অরণ্য সংরক্ষণ কাকে বলে?ভারতের অরণ্য সংরক্ষণের কয়েকটি প্রধান উপায় বা পদ্ধতি সংক্ষেপে আলোচনা করো।

0

wbbse class 10 geography chapter 5 question answer || ভারতের প্রাকৃতিক ও  অর্থনৈতিক পরিবেশ অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর

wbbse class 10 geography chapter 5 question answer || ভারতের প্রাকৃতিক ও  অর্থনৈতিক পরিবেশ অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর
মাধ্যমিক ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর ও সাজেশন 2023


ভূমিকাঃ অরণ্য সংরক্ষণ বলতে বোঝায় যে বিশেষ পদ্ধতিতে মানুষ সচেতন ভাবে এবং এক বিশেষ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃক্ষচ্ছেদন না করে, নিয়ন্ত্রিতভাবে বৃক্ষচ্ছেদন, গাছের যত্ন নেওয়া এবং বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে পরিবেশে বৃক্ষের অভাব দূর করে, তাকেই বলা হয় অরণ্য সংরক্ষণ।

ভারতের অরণ্য সংরক্ষণের কয়েকটি প্রধান উপায় বা পদ্ধতি সংক্ষেপে আলোচনা করো। 


উওরঃ বর্তমানে বিভিন্ন মনুষ্যসৃষ্ট কারণে এবং প্রাকৃতিক নানা কারনে গ্লোবাল ওয়ার্মিংএর প্রভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পাওয়ার সবচাইতে বড় কারণ হলো যথেষ্টভাবে অরণ্য ধ্বংস হওয়া। এই অরণ্য ধ্বংস হওয়ার ফলে দিনের গ্রীন হাউস গ্যাস গুলির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে। তাই আমাদের প্রকৃতিকে রক্ষা করার জন্য এবং বায়ুমন্ডলের ভারসাম্য রক্ষার জন্য আমাদের অরণ্য সংরক্ষণ একান্ত প্রয়োজন রয়েছে। তাই অরণ্য সংরক্ষন করার জন্য আমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। অরণ্য সংরক্ষণ করার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। যেমন - 

অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃক্ষচ্ছেদন রােধঃ 


যথেচ্ছভাবে বৃক্ষচ্ছেদন করা কঠোরভাবেনিষিদ্ধ করা প্রয়ােজন।  যথেচ্ছ বা অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃক্ষচ্ছেদন না করে কেবলমাত্র প্রয়ােজনীয় ও অন্যান্য বৃক্ষের ক্ষতিকারক ও বয়স্ক গাছ নির্বাচন করে তবেই ছেদন করা যেতে পারে। 

সচেতনতা বৃদ্ধিঃ যেহেতু বর্তমানে আমাদের নিজেদের কারণেই অর্থাৎ মানুষের কারণেই বর্তমানে যথেষ্ট পরিমাণে অরণ্য ধ্বংস হচ্ছে, তাই অরণ্য সংরক্ষণ করতে হলে সবার আগে মানুষের মধ্যে অরণ্য সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতাকে বাড়াতে হবে। অরণ্য সংরক্ষণ কী, অরণ্য সংরক্ষণ কেন প্রয়োজন এই সম্পর্কে যদি মানুষ অবগত হয়,তাহলে মানুষ নিজেরাই অরণ্য সংরক্ষণ করতে আগ্রহী হবে। এবং মানুষ বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করার মাধ্যমে অরণ্য সংরক্ষণ করতে পারবে।

অপরিণত বৃক্ষচ্ছেদন হ্রাসঃ 


অরণ্য সংরক্ষণ করার একটি সবচেয়ে বড় পদ্ধতি হলো অপরিণত বৃক্ষচ্ছেদন না করা। বর্তমানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরিণত গাছগুলিকর কাটা হয়। যার ফলে খুব দ্রুতগতিতে অরণ্য ধ্বংস হয়। তাই অরণ্য সংরক্ষণ করার হলে ছােটো বা শিশু ও অপরিণত গাছ না কাটার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়ােজন।

