকে বিস্তার লাভ করে এবং এভাবেই ধীরে ধীরে সামন্ততন্ত্রের বিকাশ ঘটতে শুরু করে।
কমিটেটাস প্রথাঃ কমিটেটাস প্রথা হলো এমন একটি প্রথা যে প্রথার মাধ্যমে কিছু বীর যোদ্ধারা একজন উপদলীয় ক্ষমতাসীন ব্যক্তির প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করতেন এবং তার স্বার্থ রক্ষার জন্য অঙ্গীকার করতেন। তার বদলে সেই ক্ষমতাশালী ব্যক্তি সেই যোদ্ধাদের আশ্রয়,নিরাপত্তা এবং যাবতীয় দায়িত্ব নিতেন এভাবেই কমিটেটাস প্রথা সামন্ততন্ত্রের কাঠামো গঠনে সাহায্য করেছিল।
বর্বর আক্রমণঃ ইউরোপের সামন্ততন্ত্র উদ্ভবের পেছনে সব চেয়ে বড় কারন ছিল বর্বর জাতির আক্রমণ। ক্যারোলিঞ্জীয় সাম্রাজ্যের রাজপরিবারে রাজাকুমারদের মধ্যে বিরোধের ফলে দ্বাদশ শতকের মধ্যে সেই সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে। এরূপ অবস্থায় ম্যাগিয়ির, সারাসেন, ভাইকিং প্রভৃতি বিভিন্ন বর্বর জাতি পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের অভিযান চালালে ইউরোপের চরম নৈরাজ্য এবং অশান্তি সৃষ্টি হয়। এরূপ পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ নিজেদের সম্পত্তি রক্ষা এবং শান্তির জন্য উচ্চস্তরের কোনো একজন শক্তিশালী ব্যক্তির ওপর নিজেদের দায়িত্ব অর্পন করে। এবং এভাবেই সামন্ততন্ত্রের বিকাশ ঘটে।
মুসলিম আক্রমণঃ 814 খ্রিস্টাব্দের রোমান সম্রাট শার্লামেনের মৃত্যুর পরবর্তী কালে রোমের কেন্দ্রীয় শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। এর উপস্থিতিতে মুসলিম এবং অন্যান্য বৈদেশিক শক্তিগুলির ইউরোপে আক্রমণ চালালে ইউরোপের সাধারণ মানুষের জীবনে শান্তি ভঙ্গ হয় এবং নিরাপত্তার অভাব দেখা যায়। এর ফলে জনগণ নিজেদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তার প্রয়োজনে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের ওপর নির্ভর হতে বাধ্য হয়। এইভাবে স্থানীয় ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রভুর উত্থান ঘটে এবং এভাবেই সামন্ততন্ত্রের বিকাশ ঘটে।।
উপসংহারঃ উপরিক্ত কিছু প্রধান কারণগুলি ছাড়াও আরও নানা ছোট-বড় কারণে, খ্রিস্টীয় নবম শতক থেকে ইউরোপে সামন্ততন্ত্রের পত্তন শুরু হয়েছিল।।
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর 2023 || WB Class 11 History Question Answer & Suggestion 2022
wb class 11 history question answer & suggestion 2022 |
ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশের প্রধান কারণগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।
ভূমিকাঃ 446 খ্রিস্টাব্দে পশ্চিম ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশ শুরু হয়নি। কারণ সেই সময়ে রোমান সাম্রাজ্যের পতন,সামন্ততন্ত্রের জন্য বাণিজ্যের বাধা, ম্যানত ব্যবস্থার অস্তিত্ব ইত্যাদি কারণে ইউরোপের বাণিজ্যের বিকাশ শুরু হয়নি। কিন্তু মধ্যযুগের প্রথম দিক থেকে ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশ শুরু হয়। মধ্যযুগের ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশের পেছনে বেশ কিছু কারণ ছিল। যেমন -
ক্রুসেডের অবদানঃ খ্রিস্টানদের পবিত্রভূমি জেরুজালেম দখলকে কেন্দ্র করে খ্রিস্টান ও মুসলিম ধর্মযোদ্ধাদের মধ্যে প্রায় দুশো বছর ধরে (১০৯৬- ১২৯১ খ্রি.) যে ক্রুসেড বা ধর্মযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, তা মধ্যযুগের ইউরোপে বাণিজ্যের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। ক্রুসেডের ফলে পাশ্চাত্যের সঙ্গে প্রাচ্যের যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতা স্থাপিত হয়। পশ্চিমের জগতে প্রাচ্যের বিভিন্ন সামগ্রীর চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এই যোগাযোগের ফলে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর আমদানি-রপ্তানি আরম্ভ হয়। এবং আমদানি এবং রপ্তানি শুরুর মাধ্যমে ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশ শুরু হয়।
