দেঁতাত অথবা দাঁতাত কি || কমিনফর্ম এবং কোমেকন কী? |
প্রশ্নঃ- দেঁতাত অথবা দাঁতাত কি || কমিনফর্ম এবং কোমেকন কী?
উওরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর 1945 সালে শুরু হওয়া ঠান্ডা লড়াইয়ের উত্তেজনা বেশ কয়েকটি পর্বে বেড়ে গিয়েছিল আবার কোনো সময় উত্তেজনা কম গিয়েছিল। ঠান্ডা লড়াইয়ের মূল পাঁচটি পর্যাযের মধ্যে ( 199-62) চতুর্থ পর্যায়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দেঁতাত বা দাঁতাত গড়ে উঠতে দেখা দিয়েছিল। দেঁতাত বা দাঁতাত কথার অর্থ হল পুরনো বন্ধুত্তের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। ঠান্ডা হলো না যুদ্ধ না শান্তি এরুপ একটা পরিস্থিতি। সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এই না যুদ্ধ নয় শান্তি বিভিন্ন পর্যায়ে দেখা দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পারমাণবিক শক্তিধর এই দুটি রাষ্ট্র কখনোই প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধ চাইনি তাই সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই ঠান্ডা যুদ্ধের পরিসমাপ্তি চেয়েছিল। সেকারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন 1962 খ্রিস্টাব্দে কিউবা সংকটের পরিসমাপ্তির ঠান্ডা যুদ্ধকে সমাপ্ত করার জন্য দেঁতাত বা দাঁতাত সম্পর্ক স্থাপন করে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে 1973 সালের শেষদিকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বের এই পুনঃপ্রতিষ্ঠার সম্পর্কের দেঁতাত বা দাঁতাতের অবসান ঘটায়।।
প্রশ্নঃ- কমিনফর্ম এবং কোমেকন কী?
উওরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শুরু হওয়া ঠান্ডা যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায়ের আগে সোভিয়েত ইউনিয়ন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কমিউনিস্ট পার্টির কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় সাধন করার জন্য 1947 সালের সেপ্টেম্বর মাসে কমিউনিস্ট সংবাদ ব্যুরো বা কমিনফর্ম গঠন করে। এর মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়ন, পোল্যান্ড, রুমানিয়া, বুলগেরিয়া,চেকোস্লোভাকিয়া, যুগোস্লাভিয়া,হাঙ্গেরির, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদের মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। কমিনফর্মের প্রধান কার্যালয় ছিল যুগোশ্লাভিয়ার রাজধানী বেলগ্রেড।।
কমিনফর্ম গঠনের পর সোভিয়েত ইউনিয়ন কোমেকন গঠন করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সংহতি বৃদ্ধির জন্য 1949 সালের জানুয়ারি মাসে পারস্পরিক অর্থনৈতিক সাহায্য পরিষদ বা কোমেকন ( Council For Mutual Economic Assistance ) গঠন করেছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের কোমেকন গঠনের মুখ্য কারণ ছিল- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্শাল পরিকল্পনা ঘোষণা করে। যার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সমস্ত দেশের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন ঘটানোর চেষ্টা করে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার মার্শাল প্রকল্পের মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশ গুলিকে বাদ দিয়েছিল। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনরকম সাহায্য পায়নি। সেকারণেই তবে তিনি এন কোমেকন গঠনের মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সাহায্য প্রদান করে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি করে তাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে পুনরায় শক্তিশালী করে তোলে সমাজতন্ত্রের প্রসার ঘটানো এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক সাহায্য সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহন করেছিল।।