হিমবাহের সঞ্চয় কাজের ফলে গঠিত বিভিন্ন ভূমিরূপ || বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর

0

 

হিমবাহের সঞ্চয় কাজের ফলে গঠিত বিভিন্ন ভূমিরূপ || বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ


আজকের ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় অথবা মাধ্যমিক ভূগোল প্রথম অধ্যায় (WBBSE Class 10 Geography Question Answer Chapter 1) বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপের হিমবাহ অংশ থেকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন 'হিমবাহের সঞ্চয় কাজের ফলে গঠিত বিভিন্ন ভূমিরূপ এর ব্যাখ্যা বা হিমবাহের সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ ব্যাখ্যা করো।' এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করব।

হিমবাহের সঞ্চয় কাজের ফলে গঠিত বিভিন্ন ভূমিরূপের ব্যাখ্যা দাও। 
অথবা,

হিমবাহের সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ ব্যাখ্যা করো। 

উওরঃ পার্বত্য অংশে হিমবাহ তার উপত্যকায় যে সমস্ত পদার্থ ক্ষয় করে থাকে,  পরবর্তীকালে সেগুলিই হিমবাহ তার প্রবাহপথে বিভিন্ন ভাবে সঞ্চয় করে থাকে। এবং এরুপভাবে সঞ্চয় করার ফলে বিভিন্ন প্রকার ভূমিরূপ গড়ে ওঠে ।  যেমন-

১ - গ্রাবরেখাঃ 

হিমবাহ যখন গলতে শুরু করে, তখন হিমবাহ তার বাহিত পদার্থ গুলি হিমবাহের প্রবাহ পথের বা তার আশেপাশে সঞ্চয় করে।। এভাবে দীর্ঘদিন নুড়ি, কাকর,  বালি ইত্যাদি সঞ্চিত হতে হতে একটি রেখার সৃষ্টি করে।।। হিমবাহ দ্বারা সৃষ্ট এরুপ রেখাকে গ্রাবরেখা বা মোরেন বলে।।। 

গ্রাবরেখা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। 

যেমন পার্শ্ব গ্রাবরেখা, মধ্যগ্রাম রেখা ও প্রান্ত গ্রাবরেখা ইত্যাদি। 

• পার্শ্ব গ্রাবরেখাঃ হিমবাহ বাহিত পদার্থ যখন হিমবাহ প্রবাহ পথের পাশে গিয়ে গ্রাবরেখা সৃষ্টি করে,তখন তাকে পার্শ্ব গ্রাবরেখা বলে।

•  মধ্য গ্রাবরেখাঃ হিমবাহ বাহিত পদার্থ গুলি যখন হিমবাহ প্রবাহ পথের মাঝখানের মিলন অঞ্চলে গিয়ে গ্রাবরেখা সৃষ্টি করে, তখন তাকে মধ্য গ্রাবরেখা বলে। 

• প্রান্ত গ্রাবরেখাঃ গ্রাবরেখা যখন হিমবাহ প্রবাহ পথের শেষে অর্থাৎ যেখানে হিমবাহ গলতে শুরু করে বা সম্পূর্ণ গলে যায়!  সেখানে সৃষ্টি যে গ্রাবরেখার সৃষ্টি হয়, তাকে প্রান্ত গ্রাবরেখা বলে।

২-ড্রামলিনঃ 

হিমবাহ দ্বারা বাহিত বিভিন্ন পদার্থ যেমন বালি, কাঁকর,নুড়ি এসব কোনো একটি জায়গায় সঞ্চয় এর মাধ্যমে  উল্টানো নৌকার ভূমিরূপ এর সৃষ্টি করে।  হিমবাহ সঞ্চয় দ্বারা গঠিত এরুপ ভূমিরূপকে ড্রামলিন বলে।।

যখন অনেকগুলি ড্রামলিন একসাথে অবস্থান করে তখন তাকে দেখতে অনেকটা ডিম ভরতি ঝুড়ির মতো মনে হয়।।। এজন্য একে ডিমের ঝুড়ি বলা হয়।।

৩- বহিঃবিধৌত সমভূমিঃ

হিমবাহ যখন পর্বতের পাদদেশে এসে পড়ে তখন সেই হিমবাহ গলে গিয়ে জলে পরিণত হয়।।। হিমবাহের বরফ গলা জলে বালি, কাদা, কাকঁর এর সাথে সাথে ছোট ছোট পাথরখণ্ডও মিশে থাকে।।  হিমবাহের জলের সঙ্গে থাকা এই উপাদান গুলি যখন কোনো নিচু স্থান ভরাট করে সমভূমি গঠন করে, তখন সেই প্রকার সমভূমিকে বহিঃবিধৌত সমভূমি বলে। 

৪ - এসকারঃ

হিমবাহ বাহিত নুড়ি, কাকড় ও বালি ইত্যাদি পর্বতের পাদদেশে জমা হয়ে লম্বা সরু এবং আঁকাবাঁকা যে শৈলশিলার মতো যে ভূমিরূপ সৃষ্টি করে, তাকে এসকার বলা হয়।। এসকার প্রধানত হিমবাহ এবং জলধারার মিলিত সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত হয়।। 

৫ - কেটল এবং কেটল হ্রদঃ

বহিঃবিধৌত সমভূমি ওপর কোনো খাত বা গর্ত থাকলে বরফে সেই গর্তের মধ্যে আটকা পড়ে যায়।।পরবর্তীকালে সেই বরফ মাটির চাপে এবং তাপে গলে গিয়ে সেখানে যে গর্তের সৃষ্টি করে তাকে কেটল বলা হয়। কেটলের বরফ গলে গর্তগুলি জল পূর্ণ হলে সেখানে যে হ্রদের সৃষ্টি হয়, সেই সমস্ত হ্রদলে কেট হ্রদ বলা হয়।। 


আশাকরি যে, দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় অথবা মাধ্যমিক ভূগোল প্রথম অধ্যায় (WBBSE Class 10 Geography Question Answer Chapter 1) বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ থেকে যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উওরটি তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে, তা তোমাদের উপকারে আসবে।।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top