ভারতে চা চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশ বর্ণনা করো। || মাধ্যমিক ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর

0

 

ভারতে চা চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশ বর্ণনা করো। || মাধ্যমিক ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর
মাধ্যমিক ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর

ভারতে চা চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশ বর্ণনা করো।

উওরঃ ভারতের চা চাষের অনুকূল পরিবেশ বলতে বোঝায় ভারতে চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং ভারতের চা চাষের অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশ। ভারতের চা চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে ভারতের উষ্ণতা,বৃষ্টিপাত, মৃত্তিকা, মৃত্তিকা ঢাল, তুষার মুক্ত আবহাওয়া ইত্যাদিকে বোঝায়। অন্যদিকে ভারতে চা চাষের প্রাকৃতিক পরিবেশ বলতে মূলধন? উন্নতমানের বীজ ব্যবহার,শ্রমিক পরিবহন ব্যবস্থা ইত্যাদিকে বোঝায়।

ভারতের চা চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশঃ-

উষ্ণতাঃ বার্ষিক গড় উয়তা 20-
30° সে. ও গ্রীষ্মকালীন 27° সে. উষ্ণতায় চাষের ফলন ভালাে হয়। চা গাছ বৃদ্ধির সময় উষ্ণতা বেশি থাকলে গাছে পাতা বেশি হয়। ফলে ফলন বাড়ে। 16° সে.এ-র কম উষ্ণতা চা গাছের পক্ষে ক্ষতিকর।
ছায়াপ্রদানকারী বৃক্ষঃ- সরাসরি প্রখর সূর্যকিরণ চা গাছের ক্ষতি করে বলে চা খেতের মাঝে মাঝে ছায়া প্রদানকারী বৃক্ষ থাকা দরকার।
বৃষ্টিপাতঃ- চা চাষের জন্য বার্ষিক 150-200 সে.মি. বৃষ্টিপাত হওয়া প্রয়ােজন। প্রতি মাসে বৃষ্টিপাত চা চাষের পক্ষে আদর্শ।
তুষারপাতঃ- চা গাছ এক নাগাড়ে 10 দিন তুষারপাত সহ্য করতে পারে। অধিক তুহিন চা গাছের পক্ষে ক্ষতিকর।
ভূমিরূপঃ- চা চাষের জন্য ঢালু ও উচু জমি দরকার হয়, যাতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়া সত্ত্বেও মাটিতে জল দাঁড়াতে না পারে। এই কারণে
পার্বত্য ঢাল চা চাষের জন্য আদর্শ। অধিক বৃষ্টিবহুল পাহাড়ি ঢলে চা চাষ ভালাে হয়। গাছের গােড়ায় জল দাঁড়ালে চা গাছের ক্ষতি হয়। এই জন্য চা খেতে ভালাে জল নিকাশি ব্যবস্থা থাকা দরকার।
মৃত্তিকাঃ- চা চাষের জন্য লৌহসমৃদ্ধ
উর্বর দোআঁশ মাটি বা জৈব পদার্থে সমৃদ্ধ আম্লিক পউসল মৃত্তিকার প্রয়ােজন মৃত্তিকায় ফসফরাস ও পটাশ থাকলে চা গাছ ভালােভাবে বৃদ্ধি পায়। মাটিতে স্মৃপি ফসফরাস ও পটাশ থাকায় দার্জিলিং-এর চা স্বাদে ও গন্ধে পৃথিবী বিখ্যাত।

চা চাষের অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশঃ-

দক্ষ শ্রমিকঃ- চা গাছ রােপণ, পরিচর্যা, নিড়ানাে, পাতা তােলা, শুকানাে, ডাল ছাঁটা প্রভৃতির জন্য সুলভ ও দক্ষ প্রচুর শ্রমিকের প্রয়ােজন হয়। চা পাতা তােলার ওপর চায়ের গুণগত মান ও উৎপাদন বহুলাংশে নির্ভরশীল। চায়ের গুণগত মান বজায় রাখতে ‘দুটি পাতা’ ও ‘একটি কুঁড়ি’ (Two leaves and a bud) সার্বিকভাবে চয়নের জন্য মহিলাদের সরু আঙুল সুবিধাজনক।
পরিবহণঃ- চা পাতা তােলার পর টাটকা অবস্থায় কারখানায় পাঠানাের জন্য উন্নত যােগাযােগ ব্যবস্থা থাকা দরকার। উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা না থাকলে সেই পাতা তোলার পর কারখানায় পাঠাতে অনেক সময় লেগে যাবে যার ফলে চায়ের পাতার গুণগতমান অনেকটাই কমে যাবে।।

> মূলধনঃ- চা একটি ব্যয়বহুল চাষ। চা চাষের ক্ষেত্রে প্রথম থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়। তাই সমস্ত কিছু ব্যবস্থাপনার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে মূলধন আবশ্যক।
চাহিদাঃ- সর্বোপরি মৃদু উত্তেজক পানীয় রূপে অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে চায়ের ব্যাপক চাহিদা বা বাজারে চা চাষকে প্রভাবিত করে।
মূলত উপরিক্ত পরিবেশ ই ভারতে চা চাষের সবচেয়ে ভালো পরিবেশ।।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top