বিশ্বায়ন কাকে বলে বা বিশ্বায়নের সংজ্ঞা দাও। বিশ্বায়নের প্রকৃতি অথবা রূপ সম্পর্কে আলোচনা করো || দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর

0

 

বিশ্বায়ন কাকে বলে বা বিশ্বায়নের সংজ্ঞা দাও। বিশ্বায়নের প্রকৃতি অথবা রূপ সম্পর্কে আলোচনা করো || দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর

আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিবর্তন এবং কয়েকটি মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের ( WBBSE Class 12 Political Science Question Answer Chapter 1 In Bengali )  একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'বিশ্বায়ন কাকে বলে বা বিশ্বায়নের সংজ্ঞা দাও। বিশ্বায়নের প্রকৃতি অথবা রূপ সম্পর্কে আলোচনা করো' এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এবং পরবর্তীতে আমরা উচ্চ মাধ্যমিকের রাষ্ট্রবিজ্ঞান সহ আরও অন্যান্য বিষয়ের সমস্ত নোটস + অনলাইন মকটেস্ট তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।।

বিশ্বায়ন কাকে বলে বা বিশ্বায়নের সংজ্ঞা দাও। বিশ্বায়নের প্রকৃতি অথবা রূপ সম্পর্কে আলোচনা করো

বিশ্বায়ন কাকে বলে? বা বিষয় বলতে কি বোঝায় বা বিশ্বায়নের সংজ্ঞাঃ- 

বিশ্বায়ন কাকে বলে বা বিশ্বায়ন বলতে কী বোঝায় বা বিশ্বায়নের কোনো সর্বজন গ্রাহ্য সংজ্ঞা নেই। 

জোসেফ স্টিগলিৎস এর মতে বিশ্বায়ন হলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও জনগণের মধ্যে এমন এক ঘনিষ্ঠতর সংহতি সাধন যা পরিবহন এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইস্বাভাবিকভাবে ব্যয় হ্রাস করেছে। এবং দ্রব্যসামগ্রী, জ্ঞান, পুজি এমনকি মানুষের বিশ্বব্যাপী অবাধ যাতায়াতের ওপর আরোপিত সমস্ত কৃত্রিম প্রতিবন্ধকতা কেউ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।। 

খুব সংক্ষেপে বিশ্বায়নের সংজ্ঞা দিতে গেলে বলা যায়, বিশ্বায়ন হলো এমন একটি বিষয় যাতে রাষ্ট্র সংক্রান্ত সমস্ত ধারণার অবসান ঘটিয়ে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবাধ বিশ্বব্যাপী আদান-প্রদান চালানো হয়, তাকে বিশ্বায়ন বলে।।

• খুব সহজভাবে বিশ্বায়ন বলতে বোঝায় বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি এবং বাণিজ্যের বিস্তার। এবং অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে বিশ্বায়ন বলতে বোঝায় বিভিন্ন রাষ্ট্রের মুক্ত বা খোলা বাজার। এটি হলো এমন একটি অর্থনীতি বিষয়ক প্রক্রিয়া যা সমগ্র বিশ্বকে একটি উন্মুক্ত বাজারে পরিণত করতে চায় এবং যেখানে দেশের বাজার এবং বিশ্বের বাজারে মধ্যে কোনো বাধার প্রাচীর থাকবেনা। কোন দেশে যে জিনিস ভালো উৎপাদন করা হবে সেই দেশ সেই উৎপন্ন পণ্য বিদেশে রপ্তানি করবে এবং বিদেশি মুদ্রা রোজগার করবে। এবং সেই দেশ যা উৎপন্ন করতে পারবেনা সেই জিনিসগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা হবে। অর্থাৎ এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য এবং প্রযুক্তির এক সম্পর্ক স্থাপন করে।।

বিশ্বায়নের প্রকৃতি অথবা রূপ সম্পর্কে আলোচনাঃ-

বিশ্বায়নের বিভিন্ন সংজ্ঞাকে আমরা বিশ্লেষণ করলে অথবা বিশ্বায়নের প্রকৃতিকে বিশ্লেষণ করলে আমরা বিশ্বায়নের কয়েকটি রূপের সন্ধান পাই। যেমন - 

অর্থনৈতিক বিশ্বায়নঃ- 

বিশ্বায়ন সমগ্র বিশ্বজুড়ে একই ধরনের অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের সৃষ্টি করেছে। অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন বলতে বোঝায় বর্তমানে সমস্ত দেশের অর্থনীতি পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। 

