hs History question answer & suggestion 2023 |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বা উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় উনবিংশ ও বিংশ শতকে ঔপনিবেশিকতাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের প্রসার ( West Bengal Board Class 12 History Question Answer & Suggestion 2023 ) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'নতুন বিশ্বে বা আমেরিকায় ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক অগ্রগতির পরিচয় দাও।অথবা, ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করো' প্রশ্নটির উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
নতুন বিশ্বে বা আমেরিকায় ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক অগ্রগতির পরিচয় দাও || ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করো।
উওরঃ- আমেরিগো ভেসপুচি এবং কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের পরে ইউরোপের অন্যান্য শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলি যেমন স্পেন, ফ্রান্স এবং পর্তুগাল ইত্যাদি অনেক এগিয়ে থাকলেও গ্রেট ব্রিটেন সেক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে গ্রেট ব্রিটেনও আমেরিকা সহ অন্যান্য মহাদেশে নিজের উপনিবেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল।
আমেরিকায় উপনিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গ্রেট ব্রিটেনের প্রাথমিক উদ্যোগঃ-
গ্রেট ব্রিটেন আমেরিকায় নিজেদের উপনিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম উদ্যোগ নিয়েছিল 1497 খ্রিষ্টাব্দে। এই সময়ে রাজা সপ্তম হেনরি পৃষ্ঠপোষকতায় জন ক্যাবেট নামে এক ব্যক্তি ম্যাথু নামে একটি জাহাজে আটলান্টিক মহাসাগর অতিক্রম করে নিউফাউন্ডল্যান্ডে পৌঁছেছিলেন। এর পরবর্তীতে তিনি আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে যান। পরবর্তী 20 বছরে ইংল্যান্ড আরো কয়েকটি অভিযান পাঠিয়ে গ্রীনল্যান্ড এবং ল্যাব্রাডর পৌঁছায়। কিন্তু এরপর অন্তত 80 বছর ধরে ইংল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ গলযোগের ফলর ইংল্যান্ড আমেরিকায় নিজের উপনিবেশ প্রতিষ্ঠানায় পিছিয়ে পড়েছিল।।
উপনিবেশ স্থাপনের ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের জলদস্যুতাঃ-
ব্রিটিশ নাবিক মার্টিন ফ্রোবিশার ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে লাব্রাডার উপকূলে অভিযান চালান এবং সেই সূত্রে জন ডেভিস, হেনরি হাডসন, উইলিয়াম বাফিন প্রমুখ অভিযাত্রী কানাডার নিকটবর্তী জনহীন কয়েকটি দ্বীপে পৌঁছে যান। কিছুকাল পর থেকে ইংরেজ নাবিকরা স্পেনের পণ্য বোঝাই জাহাজগুলি আক্রমণ ও লুণ্ঠন শুরু করে এবং দক্ষিণ আমেরিকার স্পেনীয় সাম্রাজ্যে অভিযান চালায়। ইংল্যান্ডের খ্রিস্টান মিশনারিরা এইসব জলদস্যুতা ও অবৈধ অভিযানগুলিকে সমর্থন করে।
উপনিবেশ স্থাপনের চূড়ান্ত উদ্যোগঃ-
জলদস্যুদের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক লাভ হলেও ব্রিটিশ বণিকদের এবং রাজদরবার এটা বুঝতে পেরেছিল যে এইভাবে তাৎক্ষণিক লাভ দিয়ে তাদের কোনো কাজ নেই। আমেরিকার অফুরন্ত সম্পদ লাভ করতে গেলে তাদের সেখানে উপনিবেশে গড়ে তুলতে হবে। এবং এই বিষয়ে ইংল্যান্ডের রাজদরকে কিছু ব্যক্তিরা আগ্রহী করে তোলেন। ইংল্যান্ড সরকার এটা বুঝতে পারে যে,আমেরিকায় নিজেদের উপনিবেশ করলে সেখান থেকে চিনি,তামাক, তুলো?কফি ছাড়াও উদ্ভিদজাত অন্যান্য দ্রব্য ব্রিটেনে আমদানি করে সেখানকার অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানো সম্ভব। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ব্রিটেন-আমেরিকায় উপনিবেশ স্থাপনে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
আমেরিকায় উপনিবেশ স্থাপনের ব্যক্তিগত উদ্যোগঃ-
