ধীবর-বৃত্তান্ত নাটকের বড় প্রশ্ন উওর |
আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা নবম শ্রেণির বাংলা ( WBBSE Class 9 Bengali Question Answer & Suggestion 2023 ) কালিদাসের রচিত ধীবর-বৃত্তান্ত নাটকের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বড় প্রশ্ন উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।। পরবর্তীকালে ক্লাস 9 বাংলা কালিদাসের রচিত ধীবর-বৃত্তান্ত নাটকের বাকি বড় প্রশ্ন উওর গুলো শেয়ার করবো।। এবং যারা নবম শ্রেণির বাংলা ধীবর-বৃত্তান্তের MCQ প্রশ্ন উত্তর গুলি এখনো দেখতে পারোনি, তারা নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে ধীবর বৃত্তান্ত নাটকের MCQ প্রশ্ন উওর গুলি দেখতে পারো।
ধীবর-বৃত্তান্ত নাটকের বড় প্রশ্ন উওর || ক্লাস 9 বাংলা ধীবর বৃত্তান্তের বড় প্রশ্ন উওর
প্রশ্নঃ- 'কিভাবে এই আংটি আমার কাছে এল তা বললাম'- বক্তা কে? ধীবর কিভাবে সেই আংটিটি পেয়েছিল?
উওরঃ- মহাকবি কালিদাসের রচিত ধীবর-বৃত্তান্ত নাটকটি গৃহীত আলোচ্য প্রশ্নের বক্তা হলেন নাটকের একজন উল্লেখযোগ্য চরিত্র ধীবর।। ধীবর রাজা দুষ্মন্তের নামাঙ্কিত একটি আংটি পেয়ে সেটি বাজারে বিক্রির জন্য চেষ্টা করলে,সেই ধীবরকে চোর ভেবে ধরে আনা হয়। তখন ধীবর রাজরক্ষীদের সেই কাহিনী শোনান যে, সে কিভাবে সেই আংটিটি পেয়েছিল। সেই কাহিনী শোনাতে গিয়েই ধীবর উক্ত মন্তব্যটি করেন।
ধীবর-বৃত্তান্ত নাটকের প্রধান চরিত্র ধীবর শক্রাবতারের একজন অত্যন্ত সহজ সরল মানুষ। অন্যান্য ধীবরের মতো সেও মাছ ধরে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।।
Click Here👇👇👇
নবম শ্রেণির বাংলা ধীবর-বৃত্তান্ত নাটকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ MCQ প্রশ্ন উওর
তাই খুব সাধারণভাবেই বলা বলা যায়, সেই ধীবরের আর্থিক অবস্থা এতটাও ভালো হবেনা যার মাধ্যমে সে কোনো দোকান থেকে রাজার নামাঙ্কিত কোনো আংটি কিনতে পারবে।।তাই স্বাভাবিকভাবেই তার উপর সন্দেহ আসে। কিন্তু ধীবরের সঙ্গে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা হলো,রাজা দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে বিবাহ করার পর তিনি নিজের রাজ্যে ফিরে যান। কিন্তু নিজের রাজ্যে ফিরে আসার আগে রাজা দুষ্মন্ত বিবাহের একটি চিহ্ন হিসেবে রাজার নামাঙ্কিত একটি আংটি শকুন্তলাকে পরিয়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে পিতৃগৃহে যাত্রাকালে শচীতীর্থে অঞ্জলি দেওয়ার সময় শকুন্তলার আঙ্গুল থেকে সেই আংটি খুলে জলে পড়ে যায় এবং একটি রুই মাছ ভুলবশত সেদিকে খাদ্য ভেবে গ্রহণ করে। পরবর্তীতে সেই রুই মাছটি ধীবরের হাতে ধরা পড়ে এবং সেটিকে বিক্রির উদ্দেশ্যে যখন সে মাছটাকে কাটা হয়, তখন দেখা যায় সেই রুই মাছের পেটে একটি আংটি রয়েছে যেখানে রাজার নাম খোদাই করা রয়েছে। এটা ধীবর খুব সহজেই বুঝতে পারে যে, সেটি রাজা দুষ্মন্তের নামাঙ্কিত এটি বহু মূল্যবান আংটি। এবং এভাবেই একজন সাধারন ধীবরের হাতে রাজা দুষ্মন্তের এক অতি মূল্যবান আংটি হাতে এসেছিল।।
প্রশ্নঃ- 'যে বৃত্তি নিয়ে যে মানুষ জন্মেছে, সেই বৃত্তি নিন্দনীয় ( ঘৃণ্য ) হলেও তা পরিত্যাগ করা উচিত নয়।'- কে কোন প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছিল? উক্তিটিতে কোন দর্শনের প্রতিফলন ঘটেছে?
