দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা প্রথম অধ্যায় 'কে বাঁচায় কে বাঁচে' গল্প সংক্ষেপ বা গল্পের বিষয়বস্তু।। || দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বড় প্রশ্নোত্তর

0

 

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা প্রথম অধ্যায় 'কে বাঁচায় কে বাঁচে' গল্প সংক্ষেপ বা গল্পের বিষয়বস্তু।। || দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বড় প্রশ্নোত্তর
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বড় প্রশ্নোত্তর


উওরঃ প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পটি মূলত ১৯৫০ এর ভয়ঙ্কর মন্বন্তরক কেন্দ্র করে রচিত একটি কাহিনি। গল্পের প্রধান চরিত্র হলেন কলকাতায় চাকরিরত এক যুবক যার নাম মৃত্যুঞ্জয়। অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতোই মৃত্যুঞ্জয় একদিন অফিস যাওয়ার পথে হঠাৎ করেই অনাহারে মৃত্যু এক ভয়ঙ্কর মৃত্যুর বীভৎস দৃশ্য নিজের চোখে দেখে ফেলে। এর আগে মৃত্যুঞ্জয় কখনোই নিজের চোখে অনাহারে মৃত্যু হতে দেখেনি ন তাই মৃত্যুঞ্জয় যখন প্রথমবারের জন্য অনাহারে মৃত্যু হতে দেখে, তখন সেই বিষয়টা মৃত্যুঞ্জয়কে ভেতর থেকে নাড়িয়ে দেয়। মৃত্যুঞ্জয় কোনো এক অজানা কারণে ভেতর থেকে নিজেকে দোষী বলে মনে করতে শুরু করে এবং কোনো এক অপরাধবোধে মৃত্যুঞ্জয় ধীরে ধীরে শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে পাল্টে যেতে শুরু করে। মৃত্যুঞ্জয়ের সেই অনাহারে মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঠিক করে ভালোভাবে ঘুম হত না। মৃত্যুঞ্জয় সবসময়ই সেই মানুষদের জন্য কিছু একটা করার কথা ভাবতে শুরু করে  এরপর সে নিজের এবং নিজে স্ত্রীর একবেলা খাওয়া কমিয়ে দিয়ে, সেই খাবার অনাহারে কষ্ট পাওয়া সেই মানুষগুলোর মধ্যে বিলিয়ে দিতে শুরু করে। কিন্তু এতেও মৃত্যুঞ্জয় যখন শান্তি পায় না তখন মৃত্যুঞ্জয় নিজের এক মাসের পুরো মাইনেটাই তার সহকর্মী বন্ধু নিখিলের মাধ্যমে ত্রাণ তহবিলে দান করে দেয়। কিন্তু এরপরও মৃত্যুঞ্জয় সেইসব মানুষের জন্য কিছু করতে পারে না। এবং মৃত্যুঞ্জয় খুব ভালভাবেই বুঝতে পারে যে, সে নিজের সর্বস্ব দিয়ে দান করলেও কিছু করা যাবে না। কিন্তু এর পরও মৃত্যুঞ্জয়ের মনে সেই অপরাধ নিজের জায়গা করে রাখে। মৃত্যুঞ্জয়ের সংসার এবং অফিসের সমস্ত কাজ ভুলে গিয়ে, একসময় সেও সেই অনাহারে মরতে থাকা মানুষদের একজন হয়ে যায়। মৃত্যুঞ্জয় পরিবার এবং অফিস ভুলে কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে শুরু করে। সে সেই সমস্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলতেও শুরু করে। এরপর ধীরে ধীরে, এভাবে চলতে চলতে মৃত্যুঞ্জয় কলকাতা শহরের ফুটপাতেই নিজেকে  ছেঁড়া কাপড়,খিদের কষ্টে মানিয়ে নেয়। লঙ্গরকারখানায় গিয়ে কাড়াকাড়ি করে খিচুড়ি খেতে শুরু করে। এবং বাকি সময়টাতে কলকাতার সীমাহীন অন্তহীন পথে ঘুরে বেড়ানো এবং অন্যদিকে অনাহারক্লিষ্ট সঙ্গীদের মতো একঘেয়ে সুরে বলতে থাকে, 'গা থেকে এইচি, খেতে পাইনি এ বাবা। আমায় খেতে দাও'।। এইভাবেই আমরা দেখি কলকাতা শহরের মধ্যবিত্ত সমাজের একজন মোটামুটি অবস্থাসম্পন্ন চাকরিজীবী মৃত্যুঞ্জয়, অনাহারে মৃত্যু ঘটার মতো একটি খুবই হতাশাজনক এবং কষ্টদায়ক দৃশ্য দেখে এতটা ইপাল্টে যায় যে,সে মধ্যবিত্ত সমাজের সমস্ত সুখ - স্বাচ্ছন্দ্য ভুলে গিয়ে অনাহারে কষ্ট পাওয়া মানুষদের ভিড়েই হারিয়ে যায়।। 


আশাকরি দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা প্রথম অধ্যায় অথবা উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা প্রথম অধ্যায় কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের গল্প সংক্ষেপে গল্পের বিষয়বস্তু আলোচনা তোমাদের ভালো লাগবে।।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top