নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপ গুলির চিত্রসহ বর্ণনা করো। || বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর
![]() |
বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা ক্লাস টেনের ভূগোল প্রথম অধ্যায় ( WB Class 10 Geography Chapter 1 ) "বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ " এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন- " নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপ গুলির চিত্রসহ বর্ণনা করো।। " এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।। " নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপ গুলির চিত্রসহ বর্ণনা করো। " প্রশ্নটি অনেকবার মাধ্যমিক পরিক্ষায় এসেছে এবং অনেক স্কুলের টেস্ট পরিক্ষায়ও এসে থাকে। তাই এই প্রশ্নটি তোমাদের মন দিয়ে পড়া উচিৎ।।
আজকের বিষয়ঃ
• নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপ গুলির চিত্রসহ বর্ণনা করো।
• I - আকৃতির উপত্যকা কাকে বলে?
• V - আকৃতির উপত্যকা কাকে বলে?
• গিরিখাত কাকে বলে?
• ক্যানিয়ন কাকে বলে?
• জলপ্রপাত কাকে বলে?
• জলপ্রপাত কত প্রকার ও কি কি?
• র্যাপিডস কাকে বলে?
• ক্যাসকেড কাকে বলে?
• ক্যাটার্যাক্ট কাকে বলে?
• প্রপাতকূপ অথবা প্রাঞ্জপূল কাকে বলে?
• মন্থকূপ অথবা পটোহল কাকে বলে?
• I - আকৃতির উপত্যকা কাকে বলে?
• V - আকৃতির উপত্যকা কাকে বলে?
• গিরিখাত কাকে বলে?
• ক্যানিয়ন কাকে বলে?
• জলপ্রপাত কাকে বলে?
• জলপ্রপাত কত প্রকার ও কি কি?
• র্যাপিডস কাকে বলে?
• ক্যাসকেড কাকে বলে?
• ক্যাটার্যাক্ট কাকে বলে?
• প্রপাতকূপ অথবা প্রাঞ্জপূল কাকে বলে?
• মন্থকূপ অথবা পটোহল কাকে বলে?
নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপ গুলির চিত্রসহ বর্ণনা করো।
ভূমিকাঃ নদীর উচ্চ গতি মূলত পার্বত্য অংশে প্রধান থাকে। পার্বত্য প্রবাহের নদীর সম্পূর্ণ এবং পার্বত্য প্রবাহে ছাড়িয়ে কিছুটা জায়গা জুড়ে নদীর উচ্চগতিত থাকে। নদীর সেই উচ্চ গতিতে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ক্ষয়কার্য করে থাকে। নদীর উচ্চ গতিতে নদী কোনো প্রকার ই সঞ্চয় করতে পারে না। উচ্চগতিতে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে বিভিন্ন প্রকার ভূমিরূপ গঠিত হয়। যেমন- i) গিরিখাত ii) ক্যানিয়ন ii) জলপ্রপাত iv) মন্থকুপ,(v) প্রপাতকূপ ইত্যাদি।
I- আকৃতির উপত্যকাঃ উচ্চ পার্বত্য প্রবাহে ভূমির ঢাল বেশি হওয়ায় নদীর গতিবেগ বেশি থাকে। সেইসঙ্গে নদীর জলের সঙ্গে প্রস্তরখন্ডের পরিমাণ বেশি থাকে। এরকম অবস্থায় নদী অবঘর্ষ পদ্ধতিতে তার গতিপথে প্রবল বেগে নিম্নক্ষয় করে এবং এরুপ নিম্ন ক্ষয়ের ফলে নদীর উপত্যকায় সৃষ্টি হওয়া ইংরেজি অক্ষর আই ( I ) এর মতো ভূমিরূপকে গিরিখাত বলা হয়।।
V - আকৃতির উপত্যকাঃ উচ্চগতিতে নিম্ন ক্ষয়ের সাথে সাথে যদি সামান্য পার্শ্বক্ষয় করেন, তখন সেই নদীর পাড় অত্যন্ত খাড়া, গভীর ও সংকীর্ণ হয়ে ইংরেজি অক্ষর V -এর মতো দেখতে হয়।, নদী উপত্যকা ইংরেজি অক্ষর V এর আকৃতি ধারণ করলে তখন তাকে V আকৃতির উপত্যকা বলা হয়।
