ডাকাতের মা গল্পের প্রশ্ন উওর 2023 |
'কী কপাল নিয়ে এসেছিল'-কার কথা বলা হয়েছে? বক্তার এরুপ উক্তির কারণ কী??
উওরঃ- প্রখ্যাত সাহিত্যিক সতীনাথ ভাদুড়ীর রচিত ডাকাতের মা নামক ছোট গল্প থেকে নেওয়া এই উদ্ধৃতিটির মধ্যে দিয়ে এই গল্পের মূল চরিত্র ডাকাতের মায়ের নাতির কথা বলা হয়েছে।
এখানে বক্তা হলেন ডাকাতের মা গল্পের মূল চরিত্র ডাকাতের মা। গল্পে আমরা যার কোনো নাম খুঁজে পাইনা। প্রথম দিকে সে ডাকাতের বউ এবং পরবর্তীকালে সে ডাকাতের মা নামেই পরিচিত হয়।।
বক্তা অর্থাৎ ডাকাতের মায়ের তার নাতি সম্পর্কে এরূপ উক্তির পেছনে কারণ হলো -
সৌখী যখন জেলে গিয়েছিল, তখন সৌখীর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর একটি পূত্র সন্তান হয়। সৌখী জেলে যাওয়ার পর তার দলের লোকেরা প্রথম দু'বছর ধরে প্রতি মাসে টাকা পাঠালেও পরবর্তীকালে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এর ফলে সৌখির মায়ের ছেলের অবর্তমানে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে। তার উপরে সৌখী দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর শরীর খুবই রোগা ছিল। তার উপর ছেলে হওয়ার কারণে সেই ধকল এবং চরম আর্থিক অনটন তাকে আরও রুগ্ন করে তোলে। এই চরম অর্থকষ্ট ঘোচানোর জন্য সৌখীর বউ যে অন্যের বাড়ি কাজ করে অর্থ উপার্জন করবে তাও সম্ভব হয় না। কারণ তার রুগ্ন শরীর নিয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল। আবার সৌখীর মাও জাতে গোয়ালা হওয়ায় অন্যের বাড়িতে কাজ করতে পারতেন না। আর যদিও তারা অন্যের বাড়িতে কাজ করতে চাইতো, তাহলেও কেউ তাদের কাজ দিত না কারণ তারা ছিল ডাকাত পরিবারের সদস্য। তাই কেউ তাদের উপর বিশ্বাস করতে পারতো না তাই বাধ্য হয়েই সৌখীর মা তার নাতি এবং পূত্রবধূকে সৌখীর শ্বশুরবাড়ি বা তার বেয়াই এর বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে,নিজে খই মুড়ি বিক্রি করে কোনোমতে নিজের সংসার চালাতে থাকেন। দারিদ্র্যপীড়িত নাতির কথা স্মরণ করে তার ঠাকুমা ভাবতে থাকেন "যার বাপের নামে চৌকিদার সাহেব কাপতো, দারোগা সাহেব পর্যন্ত যার বাবাকে তুই-তোকারি করতে সাহস করেনি, তারই কিনা না দুবেলা ভাত জোটে না।" তাই জন্মের পর থেকে বাবাকে না দেখা, চরম দারিদ্র্যের জন্য মা সহ দাদুর বাড়িতে থাকা নাতির দুর্ভাগ্য এবং কষ্টকে উদ্দেশ্য করে সৌখীর মা এরূপ একটি মন্তব্য করেছেন।।