‘চৌদ্দোদফা' নীতি কী? চৌদ্দোদফা নীতি কে রচনা করেন? এটি কবে প্রচলিত হয়? চৌদ্দোদফা দাবিগুলি সম্পর্কে টীকা লেখো।

0

‘চৌদ্দোদফা' নীতি কী? চৌদ্দোদফা নীতি কে রচনা করেন? এটি কবে প্রচলিত হয়? চৌদ্দোদফা দাবিগুলি সম্পর্কে টীকা লেখো।


উওরঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন ‘চৌদ্দোদফা' শর্ত রচনা করেন। ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে মার্কিন আইনসভা কংগ্রেসের কাছে এক বক্তৃতা প্রসঙ্গে চৌদ্দোদয়। শর্তের কথা উল্লেখ করেন। এটিকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর শান্তি চুক্তির ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করা হয়।

উড্রো উইলসনের ১৪ দফা নীতির সূচনাঃ 

আমেরিকা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগ দিলে (১৯১৭ খ্রিঃ) যুদ্ধের ফলাফল মিত্রপক্ষের অনুকূলে চলে যায়। ফলে জার্মানির পতন নিশ্চিত হলে বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা রক্ষার প্রচেষ্টা শুরু হয়। মার্কিন রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন মার্কিন কংগ্রেসে তাঁর শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। উইলসন বলেন— গণতন্ত্রের জন্য বিশ্বকে নির্বিঘ্ন করে তুলতে হবে।

চৌদ্দোদফা দাবি উইলসন ১৯১৮-র ৮ ই জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেসে যে চৌদ্দোটি দাবি জানান সেগুলি ছিল এরকম— 

(১) আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের মধ্যে কূটনৈতিক গোপন চুক্তির বদলে দেশগুলি।

খেলাধূলি শান্তি আলোচনা করতে হবে। (২) মহাসাগরে নিরপেক্ষ দেশগুলির অবাধ জাহাজ চলাচলের থাকবে। 

(৩) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রতিটি দেশের অবাধ অধিকার স্বীকৃতি পাবে। (৪) কোনো সেই অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার অতিরিক্ত সামরিক শক্তি বজায় রাখবে না। 

(৫) উপনিবেশগুলির ওপর বিভিন্ন কাশের দাবি স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে বিচার করতে হবে। 

(৬) রাশিয়াকে তার অধিকৃত অঞ্চলগুলি ফিরিয়ে নিতে হবে এবং সেখান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। 

(৭) বেলজিয়াম থেকে সেনা সরিয়ে তাকে স্বাধীনতা প্রদান করতে হবে। 

(৮) ফ্রান্স থেকে জার্মান সৈন্যবাহিনী সরিয়ে নিতে হবে এবং হকে আনসাস লোরেন অঞ্চল ফিরিয়ে দিতে হবে। 

(৯) জাতিগত ভিত্তিতে ইটালির রাজ্য সীমা ঠিক করতে হলে। 

(১০) অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির বিভিন্ন জাতিকে স্বায়গুশাসনের সুযোগ দিতে হবে। 

(১১) বঙ্কান রাজ্যগুলিকে গহীনতা দিতে হবে ও সার্বিয়া অঞ্চলকে সমুদ্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। 

(১২) তুরস্কের সুলতানের সাজ্যভুক্ত জাতিগুলিকে স্বায়ত্তশাসনের সুযোগ দিতে হবে এবং দার্দানালিস প্রণালী নিরপেক্ষ থাকবে। 

(১৩) স্বাধীন ও সার্বভৌম পোল্যান্ড রাষ্ট্র গঠন করা হবে। 

(১৪) বিশ্বের সব দেশের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গঠন করা হবে।

উপসংহারঃ 

উইলসনের চৌদ্দোদফা নীতিগুলি যে বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় সহায়ক হয়েছিল, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এই দাবিগুলি বিশ্বে এক নতুন মানবিক মূল্যবোধের জন্ম দিয়েছিল সে কথা বলা যেতে পারে। উইলসন আশা প্রকাশ করে বলেছিলেন—প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হবে মানবজাতির শেষ যুদ্ধ, পৃথিবীতে আর এরুপ যুদ্ধ ঘটবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top