গিরিখাতঃ বৃষ্টিবহুল উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে নদীর নিম্ন ক্ষয়ের মাত্রা খুব বেশি হয়। যার ফলে নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও অতি গভীর প্রকৃতির হয়। এই ধরনের অতি গভীর ও সংকীর্ণ নদী উপত্যকাকে গিরিখাত বলা হয়।।
ক্যানিয়নঃ শুষ্ক অঞ্চলে নদী উচ্চ গতিতে নদী তার উপত্যকায় পার্শ্ব ক্ষয় খুব কম করে এবং নিম্নক্ষয় বেশি করার মাধ্যমে নদী উপত্যকায় ইংরেজি I আকৃতির গিরিখাত সৃষ্টি করে। নদী উপত্যকায় সৃষ্ট আই আকৃতির গভীর শুষ্ক উপত্যকাকেই ক্যানিয়ন বলা হয়।
মন্থকূপ বা পটোহলঃ নদীর জলের সঙ্গে মিশে থাকা বিভিন্ন কঠিন শিলা, বা শিলাখণ্ড জল প্রবাহের সময় নদীগর্ভে বারবার আঘাত করার পরে নদীগর্ভে অনেক ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়।।। এরকম ছোট ছোট গর্ত পরবর্তীকালে আরও আঘাতের ফলে সেই গর্তগুলি আরও বড় ও গভীর আকার ধারণ করে। নদীগর্ভে সৃষ্ট এরকম বড় ও গভীর গর্ত গুলোকে মন্থকূপ বা পটোহল বলে।।
জলপ্রপাতঃ উচ্চগতিতে উপত্যাকার ঢালের হঠাৎ অধিক পার্থক্য ঘটলে নদীর জল প্রবল বেগে উপর থেকে নিচের দিকে পড়ে। একে জলপ্রপাত বলা হয়।।
নদীর গতিপথে বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য থাকলে জলপ্রপাত গঠিত হতে পারে। যেমন-
• কঠিন শিলা ও কোমল শিলার অবস্থান -
নদীর গতিপথে যদি কঠিন শিলা ও নরম সীরাত অনুভূমিক ও উলম্ব তীর্যকভাবে অবস্থান করে তাহলে কঠিন শিলা অপেক্ষা নরম ছিল বেশি ক্ষয়প্রাপ্ত হয় জলপ্রপাত গঠিত হয়।।
• ঝুলন্ত উপত্যকা :- হিমবাহের কার্যের ফলে সৃষ্ট ঝুলন্ত উপত্যকা থেকেও জলপ্রপাত গঠিত হতে পারে। যেমন লাডাকের পার্কচাক জলপ্রপাত এভাবেই সৃষ্টি হয়েছে।
• চ্যুতির সৃষ্টি :- নদীর গতিপথে আড়াআড়ি চ্যুতি ঘটলে জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়। যেমন জাম্বেসি নদীর ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত,ভারতের নর্মদা নদীর কপিলধারা জলপ্রপাত এরকম ভাবে সৃষ্টি হয়েছে।
• নিক বিন্দু :- ভূমির পুনর্যৌবন লাভে শৃষ্ট নিক বিন্দুতে জলপ্রপাত গঠিত হয়। যেমন সুবর্ণরেখা নদী ও দশম জলপ্রপাত।
• এছাড়াও মালভূমি খাড়া ভাবে সমভূমির সঙ্গে মিশলে জলপ্রপাত তৈরি হয়।।
• জলপ্রপাত প্রধানত তিন প্রকারের হয়। যথা-
(1) র্যাপিডস- এক্ষেত্রে বহুসংখ্যক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপের উপর দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়।
(2) কাসকেড - এক্ষেত্রে ধাপের সংখ্যা কম কিন্তু ধাপগুলি বড়ো বড়ো। যেমন—আয়ারল্যান্ডের Glenn নদীর উপর অবস্থিত Tears of the Glenn.
(3) ক্যাটারেক্ট - এক্ষেত্রে প্রতিটি ধাপের মধ্যে দিয়ে প্রচুর পরিমাণে জল পরিবাহিত হয়। যেমন— নীলনদের খার্তুম থেকে আসোয়ানের মধ্যে ৬টি ক্যাটারাক্ট আছে।
প্রপাত কূপ বা প্লাঞ্জপুলঃ জলপ্রপাতের জল যখন অনেক উপর থেকে প্রবল বেগে নিচে গড়িয়ে পড়ে তখন সেই জলরাশি জলপ্রপাতের যে নির্দিষ্ট অংশে বেশি পরিমাণে পড়ছে সেই নির্দিষ্ট অঞ্চলের জলের আঘাতে বা জলে মিশে থাকা বিভিন্ন বালি, কাকড়, শিলাখন্ডের আঘাতে সেখানে একপ্রকার গর্তের সৃষ্টি হয়।। এরূপ গর্ত গুলোকে প্রপাতকূপ বা প্লাঞ্জপূল বলে।
এখানে কোনো ছবি বা চিত্র দেওয়া সম্ভব হবে না। তাই তোমরা একটু বই থেকে চিত্র গুলো একটু দেখে নিও।
Tags :