সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা অধ্যায়ের বড়ো প্রশ্ন উওর | দশম শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর
![]() |
সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজের এই পোস্টের মাধ্যমে দশম শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা ( WBBSE Class 10 History Question Answer & Notes in Bengali ) অধ্যায়ের 10 সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ 2 মার্কের প্রশ্নের উওর ( WBBSE Class X History Question Answer & Suggestion 2023 ) তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। দশম শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনার যে সমস্ত বাকি দুই নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলি থেকে গেল, সেগুলি আমরা পরবর্তীতে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। আমরা প্রতিদিন মাধ্যমিকের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নোটস শেয়ার করে যাবো। তাই তোমরা আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিদিন ভিজিট করতে থাকো।।
সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা প্রশ্ন উওর | সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা বড়ো প্রশ্ন উওর | মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর
আজকের প্রশ্ন উওরের বিষয়ঃ
• বামাবোধিনী পত্রিকা বিখ্যাত কেন?
• হিন্দু পেট্রিয়ট পত্রিকা টি বিখ্যাত কেন?
• হুতোম প্যাঁচার নকশা গ্রন্থে উনিশ শতকের কলকাতার কিরূপ সমাজ চিত্র ফুটে উঠেছে?
• ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন বা চার্টার অ্যাক্ট গুরুত্বপূর্ণ কেন ছিল?
• মেকলে মিনিট বলতে কী বোঝো বা মেকলে মিনিট কি?
• উডের নির্দেশনামা অথবা উডের ডেসপ্যাচ কি?
• হান্টার কমিশন বলতে কী বোঝো?
• ডেভিড হেয়ার স্মরণীয় কেন?
• গ্রামবার্তা প্রকাশিকা ছিল একটি ব্যতিক্রমী পত্রিকা- কেন তা আলোচনা করো।
• ভারতের শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্য বাদীর বিতর্ক বলতে কী বোঝো??
• হিন্দু পেট্রিয়ট পত্রিকা টি বিখ্যাত কেন?
• হুতোম প্যাঁচার নকশা গ্রন্থে উনিশ শতকের কলকাতার কিরূপ সমাজ চিত্র ফুটে উঠেছে?
• ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন বা চার্টার অ্যাক্ট গুরুত্বপূর্ণ কেন ছিল?
• মেকলে মিনিট বলতে কী বোঝো বা মেকলে মিনিট কি?
• উডের নির্দেশনামা অথবা উডের ডেসপ্যাচ কি?
• হান্টার কমিশন বলতে কী বোঝো?
• ডেভিড হেয়ার স্মরণীয় কেন?
• গ্রামবার্তা প্রকাশিকা ছিল একটি ব্যতিক্রমী পত্রিকা- কেন তা আলোচনা করো।
• ভারতের শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্য বাদীর বিতর্ক বলতে কী বোঝো??
প্রশ্নঃ বামাবোধিনী পত্রিকা বিখ্যাত কেন ??
উঃ ১৮৬৩ উমেশচন্দ্র দত্ত সম্পাদিত বামাবোধিনী পত্রিকার বিখ্যাত ছিল-
প্রথমতঃ বামাবোধিনী পত্রিকার সম্পাদক উমেশচন্দ্র দত্ত তৎকালীন সময়ের নারী সমাজের কল্যাণের জন্যেই এই পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন।
দ্বিতীয়তঃ বামাবোধিনী পত্রিকা বাংলার নারীদের জন্য- শিক্ষা , নারীদের অধিকার , পারিবারিক চিকিৎসা , বিজ্ঞান, ইতিহাস প্রভৃতি বিষয়ে লেখালেখি করা হতো।।
তৃতীয়তঃ বামাবোধীনি পত্রিকার মাধ্যমে নারীরা শুধু শিক্ষাই অর্জন করার সুযোগ পায়নি, সেই সঙ্গে তারা নিজেদের বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অধিকার গুলি সম্পর্কেও জানার সুযোগ পেয়েছিল।
প্রশ্নঃ হুতোম প্যাঁচার নকশা গ্রন্থে উনিশ শতকের বাংলার কিরুপ সমাজচিএ পাওয়া যায়??