উওরঃ- মহাকবি কালিদাসের রচিত ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশ থেকে গৃহীত প্রশ্ন অংশটির বক্তা হলেন এই নাটকের মূল চরিত্র ধীবর। ধীবর একদিন জালে একটি রুই মাছ পাওয়ার পর সেটাকে বিক্রি করার জন্য যখন যেদিকে কাটে,তখন সেই রুই মাছের পেট থেকে রাজার নামাঙ্কিত একটি অতি মূল্যবান আংটি বেরিয়ে আসে। ধীবর সে আংটি দেখে দেখে বুঝতে পারে যে, সেই আংটির মূল্য অনেক বেশি। তাই ধীবর সেটিকে বিক্রি করতে নিয়ে যায়। কিন্তু বিক্রি করতে নিয়ে যাওয়ার ফলে রাজরক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে যায়। তাই তাকে চোর সাব্যস্ত করে রাজশ্যালকের কাছে নিয়ে আসা হয়। একজন সামান্য ধীবরের কাছে রাজার নামাঙ্কিত অতি মূল্যবান একটি আংটি কী করে আসলো সেটা ভেবেই রাজরক্ষী এবং রাজশ্যালক ধীবরকে কটুক্তি করে সেইসঙ্গে ধীবরকে কটুক্তি করে তার জীবন-জীবিকা নিয়ে বিদ্রুপ করে। জীবিকা সম্পর্কে বিদ্রুপ করার কারণেই ধীবর উক্ত মন্তব্যটি করেছিল রাজরক্ষী এবং রাজ শ্যালক ধীবরকে নিয়ে কুমন্তব্য বা উপহাস করলেও,ধীবর তাদের সঙ্গে ধীর-স্থির আচরণ করে জীবনের আচরণ এবং কথাবার্তার মধ্যে তার বৃত্তির প্রতি নিষ্ঠা এবং আত্মসম্মানের পরিচয় প্রকাশিত হয়েছিল। ধীবর ভালো করে জানে যে, কর্মের মাধ্যমে মানুষ বেঁচে থাকে এবং কর্ম ই সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। তাই কর্মের ক্ষেত্রে কোনো জাত- পাত,কোন প্রকার নিয়ে কথা ওঠা উচিত নয়। নিজের স্থান বজায় রেখে কাজ করলে তা কখনোই নিন্দনীয় হতে পারে না বলে ধীবর মনে করে। দৃষ্টান্ত হিসেবে সে বলে—“বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ স্বভাবে দয়াপরায়ণ হলেও যজ্ঞীয় পশু বধের সময় নির্দয় হয়ে থাকেন।” অর্থাৎ দায়দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কাজের ছোটো-বড়ো হিসাব করা উচিত নয়। এভাবেই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যের মাধ্যমে ধীবরের বিচক্ষণতা ও গভীর দার্শনিক প্রজ্ঞার পরিচয় প্রকাশিত হয়েছে।
প্রশ্নঃ- 'এখন থেকে তুমি আমার একজন বিশিষ্ট বন্ধু হলে।'- কারা পরস্পরের বন্ধু হয়েছে? তারা কিভাবে বন্ধু হয়েছে?
উওরঃ মহাকবি কালিদাসের রচিত ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশের প্রশ্নের এই অংশটিতে এই নাটকের প্রধান চরিত্র ধীবর এবং নাটকের অপর প্রধান চরিত্র রাজশ্যালকের বন্ধুত্বের কথা বলা হয়েছে। একটি ঘটনা ক্রমে ধীবরের সঙ্গে রাজশ্যালকের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তখন রাজশ্যালক ধীবরকে উদ্দেশ্য করে উক্ত মন্তব্যটি করেন।।দরিদ্র ধীবর নদীতে রুই মাছ পাওয়ার পর বিক্রির উদ্দেশ্যে যখন সেটিকে দুভাগ করে কেটে ফেলে তখন সেই রুই মাছের পেট থেকে রাজার নামাঙ্কিত একটি অতি মূল্যবান আংটি বেরিয়ে আসে। সেই আংটির মূল্য বুঝতে পেরে ধীবর যখন সেটিকে বাজারে বিক্রি করতে যায়, তখন রাজরক্ষীদের হাতে ধীবর ধরা পড়ে।। রক্ষীদ্বয় এবং রাজশ্যালক ধীবরকে চোর সাব্যস্ত করে নানাভাবে তাকে অপমান করেন। আংটিপ্রাপ্তির ঘটনা সম্পর্কে ধীবরের কোনো কথাই তাঁরা বিশ্বাস করেননি। শেষপর্যন্ত রাজশ্যালক ধীবরের কথার সত্যাসত্য নির্ণয় করতে আংটিটি রাজার কাছে নিয়ে যান। আংটি প্রত্যক্ষ করে রাজার মনে পূর্বস্মৃতি জাগরিত হয় এবং তিনি কিছুক্ষণ বিহ্বলভাবে আংটির দিকে তাকিয়ে থাকেন। আংটির মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ ধীবরকে পুরস্কার রূপে প্রদান করেন। ধীবর সেই পুরস্কার লাভ করে, পুরস্কারের অর্ধেক মূল্য রক্ষীদ্বয়ের মধ্যে ভাগ করে দিতে চায়। ধীবরের হৃদয়ের এমন উদারতা, তার সততা, নিজের বৃত্তির প্রতি নিষ্ঠায় মুগ্ধ হন রাজার শ্যালক। তাই নাটকের প্রথমে ধীবরের প্রতি কটু ব্যবহার করলেও পরে ধীবরের কীর্তিকলাপে প্রসন্ন হয়ে তিনি ধীবরকে বিশিষ্ট বন্ধুর মর্যাদা দিয়েছেন।
প্রশ্নঃ 'মুহূর্তের জন্য রাজা বিহ্বলভাবে চেয়ে রইলেন।'- রাজা কে? তিনি কিসের দিকে চেয়ে ছিলেন? তার এমন আচরণের কারণ কী?
