উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর 2024 : লোককথা কাকে বলে? লোককথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করো

0

 

লোককথা কাকে বলে? লোককথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করো || উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর
hs History  question answer & suggestion 2023


আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায় বা উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায় অতীত স্মরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'লোককথা কাকে বলে? লোককথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা'র উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এবং পরবর্তীতে আমরা উচ্চ মাধ্যমিকের ইতিহাস সহ আরও অন্যান্য বিষয়ের সমস্ত নোটস + অনলাইন মকটেস্ট তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।।

লোককথা কাকে বলে? লোককথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করো।

উওরঃ- লোককথা হলো এক ধরনের কাল্পনিক গল্প কথা এবং এক ধরনের ঐতিহ্যবাহী লৌকিক সাহিত্যে যার সাহায্যে প্রাকৃতিক এবং আধ্যাত্মিক কোনো ঘটনার ব্যাখ্যা বা উপলব্ধির চেষ্টা করা হয়।। কার্ল টমলিনসন এবং ক্যারল লিঞ্চ-ব্রাউনের মতে মানুষের জীবন ও কল্পনার সংমিশ্রণে যে গল্পকথা গড়ে  উঠেছে তাই হল গল্পকথা।। অন্যভাবে বলা যায় লোককথা হল এমন এক ধরনের কাল্পনিক গল্প কথা যা শ্রোতাদের এমন এক জগতে নিয়ে যায় যেখানে না প্রাকৃতিক বা সাধারণ নিয়মকানুন গুলি কার্যকর হতে দেখা যায় না।।

লোককথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যঃ- 

জনশ্রুতির একটি অংশ হিসেবে লোককথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন - 

শিশুদের জন্য রসদঃ- 

জনশ্রুতির অন্যান্য ভাগগুলি যেমন- পৌরাণিক কাহিনী,কিংবদন্তি প্রভৃতির মধ্যে শিশু,কিশোর, যুবক বয়স্ক সকলের জন্য রসদ থাকে। কিন্তু লোককথায় অন্যান্য বয়স্কদের তুলনায় প্রধানত শিশু-কিশোর, কিশোরীদের জন্যই বেশি পরিমাণে রসদ থাকে।।

অজ্ঞাত পরিচয় লেখকঃ- 

সাধারণভাবে লোককথার প্রকৃত সৃষ্টিকর্তাদের সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না। কিন্তু পরবর্তীকালে আসল লোককথা গুলিকে যখন পরিমার্জন করে অন্য কোনো লেখক প্রকাশ করেন, তখন সেই লেখক সম্পর্কে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার নাম বা পরিচয় সম্পর্কে সামান্য জানা যায়।।

লোককথার বিষয়বস্তুঃ-

লোককথার মূল বিষয়বস্তু হলো মানুষের জীবন। লোককথা মূলত রচিত হয় মানুষের সাধারণ জীবন কাহিনী নিয়ে। তবে লোককথায় যেসব মানুষের জীবন কাহিনী দেখা যায় সেই সমস্ত জীবন কাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থাকে বিভিন্ন কল্পনা, আধ্যাত্বিক, অলৌকিক এবং অতিমানবিক বিষয়বস্তু।।

অতিপ্রাকৃতিক বিষয়বস্তুঃ -

লোককথার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো লোককথায় মানুষের সাধারণ জীবন কাহিনী থাকলেও সেই জীবন কাহিনীর সঙ্গে কিছু অ-সাধারন বিষয় বস্তু যুক্ত হয়। লোককথায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন অতিপ্রাকৃতিক বা ভৌতিক চরিত্রগুলি যেমন ভুত-প্রেত ডাইনি, দৈত্য, ড্রাগন ইত্যাদি যুক্ত থাকে। এছাড়াও এসব কাহিনীগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কালো যাদু, বশীকরন, সাদা যাদু ইত্যাদির উল্লেখ দেখা যায়।।

আমাদের গ্রুপে জয়েন করতে ক্লিক করো

ধর্মীয় বিষয়ের গুরুত্বহীনতাঃ- 

লোককথার কাহিনীগুলোতে ধর্মীয় বিষয়বস্তুর ওপর বিশেষ গুরুত্ব লক্ষ্য করা যায় না। অর্থাৎ লোককথার কাহিনির আলোচনা তা প্রকাশিত হলেও তা পরোক্ষ।। লোককোথায় যে ব্যক্তি ও ঘটনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়, সেই ব্যক্তি বা ঘটনা কোনো ধর্মের অংশ হলেও তা ধর্ম নিয়ে নয় বরং সেই ব্যক্তির কাজকর্মই লোককথার মূল কথা।।

