দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিবর্তন এবং কয়েকটি মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের (WBBSE Class 12 Political Science Question Answer Chapter 1 In Bengali ) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'জাতীয় স্বার্থ কাকে বলে? জাতীয় স্বার্থ কত প্রকার ও কী কী বা জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগ করো।' এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এবং পরবর্তীতে আমরা উচ্চ মাধ্যমিকের রাষ্ট্রবিজ্ঞান সহ আরও অন্যান্য বিষয়ের সমস্ত নোটস + অনলাইন মকটেস্ট তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।।
জাতীয় স্বার্থ কাকে বলে? জাতীয় স্বার্থ কত প্রকার ও কী কী বা জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগ করো।
উওরঃ জাতীয় স্বার্থ বলতে একটি জাতির সর্বনিম্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহকে বোঝায়, যে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যসমূহকে পূরণ করার জন্য রাষ্ট্রসমূহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে বাকার্য সম্পন্ন করে থাকে,তাকে বলে জাতীয় স্বার্থ বলে।
টমাস রবিনসন জাতীয় স্বার্থকে মূলত ছয়টি ভাগে ভাগ করেছেন। যথা মুখ্য জাতীয় স্বার্থ,গৌণ জাতীয় স্বার্থ, স্থায়ী জাতীয় স্বার্থ,পরিবর্তনশীল জাতীয় স্বার্থ, সাধারণ জাতীয় স্বার্থ ও সুনির্দিষ্ট জাতীয় স্বার্থ।।
মৌলিক বা মুখ্য স্বার্থঃ
যে সমস্ত স্বার্থের ওপর মূলত কোনো একটি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নির্ভর করে,সে সমস্ত স্বার্থকেই মৌলিক স্বার্থ বলে। যদি কোনো রাষ্ট্র সেই সমস্ত স্বার্থ গুলিকে রক্ষা করতে না পারে তাহলে সেই রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে। সেই কারণে প্রতিটি রাষ্ট্র মৌলিক বা মুখ্য স্বার্থ রক্ষা করার জন্য যে কোন মুল্য দিতে পারে। এমনকি মৌলিক বা মুখ্য স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে অপর এক রাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ করতেও প্রস্তুত থাকে। মৌলিক বা মুখ্য স্বার্থ গুলির মধ্যে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক সীমানা গত, রাজনৈতিক ইত্যাদি স্বার্থ রয়েছে।।
গৌণ জাতীয় স্বার্থঃ
রাষ্ট্রের গৌণ জাতীয় স্বার্থ বলতে সেই সমস্ত স্বার্থকে বোঝায় যেগুলি রাষ্ট্রের অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় কিন্তু তবুও রাষ্ট্র সেই সমস্ত জাতীয় স্বার্থ গুলিকে সংরক্ষিত করে থাকে। যেমন কূটনৈতিক কর্মীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান, বিদেশী কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্পর্ক গড়ে তোলা ইত্যাদি হচ্ছে গৌন স্বার্থের উদাহরণ।।
স্থায়ী জাতীয় স্বার্থঃ
যে সমস্ত স্বার্থ পরিবর্তনশীল নয় অথবা দীর্ঘমেয়াদি বা সেগুলো পরিবর্তন হলেও অত্তন্ত ধীরে ধীরে হয়, ধরনের স্বার্থকেই একটি রাষ্ট্রের স্থায়ী জাতীয় স্বার্থ হিসেবে নির্দিষ্ট করা যায়। অপর একটি রাষ্ট্রের ওপর বিভিন্ন ভাবে নিজের প্রভাব সম্প্রসারণের প্রচেষ্টা হলো স্থায়ী জাতীয় স্বার্থের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।।
পরিবর্তনশীল জাতীয় স্বার্থঃ
পরিবর্তনশীল জাতীয় স্বার্থ হলো সেই সমস্ত স্বার্থ যা বিশেষ কোনো পরিস্থিতিতে কোনো রাষ্ট্রের জাতীয় কল্যাণের পক্ষে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে হিসেবে বিবেচিত হয়।। যেহেতু সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে এই ধরনের স্বার্থেরও পরিবর্তন ঘটে থাকে সেই কারণে এই ধরনের জাতীয় স্বার্থকে পরিবর্তনীয় জাতীয় স্বার্থ বলে। সাধারণভাবে রাজনৈতিক মতাদর্শ, বিদেশি নীতি-নির্ধারকদের ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি ধরণের স্বার্থ নির্ধারিত হয়ে থাকে।
সাধারণ জাতীয় স্বার্থঃ
সাধারণ জাতীয় স্বার্থ বলতে একটি রাষ্ট্রের সেই সমস্ত স্বার্থকে বোঝায় যে, সমস্ত জাতীয় স্বার্থের অগ্রাধিকার রাষ্ট্র তার গুরুত্ব অনুযায়ী নির্ধারণ করে। ইতিবাচক শর্তযুক্ত এই ধরনের জাতীয় স্বার্থ বহুসংখ্যক রাষ্ট্রের সঙ্গে সঙ্গে একইভাবে যুক্ত হতে পারে। যেমন বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা সঙ্গে বিভিন্ন রাষ্ট্রের স্বার্থ সমান ভাবে যুক্ত থাকে।।
সুনির্দিষ্ট জাতীয় স্বার্থঃ
নির্দিষ্ট স্থান এবং সময়ের মানদণ্ডে সাধারণ জাতীয় স্বার্থের যুক্তিসঙ্গত সম্প্রসারণে নির্ধারিত স্বার্থগুলোকে সুনির্দিষ্ট জাতীয় স্বার্থ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। বিকাশ শীল দেশগুলির সাধারণ স্বার্থ রক্ষায় সুনির্দিষ্ট কোনো প্রচেষ্টা হলো সুনির্দিষ্ট জাতীয় স্বার্থের উদাহরণ।।
আশাকরি, দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিবর্তন এবং কয়েকটি মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসাবে যে 'জাতীয় স্বার্থ কাকে বলে? জাতীয় স্বার্থ কত প্রকার ও কী কী বা জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগ করো।' উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে তা তোমাদের কাজে লাগবে।।
Tags :