সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড বলতে কী বোঝায়? || প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল?? |
উওরঃ ইউরোপের বৃহৎ শক্তিবর্গের উগ্র জাতীয়তাবাদী মানসিকতা,বিভিন্ন উপনিবেশ দখল,সাম্রাজ্য বিস্তার ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে পারস্পরিক বিরোধিতা, পরস্পর স্বার্থবিরোধী দুটি শক্তির উদ্ভব প্রভৃতি কারণে ইউরোপের পরিবেশ যখন ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল, ঠিক তখনই 1914 সালের 28 শে জুন অস্ট্রিয়ার যুবরাজ আর্ক ডিউক ফ্রান্সিস ফার্দিনান্দ এবং তার স্ত্রী সোফিয়া বসনিয়ার রাজধানী সেরাজেভো শহরের ভ্রমণ করতে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে স্লাভ সন্ত্রাসবাদি সংস্থা ব্ল্যাক হ্যান্ড বা ইউনিয়ন অফ ডেথ - এরা একজন সদস্য ন্যাভরিলো প্রিপেন্স অষ্ট্রিয়ার যুবরাজ এবং তার স্ত্রীকে রাজপথে প্রকাশ্যে দিবালোকে খুন করেছিল। এই ঘটনাই ইতিহাসে সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত।।
এই ঘটনার পরই মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ডে আততায়ী ছিল একজন অস্ট্রিয়া অধিবাসী। কিন্তু সেই ব্যক্তি জাতিতে স্লাভ ছিল। আততায়ী সার্বিয়ার আদিবাসীদের সমগোত্রীয় হওয়ায় এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে সার্বিয়া দায় বলে অস্ট্রিয়ার মনে করেছিল। সেকারণেই অস্ট্রিয়া কতগুলি শর্ত সম্বলিত চরমপত্র পাঠিয়ে 48 ঘণ্টার মধ্যে সেগুলি সার্বিয়াকে মেনে নিতে বলে। কিন্তু অস্ট্রিয়া রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হয় এমন কিছু শর্ত ছাড়া বাকি শর্তগুলি মেনে নেয়। এরপর অস্ট্রিয়া আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বান জানায়। কিন্তু অস্ট্রিয়া এই দাবি অগ্রাহ্য করে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের আয়োজন করে 1914 খ্রিস্টাব্দে 28 জুলাই অস্ট্রিয়ার রাজধানী বেলগ্রেড আক্রমণ করে। সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেক রাষ্ট্রের মিত্ররা তাদের বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ বৃহৎ আকার ধারণ করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হয়। এই কারণেই সেরাজেভো হত্যাকাণ্ডকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ বলা হয়।।