উওরঃ- মহাকবি কালিদাসের রচিত ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশ থেকে গৃহীত আলোচ্য প্রশ্নের বক্তা হলেন রাজা হলেন, রাজা যযাতি এবং শমীষ্ঠার পূত্র পুরো বংশীয় রাজা দুষ্মন্ত। রাজশ্যালক ধীবরের পাওয়া সেই আংটি যেটি রাজা শকুন্তলাকে উপহার দিয়েছিলেন,সেই আংটিটি রাজা দুষ্মন্তের হাতে দেওয়ায়, রাজা মুহূর্তের জন্য বিহ্বলভাবে সেই আংটির দিকে চেয়ে ছিলেন।। রাজা দুষ্মন্ত মহর্ষি কর্ণের তপবনে বিশ্রামের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করলে সেখানে তিনি মহর্ষির পালিতা কন্যা শকুন্তলার সাক্ষাৎ পান। এবং তিনি তার রূপে মুগ্ধ হয়ে গান্ধর্ব মতে তাঁকে বিবাহ করেন। এরপর রাজা দুষ্মন্ত নিজের রাজ্যে ফিরে আসার আগে তাদের বিবাহের চিহ্ন হিসেবে শকুন্তলার হাতে রত্ন খচিত একটি আংটি শকুন্তলাকে পরিয়ে দেন। এরপর মহর্ষি কর্ন তপবনে ফিরে এসে সমস্ত ঘটনা জানতে পারলে তিনি শকুন্তলাকে স্বামীগৃহর উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেন। পথে শচীতীর্থে স্নানের সময় অঞ্জলি দেওয়ার সময় সেই আংটি শকুন্তলার হাত থেকে খুলে পড়ে যায়। ফলে রাজার কাছে পৌঁছেও শকুন্তলা তার চিহ্ন রাজাকে দেখাতে পারেননি। অন্যদিকে ঋষি দুর্বাসার অভিশাপের প্রভাবে রাজা দুষ্মন্তও শকুন্তলাকে চিনে একসময় সম্পূর্ণভাবে ভুলে যান। এরফলে শকুন্তলাকে অপমানিত হয়েই ফিরে আসতে হয়। শকুন্তলার হারিয়ে যাওয়া আংটিটি,একটি রুই মাছ খাদ্য হিসেবে সেটিকে খেয়ে ফেলে। ঘটনাক্রমে সেই মাছটি এক ধীবরের হাতে পড়ে।। ধীবর মাছটিকে বিক্রি করার উদ্দেশ্য যখন সেটিকে কাটে তখন, মাছটির পেটে সেই আংটিটি ধীবরের হাতে আসে। এরপর ধীবর যখন সেই আংটি বিক্রয় করতে যায়, তখন ধীবর রাজরক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে। ধীবরের কাছে উক্ত আংটি দেখে তাকে চোর সন্দেহ করে রাজরক্ষীরা। ধীবরের মুখে আংটিপ্রাপ্তির কথা শুনেও তারা অবিশ্বাস করে সে-কথা। রাজশ্যালক ধীবরের কথার সত্যাসত্য জানার জন্য যখন উক্ত আংটি রাজাকে দেখান, তখন সেই আংটি প্রত্যক্ষ করে রাজার মনে পূর্বস্মৃতি জাগরিত হয়। আংটি দেখে তাঁর প্রিয়জন তথা শকুন্তলার কথা মনে পড়ে যায়। তাই তিনি ওইরূপ আচরণ করেন।
আশাকরি, নবম শ্রেণির বাংলা (WBBSE Class 9 Bengali Question Answer & Suggestion 2023 ) কালিদাসের রচিত ধীবর-বৃত্তান্ত নাটক থেকে যে কয়েকটি বড় প্রশ্ন উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে, তা তোমাদের কাজে লাগবে।।
Tags : ধীবর-বৃত্তান্ত নাটকের প্রশ্ন উত্তর | নবম শ্রেণির বাংলা ধীবর-বৃত্তান্ত নাটকের প্রশ্ন উত্তর | ক্লাস 9 বাংলা ধীবর-বৃত্তান্ত নাটকের বড় প্রশ্ন উত্তর | wbbse class 9 Bengali question answer 2022