বিশ্বায়ন কী? বিশ্বায়নের বৈশিষ্ট্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করো || দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর

0

 

বিশ্বায়ন কী? বিশ্বায়নের বৈশিষ্ট্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করো || দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর

আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিবর্তন এবং কয়েকটি মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের ( WBBSE Class 12 Political Science Question Answer Chapter 1 In Bengali )  একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'বিশ্বায়ন কী? বিশ্বায়নের বৈশিষ্ট্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।।' এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এবং পরবর্তীতে আমরা উচ্চ মাধ্যমিকের রাষ্ট্রবিজ্ঞান সহ আরও অন্যান্য বিষয়ের সমস্ত নোটস + অনলাইন মকটেস্ট তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।।

বিশ্বায়ন কী? বিশ্বায়নের বৈশিষ্ট্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।।

বিশ্বায়ন হলো এমন একটি বিষয় যাতে রাষ্ট্র সংক্রান্ত সমস্ত ধারণার অবসান ঘটিয়ে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবাধ বিশ্বব্যাপী আদান-প্রদান চালানো হয়, তাকে বিশ্বায়ন বলে।।

• খুব সহজভাবে বিশ্বায়ন বলতে বোঝায় বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি এবং বাণিজ্যের বিস্তার। এবং অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে বিশ্বায়ন বলতে বোঝায় বিভিন্ন রাষ্ট্রের মুক্ত বা খোলা বাজার। এটি হলো এমন একটি অর্থনীতি বিষয়ক প্রক্রিয়া যা সমগ্র বিশ্বকে একটি উন্মুক্ত বাজারে পরিণত করতে চায় এবং যেখানে দেশের বাজার এবং বিশ্বের বাজারে মধ্যে কোনো বাধার প্রাচীর থাকবেনা।

বিশ্বায়নের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনাঃ- 

বিশ্বায়নের কতগুলি অপরিহার্যভাবে ও মৌলিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন -

বাণিজ্য শিল্প ও সংস্কৃতির প্রসারঃ- 

বিশ্বায়ন কথার মূল অর্থই হলো বাণিজ্য, শিল্প এবং সংস্কৃতির প্রসার। বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উন্নত দেশগুলি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো উন্নয়নশীল বা উন্নয়নকামী দেশগুলিতে নিজেদের পুঁজি বিনিয়োগ করার মাধ্যমে বাণিজ্য,শিল্প এবং সংস্কৃতির প্রসার ঘটায়। 

বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সংহতি সাধনঃ-

বিশ্বায়নের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে জোসেফ স্টিগলিৎস বলেছেন, বিশ্বায়ন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং জনগণের মধ্যে ঘনিষ্ঠতর সংগতি সাধন করে।। বিশ্বায়ন বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে নিবিড় সংহতি গড়ে তুলতে চায়। বর্তমানে কোনো রাষ্ট্রের পক্ষেই একাকী বিচ্ছিন্নভাবে টিকে থাকা সম্ভব নয়। বিশ্বায়ন এই বাস্তবতাকে তুলে ধরে রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন যোগসূত্র গড়ে তুলতে চায়।।

পারস্পরিক নির্ভরশীলতাঃ- 

বিশ্বায়ন সচেতনভাবে সমগ্র বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে নির্বিশেষে বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার পরিবেশ গড়ে তোলার পক্ষপাতী। বিশ্বায়নের মাধ্যমে যে সমস্ত দেশ বা রাষ্ট্র যে সমস্ত জিনিসপত্র উৎপাদন করতে সক্ষম নয় সেগুলো বিশ্বায়নের মাধ্যমে অবাধ আদান-প্রদানের মাধ্যমে তারা পেতে পারে। ঠিক একই ভাবে তাদের উৎপাদিত জিনিসপত্রগুলিও বিশ্বায়নের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অন্যান্য দেশে রপ্তানি করতে পারে।। এভাবে একটি রাষ্ট্রের সঙ্গে অপর একটি রাষ্ট্রের বা সংস্থার পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।।

