রাষ্ট্র কাকে বলে? রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বা বৈশিষ্ট্য || একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর এবং সাজেশন

0

 

রাষ্ট্র কাকে বলে? রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বা বৈশিষ্ট্য || একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর এবং সাজেশন
একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর 2023


আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায়ের ( WB Class 11 Political Science chapter 2 questions and answers in bengali ) রাষ্ট্র  সংজ্ঞা,বৈশিষ্ট্য ও উৎপত্তি বিষয়ক বিভিন্ন মতবাদ অধ্যায়ের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন' রাষ্ট্র কাকে বলে? রাষ্ট্রের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গুলি সম্পর্কে আলোচনা করো' এর উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো

রাষ্ট্র কাকে বলে? রাষ্ট্রের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বা রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সম্পর্কে আলোচনা করো

ভূমিকাঃ- ষোড়শ শতাব্দীতে 1513 সালে ইতালির দার্শনিক নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি তার' দ্য প্রিন্স 'শীর্ষক রচনাতে সর্বপ্রথম রাষ্ট্র বা স্টেট শব্দটি ব্যবহার করেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য আধুনিক রাষ্ট্র বলতে আমরা যা বুঝি গ্রিক ও রোমান দার্শনিকরা তাকে যথাক্রমে পলিশ এবং সিভিটাস নামে অভিহিত করে। ক্ষুদ্র নগর রাষ্ট্রগুলি এই নামে পরিচিত। বৃহৎ রাষ্ট্রের ধারণা সর্বপ্রথম ব্যক্ত করেন টিউটনরা । রাষ্ট্রকে তারা স্ট্যাটাস নামে ঘোষণা করেন।

              রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক এরিস্টটলের মতে রাষ্ট্র হল স্বাবলম্বী ও পূর্ণাঙ্গ জীবন যাপনের উদ্দেশ্যে সংঘটিত কয়েকটি পরিবার ও গ্রামের সমষ্টি।

    গার্টনারের মতে রাষ্ট্র হল অতিবৃহৎ বানা নাতি বৃহৎ একটি জনসমাজ, যা কিনা নির্দিষ্ট ভূখন্ড স্থায়ীভাবে বসবাস করে, যা সম্পূর্ণভাবে বহিঃশাসন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য একটি সুসংগঠিত সরকার গঠন করে এবং সেই সরকারের প্রতি জনগণের অধিকাংশের স্বভাবগত অনুগত্য প্রদর্শিত হয়, তাকে রাষ্ট্র বলে।

    গার্নারের রাষ্ট্রপতিত্ব উপরিউক্ত সংখ্যা থেকে এর রাষ্ট্রের চারটি মূল বৈশিষ্ট্য বা উপাদানের সন্ধান পাওয়া যায় সেগুলো নিম্নরূপ- 

১) জনসমষ্টি:- রাষ্ট্র গঠনের মূল উপাদান হল জনসমষ্টি। জনগণের কল্যাণের জন্য রাষ্ট্র।তাই জনগণকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্রের কথা ভাবা যায় না। আধুনিক রাষ্ট্রে জনসমষ্টিকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায় যথা - 

ক. নাগরিক- রাষ্ট্র দ্বারা আইনগতভাবে সুযোগ-সুবিধা ও যাবতীয় অধিকার ভোগ করেন , 

খ. বিদেশি-রাষ্ট্রের মধ্যে যেসব ভিনদেশী নাগরিক সামাজিকভাবে বসবাস করে, 

গ. প্রজা-বিদেশি সরকারের অধীনে বসবাসকারী জনগণ।

জনসমষ্টি ঠিক কত হওয়া উচিত এ নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা একমত নয়।যাই হোক না কেন জনসমষ্টি ছাড়া রাষ্ট্রের কথা ভাবা যায় না। 

২) নির্দিষ্ট ভূখন্ড:- 

নির্দিষ্ট ভূখন্ড হলো রাষ্ট্রগঠনের দ্বিতীয় অপরিহার্য উপাদান।জনসমষ্টির জন্য একটি ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে নির্দিষ্ট ভূখন্ড থাকা প্রয়োজন। কোন জনসমষ্টি যতক্ষণ না পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট ভূখন্ড অধিকারী না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের রাষ্ট্র নামে আখ্যায়িত করা যাবে না।

