ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র কী? ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো || একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর

0

 

ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র কী? ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো || একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র কী? ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য 


উওরঃ ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র বলতে সেই প্রকার রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বোঝায় যা মূলত ধর্মের নীতি অনুসারে প্রচলিত হয়। যখন কোনো শাসক বা সুলতান কোরআন এবং শরিয়তের আইন অনুসারে উলেমা শ্রেণীর কথা অনুসারে রাষ্ট্র শাসন করে, তখন সেই প্রকার রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র বলে।। অর্থাৎ ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র বলতে মূলত সেই প্রকার রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বোঝায়, যা মূলত ঈশ্বর অথবা আল্লাহর আদেশ অনুসারে বা ধর্মের নিয়ম অনুসারে নিয়ন্ত্রিত হয় এবং যেখানে সুলতান বা শাসক তার ইচ্ছেমতো যে রাষ্ট্রকে সম্পূর্ণভাবে শাসন করতে পারেন না, তাই হল ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র।।

ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যঃ- 

ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র মূলত  সুলতানি শাসন ব্যবস্থায় লক্ষ্য করা যায়।

ঈশ্বরের কর্তৃত্বঃ- 

ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো- এই প্রকার শাসন ব্যবস্থায় শাসককে সবসময়ই ঈশ্বরকে সর্বশক্তিমান বলে মানতে হয়। শাসক নিজের রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হলেও তাকে এটা মনে করে চলতে হয় যে? ঈশ্বরী হলেন সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী এবং তিনি ঈশ্বরের ইচ্ছার অনুসারে কাজ করছেন। 

ধর্মীয় আইনের প্রতি গুরুত্বঃ- 

ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এই প্রকার শাসনব্যবস্থার ক্ষেত্রে মনুষ্যসৃষ্ট আইনের কোনো গুরুত্ব থাকেনা বা গুরুত্ব থাকলেও তা নামমাত্র। ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রে মনুষ্য সৃষ্ট আইনের বদলে ধর্মীয় আইন গুলি বা নিয়মকানুনগুলো অধিক প্রাধান্য লাভ করে। সুলতানকে বা শাসককে বা সম্রাটকে সবসময়ই ধর্মীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে হয় এবং ধর্মীয় আইন অনুসারে নিজের রাজ্যের শাসনকার্য পরিচালনা করতে হয়। রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে সবসময়ই ধর্মীয় আইনের অধিক গুরুত্ব বজায় রাখা হয়।

ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে পুরোহিত বা উলেমা শ্রেণির গুরুত্বঃ- 

ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের সুলতান সম্রাট রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে সম্রাট বা শাসক ধর্মীয় আইন বা নিয়মকানুন অনুসরণ করে থাকেন। তিনি যেসব নিয়মকানুন অথবা আইন অনুসরণ করেন,  সেসব নিয়ম কানুনের ব্যাখ্যা কর্তা হলেন পুরোহিত বা উলেমা শ্রেণি। তারা মূলত ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে ধর্মীয় আইন গুলি বা নিয়ম-কানুনের ব্যাখ্যা করে থাকেন এবং সেই অনুসারে সুলতানকে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে বলেন। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে সুলতান শাসনব্যবস্থার মূলে থাকলেও রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত হয় পুরোহিত বা উলেমা শ্রেণির দ্বারা।

সুতরাং ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের সুলতানকে বা সম্রাটকে রাষ্ট্রের প্রধান কর্মকর্তা বলে মনে হলেও, মূলত তার পেছনে পুরোহিত বা উলেমা শ্রেণিই হলেন ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্রের প্রধান কর্মকর্তা বা শাসক।।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top