ক্লাস টেন জীবন বিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায় 'বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ' প্রশ্ন উত্তর || WB Class 10 Life Science Question Answer & Notes 2023
পরাগযোগ কাকে বলে? পরাগযোগ কত প্রকার ও কি কি? স্বপরাগযোগ এবং ইতর পরাগযোগের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলি আলোচনা করো
উওরঃ ফুলের পরাগধানী থেকে পরাগরেণু একই ফুলের বা একই গাছের অন্য কোনো ফুলে কিংবা একই প্রজাতিভুক্ত কোনো উদ্ভিদের ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হলে,তাকে পরাগমিলন বা পরাগযোগ বলা হয়।
পরাগযোগ দুই প্রকার। যথা :- স্বপরাগযোগ এবং ইতর পরাগযোগ।
স্বপরাগযোগ বা অটোগ্যামীঃ যখন কোনো ফুলের পরাগরেণু সেই ফুলের গর্ভমুণ্ডে বা সেই গাছেরই অন্য কোনো ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়,তখন তাকে স্বপরাগযোগ বলা হয়।
যেমন : সিম, টমেটোর ক্ষেত্রে এই ধরনের পরাগযোগ দেখা যায়।
স্বপরাগযোগ এর কিছু সুবিধাঃ
উদ্ভিদের স্বপরাগযোগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুবিধা লক্ষ্য করা যায়। যেমন-
• স্বপরাগযোগ এর সবচাইতে বড় সুবিধা হলো- স্বপরাগযোগ এর ক্ষেত্রে কোনো বাহকের প্রয়োজন হয় না।
• স্বপরাগযোগের জন্য উদ্ভিদের মধ্যে কোনো বাহ্যিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রবেশ করে না বলে প্রজাতির বিশুদ্ধতা রক্ষা পায়।।
• স্বপরাগযোগের ক্ষেত্রে অধিক সংখ্যক পরাগরেণুর প্রয়োজন হয় না।
• স্বপরাগযোগের ক্ষেত্রে উদ্ভিদকে পরাগযোগ ঘটানোর জন্য কোনো বাহ্যিক বাহকের প্রয়োজন হয়না বলে, বাহকের অভাবে কখনো পরাগরেণুর অপচয় হয়না।
স্বপরাগযোগ এর অসুবিধাঃ
উদ্ভিদের ক্ষেত্রে স্বপরাগ যোগের ক্ষেত্রে যেমন বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে, ঠিক তেমনি স্বপরাগ যোগের অনেক অসুবিধাও রয়েছে। যেমন-
• স্বপরাগযোগ এর মাধ্যমে সৃষ্ট উদ্ভিদের বীজ এবং ফল অনুন্নত মানের হয়।
• স্বপরাগযোগ এর ফলে সৃষ্ট উদ্ভিদগুলি অত্যন্ত দুর্বল প্রকৃতির হয় যা প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে না।
• স্বপরাগযোগ এর ফলে সৃষ্ট উদ্ভিদ গুলির মধ্যে কোনো নতুন বৈশিষ্ট্যের সঞ্চার হয় না।
ইতরপরাগযোগ বা জিনোগামী বা অ্যালোগামীঃ যখন কোনো ফুলের পরাগরেণু একই প্রজাতিভুক্ত অন্য কোনো গাছের ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়, তখন তাকে ইতর পরাগযোগ বলা হয়।
• একলিঙ্গ ফুল যেমন,( লাউ,পেঁপে, তাল ইত্যাদি ) উদ্ভিদের ক্ষেত্রে ইতর পরাগযোগ দেখা যায়।
• ইতর পরাগযোগ এর সুবিধা হল ইতর পরাগযোগ এর ফলে নতুন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন উদ্ভিদের সৃষ্টি হয়।।
ইতর পরাগযোগে বাহক কাদের বলা হয়?
উওরঃ যে বাহ্যিক প্রতিনিধিদের দ্বারা ইতর পরাগযোগ ঘটে বা সম্পন্ন হয়,তাদের ইতর পরাগযোগ এর বাহক বলা হয়।
যেমন ইতর পরাগযোগ এর কয়েকটি বাহক হল -বায়ু, পতঙ্গ, পাখি প্রভৃতি।
ইতর পরাগযোগ এর কয়েকটি
সুবিধা আলোচনা করো।
উদ্ভিদের দুই প্রকার পরাগযোগের মধ্যে স্বপরাগযোগের যেমন বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। ঠিক তেমনি উদ্ভিদের দ্বিতীয় প্রকার পরাগযোগ,অর্থাৎ ইতর পরাগযোগের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন-
• ইতর পরাগযোগ এর মাধ্যমে উদ্ভিদের মধ্যে নতুন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে সঞ্চার হয়।
• ইতর পরাগযোগের মাধ্যমে উদ্ভিদের মধ্যে নতুন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সঞ্চার হওয়ার জন্য যে নতুন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন উদ্ভিদের সৃষ্টি হয়,সেগুলি বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়। কারণ সেই উদ্ভিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি থাকে।।
• ইতর পরাগযোগ এর মাধ্যমে সৃষ্ট উদ্ভিদ গুলি বিভিন্ন পরিবেশে টিকে থাকার ক্ষমতা অর্জন করে।
• ইতরপরাগযোগের মাধ্যমে উদ্ভিদের মধ্যে নতুন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে সঞ্চার হওয়ায় তা নতুন প্রজাতির উদ্ভব বা সৃষ্টিতে সাহায্য করে।।
ইতর পরাগযোগ এর কয়েকটি অসুবিধাঃ
• ইতর পরাগযোগ এর ক্ষেত্রে বাহক এর উপর নির্ভর।
• অনেক সময় বাহকের অভাবে অনেক পরাগরেণুর অপচয় ঘটে।
• ইতর পরাগযোগের ফলে প্রজাতির বিশুদ্ধতা নষ্ট হয়।