সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা অধ্যায়ের 2 নম্বরের প্রশ্ন উওর |
Songhoboddhotar Gorar Kotha Chapterer Questions Answers 2024 ; আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা তোমাদের সঙ্গে দশম শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা ( wb class 10 history questions answers chapter 4 ) এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু 2 ও 4 মার্কের প্রশ্নের উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এর আগে আমরা ক্লাস 10 ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা অধ্যায় থেকে শুধুমাত্র ১১ টি 2 ও 4 মার্কের প্রশ্ন উওর শেয়ার করেছিলাম। আজকের এই ব্লগে আমরা আবারও মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথার আরও কিছু 2 ও 4 মার্কের প্রশ্ন উওর শেয়ার করবো।
দশম শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়-সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা অধ্যায়ের 2 ও 4 নম্বরের প্রশ্ন উওর 2024
প্রশ্নঃ উনিশ শতকের সভা সমিতি গুলির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উওরঃ উনিশ শতকে মূলত যে সমস্ত সভা-সমিতির গড়ে উঠেছিল, সেই সভা-সমিতি গুলির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন -
সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা অধ্যায়ের উপর অনলাইন মকটেস্ট দেওয়ার জন্য নিচে দেওয়া দুটি লিংকে ক্লিক করো👇
1- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা অধ্যায়ের অনলাইন মকটেস্ট প্রথম পর্ব
2- সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা অধ্যায়ের অনলাইন মকটেস্ট দ্বিতীয় পর্ব
প্রথমতঃ উনিশ শতকে বাংলাতেই বিশেষ করে কলকাতাতেই সর্বপ্রথম বিভিন্ন সভা সমিতির গড়ে ওঠা শুরু হয়েছিল। এবং পরবর্তীতে কলকাতার অনুকরণে ভারতের অন্যান্য স্থানে বিভিন্ন সভা-সমিতি গড়ে উঠতে শুরু করেছিল।
দ্বিতীয়ঃ সভা-সমিতি গুলো মূলত সেই সময়কার উচ্চবিত্ত বা অভিজাত বা সমাজের উচ্চবিত্ত ব্যক্তিদের দ্বারাই পরিচালিত হতো।
তৃতীয়তঃ উনিশ শতকে যে সমস্ত সভা সমিতি গড়ে উঠেছিল, তার উদ্দেশ্য ছিল মূলত নিজেদের স্বার্থ এবং আঞ্চলিক স্বার্থ বজায় রাখা এবং আঞ্চলিক ভিত্তিতে ভারতীয়দের দাবি পূরণের চেষ্টা করে ভারতীয়দের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার প্রসার ঘটানো।
ক্লিক করো👉 ; আমাদের গ্রুপে যোগদান করো
প্রশ্নঃ জমিদার সভা কবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল?জমিদার সভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি ছিল?
উওরঃ 1838 খ্রিষ্টাব্দের 19 শে মার্চ রাজা রাধাকান্ত দেব, প্রসন্নকুমার ঠাকুর এবং দ্বারকানাথ প্রমুখের উদ্যোগে জমিদার সভা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্য ছিল মূলত
• প্রথমত বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার জমিদারদের স্বার্থ রক্ষা করা এবং জমিদারদের মধ্যে ঐক্য স্থাপন করা।
• দ্বিতীয়ত জমিজমা সংক্রান্ত নানা ধরনের বিষয় এবং সরকার কর্তৃক নিষ্কর জমি বাজেয়াপ্তকরণ বিষয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা।
• তৃতীয়তঃ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রসার করা ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ কবে এবং কাদের উদ্যোগে ভারত সভা গঠন করা হয়েছিল?
