![]() |
ভারতে প্রবর্তিত চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইনসমূহের শর্তাবলি উল্লেখ করো |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বা উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ঃ ঔপনিবেশিক আধিপত্যের প্রকৃতি নিয়মিত এবং অনিয়মিত সাম্রাজ্যের ( West Bengal Board Class 12 History Question Answer & Suggestion 2023 ) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে প্রবর্তিত চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইনসমূহের শর্তাবলি উল্লেখ করো' প্রশ্নটির উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। আর নিয়মিত ক্লাস 12 সহ অন্যান্য ক্লাসের নোট এবং মকটেস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে থাকো।
ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে প্রবর্তিত চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইনসমূহের শর্তাবলি উল্লেখ করো
ভূমিকাঃ-1793 খ্রিস্টাব্দে রেগুলেটিং অ্যাক্ট অথবা নিয়ন্ত্রণ আইন এবং 1784 খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের পর নতুনভাবে ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ওপর নিয়ন্ত্রণ জারি করতে 1793 খ্রিস্টাব্দ থেকে 1853 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মোট চারটি চার্টার অ্যাক্ত অথবা সনদ আইন পাশ করা হয়। এবং এই চারটি চার্টার অ্যাক্ট অথবা সনদ আইনের মাধ্যমে ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ওপর নতুন ভাবে বিভিন্ন নিয়ম কানুন আরোপ করা হয়।
১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্টঃ-
ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে একটি চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইন পাস করে। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে পাস হওয়া সেই চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইনের শর্তাবলি ছিল-
প্রথমতঃ ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্টের দ্বারা- ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার আরও ২০ বছর বাড়ানো হয়।
দ্বিতীয়তঃ পিটের ভারত শাসন আইনের দ্বারা গঠিত বোর্ড অব কন্ট্রোলের সদস্যসংখ্যা ৬ থেকে কমিয়ে ৫ জন করা হয়।
তৃতীয়তঃ ভারতীয় রাজস্ব থেকে এই সদস্যদের বেতন ও ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চতুর্থতঃ বোম্বাই ও মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির ওপর গভর্নর-জেনারেলের কর্তৃত্ব আরও বাড়ানো হয়।
পঞ্চমতঃ কোম্পানির কর্মচারীদের শূন্যপদগুলিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ভারতে অন্তত ৩ বছর বসবাসকারী অভিজ্ঞ ইংরেজদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়।
১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের চার্চার অ্যাক্টঃ-
১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির সনদের মেয়াদ শেষ হলে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে নতুন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইন পাস করে।১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে নতুন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইনের শর্তাবলি ছিল -
১- ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্টের দ্বারা ভারতে কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার লোপ করা হয় এবং যে-কোনো ইংরেজ বণিক ভারতে ব্যাবসা করার অধিকার পান।
২- কোম্পানির লভ্যাংশ থেকে তার অংশীদারদের ১০.৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ প্রদানের গ্যারান্টি দেওয়া হয়। ৩- ভারতীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ওপর ব্রিটিশ রাজের সার্বভৌমত্ব ঘোষিত হয়। ৩- কোম্পানি আরও ২০ বছরের জন্য ভারতে শাসন পরিচালনার অধিকার পায়।
৪- রাজস্ব ও বাণিজ্য থেকে কোম্পানির আয়ের হিসেব পৃথকভাবে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
৫- কোম্পানির আদায় করা রাজস্ব থেকে বার্ষিক ১ লক্ষ টাকা ভারতীয়দের সাহিত্য ও বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য ব্যয় করার কথা বলা হয়।
৬- কোম্পানির সামরিক ও বেসামরিক পদে নিযুক্ত হওয়ার জন্য যথাক্রমে এডিসকোম ও হেইলেবেরি কলেজ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়।
১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্টঃ-
১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে চার্টার অ্যাক্ট অথবা অনলাইনের মাধ্যমে কোম্পানির সনদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তা নবীকরণের উদ্দেশ্যে ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইন পাস করা হয়। ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইন এর শর্তাবলি-
১- ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্টে বলা হয় যে, ভারতে কোম্পানি আরও ২০ বছর শাসন পরিচালনা করবে।
২- কোম্পানির যাবতীয় আর্থিক দায় ও ঋণ ভারতের রাজস্ব থেকে পরিশোধ করতে হবে।
৩- বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি ‘ভারত বিষয়ক মন্ত্রী' হিসেবে ব্রিটিশ মন্ত্রীসভায় স্থান পাবেন।
৪- বাংলার গভর্নর-জেনারেল এখন থেকে ভারতের গভর্নর-জেনারেল' বলে বিবেচিত হবেন।
৫- গভর্নর-জেনারেল সমগ্র ভারতের জন্য আইন তৈরির অধিকার পান।
৬- কোম্পানির কর্মচারীরা ভারতে জমি ক্রয়বিক্রয়ের অধিকার পান।
৭- জাতি-ধর্ম-ভাষা নির্বিশেষে সকল ভারতীয় ও ব্রিটিশ কোম্পানির অধীনে চাকরি পাবেন।
১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্টঃ-
কোম্পানির সনদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তা নবীকরণের উদ্দেশ্যে ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে চতুর্থ চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইন পাস করা হয়। ১৮৫৩ খ্রিষ্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট ছিল শেষ চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইন।
১৮৫৩ খ্রিষ্টাব্দের চার্টার অ্যাক্টের শর্তাবলি ছিল-
১- ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্টে ভারতে কোম্পানির শাসন পরিচালনার অধিকার বজায় রাখা হয়। তবে এবার কোনো মেয়াদ উল্লেখ করা হয়নি।
২- অবাধ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে কোম্পানির আমলাদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়।
৩- আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে বড়োলাটের অধীনে ১২ জন সদস্যবিশিষ্ট আইন পরিষদ গঠিত হয়
৪- যে-কোনো আইন প্রবর্তনে গভর্নর জেনারেলের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয়।
৫-ভারতে আইনবিষয়ক পরামর্শদানের উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডে 'আইন কমিশন' গঠিত হয়।
৬- একজন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের হাতে বাংলার শাসনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
৭- বিলাতে কোম্পানির ডিরেক্টরদের সংখ্যা ২৪ থেকে কমিয়ে ১৮ জন করা হয়।
আশাকরি, দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বা উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ঃ ঔপনিবেশিক আধিপত্যের প্রকৃতি নিয়মিত এবং অনিয়মিত সাম্রাজ্যের ( West Bengal Board Class 12 History Question Answer & Suggestion 2023 ) থেকে 'ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে প্রবর্তিত চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইনসমূহের শর্তাবলি উল্লেখ করো' সম্পর্কে যে নোট দেওয়া হয়েছে, তা তোমাদের কাজে আসবে।।
Tags :
Class 12 history notes | hs history suggestion | wb class 12 history question answer and suggestion 2023 | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উওর এবং সাজেশন | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উওর | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় ঔপনিবেশিক আধিপত্যের প্রকৃতি নিয়মিত ও অনিয়মিত সাম্রাজ্য প্রশ্ন উত্তর | wb class 12 History question answer | wb class xii History question answer | hs History question answer & suggestion 2023