উওরঃ - কালীপ্রসন্ন সিংহ রচিত হুতো। প্যাঁচার নকশা গ্রন্থটি ছিল মূলত উনিশ শতকের কলকাতার আয়না বা দর্পণ। যেখানে তিনি কলকাতার শিক্ষিত বাবু সমাজের অথবা কলকাতার বিভিন্ন সমা চিত্র বিভিন্ন ভাবে তুলে ধরেছেন। যেমন -
•কালী প্রসন্ন সিংহ তার এই গ্রন্থে কলকাতার, বিশেষ করে বাঙ্গালীদের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান,যেমন- নীলের ব্রত, চড়ক মেলা, রথযাত্রা,রামলীলার মতো প্রভৃতির কথা তুলে ধরেছেন।
• এই গ্রন্থে তুলে ধরা হয়েছে কলকাতার সেই বাবু সমাজের কথা, যারা আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে, ইউরোপীয় বাবুদের অনুসরণ করতো।। মূলত এসব চিত্রই হুতোম প্যাঁচার নকশা গ্রন্থে তুলে ধরা হয়েছে।।
প্রশ্নঃ গ্রামবার্তা প্রকাশিকা কেন একটি ব্যতিক্রমি পএিকা ছিল??
উওরঃ ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থেকে হরিনাথ মজুমদারের সম্পাদনায় প্রকাশিত গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকাটি সত্যিই একটি ব্যতিক্রমী পত্রিকা ছিল। এর কারণ হলো
প্রথমত গ্রামবার্তাপ্রকাশিকাই ছিল সেই প্রথম পএিকা যেটা শহরের সমাজ ও রাজনৈতিক আলোচনা বাদ দিয়ে গ্রামের সাধারন মানুষের নিয়ে আলোচনা করতো।।
দ্বিতীয়তঃ গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পএিকাই ছিল সেই পত্রিকা যেখানে নীল বিদ্রোহ, চাষীদের দুরবস্থা তাদের সাধারণ জীবন যাপনের নানা কাহিনীর কথা জানা যেতো।।
এছাড়াও গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা ছিল এমন একটি পএিকা,যেটা নীলকর সাহেবদের অত্যাচার ও বিভিন্ন জমিদারদের খারাপ, অন্যায় সম্পর্কে খোলাখুলি ভাবে আলোচনা করা হতো। মূলত এই সমস্ত কারণের জন্যেই গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা পএিকটিকে একটি ব্যতিক্রমি পএিকা বলা হয়।।
প্রশ্নঃ হিন্দু প্যাট্রিয়ট পএিকাটি বিখ্যাত কেন??
উওরঃ গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার আগে যে পত্রিকাটি সাধারণ সমাজের নানা কথা নির্ভীকভাবে শিক্ষিত সমাজের সামনে তুলে ধরতো, সেটি হিন্দু পেট্রিয়ট পত্রিকা।
যখন হরিশচন্দ্র এই পএিকার সম্পাদক হিসাবে কাজ করতে শুরু করেন, তখন তিনি নির্ভিক ভাবে, নীলচাষিদের ওপরে করা নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের কথা, জনস্বার্থবিরোধী ব্রিটিশ কার্যকলাপ, জনসাধারণের নানা সুখ দুঃখের কথা তিনি প্রকাশ করেন।।
• হিন্দু পেট্রিয়ট পত্রিকাটি শুধুমাত্র খবর প্রকাশ করেনি, সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু পেট্রিয়ট পত্রিকাটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের পাশেও দাঁড়িয়েছিল।
এবং সেজন্যই হিন্দু প্যাট্রিয়ট পএিকাটি জাতীয়তাবাদী পএিকার মর্যাদা লাভ করেছিল।।
প্রশ্নঃ ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনের বা
চার্টার অ্যাক্টের গুরুত্ব কি??
উত্তরঃ ভারতের শিক্ষার ক্ষেত্রে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন বা চার্টার অ্যাক্ট যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইন পাশ করএ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, এখন থেকে ব্রিটিশ সরকার ভারতের শিক্ষার জন্য প্রতিবছর ভারতের শিক্ষার জন্য এক লক্ষ টাকা করে ব্যয় করবে।। ব্রিটিশ সরকারের 1813 খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন বা চার্টার অ্যাক্ট পাস করানো এবং দীর্ঘদিনের প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের পর ব্রিটিশ সরকার সনদ আইনের মাধ্যমেই ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে সরকারি টাকা খরচ করেছিল।
প্রশ্নঃ ভারতের শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্য বাদীর বিতর্ক বলতে কী বোঝো??
