আজকের এই পোস্টে আমরা তোমাদের সঙ্গে দশম শ্রেণির বাংলা বহুরূপী গল্পের বেশি কিছু বড় প্রশ্ন (WBBSE Class 10 Bengali Question Answer & Suggestion 2023 ) উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
দশম শ্রেণির বাংলা বহুরূপী গল্পের বড় প্রশ্ন উওর || WBBSE Class 10 Bengali Question Answer & Suggestion 2023
প্রশ্নঃ হরিদা পুলিশ সেজে কোথায় দাঁড়িয়ে ছিলেন?? তিনি কীভাবে মাস্টার মশাইকে বোকা বানিয়ে ছিলেন??
উওরঃ সুবোধ ঘোষের রচিত ছোটগল্প বহুরূপীতে কেন্দ্রীয় চরিত্র হলেন বহুরূপীর পেশাদারী হরিদা। যিনি সারাজীবন এইরকম বহুরূপীর খেলা দেখিয়েই কোনরকমে জীবনযাপন করছেন। বহুরূপীর খেলা দেখিয়ে যদিও তার আয় খুবই কম বা তার জীবন খুবই কষ্টে চলে,কিন্তু তবুও তিনি তার এই পেশাকে যথেষ্ট পরিমাণে ভালোবাসেন এবং সম্মান করেন। তাই তিনি কিছুতেই তার এই পেশাকে ছেড়ে যেতে চান না।
• হরিদা বহুরূপী হওয়ায় সামান্য রোজগারের উদ্দেশ্যে একদিন পুলিশ সেজে দয়াল বাবুর লিচুর বাগানে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
• হরিদা পুলিশ যখন পুলিশ সেজে দয়াল বাবুর লিচু বাগানে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখন সেখানে তিনি স্কুলের কয়েকজন ছেলেকে ধরেছিলেন।
হরিদা পুলিশের ছদ্মবেশে থাকায় সেই ছেলেগুলো হরিদাকে আসল পুলিশ ভেবে এতোই ভয় পেয়ে গিয়েছিল যে তারা তখন সেখানে কাঁদতে শুরু করেছিল। এরপর স্কুলের মাস্টারমশাই সেই বাচ্চাগুলোকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সেখানে হাজির হন। স্কুলের মাস্টারমশাই যখন দেখেন যে স্কুলের ছেলেদের একজন পুলিশ অফিসার ধরে রেখেছেন, তখন তিনি স্কুলের বাচ্চাগুলোকে ছাড়িয়ে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তখন সেই পুলিশের ছদ্মবেশধারী হরিদা কিছুতেই সেই বাচ্চাগুলোকে ছাড়তে চাইছিলেন না।
এরকম পরিস্থিতিতে বাচ্চাগুলোকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা উঠলে পুলিশ অফিসার স্কুলের মাস্টার মশাইয়ের কাছে ৪ আনা নগদ ঘুষ চান, বাচ্চাগুলোকে ছেড়ে দেওয়ার বদলে। পুলিশ অফিসারের একথা বলার পর মাস্টারমশাইয়ের হাতে তখন আর কোনো রাস্তা না থাকায় তিনি সেই পুলিশ অফিসারকে চার আনা ঘুষ দিয়ে স্কুলের বাচ্চাগুলোকে ছাড়িয়ে আনেন।
এবং এভাবেই একজন স্কুল শিক্ষককে অনেক সহজেই হরিদা বোকা বানিয়ে দেন। কিন্তু পরবর্তীকালে যদিও স্কুলের মাস্টারমশাই জানতে পেরেছিলেন যে, তিনি এর আগের দিন যাকে সেই চার আনা ঘুষ দিয়েছিলেন, তিনি আসলে হরিদা। কিন্তু এই বিষয়ে হরিদার ওপর রাগ না করে বরং হরিদার ছদ্মবেশের প্রশংসাই করেছিলেন।।
প্রশ্নঃ 'খুব উঁচু দরের সন্ন্যাসী' কে সেই সন্ন্যাসী? সন্ন্যাসী পরিচয় দাও।
উওরঃ সুবোধ ঘোষের রচিত বহুরূপী গল্পের শুরুতেই আমরা গল্পকথক এবং তার বন্ধুদের, হরিদার চায়ের দোকানে বসে হরিদার কাছে এক সন্নাসী সম্পর্কে গল্প করতে দেখি।
কথায় কথায় গল্পকথক এবং তার বন্ধুরা হরিদাকে বলেন যে,কিছুদিন হলো জগদীশ বাবুর বাড়িতে এক হিমালয় থেকে সন্ন্যাসী এসে হাজির হয়েছেন,যিনি খুব উঁচু দরের। এখানে সেই নাম-না-জানা সন্ন্যাসীর সম্পর্কেই বলা হয়েছে।
বহুরূপী গল্পে গল্পকথক এবং তার বন্ধুদের কাছ থেকে আমরা সেই নাম-না-জানা অজ্ঞাত সন্ন্যাসী সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জানতে পারি, তাহল-