ইংল্যান্ডের রাজ পরিবার অথবা রানী এলিজাবেথ আমেরিকায় নিজেদের উপনিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আগ্রহী হলেও কিছু অর্থনৈতিক কারণে বেশ কিছুকাল সরকার সেই বিষয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেনি। তাই ইংল্যান্ডে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সে বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল। এক্ষেত্রে স্যার হামফ্রে গিলবার্ট সর্বপ্রথম আমেরিকায় উপনিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে তাকে সরকার তাকে সাহায্য করেছিল। সরকারি সহযোগিতা পাওয়ার পর তিনি আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চল দখল করে সেখানে নিজের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন এবং এভাবে আমেরিকায় ইংল্যান্ডের উপনিবেশ স্থাপন হয়।।
ত্রয়োদশ শতকে আমেরিকায় ইংল্যান্ডের উপনিবেশঃ-
ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ড রাজাদের রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় নীতির ফলে ইংল্যান্ডের বহু মানুষ প্রায় সপ্তদশ শতকে আমেরিকায় সদ্য প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন উপনিবেশগুলোতে এসে বসবাস করতে শুরু করে। অষ্টাদশ শতকের মধ্যে ব্রিটিশরা আমেরিকায় ওলন্দাজ এবং ফরাসিদের দখল করা জায়গা গুলিও যুদ্ধের মাধ্যমে দখল করে নেয়। এবং ত্রয়োদশ শতকে এভাবে আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায় ইংল্যান্ডের বিভিন্ন উপনিবেশ গড়ে ওঠে।।
ঔপনিবেশিক প্রশাসনঃ-
বিভিন্ন সময়ে আমেরিকাতে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন উপনিবেশ গড়ে উঠলেও সে সমস্ত উপনিবেশে মূলত একই ধরনের শাসন ব্যবস্থা ছিল। ভার্জিনিয়ায় ঔপনিবেশিক প্রশাসনের স্থায়ী কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছিল। ইংল্যান্ডের সরকার তাদের দখল করা প্রতিটি উপনিবেশে একজন করে গভর্নর বা শাসক নিয়োগ করতো এবং সেই শাসনকর্তার মাধ্যমেই উপনিবেশের সম্পূর্ণ শাসনকার্য নিয়ন্ত্রিত হত।।
ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানঃ-
ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাতৃভূমি ইংল্যান্ডের শাসকরা আমেরিকায় তাদের উপনিবেশগুলিতে তীব্র শোষণ ও অত্যাচার চালাতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার ব্রিটিশ উপনিবেশগুলি ইংল্যান্ডের অধীনতা ছিন্ন করে ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ফলে উপনিবেশের বাসিন্দাদের সঙ্গে ইংল্যান্ডের যুদ্ধ শুরু হয় যা সাধারণভাবে আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ নামে পরিচিত। এই যুদ্ধের ফলে ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক বন্ধন ছিন্ন করে আমেরিকা ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতা লাভ করে।
আশাকরি, দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বা উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় উনবিংশ ও বিংশ শতকে ঔপনিবেশিকতাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের প্রসার ( West Bengal Board Class 12 History Question Answer & Suggestion 2023 ) থেকে যে,নতুন বিশ্বে বা আমেরিকায় ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক অগ্রগতির পরিচয় দাও।অথবা, ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করো'' সম্পর্কে যে নোট দেওয়া হয়েছে, তা তোমাদের কাজে আসবে।।
Tags :
দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উওর | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় উনবিংশ ও বিংশ শতকে ঔপনিবেশিকতাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের প্রসার অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | wb class 12 History question answer | wb class xii History question answer | hs History question answer & suggestion 2023