প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অমিও কুমার বাগচী আর্থিক ক্ষেত্রে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তাঁর মতে আর্থিক বিশ্বায়ন হলো - 

• আর্থিক বাণিজ্যের প্রসার। 

• বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে লোকজনের অভিগমন ও নির্গমন। 

• বিভিন্ন দেশের মধ্যে অর্থ ও অন্যান্য বিনিময় মাধ্যমে সঞ্চারণ।

• এক দেশের পুঁজি অন্য এক দেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে সেখানে শিল্পজাত দ্রব্য, কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন করে সংশ্লিষ্ট দেশে কিংবা অন্য দেশে বিক্রয়ের প্রভাব সৃষ্টি। 

• এক দেশ থেকে অন্য দেশে পুজি লগ্নির প্রধান আদান প্রদান।

•  আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থা গুলিকে বানিজ্য-বিনিয়োগ ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে অবাধ স্বাধীনতা প্রদান।

•  বিভিন্ন দেশের মধ্যে প্রযুক্তির আদান-প্রধান এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তথ্যমাধ্যমের বিস্তার বিভিন্ন দেশের তথ্য ওপর বৈদ‍্যতিন প্রযুক্তির প্রয়োগ।।

রাজনৈতিক বিশ্বায়নঃ- 

রাজনৈতিক দিক থেকে বিশ্বায়ন হলো জাতি রাষ্ট্রের সম্পূর্ণ বিরোধী। জাতিরাষ্ট্র বলতে বোঝায় প্রতিটি রাষ্ট্র নিজেদের শ্রম এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণের ক্ষেত্রে পুঁজির অবাধ মুনাফা ও অবাত লুন্ঠনের উপর বাধানিষেধ আরোপ করে। কিন্তু বিশ্বায়ন প্রক্রিয়াটি যেটা চায় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এমন এক বাণিজ্য সম্পর্ক বা আদান-প্রদানের সম্পর্ক গড়ে তুলতে যেখানে রাষ্ট্রের কোনো প্রকার সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।। তাই বিশ্বায়ন জাতিরাষ্ট্রের সম্পূর্ণ বিরোধী। কিন্তু বিশ্বায়নের প্রবক্তারা জাতি-রাষ্ট্রের সম্পূর্ণ বিলোপ সাধন করতে না চাইলেও তারা এমন একটি জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার পক্ষপাতি যা পুঁজিপতি শ্রেণীর একচেটিয়া সম্পত্তিও ও একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার রক্ষার প্রয়োজনে সীমাহীন হিংসার আশ্রয় গ্রহণ করতেও দ্বিধাবোধ করবে না। এইভাবে বিশ্বায়ন জাতি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কমিয়ে দেয়।। কিন্তু এরপরও বিশ্বায়ন বিস্ময়করভাবে স্বায়ত্তশাসনের নানাবিধ প্রতিষ্ঠানকে বাঁচিয়ে রাখতে আগ্রহী।।

বিশ্বায়নের সাংস্কৃতিক দিকঃ- 

বিশ্বায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এর সাংস্কৃতিক দিক। বিশ্বায়ন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যা সমগ্র বিশ্বে একই ধরনের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চায়। ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক গণমাধ্যমের মাধ্যমে এরুপ সংস্কৃতি গড়ে তোলার কাজে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো আত্মনিয়োগ করেছে। তারা সংস্কৃতিক প্রবাহকে জাতিরাষ্ট্রের গণ্ডি ছাড়িয়ে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে।এর ফলে এক দেশের মানুষ স্বল্প ব্যয়ে অন্যান্য দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ লাভ করেছে। এবং উন্নত সংস্কৃতির সাহায্যে নিয়ে নিজেদের পুরোনো সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছে বলে বিশ্বায়নের প্রবক্তারা দাবি করেন।।

আশাকরি, দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিবর্তন এবং কয়েকটি মৌলিক ধারণা অধ্যায় ( WBBSE Class 12 Political Science Question Answer Chapter 1 In Bengali )  থেকে যে 'বিশ্বায়ন কাকে বলে বা বিশ্বায়নের সংজ্ঞা দাও। বিশ্বায়নের প্রকৃতি অথবা রূপ সম্পর্কে আলোচনা করো' সম্পর্কে নোট দেওয়া হয়েছে, তা তোমাদের কাজে আসবে।।

Tags : 

দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উওর | দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিবর্তন এবং কয়েকটি মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | wb class 12 political science question answer  | wb class xii political science question answer 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top