অলিখিত কাহিনীঃ- 

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের লোককথা প্রচলিত রয়েছে। আর সেই সমস্ত লোককথার বেশিরভাগই অলিখিত। লোক কথাগুলো অতীতের কোথাও শুরু হয়ে এগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান সমাজে প্রবেশ করেছে। কিন্তু তারপরও সেই সমস্ত লোককথার বেশিরভাগই অলিখিতভাবে মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের চেষ্টায় বিভিন্ন অলিখিত কাহিনীগুলি বর্তমানে লিখিত আকারে প্রকাশ করা হচ্ছে।।

অনির্দিষ্ট স্থান-কাল-পাত্রঃ- 

লোককথা কাহিনীগুলির ক্ষেত্রে কখনো কোনো নির্দিষ্ট সময় স্থান-চরিত্র থাকে না। পৌরাণিক কাহিনী গুলোর ক্ষেত্রে যেমন তার নিজস্ব কালপঞ্জি এবং কিংবদন্তির ক্ষেত্রে যেমন মোটামুটি নির্দিষ্ট বা আনুমানিক সময়সীমা বা স্থান-কাল থাকে,লোকগাথার ক্ষেত্রে সেরকম কিছু থাকে না। যেমন 'একদা একদেশে এক রাজা বাস করত'। লোককথার ক্ষেত্রে এই ধরনের স্থান-কাল-পাত্র ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।।

লোককথার গুরুত্বঃ 

লোককথার কাহিনিগুলি ইতিহাস- নির্ভর না হলেও ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, যেমন—

সমাজ-সংস্কৃতির পরিচয়ঃ- 

কোনো সমাজে সৃষ্ট লোককথাগুলিতে সেই সমাজের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় প্রভৃতি বিষয়ের যথেষ্ট প্রভাব পড়ে। ফলে অতীতকালে সেই সমাজের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ঐতিহ্য কেমন ছিল তার মোটামুটি আভাস সেই সমাজে সৃষ্ট লোককথার কাহিনিগুলি থেকে জানা যায়।

ঐতিহাসিক ধাঁচের আভাসঃ- 

বিভিন্ন সমাজের ঐতিহাসিক কাহিনির অনুকরণে বিভিন্ন লোককথার প্রচলন ঘটতে দেখা যায়। এরূপ লোককথার কাহিনিগুলি থেকে সেই সমাজের ঐতিহাসিক ধাঁচ সম্পর্কে আভাস পাওয়া যায়, যেমন মধ্যযুগের বাংলার চাঁদ সদাগরের কাহিনিতে সপ্তডিঙ্গা মধুকর ভাসিয়ে দূরদেশে চাঁদের বাণিজ্য করতে যাওয়ার যে ঘটনা বাংলার লোককথায় পাওয়া যায় তা থেকে এই ঐতিহাসিক সত্যটুকু অবশ্যই উপলব্ধি করা যায় যে, বাংলার বণিকরা দূরদেশে বাণিজ্য করতে যেত। 

মনোরঞ্জনঃ- 

লোককথার গল্পগুলি মানুষকে যুগের পর যুগ ধরে আনন্দদান করেছে। যে যুগে বিজ্ঞানের বিশেষ উন্নতি ঘটেনি বা শিক্ষার প্রসার ঘটেনি সে যুগে লোককথার গল্পগুলি ছিল মানুষের মনোরঞ্জনের অন্যতম মাধ্যম।

শিক্ষাদানঃ-

লোককথার গল্পগুলি মানুষকে জীবনে চলার পথে যথার্থ শিক্ষা দান করে। এজন্য বিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন বলেছেন যে, “যদি তোমার সন্তানকে বুদ্ধিমান করে তুলতে চাও তবে তাদের লোককথার গল্প, পড়তে দাও। যদি তাদের আরও বুদ্ধিমান করে তুলতে চাও তবে তাদের আরও বেশি লোককথার গল্প পড়তে দাও।”

সমালোচনাঃ- 

লোককথার গল্পগুলির অধিকাংশই হয় সম্পূর্ণ কাল্পনিক। অধিকাংশ কাল্পনিক লোককথার গল্পেরই কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি থাকে না, যেমন—বেহুলার প্রার্থনায় লখিন্দরের প্রাণ ফিরে পাওয়ার ঘটনাটির কোনো ঐতিহাসিক বা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এরূপ লোককথার আজব কাহিনির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা ইতিহাস ভুল পথে পরিচালিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আমাদের গ্রুপে জয়েন করতে ক্লিক করো


আশাকরি, দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায় অতীত স্মরণ ( West Bengal Board Class 12 History Question Answer & Suggestion 2023 ) থেকে যে 'লোককথা কাকে বলে? লোককথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করো।' সম্পর্কে নোট দেওয়া হয়েছে, তা তোমাদের কাজে আসবে।।

Tags : 

দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উওর | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায় অতীত স্মরণ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | wb class 12 History question answer  | wb class xii History question answer | hs History  question answer & suggestion 2023

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top