হিমালয় ফেরত সন্ন্যাসীঃ গল্পের শুরুতেই গল্পকথক এবং তার বন্ধুদের মুখ থেকে এটা জানতে পারা যায় যে, সন্ন্যাসী হলেন হিমালয় ফেরত। তিনি সারাবছর হিমালয়ের গুহাতে থাকেন। কিন্তু কয়েকদিন ধরে তিনি পাড়ার ধনী ব্যক্তি জগদীশ বাবুর বাড়িতে এসে রয়েছেন।
সন্যাসীর বয়সঃ গল্পকথক ও তার বন্ধুদের মুখে আমরা সন্ন্যাসীর বয়স সম্পর্কেও কিছুটা জানতে পারি। গল্পকথক ও তার বন্ধুরা তো দূরের কথা, কেউই সঠিকভাবে সন্ন্যাসীর বয়স আন্দাজ করে বলতে পারেনা। সন্ন্যাসীর বয়স সম্পর্কে অনেকের ধারণা যে সন্ন্যাসীর বয়স নাকি হাজার বছরের চেয়েও বেশি।
সন্ন্যাসীর খাদ্যঃ সন্ন্যাসী প্রাথমিক পর্বের পরিচয় এবং তার বয়স যেমন রহস্যে ঘেরা, ঠিক তেমনি রহস্যঘেরা রয়েছে তার খাবার-দাবার। শোনা যায়, সন্ন্যাসীর তার খাবারের মধ্যে সারাবছরে শুধু মাত্র তিনি একটি হরতকী খান। বছরে একটি হরিতকী ই হলো তাঁর একমাএ খাদ্য।
উঁচুদরের সন্ন্যাসীঃ সন্ন্যাসীর অন্যান্য কিছু বিষয়ের মধ্যে সবচাইতে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, সন্ন্যাসীর কাউকেই নিজের পায়ের ধুলো নিতে দেন না। সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো অত্যন্ত দুর্লভ জিনিস। কিন্তু একটি মজার বিষয় হলো, জগদীশবাবু যখন সোনার বোল লাগানো একজোড়া খড়ম সন্ন্যাসীর পায়ের সামনে তুলে ধরেছিলেন, তখন সেই ফাঁকে সন্ন্যাসী সেদিকে পা বাড়িয়ে দেন এবং তখন জগদীশবাবু তার পায়ের ধুলো নেওয়ার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন।
সন্নাসীর প্রণামীঃ আশ্চর্যতার কথা এখানেই শেষ নয়। জগদীশ বাবুর বাড়িতে কিছুদিন থাকার পর যখন সন্ন্যাসীর বিদায়ের সময় হয়, তখন একজন সন্ন্যাসী হওয়া সত্ত্বেও যখন জগদীশবাবু তার ঝোলার ভেতরে একশো টাকার নোট রেখে দেন, তখন সেই সন্ন্যাসী সেটি গ্রহন করেন। এবং একটু মুচকি হেসে বিদায় নেন।।
প্রশ্নঃ 'আপনি কি ভগবানের চেয়েও বড়ো?' কাকে এ কথা বলা হয়েছে?? তাঁকে এ কথা বলা হয়েছে কেন?
উওরঃ সুবোধ ঘোষ রচিত বহুরূপী গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র এক অপূর্ব সন্ধ্যায় বিরাগীর সাজে পাড়ার ধনী ব্যক্তি জগদীশবাবুর বাড়িতে এসে হাজির হন। মূলত এরপরেই উপরিক্ত ঘটনাটি ঘটতে দেখা যায়।
• বহুরুপী গল্প থেকে গৃহীত উপরোক্ত বক্তব্য টি হলো বিরাগীর ছদ্মবেশী হরিদার। হরিদা জগদীশবাবুকে উদ্দেশ্য করেই 'আপনি কি ভগবানের চেয়েও বড়ো?' এই কথাটি বলেছিলেন।
• বিরাগীর জগদীশবাবু কে একথা বলার কারণ হলো-
চাঁদের আলোয় আলোকিত হওয়া অপরুপ সন্ধ্যায় বিরাগী সন্ন্যাসী যখন জগদীশ বাবুর বাড়িতে এসে হাজির হন, তখন জগদীশবাবু যখন সেই বিরাগীকে দেখতে পান। কিন্তু বিরাগীকে তখন দেখতে পাওয়া সত্বেও,জগদীশবাবুর সিঁড়ি থেকে না উঠে সেখান থেকেই তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। জগদীশবাবু এরকম ব্যবহার দেখে বিরাগী জগদীশবাবুকে, 'আপনি কি ভগবানের চেয়েও বড়ো?' কথাটি বলেন।
বিরাগীর মতে জগদীশবাবু হয়তো তার এগারো লক্ষ টাকার সম্পত্তি অহংকারে নিজেকে ভগবানের চেয়েও বড়ো বলে মনে করেন। যদি তা না হত তাহলে জগদীশবাবুর বিরাগী সন্ন্যাসীকে দেখতে পেয়ে তিনি তাঁর বারান্দার সিঁড়ি থেকে সন্ন্যাসীর কাছে এসে তাকে অভ্যর্থনা জানাতেন।
Tags :