মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের বৈশিষ্ট্য এবং ত্রুটি সম্পর্কে আলোচনা করো || দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর

0

    

মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের বৈশিষ্ট্য এবং ত্রুটি সম্পর্কে আলোচনা করো || দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর

আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বা উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ঃ ঔপনিবেশিক ভারতের শাসন (West Bengal Board Class 12 History Question Answer & Suggestion 2023) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের বৈশিষ্ট্য এবং ত্রুটি সম্পর্কে আলোচনা করো' প্রশ্নটির উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এবং উচ্চমাধ্যমিক সহ অন্যান্য ক্লাসের নোটস পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে থাকো।।

মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের বৈশিষ্ট্য এবং ত্রুটি সম্পর্কে আলোচনা করো

ভূমিকাঃ- 1909 খ্রিস্টাব্দে মর্লে-মিন্টো শাসন সংস্কার আইনের কিছু ভুলত্রুটি ভারতীয়দের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। এবং সেইসঙ্গে মর্লে-মিন্টো শাসন সংস্কার আইন যে উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছিল, তা ব্যর্থ হয়েছিল। এজন্য ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য এবং ভারতে ব্রিটিশ শাসনকে শক্তিশালী করে রাখার উদ্দেশ্য 1919 খ্রিস্টাব্দে যে ভারত শাসন আইন প্রণয়ন করে তা, মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসন সংস্কার আইন বা 1919 খ্রিষ্টাব্দে ভারত শাসন আইন নামে পরিচিত।।

মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যঃ- 

1919 খ্রিস্টাব্দে মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। যেমন- 

কেন্দ্র সরকার এবং প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে ক্ষমতা বন্টনঃ- 

মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের মাধ্যমেই সর্বপ্রথম ভারতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে সঠিক ভাবে ক্ষমতা বন্টন করা হয়। বিদেশনীতি,মূত্রব্যবস্থা, রেল ব্যবস্থা,দেশরক্ষা বাণিজ্যনীতি, ডাক ব্যবস্থা প্রভৃতি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে দেওয়া হয়। অন্যদিকে কৃষিব্যবস্থা, সেচ ব্যবস্থা,শিক্ষাব্যবস্থা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা প্রভৃতি প্রাদেশিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়।

কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহক পরিষদ গঠনঃ- 

মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসন সংস্কার আইনের মাধ্যমে ভারতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয় যেখানে 7 জন সদস্য নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই 7 জনের মধ্যে অন্ততপক্ষে তিনজন ভারতীয়কে নিয়োগ করার ব্যবস্থা করা হয়। বড়লাট তার অধীনস্থ শাসনকার্য পরিচালনা পরিষদ বা এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্যদের বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতায় তার শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। 

আইন পরিষদ গঠনঃ-

মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসন সংস্কার আইনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় আইনসভা গঠন করা হয়। কেন্দ্রে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা গঠন করা হয় যার উচ্চকক্ষের নাম হয় রাষ্ট্রীয় পরিষদ এবং নিম্নকক্ষের নাম হয় কেন্দ্রীয় আইনসভা। আইন সভায় উপায় কক্ষের সদস্যরর কোনো বিষয়ে তর্ক উত্থাপন,বিতর্কে যোগদান, ছাঁটাই সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ প্রভৃতির অধিকার পেলেও, বৈদেশিক নীতি, সামরিক বিভাগ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বড়লাটের আগাম অনুমতি ছাড়া তারা এসব বিষয়ে কোনো আলোচনা করার অধিকার পেত না। বরং কোনো আইন সংশোধন বা বাতিল করতে বড়ো লাটের অনুমতি প্রয়োজন ছিল। এছাড়া তিনি নিজেও অর্ডিন্যান্স জারি করে যে কোনো আইন প্রণয়ন করতে পারতেন। 
এছাড়াও 1919 খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু চেমসফোর্ড সংস্কার আইনের আরও উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে ছিল প্রাদেশিক দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন, ভারত সচিবের কাউন্সিল গঠন ইত্যাদি।

মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসন সংস্কার আইনের সমালোচনাঃ- 

বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে 1919 খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসন সংস্কার আইনের সমালোচনা করা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- 

ভাইসরয়ের চূড়ান্ত ক্ষমতাঃ-

মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইন এর মাধ্যমে যে কেন্দ্রীয় আইনসভা গঠন করা হয়েছিল সেখানে আইনসভার সদস্যরা বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা,বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন,  প্রস্তাব পেশ প্রভৃতির অধিকার পেলেও তারা  কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। তাই এই আইনের দ্বারা কোনো দায়িত্বশীল শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কেন্দ্রে ভাইসরয় এবং প্রদেশে গভর্নর চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তারা ইচ্ছা করলে মন্ত্রিসভার যেকোনো সিদ্ধান্ত বাতিল  করতে পারতেন। 

স্বায়ত্তশাসনের অভাবঃ- 

মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসন সংস্কার আইনের মাধ্যমে প্রতিটি প্রদেশের স্বায়ত্ত শাসন প্রতিষ্ঠা করার কথা বলা হলেও বাস্তবে তা পরিণত হয়নি।।

সাম্প্রদায়িকতা বৃদ্ধিঃ-- 

মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসন সংস্কার আইনের হিন্দু এবং মুসলিমদের মধ্যে পৃথক ভোট অধিকার দান করা হলে সাম্প্রদায়িক বিভেদ যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল। এসব কারণেই মন্টেগু চেমসফোর্ড সংস্কার আইন ভারতীয়দের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। এজন্য জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে এই আইনকে তুচ্ছ, বিরক্তিকর এবং নৈরাশ্যজনক বলে সমালোচনা করা হয়। 

আশাকরি, দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বা উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ঃ ঔপনিবেশিক ভারতের শাসন (West Bengal Board Class 12 History Question Answer & Suggestion 2023) থেকে 'মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের বৈশিষ্ট্য এবং ত্রুটি সম্পর্কে আলোচনা করো' সম্পর্কে যে নোট দেওয়া হয়েছে, তা তোমাদের কাজে আসবে।।

Tags : 

Class 12 history notes | hs history suggestion | wb class 12 history question answer and suggestion 2023 | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উওর এবং সাজেশন | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | ঔপনিবেশিক ভারতের শাসন অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর | wb class 12 History question answer  | hs History question answer 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top