আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে দশম শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় 'বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ অধ্যায়ের' (wbbse class 10 history question answer chapter 5 in Bengali ) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১০ টি দু'নম্বর এর প্রশ্ন উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এবং ক্লাস টেনের ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় 'বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ অধ্যায়ের' বাকি গুরুত্বপূর্ণ 2 মার্কের প্রশ্ন উত্তর গুলো তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করা হবে।
দশম শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর || বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ অধ্যায়ের দু'নম্বর এর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ শ্রীরামপুর ত্রয়ী কারা?
উওরঃ ছাপাখানার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত শ্রীরামপুর ত্রয়ী হলেন তিনজন খ্রিস্টান মিশনারি উইলিয়াম ওয়ার্ড, উয়িলিয়াম কেরি এবং জোশুয়া মার্শম্যান। এই তিনজন খ্রিস্টান মিশনারীকে একত্রে শ্রীরামপুর ত্রয়ী বলা হতো। মূলত শ্রীরামপুর ত্রয়ীর উদ্যোগেই ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মিশন প্রেস নামক একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।।
প্রশ্নঃ বাংলা ছাপাখানার বিকাশে পঞ্চানন কর্মকার এর ভূমিকা কি ছিল?
উওরঃ বাংলা ছাপাখানার ইতিহাসে পঞ্চানন কর্মকারের নাম স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। কারণ-
• পঞ্চানন কর্মকারের বিশেষভাবে সহযোগিতায় চার্লস উইলকিন্স বাংলা হরফ নির্মাণ করতে পেরেছিলেন।
• পঞ্চানন কর্মকার এর তৈরি মুদ্রা অক্ষর গুলি ব্রাসি হ্যালহেডের বাংলা ব্যাকরণের ক্ষেত্রে এবং পরবর্তীকালে 1793 খ্রিস্টাব্দে কর্নওয়ালিস কোডের বাংলা সংস্করণে ব্যবহার করা হয়েছিল।।
• পঞ্চানন কর্মকার এর চেষ্টার কারণেই বাংলা হরফ নির্মানের কাজটি একটি স্থায়ী শিল্পে পরিণত হয়েছিল।
প্রশ্নঃ বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি ছিল?
উওরঃ বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে তার বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বেশ কয়েকটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। যেমম-
• প্রথমত এর উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনভাবে বিজ্ঞান চর্চা করা।
• দ্বিতীয়তো বাংলায় বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে বিজ্ঞানের উন্নতি সাধন।
• তৃতীয় বিজ্ঞানর আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিক বিজ্ঞান চর্চার জন্য একটি সঠিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে তাদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রসার ঘটানো ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ বসু বিজ্ঞান মন্দিরর কোন্ কোন্ বিষয়ে গবেষণা করা হতো?
উওরঃ ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দের প্রতিষ্ঠিত বসু বিজ্ঞান মন্দিরে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার মৌলিক গবেষণা গুলি করা হত। যেমন- মাইক্রোবায়োলিজ, বায়োফিজিক্স, বায়োকেম্রিস্ট্রি ইত্যাদি।।
প্রশ্নঃ ছাপা বই শিক্ষার প্রসারে কি ভূমিকা নিয়েছিল?
উওরঃ বাংলায় খ্রিস্টান মিশনারি এবং বেশ কয়েকজন বাঙ্গালীদের উদ্যোগে ছাপাখানা প্রসার শিক্ষার প্রসারে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল।
কারণ-
• প্রথমতঃ ছাপা বইয়ের মাধ্যমে জ্ঞানীগুণী পন্ডিত ব্যক্তিদের অল্পসংখ্যক হাতে লেখা ছিল ছাপাখানায় প্রকাশিত হলে তা সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
• দ্বিতীয়তঃ ছাপাখানায় প্রকাশিত বইগুলো খুবই সস্তা হতল বলে তা সাধারণ মানুষের জ্ঞানের পিপাসা মেটাতে সক্ষম হয়।
• ছাপাখানার বিকাশের পর, শিক্ষামূলক পাঠ্যপুস্তক ছাড়াও আরও নানা ধরনের ধর্মগ্রন্থ, পত্রপত্রিকা ইত্যাদি প্রকাশিত হলে তার সবার মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটায়।
প্রশ্নঃ জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কবে এবং কাদের উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল?