৩) সরকার:- 

রাষ্ট্র একটি সম্পূর্ণভাবে তাত্ত্বিক ধারণা মাত্র রাষ্ট্রকে চোখে দেখা যায় না। বিমুর্ত রাষ্ট্রের বাস্তব রূপ হল সরকার। অর্থাৎ রাষ্ট্রের বিমুর্ত ধারণা আর সরকার হলো তার মূর্ত প্রতীক। তাই সরকার বলতে বোঝায় রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য যার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। সরকারের বিভিন্ন রূপ আছে যেমন গণতান্ত্রিক সরকার, সমাজতান্ত্রিক সরকার, একনায়কতান্ত্রিক সরকার, এককেন্দ্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার এবং রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ও মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার ইত্যাদি।সরকারের রূপ যাই হোক না কেন রাষ্ট্রের নীতি ও আদর্শকে বাস্তবায়িত করাই সরকারের প্রধান কাজ সরকার ছাড়া রাষ্ট্র কোন লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না। সরকারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিমুর্ত ধারণা বাস্তবায়িত হয় বলে সরকারকে রাষ্ট্রের মস্তিষ্ক বলা হয়। 

৪) সার্বভৌমত্ব:- 

রাষ্ট্রপতিত্ব চরম ক্ষমতা হলো সার্বভৌমত্ব। অধ্যাপক গেটেল এর মত সার্বভৌমত্ব হল আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি। অনেকে মনে করেন রাষ্ট্রের মস্তিষ্ক যদি হয় সরকার তাকে তবে প্রাণ হলো সার্বভৌমত্ব। কারণ জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখন্ড ,সরকার থাকা সত্ত্বেও যদি সার্বভৌমত্ব না থাকে তবে তাকে কোনমতেই রাষ্ট্র' বলে আখ্যা দেওয়া যায় না। সার্বভৌমত্ব দুই ধরনের যথা অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক। অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্ব বলতে অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের চরম ক্ষমতাকে বোঝায় আর বাহ্যিক সার্বভৌমত্ব বলতে বোঝায় বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ থেকে রাষ্ট্র সমস্ত দিক থেকে মুক্ত। বর্তমানে অবশ্য রাষ্ট্রের সার্বভৌমিকতা অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উভয় দিক থেকেই অবাধ নয়।রাষ্ট্রের উপরিউক্ত চারটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য ছাড়াও আরো কতগুলো বৈশিষ্ট্য রাষ্ট্র গঠনের জন্য প্রয়োজন। যথা- 

ক) স্থায়িত্ব: আধুনিক রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল স্থায়িত্ব। যে রাষ্ট্রের কোন স্থায়িত্ব নেই তাকে রাষ্ট্র বলা যায়না

খ) জাতীয়তাবাদ: জাতীয়তাবাদ কথার অর্থ হল জাতির প্রতি ভালোবাসা দেশের প্রতি মমত্ববোধকে বোঝায়। জাতীয়তাবাদের তারা রাষ্ট্রের ভৌগলিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা হয় যা রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে অপরিহার্য।

গ) অন্যান্য রাষ্ট্রের স্বীকৃতি: বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের কাছে স্বীকৃতি না পেলে কোন রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রকৃত রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত হয় না ‌।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় রাষ্ট্রের উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলির মাধ্যমে রাষ্ট্রকে রাষ্ট্রের মর্যাদা দান করেছে। উক্ত মৌলিক বৈশিষ্ট্য গুলির মধ্যে কোন একটি বৈশিষ্ট্য অনুপস্থিত থাকলে তাকে আর যাই হোক রাষ্ট্র বলা যায়না।


আশাকরি যে, একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায়ের ( WB Class 11 Political Science chapter 2 questions and answers in bengali ) রাষ্ট্র  সংজ্ঞা,বৈশিষ্ট্য ও উৎপত্তি বিষয়ক বিভিন্ন মতবাদ থেকে প্রশ্ন' রাষ্ট্র কাকে বলে? রাষ্ট্রের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গুলি সম্পর্কে আলোচনা করো' এর উওর পেয়ে গেছো। আমরা পরবর্তীতে ক্লাস ইলেভেনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বাকি প্রশ্ন উত্তর শেয়ার করবো।

Tags : 

একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর দ্বিতীয় অধ্যায় | একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর | class 11 political science question answer | wb class 11 political science question and answer | class 11 political science | class 11 political science suggestion 2023 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top