দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় বা উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ঃ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া (West Bengal Board Class 12 History Question Answer & Suggestion 2023 ) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'ভারতের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভব প্রেক্ষাপট আলোচনা করো' প্রশ্নটির উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
ভারতে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভবের প্রেক্ষাপট আলোচনা করো || দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর
ভূমিকাঃ- ভারতে ব্রিটিশ শাসনকালে মধ্যবিত্ত শ্রেণী বলতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পেশার সঙ্গে যুক্ত এমন এক শ্রেণীকে বোঝাত, যারা সমাজে উচ্চশ্রেণী এবং সমাজের নিম্ন শ্রেণীর মধ্যবর্তী পর্যায়ে বসবাস করতো। ব্রিটিশ শাসনকালে অন্যান্য প্রেসিডেন্সি শহরগুলোর তুলনায় মূলত বাংলাতেই মধ্যবিত্ত লোকেদের সংখ্যা বেশি ছিল। পলাশীর যুদ্ধের পর ভারতে ব্রিটিশ শাসনকালে বিভিন্নভাবে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভব ঘটেছিল। যেমন-
প্রশাসনিক কর্মচারীঃ-
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সুবিশাল ভারতকে সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়োগ করতো। সেই প্রশাসনিক ব্যবস্থায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উচ্চ পদগুলো ইংরেজরা দখল করলেও কিছু ক্ষেত্রে ভারতীয়রা নিম্নপদে চাকরি পেত। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অভ্যন্তরে চাকরি করা সেই সকল মানুষই মধ্যবিত্ত শ্রেণী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
বিভিন্ন ব্যবসায়ীঃ-
ব্রিটিশ শাসনকালে বহু ক্ষেত্রেই বিভিন্ন ভারতীয়কে ছোটখাটো ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকতে দেখা যেত। ছোট ব্যবসায়ীরা অভ্যন্তরীণ এবং কিছু ক্ষেত্রে বৈদেশিক বাণিজ্যে করে যে মুনাফা লাভ করতো, তার দ্বারা তাদের আর্থিক অবস্থা মোটামুটি সচ্ছল ছিল। আর্থিক অবস্থা সচ্ছল থাকার ফলে তারা পরবর্তীকালে মধ্যবিত্ত শ্রেণী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
সামরিক বিভাগের উচ্চ পদস্থ কর্মীঃ-
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সামরিক বাহিনীর উচ্চপদ ইংরেজরা দখল করলেও কিছু ক্ষেত্রে ভারতীয়রাও সামরিক বাহিনীর উচ্চ পদে চাকরি পেতো। উচ্চ পদে চাকরি পাওয়ার ফলে তাদের সমাজে তাদের যথেষ্ট মান সম্মান ছিল। উচ্চ বেতনসহ সামরিক বাহিনীতে কর্মরত সেই সমস্ত শ্রেণি পরবর্তীকালে মধ্যবিত্ত শ্রেণী হিসেবে উঠে আসে।।
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষঃ-
ব্রিটিশ শাসনকালে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা গ্রহণের ফলে অনেকেই ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অন্তরে বিভিন্ন চাকরি করতো। যারা চাকরি করতো না তারা বিভিন্ন ধরনের সরকারি এবং বেসরকারি পেশা যেমন -শিক্ষক, উকিল, ডাক্তার, সরকারি আমলা প্রভৃতি হিসেবে নিজেদের কর্মজীবন শুরু করতো। এর ফলে তাদের আর্থিক অবস্থা মোটামুটি ভাবে ভালোই থাকতো। স্বি সমস্ত পেশায় কর্মরত ব্যক্তিরাই পরবর্তীকালে মধ্যবিত্ত সমাজের অন্তর্ভুক্ত হয়।।
মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণিঃ-
ব্রিটিশ শাসনকালে প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, রায়তওয়ারি, মহলওয়ারি বন্দোবস্ত ইত্যাদির ফলে মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণীর উদ্ভব ঘটে। এই শ্রেণি কৃষকের কাছ থেকে খাজনা আদায় করে জমিদার বা ইজারাদারদের হাতে দিতো। ইজারাদার বা জমিদার সে খাজনা আবার ব্রিটিশ সরকারের হাতে তুলে দিত। জমিদার এবং কৃষকের মাঝখানে থাকা সেই শ্রেণির মানুষ ই বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে মধ্যবিত্ত শ্রেণি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।।
উপরিক্ত আলোচনা ছাড়াও আরও নানা উপায়ে ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের প্রধান প্রেসিডেন্সি অর্থাৎ কলকাতায় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভব হয়েছিল।।
আশাকরি, দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় বা উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ঃ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া (West Bengal Board Class 12 History Question Answer & Suggestion 2023) থেকে 'ভারতের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভব প্রেক্ষাপট আলোচনা করো' সম্পর্কে যে নোট দেওয়া হয়েছে, তা তোমাদের কাজে আসবে।।
Tags :
Class 12 history notes | hs history suggestion | wb class 12 history question answer and suggestion 2023 | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উওর এবং সাজেশন | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় বড় প্রশ্ন উওর | সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া প্রশ্ন উত্তর | wb class 12 History question answer | wb class xii History question answer | hs History question answer