জাতি ও রাষ্ট্র কাকে বলে? জাতি এবং রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য লেখ || একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর

0

 

জাতি ও রাষ্ট্র কাকে বলে? জাতি এবং রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য লেখ || একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর 2023

আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায় জাতি, জাতীয়তাবাদ ও আন্তর্জাতিকতা ( WBBSE Class 11 Political Science Question Answer Chapter 3 In Bengali)  থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'জাতি ও রাষ্ট্র কাকে বলে? জাতি এবং রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য লেখ' এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। 

জাতি ও রাষ্ট্র কাকে বলে? জাতি এবং রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য লেখ।

ভূমিকাঃ- বর্তমানে অনেকেই জাতি এবং রাষ্ট্রকে অভিন্ন বলে মনে করে। ফরাসি বিপ্লবের সময় জাতীয় রাষ্ট্রের ধারণা উদ্ভব ঘটেছিল। ধনতন্ত্রের বিকাশের প্রাথমিক পর্বে উদীয়মান বুর্জোয়া শ্রেণি অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরির উদ্দেশ্যে জাতিভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের স্লোগান তুলেছিল। তখন থেকেই মূলত জাতি এবং রাষ্ট্রকে অভিন্ন হিসাবে দেখার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল  কিন্তু জাতি ও রাষ্ট্রের  যে এক নয়, তা আমরা জাতীয় এবং রাষ্ট্রের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যে গুলি আলোচনা করলেই জাতি এবং রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্য করতে পারি। যেমন-

প্রথমতঃ-

ইংরেজি নেশন শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হলো জাতি জাতি কি তা এক কথায় বলা খুবই কঠিন। মূলত জাতি বলতে বোঝায় ঐতিহাসিক ভাবে বিকশিত একটি স্থায়ী জনসমাজ যাদের ভাষা, ধর্ম একম অর্থনৈতিক জীবন,এক মানসিক গঠন এক এবং ওই মানসিক গঠন একটি সাধারণ সংস্কৃতির মধ্যে প্রকাশিত হয়,তখন তাকে জাতি বলে।।

সুতরাং সহজভাবে জাতি বলতে এমন সম্প্রদায়কে বোঝায় যা বিভিন্ন উপাদান কে কেন্দ্র করে বিকশিত হয়।।

• অন্যদিকে একটি রাষ্ট্র বলতে বোঝায়, যখন কোনো নির্দিষ্ট ভূখন্ড স্থায়ীভাবে বসবাসকারী অতিবৃহৎ বা নাতিবৃহৎ জনগণ অন্যান্য শক্তির প্রভাব মুক্ত হয়ে এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করে যা সম্পূর্ণভাবে বা প্রায় সম্পূর্ণ হবে সার্বভৌম ক্ষমতার মাধ্যমে বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণমুক্ত থাকে। এবং জনগণের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সেই সরকারের প্রতি জনগণ স্বাভাবিক আনুগত্য প্রদর্শন করতে বাধ্য থাকে, তাকে বলে রাষ্ট্র।।

দ্বিতীয়তঃ 

• জাতি হলো মূলত একটি সম্প্রদায় যা রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বসবাস করে। জাতির প্রত্যেকেই বা সেউ সম্প্রদায়ের প্রত্যেকেই নিজেদের সুবিধার জন্য একটি রাষ্ট্র গঠন করে থাকে।

• অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান যার অভ্যন্তরে কোনো জাতীয় জনসমাজ বসবাস করে। এবং রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে কোনো জাতীয় জনসমাজের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য রাষ্ট্র কাজ করে থাকে।।

তৃতীয়তঃ- 

• জাতি হলো একটি মানব সম্প্রদায় যার মধ্যে জনগণের সংখ্যা খুবই কম অর্থাৎ জাতি ক্ষুদ্র জনসংখ্যা বিশিষ্ট একটি মানব সমাজ। একটি জাতির জনসংখ্যা সর্বদাই একটি রাষ্ট্রের জনসংখ্যার চেয়ে কম হবে।