পুঁজি ও প্রযুক্তির অবাধ চলাচলঃ- 

বিশ্বায়নের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল আধুনিক বিশ্বের পুঁজি ও প্রযুক্তির অবাধ চলাচল। বিশ্বায়নের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি দেশের পুঁজি শুধুমাত্র তার নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে আবদ্ধ থাকে না। বিশ্বায়নের যুগে বিশ্বায়নের যুগে পূজি, প্রযুক্তি ও কারিগরি কৃৎকৌশল কোনো একটি দেশের ভৌগোলিক সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে তা বিভিন্ন দেশের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।। 

বহুজাতিক সংস্থার আধিপত্যঃ- 

বিশ্বায়নের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো বহুজাতিক সংস্থার আধিপত্য প্রতিষ্ঠা। উন্নয়নশীল দেশগুলি বহুজাতিক সংস্থা থেকে ঋণ গ্রহণ করার পূর্বেই বহুজাতিক সংস্থা গুলি সেই দেশ গুলিকে এমন কিছু শর্ত প্রদান করে যার মাধ্যমে সেই দেশ গুলোকে নিজের কাঠামোগত পরিবর্তন করতে হয়। যেমন সংস্থাগুলির জন্য দেশের বাজার উন্মুক্ত করা,তাদের অর্থনীতিতে বাজারে বহুজাতিক সংস্থা গুলির পুঁজির অবাধ যাতায়াতের পথ মসৃণ করা এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সরকার হস্তক্ষেপ বন্ধ করা ইত্যাদি।। 

মুক্তবাজার অর্থনীতি প্রতিষ্ঠাঃ- 

বিশ্বায়নের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো,বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া এমন একটি মুক্তবাজার বা মুক্ত অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চায় যেখানে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। বিশ্বায়ন সারা বিশ্বের বাজারকে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত রাখতে চায় যেখানে উন্নত দেশগুলি ও বহুজাতিক সংস্থা গুলি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হয়ে নিজেদের পুঁজি বিনিয়োগ করার মাধ্যমে শিল্প বাণিজ্যে প্রসার ঘটাতে পারবে।।

রাষ্ট্রের সাবেকি সার্বভৌমত্বের পরিবর্তনঃ- 

বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া হল জাতি রাষ্ট্রের সম্পূর্ণ বিরোধী। জাতি রাষ্ট্র হল, কোনো দেশ নিজেদের শ্রম এবং জনসাধারণের কল্যাণের জন্য পুঁজির অবাধ মুনাফা ও লুন্ঠনের ওপর বিভিন্ন বাধানিষেধ আরোপ করে। কিন্তু বিশ্বায়ন সেই বাধা নিষেধকে মুক্ত করতে চায়।। তাই সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব অনেকটাই রাস পায়।

উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাবঃ- 

বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার একটি খারাপ দিক হল এটি অনুন্নত বা উন্নতশীল দেশগুলির ক্ষেত্রে খারাপ প্রভাব বিস্তার করে। কারণ উন্নত দেশগুলি বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশে নিজেদের বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলির নিজস্ব অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও বহুজাতিক সংস্থা গুলির বিভিন্ন ধরনের চাপে পড়ে উন্নয়নশীল দেশগুলি নিজেদের কাঠামোগত পরিবর্তন করার ফলে, সেই দেশের বেকারত্ব, শ্রমিক ছাটাই, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের অসক্রিয়তা দেখা দেওয়ার ফলে দেশে দারিদ্র্য, মূল্যবৃদ্ধি পায়। ফলে আর্থিক এবং সামাজিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সংকট দেখা দেয়।।


আশাকরি, দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিবর্তন এবং কয়েকটি মৌলিক ধারণা অধ্যায় ( WBBSE Class 12 Political Science Question Answer Chapter 1 In Bengali ) থেকে যে 'বিশ্বায়ন কী? বিশ্বায়নের বৈশিষ্ট্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।' সম্পর্কে নোট দেওয়া হয়েছে, তা তোমাদের কাজে আসবে।।

Tags : 

দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উওর | দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিবর্তন এবং কয়েকটি মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | wb class 12 political science question answer  | wb class xii political science question answer 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top