উওরঃ ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে জমিদার সভার কয়েকজন বিশিষ্ট সদস্যদের উদ্যোগে পার্কস্ট্রিটে ব্রিটিশদের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে একটি সভা আহ্বান করা হয় এই সভায় রবীনাথ ঠাকুর,সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় হীরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রমুখ ব্যক্তিরা বক্তব্যে রেখে ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত একটি পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার বা জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠনের প্রস্তাব রাখেন। এরপর ব্রজেন্দ্র কৃষ্ণ চৌধুরী, সূর্য কান্ত আচার্য্য চৌধুরী,রাজা সুবোধ মল্লিক প্রমুখ ব্যক্তিদের সহযোগিতায় 1 906 খ্রিস্টাব্দে 11 ই মার্চ জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয়।।
প্রশ্নঃ জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্দেশ্য কি ছিল?
উওরঃ ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ই মার্চ যখন জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয়েছিল, তখন জাতীয় পরিষদের একাধিক লক্ষ্য ছিল। এই লক্ষ্য গুলির মধ্যে কয়টি প্রধান লক্ষ্য হল-
• দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জাতীয় বিদ্যালয় স্থাপন করা।
• এদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কলাবিদ্যা, বিজ্ঞান চর্চা এবং কারিগরি শিক্ষার বিকাশ ঘটানো বা প্রসার ঘটানো।
• বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রদান করে এদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বেকারত্ব দূর করা ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ সংস্কৃত যন্ত্র বিখ্যাত কেন?
উওরঃ বাংলার দুজন বিখ্যাত পন্ডিত মদনমোহন তর্কালঙ্কার এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের যৌথ উদ্যোগে কলকাতায় আমহাস্র্ট স্ট্রিটে যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ছাপাখানা টি সংস্কৃত যন্ত্র নামে বিখ্যাত। প্রথমদিকে সংস্কৃত যন্ত্র ছাপাখানার মালিক দুজন হলেও পরবর্তীকালে কোন এক কারণে মদনমোহন তর্কালঙ্কার সংস্কৃত যন্ত্র ত্যাগ করেন।
তাই বিদ্যাসাগরের একার হাতেই সংস্কৃত যন্ত্রের মালিকানন এসে পড়ে। এরপর এখান থেকেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তার বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন এবং প্রকাশিত করেন। সংস্কৃত যন্ত্র থেকেই ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল এবং বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় প্রকাশিত হয়েছিল। তাই সংস্কৃত যন্ত্র ছাপাখানা জগতে বিখ্যাত হয়ে আছে।।
প্রশ্নঃ বাংলার মুদ্রণ শিল্পের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনী গুরুত্ব কী?
উওরঃ উনিশ শতকে কলকাতা এবং তার আশেপাশে চোরবাগান, শোভাবাজার,দর্জিপারা,জোড়াসাঁকো প্রভৃতি স্থানে যে সমস্ত ছাপাখানা গড়ে উঠেছিল, তা মূলত বটতলার প্রকাশনা নামে পরিচিত। বাংলায় মুদ্রণের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব ছিল অনেকটা। কারণ -
• বটতলা প্রকাশনা থেকে যে সমস্ত বইপত্র ছাপা হতো, তা তৎকালীন সময়ের জ্ঞান পিপাসু লোকেদের পিপাসা মেটাতে সক্ষম হয়েছিল। কারণ বটতলা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইগুলো ছিল অত্যন্ত সস্তা। তাই সবার পক্ষে সেই বইগুলি কেনা সম্ভব ছিল।
প্রশ্নঃ ডক্টর মহেন্দ্রলাল সরকার বিখ্যাত কেন?
উওরঃ ডক্টর মহেন্দ্রলাল সরকারের বিখ্যাত অথবা স্মরণীয় হয়ে থাকার মূলত দুটি কারণ রয়েছে।
প্রথমত- ডক্টর মহেন্দ্রলাল সরকার ছিলেন ভারতের দ্বিতীয় এমডি এবং প্রথম হোমিওপ্যাথির চিকিৎসক। প্রথমে তিনি অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার প্রতি আকৃষ্ট হলেও পরে তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির দিকে বেশি ঝুঁকে পড়েছিলেন।
এবং এজন্য তার খ্যাতি সেসময় অনেকটাই ছিল। দ্বিতীয়ত- তিনি ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতের বিজ্ঞান চর্চার জন্য এবং বিজ্ঞানের প্রসারের উদ্দেশ্যে নিজ উদ্যোগে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স নামক একটি বিজ্ঞান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এবং তার এই উদ্যোগ বিজ্ঞানে আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। বাংলায় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসারের জন্য ডক্টর মহেন্দ্রলাল সরকারের এই উদ্যোগের জন্যেউ তিনি আজও স্মরণীয় হয়ে আছেন।।
আশাকরি যে, আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে দশম শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ অধ্যায়ের ( wbbse class 10 history question answer chapter 5 in Bengali ) যে সমস্ত দু'নম্বর এর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে, সেগুলো তোমাদের ভালো লাগবে। ভালো লাগলে এই পোস্টটি তোমাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো।