বিবেকানন্দের "বর্তমান ভারত" গ্রন্থটি কীভাবে জাতীয়তাবাদ বিকাশে সহায়তা করে || ভারতীয় জাতীয়তাবোধের বিকাশে স্বামী বিবেকানন্দের "বর্তমান ভারত" গ্রন্থটির ভূমিকা কি ছিল?
উঃ-"বর্তমান ভারত" রচনাটি 1899 খ্রিস্টাব্দে প্রবন্ধাকারে এবং 1905 সালে স্বামী শুদ্ধানন্দের উদ্যোগে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। জাতীয়তাবোধের বিকাশে বিবেকানন্দের এই রচনাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। স্বদেশ সম্পর্কিত নানা ভাবনা ধারণা এর পরতে পরতে লুকিয়ে আছে।
i)স্বদেশ চেতনা-"ভারতবাসী আমার ভাই, ভারতবাসী আমার প্রাণ, ভারতের দেবদেবী আমার ঈশ্বর.....।"-বর্তমান ভারত গ্রন্থে বিবেকানন্দের এই উক্তি দেশবাসীর মধ্যে স্বদেশ চেতনা ও স্বদেশপ্রেমকে তীব্রভাবে জাগ্রত করেছিল।
ii)আত্মনির্ভরশীলতা-বিবেকানন্দ পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণের পরিবর্তে দেশজ সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার পরামর্শ দেন।
iii)সামাজিক সংহতি-বিবেকানন্দ সমাজের জাতিভেদ প্রথা দূরীকরণের জন্য বলেছেন-...."ভুলিও না নীচ জাতি, মূর্খ, দরিদ্র, অজ্ঞ, মুচি-মেথর তোমার রক্ত, তোমার প্রাণ।" সামাজিক সংহতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে এ বাণী অমৃততুল্য।
iv)দেশের জন্য আত্মত্যাগের আহ্বান-".......হে বীর সাহস অবলম্বন কর,সদর্পে বল-আমি ভারতবাসী,ভারতবাসী আমার ভাই।"এই উক্তি দেশবাসীকে দেশের জন্য আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
v)ইতিহাসবোধ-জাতীয়তাবোধ তৈরীর জন্য দরকার দেশীয় ইতিহাস সম্পর্কে তীক্ষ্ণ জ্ঞানের। স্বামীজি তাঁর এই গ্রন্থে বৈদিক যুগ থেকে ব্রিটিশ শাসন পর্যন্ত ভারতের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস আলোচনা ও ব্যাখ্যা করেছেন।