• অপর দিকে রাষ্ট্র হল এমন একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান জনসংখ্যা প্রচুর। অপরদিকে একটি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বহুজাতিক মানুষ বসবাস করার ফলে একটি রাষ্ট্রের জনসংখ্যা সর্বদাই যে কোনো জাতির তুলনায় অনেক বেশি হবে।।

• চতুর্থতঃ 

• একটি জাতি সর্বদাই কোনো না কোনো রাষ্ট্রে অভ্যন্তরের বসবাস করে। একটি জাতির অভ্যন্তরে কখনোই অপর কোনো জাতির অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায় না। 

• কিন্তু একটি রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এক বা একাধিক জাতির অস্তিত্ব থাকতে পারে। যে সমস্ত রাষ্ট্রে একাধিক জাতির অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায় তাকে বহুজাতিক রাষ্ট্র বলে। ভারত হলো বহুজাতিক রাষ্ট্রের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।।

• পঞ্চমতঃ-

• রাষ্ট্রের ক্ষমতা ও ইচ্ছা সরকারের মাধ্যমে রূপায়িত হয়। জাতির কিন্তু এই ধরনের কোনো মাধ্যম নেই। কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বসবাসকারী কোনো জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্য থাকলেই তাকে জাতি বলে অভিহিত করা যায় না। সেই জনগোষ্ঠী পৃথক রাষ্ট্র গঠনের জন্য চেষ্টা করলে কিংবা পৃথক রাষ্ট্র গঠনে সফল হলে তাকে জাতি বলা হবে। অবশ্য অনেক সময় রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটলেও জাতির উদ্ভব না-ও ঘটতে পারে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হলেও ওই রাষ্ট্রের অধিবাসীদের মধ্যে কেবল রাজনৈতিক ঐক্য ছাড়া অন্য কোনো ধরনের ঐক্য না থাকায় তা একটি জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেনি।

• ষষ্ঠতঃ-

• পৃথিবীর কোন জাতির হাতে এমন কোনো শক্তি নেই যার মাধ্যমে সেই জাতি, যে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রয়েছে, তার থেকে সম্পূর্ণ ভাবে প্রভাব মুক্ত থাকবে। প্রতিটি জাতির উপরেই রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ জারি থাকে এবং কোনো জাতি ই সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রের প্রভাবমুক্ত হয়র কোন কার্যকলাপ করতে পারে না।  কিন্তু পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রেই এমন নয় যে সম্পূর্ণভাবে অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অন্য কোনো রাষ্ট্রের দ্বারা প্রভাবিত। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা খর্ব হলেও তার পরিমাণ খুবই সামান্য। রাষ্ট্রের দুই প্রকার সার্বভৌম ক্ষমতার মাধ্যমে রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অন্যের প্রভাব বা নিয়ন্ত্রণ মুক্ত থাকে। কিন্তু কোনো জাতি হাতেই কোন সার্বভৌম ক্ষমতা নেই যার মাধ্যমে জাতি সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রের প্রভাবমুক্ত হতে পারে।।


আশাকরি, আজকের এই ব্লগে একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায় জাতি, জাতীয়তাবাদ ও আন্তর্জাতিকতা ( WBBSE Class 11 Political Science Question Answer Chapter 3 In Bengali )  থেকে যে 'জাতি ও রাষ্ট্র কাকে বলে? জাতি এবং রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য লেখ' সম্পর্কে যে নোট শেয়ার করা হয়েছে, তা তোমাদের কাজে লাগবে।।

Tags : 

একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | ক্লাস 11 রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উওর | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায় জাতি, জাতীয়তাবাদ ও আন্তর্জাতিকতা অধ্যায়র প্রশ্ন উত্তর | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর | wb class 11 political science question answer  | wbbse class 11 political science chapter 3 question answer in Bengali 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top