উওরঃ 1876 খ্রিস্টাব্দে 26 জুলাই কলকাতার অ্যালবার্ট হলে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়,আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী, দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রমুখের উদ্যোগে ভারত সভা বা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
প্রশ্নঃ ভারত সভা প্রতিষ্ঠিত কয়টি উদ্দেশ্য লেখ।
উওরঃ সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়,আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী, দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রমুখের উদ্যোগে যে ভারত সভা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল তার উদ্দেশ্য ছিল মূলত একাধিক। যেমন-
প্রথমতঃ ভারত সভা দেশে শক্তিশালী জনমত গঠন করে বিভিন্ন শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলে তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পূরণ করতে চেয়েছিল।
ক্লিক করো👉 ; আমাদের গ্রুপে যোগদান করো
দ্বিতীয়তঃ ভারতসতা তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে ভারতীয় হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি তোলার চেষ্টা করেছিল। তৃতীয়তঃ ভারতবর্ষের মধ্যে জাতীয়তাবাদ এবং রাজনৈতিক চেতনার প্রসার ঘটিয়ে জনগণকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে শামিল করাই ছিল ভারত সভা অথবা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য।।
প্রশ্নঃ ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট বা দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইন এবং অস্ত্র আইন কী?
উওরঃ ভারতের বড়লাট লর্ড লিটন 1878 খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় সংবাদপত্র গুলির বিভিন্ন ব্রিটিশ বিরোধী লেখা প্রকাশনা বন্ধ করার জন্য একটি আইন পাস করে যা ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট অথবা দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইন নামে পরিচিত। এই আইনের উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদপত্রের বিভিন্ন ব্রিটিশ বিরোধী সমালোচনা বন্ধ করা।
1878 খ্রিস্টাব্দে দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইনের পরেই লর্ড লিটন ভারতীয়দের নিরস্ত্র রাখার বা জন্য ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলা বন্ধ করার জন্য যে আইন পাস করেছিল, তাই অস্ত্র আইন নামে পরিচিত। এই আইনের মূল উদ্দেশ্য ছিল মূলত ভারতীয়দের নিরস্ত্র করে রাখা।।
প্রশ্নঃ জাতীয়তাবাদ বলতে কী বোঝায়?
উওরঃ জাতীয়তাবাদ হল একটি ভাবগত ধারণাগত বা মানসিক ধারণা। যখন কোন একটি দেশের আপামর জনসাধারণের মধ্যে ভাষা,ধর্ম,সাহিত্য সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে অথবা এছাড়াও আরও নানা কারণে এমন একটি মানসিক চিন্তা ধারা বা ধারণা তৈরি হয় যার জন্য তারা সেই আপামর জনসাধারণ প্রত্যেকেই একে অপরের সুখ দুঃখে নিজেদের সমান অংশীদার বলে মনে করে, কোন ক্ষেত্রে সবাই নিজেদের সমান অধিকার বলে মনে করে এবং সবার মধ্যেই যখন একই সঙ্গে দেশ প্রেম মিলিত হয়ে একটি রাজনৈতিক আদর্শ গড়ে ওঠে,তখন সেই আদর্শকে জাতীয়তাবাদ বলা হয়।।
প্রশ্নঃ কবে এবং কাদের উদ্যোগে হিন্দু মেলা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল?
উওরঃ 1836 খ্রিস্টাব্দে জমিদার সভা প্রতিষ্ঠার নবগোপাল মিত্র হিন্দুদের মধ্যে বিদ্বেষ ভাব দূর করে, হিন্দুদের মধ্যে একাত্মবোধ,দেশাত্মবোধ জাতীয়তাবাদ এবং রাজনৈতিক চেতনার প্রসার ঘটানোর জন্য 1867 খ্রিস্টাব্দে হিন্দু মেলা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। হিন্দু মেলা মূলত চৈত্র মেলা নামেই অধিক পরিচিত ছিল।।
প্রশ্নঃ হিন্দু মেলা প্রতিষ্ঠার কয়টি উদ্দেশ্য লেখ।
উওরঃ 1876 খ্রিস্টাব্দে নবগোপাল মিত্রের হিন্দুমেলা অথবা চৈত্র মেলা প্রতিষ্ঠা করার পিছনে একাধিক উদ্দেশ্য ছিল। যেমন -
ক্লিক করো👉 ; আমাদের গ্রুপে যোগদান করো
• প্রথমত নবগোপাল মিত্র হিন্দু মেলা প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে ভারতবাসীর মধ্যে বিশেষ করে হিন্দুদের মধ্যে জাতীয়তাবাদ, দেশাত্মবোধ ইত্যাদির প্রসার ঘটাতে চেয়েছিলেন।।
• দ্বিতীয়তঃ হিন্দুদের মধ্যে বিদ্বেষভাব দূর করে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে হিন্দু সমাজের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে হিন্দুদের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতার মনোভাব গড়ে তোলা।
• তৃতীয়তঃ নবগোপাল মিত্র হিন্দু মেলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বদেশী বিদ্যানুশীলনে উৎসাহ দেওয়া,শিল্পকর্মের উৎসাহ এবং শরীর চর্চার মধ্য দিয়ে দেশবাসীর কাছে স্বদেশীভাব প্রচারের চেষ্টা করেছিলেন।।
প্রশ্নঃ গগেন্দ্রনাথ ঠাকুর কিভাবে উপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা করেছিলেন?