উত্তরঃ ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইন পাশ করএ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, এখন থেকে ব্রিটিশ সরকার ভারতের শিক্ষার জন্য প্রতিবছর ভারতের শিক্ষার জন্য এক লক্ষ টাকা করে ব্যয় করবে কিন্তু এই এক লক্ষ টাকা ভারতে কোন ধরনের শিক্ষায় খরচ করা হবে এই নিয়ে জনসংখ্যা কমিটির সদস্যদের মধ্যে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল, তাই ভারতের শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য দ্বন্দ্ব অথবা প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্ক নামে পরিচিত।।
প্রশ্নঃ মেকলে মিনিট কি??
উওরঃ উইলিয়াম বেন্টিং আইন সচিব এবং সেই সঙ্গে ১৮২৩ খ্রিষ্টাব্দের জনশিক্ষা কমিটির সদস্য টমাস বেবিংটন মেকলে তার একটি এক মিনিট প্রতিবেদন দ্বারা ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন বা চার্টার অ্যাক্ট নিয়ে যে প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের বিতর্কে সৃষ্টি হয়েছিল, সেই বিতর্কের অবসান ঘটিয়েছিলেন। টমাস ব্যাবিংটন মেকলের সেই প্রতিবেদন মেনে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যবস্থাকেই সরকারি শিক্ষানীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।। মেকলের সেই প্রতিবেদন ই মেকলে মিনিট নামে পরিচিত।।
প্রশ্নঃ উডের নির্দেশনা কী? অথবা, উডের ডেসপ্যাচ কী?
উওরঃ ভারতের প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পযর্ন্ত বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার জন্য ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি স্যার চার্লস উড তার একটি নির্দেশনামায় সরকারের কাছে অনেক সুপারিশ বা আবেদন করেন।। ভারতের শিক্ষার উন্নতির জন্য স্যার চার্লস উডের করা সেই সমস্ত সুপারিশ বা নির্দেশনামাকে উডের ডেসপ্যাচ বলা হয়।।
প্রশ্নঃ হান্টার কমিশন কী?? হান্টার কমিশনের গুরুত্ব কী ছিল?
উওরঃ ভারতের প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষার অগ্রগতি ও তার বিভিন্ন 1882 খ্রিষ্টাব্দে স্যার উইলিয়াম হান্টার নামে এক শিক্ষাবিদের নেতৃত্বে ভারত সরকার একটি শিক্ষা কমিটি নিয়োগ করেছিল যার নাম হান্টার কমিশন।
এই হান্টার কমিশন
1883 খ্রিষ্টাব্দে হান্টার কমিশন তাদের একটি রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা দেয় এবং সেউ রিপোর্টে হান্টার কমিশন ভারত সরকারের কাছে - প্রাথমিক পর্যায় থেকে উচ্চশিক্ষার বিকাশের উপর গুরুত্ব দেওয়ার আবেদন জানায়।।
প্রশ্নঃ ডেভিড হেয়ার বিখ্যাত কেন??
অথবা,
পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে ডেভিড হেয়ারের অবদান উল্লেখ করো ।।
উত্তরঃ ডেভিড হেয়ার স্কটল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী একজন হলেও তিনি ভারতে স্বরনীয় হয়ে আছেন। কারণ ডেভিড হেয়ার কলকাতায় একজন ঘড়ি সারাইওয়ালা হিসেবে এলেও,ভারতবর্ষকেও নিজের মাতৃভূমির মতো ভালোবাসতে শুরু করেছিলেন। ডেভিড হেয়ার যখন ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থার করুন অবস্থার কথা উপলব্দি করেছিলেন, তখন তিনি জীবনে যা কিছু উপার্যন করেছিলেন, সেই সমস্ত কিছুই ভারতের শিক্ষার উন্নতির জন্য খরচ করে ফেলেন।
• তার উদ্যোগেই 1817 খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।।
• বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় স্কুল কলেজের পাঠ্য পুস্তক রচনার উদ্দেশ্য, এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তা কম দামে বিলিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য 1817 খ্রিষ্টাব্দে স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মূলত এসব কারণেই ডেভিড হেয়ারের এরকম মহান কাজের জন্যই তিনি আজও আমাদের মধ্যে স্বরনীয় হয়ে রয়েছেন।।
Tags :