কাঠের জ্বালানিরপরিবর্তে বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধিঃ অনেক দরিদ্র মানুষ বনভূমি থেকে কাঠ সংগ্রহ এবং বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। এই কাঠ সাধারণত জ্বালানির কাজেই বেশি ব্যবহৃত হয়। জ্বালানির বিকল্প এবং বনভূমি সংলগ্ন দরিদ্র মানুষদের অরণ্যের বিভিন্ন কাজে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারলে অরণ্যবিনাশ অনেকটাই রােধ করা যায়। এছাড়াও সরকার থেকে যদি দরিদ্র পরিবারদের জ্বালানির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়,  তাহলে সেই দরিদ্র পরিবারগুলি জ্বালানি কাঠের প্রয়োজনে অরণ্য ধ্বংস করতো না। ফলে নিজে থেকেই অরণ্য ধ্বংস অনেকটা কমে যেত এবং অরণ্য সংরক্ষিত হতো।

দাবানল প্রতিরােধঃ


অরণ্য থেকে নিয়মিতভাবে শুকনাে ডালপালা পরিষ্কার করা, শুকনাে মরশুমে নজরদারি বাড়ানাে, এটি আগুন নেভানাের কার্যকরী ব্যবস্থা আগের থেকেই ঠিক করে রাখা এবং তা কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্য নিয়ে নিয়মিত নজরদারি প্রভৃতি ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ করলে দাবানল অনেকটাই প্রতিরােধ করা যায়। বনে দাবানল বা আগুন যাতে না লাগে সেদিকে যদি নজর দেওয়া যায়, তাহলে বনে দাবানলের কারণে যে সমস্ত গাছের ক্ষতি হয় বা গাছ নষ্ট হয়ে যায়, সে সমস্ত গাছগুলোকে রক্ষা করা যায়। প্রতি বছরই দাবানলের কারণে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে যায় যার ফলে ব্যাপক পরিমাণে অরণ্য ধ্বংস হয়। তাই অরন্যকে সংরক্ষণ করতে হলে বনে যাতে দাবানল বা আগুন না লাগে সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।

রাসায়নিক ও জৈবিক উপায়ে অরণ্যের বৃক্ষের রােগ প্রতিরােধঃ 


কীটনাশক, ওষুধপত্র, নিয়মিত রাসায়নিক ও জৈবিক সার প্রয়ােগের মাধ্যমে অরণ্যের বৃক্ষদের কীটপতঙ্গ, রােগ নিবারণ এবং উপযুক্ত পরিচর্যা ও তত্ত্বাবধান করা জরুরি। এরকম ভাবে অরণ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বা বিভিন্ন কারণে যেসব গাছ বড় হওয়ার আগেই অথবা পরিণত হওয়ার আগেই মারা গিয়ে ধ্বংস হয়, সেই গাছগুলোকে রক্ষা করা যায়।।

পশুচারণ নিয়ন্ত্রণঃ অরণ্যে অনেক সময়ে চাষিরা অথবা পশু পালকরা পশুচারণ করে বলে বনের অনেক অপরিণত গাছগুলি ধ্বংস হয়। তাই অরণ্য সংরক্ষণ করতে হলে, পৃথক তৃণভূমি সৃষ্টি করা, টি নির্দিষ্ট পশুচারণ ক্ষেত্রের ব্যবস্থা করা এবং অরণ্যে পশুচারণ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা প্রয়ােজন। 

তাই পরিশেষে বলা যায়, উপরিক্ত কিছু পদ্ধতি ছাড়াও আরও নানা পদ্ধতি গ্রহণ করার মাধ্যমে আমরা অরণ্যকে সংরক্ষণ করতে পারি। এবং অরণ্য সংরক্ষণ করার ফলে আমাদের যে সমস্ত উপকার হতে পারে সে সমস্ত উপকারের লাভ করতে পারি।।

Tags : WB Madhyamik Geography Question Answer & Suggestion 2023 | ভারতের প্রাকৃতিক ও  অর্থনৈতিক পরিবেশ অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর | মাধ্যমিক ২০২৩ ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর | মাধ্যমিক ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর ও সাজেশন 2023 | wbbse class 10 geography chapter 5 question answer


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top