নগরজীবনের প্রসারঃ একাদশ শতকের পরবর্তীকালে ইউরোপে নগর জীবনের প্রতিষ্ঠস হয়। যার ফলে সেখানকার জনসংখ্যা ব্যাপক পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে তাদের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী রচাহিদা বৃদ্ধি পায়।এবং সেই সমস্ত চাহিদা মেটানোর জন্যেই বিভিন্ন ধরনের শিল্প কারখানার বিকাশ ঘটে। এবং ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশ শুরু হয়
গিল্ডের ভূমিকাঃ ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশের ক্ষেত্রে গিল্ডগুলি বিশেষ সাহায্য করেছিল। বাণিজ্যের সুবিধার্থে তখনকার বণিকরস বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের আইন রচনা করতো। কারখানায় কাঁচামাল ও শ্রমিকের যোগান অব্যাহত রাখা, বাণিজ্যিক পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া, বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী গুণগত মান ঠিক রাখা ইত্যাদি কাজ গুলি গিল্ডের মাধ্যমে করা হতো। দিন দিন গিল্ডের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউরোপের বিভিন্ন শিল্পজাত দ্রব্যের সংখ্যাও বাড়ে। এবং এভাবেই আমদানি এবং রপ্তানিকার ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।।
উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ মধ্যযুগের ইউরোপে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত ছিল এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশে বিশেষ সাহায্য করেছিল। মধ্যযুগের রাস্তাঘাট এবং নদীপথ গুলি উন্নত ছিল বলে, দূর-দূরান্তে থেকে পণ্য রপ্তানি করা এবং দূর দেশ থেকে বিভিন্ন শিল্পজাত দ্রব্য আমদানি করার সুবিধা ছিল।
লোম্বার্ডদের আক্রমণঃ বাইজানটাইন সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ভূমধ্যসাগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ক্রমাগত লোম্বার্ডদের আক্রমণ হতো। যার ফলে সেখানকার সাধারণ মানুষদের জীবনে কোনো শান্ন্তনিরাপত্তা ছিল না। এবং এর ফলে সেখানকার মানুষের কৃষিকাজ ধ্বংস হয়। ফলে সেখানকার মানুষ কৃষির বিকল্প হিসেবে কুটির শিল্প এবং বাণিজ্যকে জীবিকা হিসেবে বেছে নেয় এবং তারা শীঘ্রই পণ্যদ্রব্যের বাজারে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি ঘটায়।।
কম্পাস এর আবিষ্কারঃ কম্পাসের আবিষ্কার মধ্যযুগে ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। কম্পাস আবিষ্কৃত হওয়ার ফলে সমুদ্রপথে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশে সাহায্য করে।। কম্পাসের সাহায্যে নাবিকরা সমুদ্রপথে ব্যবসা-বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিতে পারতো।। এবং কম্পাসের সাহায্যেই তারা বিভিন্ন দেশে পৌঁছে সেখানে বাণিজ্য করার সুযোগ পেত।।
বাণিজ্য মেলাঃ ইউরোপের বড় বড় শহরগুলিতে বছরে অন্তত একবার হলেও বিভিন্ন বাণিজ্যমেলা বসতো। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ সেই মেলায় জিনিসপত্র কেনাবেচা করতে আসতো। ফলে এভাবেও ইউরোপে বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছিল।।
উপরিক্ত কারণগুলো ছাড়াও আরও নানা কারণে মধ্যযুগে ইউরোপের বাণিজ্যের বিকাশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।।
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর || WB Class 11 History Question Answer 2022
WB Class 11 History Question Answer and suggestion 2022 |
ইউরোপ ও ভারতের বাণিজ্যের তুলনামূলক আলোচনা
বাণিজ্যের বিকাশের সময়কালঃ
• ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশ ঘটে মধ্যযুগে। মধ্যেযুগের একাদশ থেকে চতুর্দশ শতকের মধ্যে ইউরোপে বাণিজ্যের চরম অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়।