উওরঃ গগেন্দ্রনাথ ঠাকুর মূলত তার বিভিন্ন ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কনের মাধ্যমে উপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা করেছিলেন। যেমন -
• প্রথমত তিনি বিভিন্ন নামকরা পত্রিকা যেমন, প্রবাসী মর্ডান রিভিউ ইত্যাদি নামকরা পত্রিকায় তাঁর বিভিন্ন গ্রন্থে বিরূপ বজ্র,অদ্ভুত লোক ইত্যাদি গ্রন্থে বিভিন্ন ধরনের ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কন করে ঔপনিবেশিক সমাজের বিভিন্ন বিষয়গুলো তুলে ধরে সেগুলোর সমালোচনা করেছিলেন। এবং তার মাধ্যমে তিনি স্বদেশ ভাবনা প্রচারের চেষ্টা করেছিলেন।
দ্বিতীয়তঃ গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতা শহরের বাঙালি বাবুদের ইংরেজদের প্রতি তীব্র অনুকরণ এবং তাদের অনুসরণ করা ইত্যাদি বিষয়গুলিকে সংকর জাতের বাঙালি, পুচ্ছ পরিবর্তন ইত্যাদি ব্যঙ্গচিত্রের মাধ্যমে সেগুলো তিনি সমাজের সামনে তুলে ধরেছিলেন এবং তার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।
প্রশ্নঃ আনন্দমঠ উপন্যাস কিভাবে জাতীয়তাবাদী ভাবধারা কে উদ্দীপ্ত করেছিল?
উওরঃ সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের আনন্দমঠ উপন্যাসটি তৎকালীন সময়ে যেভাবে জাতীয়তাবাদী ভাবধারার প্রসার ঘটিয়েছিল,তা হল -
প্রথমতঃ বঙ্কিমচন্দ্রের আনন্দমঠ উপন্যাসে স্বদেশপ্রেম, দেশমাতা সেবা দেশমাতার আদর্শ ইত্যাদি তুলে ধরা হয়েছে এবং এই গ্রন্থে তিনি দেশকে মা, দেশপ্রেমকে ধর্ম এবং দেশসেরাকে পূজা বলে উল্লেখ করেছেন।
দ্বিতীয়তঃ আনন্দমঠ উপন্যাসে জন্মভূমিকে মাতৃরূপে কল্পনা করে যে বন্দেমাতরম সঙ্গীতটি রচনা করা হয়েছিল, পরবর্তীতে সেই বন্দেমাতরম সঙ্গীতটি সেই সময়কার বিপ্লবীদের বিপ্লবী মন্ত্র এবং উৎসাহব্যঞ্জক সংগীতের পরিণত হয়েছিল। বিপ্লবীরা বন্দেমাতরম সঙ্গীতটি গাইতে গাইতে যুদ্ধক্ষেত্রে হাসতে নিজেদের প্রাণ বলিদান দিতেন।
তৃতীয়তঃ আনন্দমঠ উপন্যাসটি তৎকালীন সময়ে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অথবা যুব সম্প্রদায়কে স্বদেশপ্রেম, দেশভক্তি, আত্মত্যাগ, দেশসেবা ইত্যাদি ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ করেছিল যার ফলে বঙ্কিমচন্দ্রের আনন্দমঠ উপন্যাসটিকে স্বদেশ প্রেমের গীতা রূপে চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং বঙ্কিমচন্দ্রের আনন্দমঠ উপন্যাসের বন্দেমাতরম সঙ্গীতটি জাতীয় সংগীতের মর্যাদা লাভ করেছিল।।
ক্লিক করো👉 ; আমাদের গ্রুপে যোগদান করো
Tags :