প্রশ্নঃ সশস্ত্র শান্তির যুগ বলতে কি বোঝ? কোন সময়কালকে সশস্ত্র শান্তির যুগ বলা হয় কেন?

0

প্রশ্নঃ সশস্ত্র শান্তির যুগ বলতে কি বোঝ? কোন সময়কালকে সশস্ত্র শান্তির যুগ বলা হয় কেন?

প্রশ্নঃ সশস্ত্র শান্তির যুগ বলতে কি বোঝ? কোন সময়কালকে সশস্ত্র শান্তির যুগ বলা হয় কেন?
সশস্ত্র শান্তির যুগ বলতে কি বোঝ

উওরঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সূচনার পূর্ববর্তী যুগ (1871 খ্রিস্টাব্দ থেকে  1913 খ্রিঃ) পর্যন্ত সময়কালে ইউরোপে কোনো ভয়াবহ বা ধ্বংসাত্বক যুদ্ধ হয়নি। সেইকারণেইতিহাসে সশস্ত্র শাস্তির যুগ বা ' Age of Armed Peace' নামে অভিহিত। অনেকে এই যুগটিকে 'আন্তর্জাতিক নৈরাজ্য’ বলে চিহ্নিত করেছেন। অন্যদিকে David Thomson-এর মতে, এই পর্বে ইউরোপের শক্তিসমবায়ের ভাবধারা একেবারে বিসর্জিত হয়নি। কেননা এই সময় ইউরোপে বহু জটিল প্রশ্নে বহু সম্মেলন আহুত হয়েছে। বস্তুতঃপক্ষে শক্তিসাম্য ব্যবস্থা ইউরোপে কিছুটা শান্তি বজায় রেখেছিল। কিন্তু এই শক্তি সাম্য ডিমোক্লিসের খড়্গর মত সূক্ষ্ম সুতোয় বাঁধা ছিল। রাষ্ট্রগুলির মধ্যে পারস্পরিক ঈর্ষা ও সন্দেহ পরিবেশকে কলুষিত করে তুলেছিল। অথচ শান্তির ললিত বাণী শোনাতে রাষ্ট্রগুলি কসুর করেনি, কিন্তু প্রত্যেক রাষ্ট্রই যুদ্ধপ্রস্তুতি চালাতে থাকে। এই পর্বে কয়েকটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়—

(i) প্রতিটি দেশই মৈত্রীলাভের উদগ্র বাসনায় মেতে উঠে।

(ii) রাষ্ট্রগুলির শাসন পরিচালনার অনেক সিদ্ধান্তই কর্মচারীরা গ্রহণ করত।

(iii) রাষ্ট্রগুলি একে অপরের প্রতি সন্দেহ ও অবিশ্বাস থেকে অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণে প্ররোচিত হয়। এই সময় প্রতিটি রাষ্ট্র প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সামরিক প্রস্তুতির অজুহাতে আত্মরক্ষামূলক সমর প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। ইউরোপ এই সময় পরস্পর দুটি বিবাদমান শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একদিকে ত্রিশক্তি মৈত্রী, অন্যদিকে ত্রিশক্তি আঁতাত। ঐতিহাসিক David Thomson বলেছেন যে, “১৯১৪ খ্রিঃ মধ্যে শুধুমাত্র তুরস্ক ইউরোপের ‘রুগ্ন ব্যক্তি’ ছিল না, ইউরোপ নিজেই পরিণত হয়েছিল রুগ্ন ব্যক্তিতে।”

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top