• ভারতে হরপ্পা সভ্যতার যুগ থেকেই বাণিজ্যে অগ্রগতি ঘটেছিল। বৈদিক যুগে বাণিজ্য কিছুটা ব্যহত হলেও পরবর্তীকালে মধ্যযুগে ভারতে বাণিজ্যের যথেষ্ট পরিমাণে বিকাশ ঘটে।
বাণিজ্যের বিকাশের কারণ হিসেবে ধর্মের গুরুত্বঃ
• ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশের অন্যান্য কিছু কারণের সঙ্গে একটি ধর্মীয় কারণ যুক্ত ছিল। মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের ক্রুসেড যুদ্ধের ফলে পশ্চিমের এবং প্রাচ্যের যে সম্পর্ক স্থাপন হয়,,তার ফলে সেখানে বিভিন্ন বাণিজ্য দ্রব্যের আমদানি রপ্তানি শুরু হয়েছিল।
• ভারতে বাণিজ্যের অগ্রগতির ক্ষেত্রে নগরজীবনের প্রসার, বাণিজ্য-গিল্ডের প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি বিষয়গুলি কাজ করলেও এক্ষেত্রে কোনো ধর্মীয় বিষয় যুক্ত ছিল না।
সামন্ততন্ত্রের প্রভাবঃ
• ইউরোপে যতদিন পযর্ন্ত সামন্ততন্ত্রের অস্তিত্ব ছিল, ততদিন তা বানিজ্যের বিকাশের ক্ষেত্রে বাধা হয়েছিল।। কিন্তু যখন ইউরোপে সামন্ততন্ত্রের অবক্ষয় শুরু হয়,তখন থেকে বাণিজ্যের বিকাশ ঘটতে শুরু করে।
• কিন্তু অন্যদিকে প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাণিজ্যের অগ্রগতির ক্ষেত্রে ভারতে সামন্ত সামন্ততন্ত্রের অস্তিত্ব না থাকায়, ভারতের বাণিজ্যের বিকাশের ক্ষেত্রে সামন্ততন্ত্রের সেরকম ভাবেও কোনো ভূমিকা ছিল না।।
সামুদ্রিক বাণিজ্যঃ
• ইউরোপে সামুদ্রিক পথ এবং বন্দর গুলি বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র ছিল ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল।
• ভারতের ক্ষেত্রে পশ্চিম উপকূলের সমুদ্র বন্দর গুলি ভারতের বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। ভারতের বাণিজ্যের বেশিরভাগটাই ছিল রোম এবং পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে।
বাণিজ্যের বিকাশের ক্ষেত্রে গিল্ডের ভূমিকাঃ
• ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন গিল্ড গুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। গিল্ডের নানা কাজ কর্মের মাধ্যমে ইউরোপে বাণিজ্যের বিকাশে তা সহায়ক হয়ে উঠেছিল। গিল্ডর নানা কাজকর্ম যেমন - বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকের জোগান দেওয়া, কাঁচামালের সরবরাহ করা, দ্রব্য রপ্তানি - আমদানি করা, শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করা, বিভিন্ন শিল্পজাত দ্রব্যের অনুগত মান পরিক্ষা ইত্যাদি কাজ গুলি বাণিজ্যের প্রসারে সাহায্য করেছিল।।
• ইউরোপের মত ভারতেও বিভিন্ন গিল্ড বা বণিক সংঘগুলি বাণিজ্যের বিকাশে বিশেষভাবে সাহায্য করেছিল।।
নগরায়নঃ
• বাণিজ্যের প্রসারের ফলে ইউরোপের বহু নগর প্রতিষ্ঠিত হয়। তাছাড়াও বাণিজ্যের বিকাশের ফলে ইউরোপের বহু নগরগুলি পূনরায় নতুনভাবে জেগে ওঠে।
• ভারতেও বাণিজ্যের প্রসারের ফলে বহু নগর প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়াও বাণিজ্যের বিকাশের ফলে ভারতে বাণিজ্যের বিকাশের ক্ষেত্রেও তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।।
অর্থনীতির বিভিন্ন দিক অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর ||একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর
WB Class 11 History Question Answer and suggestion 2022 |
ভারতে বাণিজ্যের বিকাশের কারণগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।
ভূমিকাঃ অতীতকালে ভারতে বাণিজ্যের বিকাশ সেরকম ভাবেও শুরু হয়নি। তখনকার দিনে মূলত কৃষিকাজ ই ছিল মানুষের প্রধান জীবিকা। কিন্তু ধীরে ধীরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মানুষ কৃষিকাজ ছাড়াও অন্যান্য কর্মক্ষেত্রে নিজেদের নিয়োগ করতে শুরু করে। মানুষ ধীরে ধীরে কুটির শিল্প এবং কারিগরি শিল্পের বিকাশ ঘটাতে শুরু করে। হরপ্পা সভ্যতার যুগে পাথর,তামা, সিসা, ব্রোঞ্জ, মাটি প্রভৃতি দিয়ে বিভিন্ন শিল্প কর্ম করা হতো। এছাড়া এর পরবর্তীকালে লৌহ শিল্প, অলংকার শিল্প,বস্ত্র বয়ন শিল্প, দারু ইত্যাদি শিল্পের বিকাশ ঘটে থাকে। এবং এভাবেই ধীরে ধীরে প্রাচীনকালে ভারতের ব্যবসা বাণিজ্যের বিকাশ ঘটে। প্রাচীনকালে ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশের পেছনে কিছু কারণ ছিল। যেমন -
কৃষিপণ্যঃ প্রাচীন যুগে ভারতে কৃষির ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি ঘটেছিল। কৃষির উন্নতি ঘটায় তখন ভারতের নানা কৃষিজাত দ্রব্য উন্নত হতো। এবং সেই কৃষিপণ্য গুলি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাইরের দেশে রপ্তানি করা হতো। একসময় ভারতের সেই সমস্ত কৃষিপণ্য মিশর, মেসোপটেমিয়ায় প্রভৃতি দেশেও রপ্তানি করা হতো।
নগর জীবনের বিকাশঃ প্রাচীন এবং মধ্যযুগের ভারতের নগর জীবনের বিকাশ ঘটেছিল। ভারতের বাণিজ্যের বিকাশের ক্ষেত্রে নগর জীবনের বিকাশ বিশেষ সহায়ক হয়ে দাঁড়ায়। নবজীবনের বিকাশের ফলে জনগণের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জিনিসের চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং সেই চাহিদাগুলো মেটানোর জন্যই ভারতে বাণিজ্যির বিকাশ ঘটতে শুরু করে। নগরগুলি বণিকদের বাসস্থান, পণ্যের লেনদেন, শ্রমিকের জোগান প্রভৃতির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা পালন করেছিল।
বিভিন্ন রাজাদের সাহায্যঃ প্রাচীনকালের বিভিন্ন রাজা-মহারাজারা বাণিজ্যের বিকাশের জন্য তারা নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করতেন। কারণ বাণিজ্য থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় হতো তা, রাজকোষকে শক্তিশালী করতে যথেষ্ট পরিমাণে সাহায্য করতো।। এরজন্য প্রাচীনকালের বিভিন্ন রাজা-মহারাজারা বাণিজ্যের সহায়ক হিসেবে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, বাণিজ্য কুঠি স্থাপন, বণিকদের বিভিন্নভাবে সহায়তা ইত্যাদি কাজ করে থাকতেন। রাজাদের এরূপ সহায়তার জন্য বণিকরা ভারতে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং এর এভাবে ভারতে ধীরে ধীরে বাণিজ্যের বিকাশ ঘটতে থাকে।
বাণিজ্য মেলাঃ ইউরোপের মত ভারতেও প্রাচীন যুগে বছরের কোন এক সময়ে গ্রামেগঞ্জে বিভিন্ন বাণিজ্য মেলা বসতো। এবং সেই সমস্ত মেলায় বিভিন্ন দ্রব্য কেনা বেচা করা হতো। এসব পণ্য আবার ব্যবসায়ীরা কিনে বাইরে রপ্তানি করতেন। এবং এভাবে বিভিন্ন বাণিজ্যমেলা গুলি ভারতে বাণিজ্যের বিকাশে সাহায্য করেছিল।
বিভিন্ন গিল্ডঃ গিল্ড বলতে বোঝায় বিভিন্ন বণিকদের সংগঠন। প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন গিল্ডের অস্তিত্ব ছিল। এবং তারা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ভারতে বাণিজ্যের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করেছিল। বিভিন্ন গিল্ড গুলি মূলত কারখানায় পণ্য উৎপাদন, বিভিন্ন শিল্পজাত দ্রব্যের গুণগতমান পরীক্ষা করা,বণিকদের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা ইত্যাদির মাধ্যমে তারা ভারতে বাণিজ্যের বিকাশের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সাহায্য করেছিল।।।
মূলত উপরিক্ত কারণগুলো ছাড়াও আরও নানা কারণর ভারতে বাণিজ্যের বিকাশ ঘটেছিল। ভারতে বাণিজ্যের বিকাশ ঘটেছিল মূলত সিন্ধু সভ্যতার যুগে। সিন্ধু সভ্যতার সময় থেকে গুপ্ত যুগ পর্যন্ত ভারতে অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক উভয় প্রকারের এই বাণিজ্যের বিকাশ ঘটেছিল।।
আশাকরি যে; একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় ( wb class 11 history question answer chapter 5 in Bengali) অর্থনীতির বিভিন্ন দিক ( wb class 11 history question answer and suggestion 2023) থেকে শেয়ার করা,class 11 history mcq question answer, modern Indian history saq question answer, and wb class 11 history LA Question Answer And History Notes তোমাদের কাজে আসবে।।
Tags :