মাধ্যমিক ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর || WB Class 10 Geography Question Answer & Suggestion 2023
![]() |
মাধ্যমিক ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর |
ঝুম চাষ কাকে বলে? ঝুমচাষের সুফল এবং কুফল গুলি সম্পর্কে আলোচনা করো
উওরঃ সাধারণত পাহাড়ি অঞ্চলের বেশিরভাগ কৃষকরা তাদের চাষের জমি বাড়াতে পাহাড়ের জঙ্গল পুড়িয়ে সে জঙ্গল সাফ করে সেই জমি উদ্ধার করে সেখানে চাষ করতে শুরু করেন।। এরকমভাবে সে জমিতে চাষ করার কিছুদিন পর সে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে যায়।। এরপর সেই জমির উর্বরা শক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সেটাকে এক থেকে তিন বছর সময় পর্যন্ত রেখে দিতে হয়।। এবং এই সময়ের মধ্যে পাহাড়ি অঞ্চলের কৃষকেরা অন্য কোনো জঙ্গলে গিয়ে ঠিক একইভাবে জঙ্গল পুড়িয়ে জমি উদ্ধার করে।। এই পদ্ধতিকেই সাধারণভাবে ঝুমচাষ বলা হয়।
ঝুম চাষের কিছু ভালো দিকঃ
পার্বত্য অঞ্চলে প্রচলিত এই ঝুম চাষের কিছু ভালো দিক এবং কিছু খারাপ দিক রয়েছে যেমন।
• ঝুম চাষের ক্ষেত্রে মাটিতে জৈব চাষ, কীটনাশক বা রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না। বরং তার বদলে মাটিতে পটাশ জোগাতে গাছ পোড়ানো হয়।
• ঝুম চাষের জন্য য জমি উদ্ধার করা হয়, তা পরবর্তীকালে সেই জমি কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
• ঝুমচাষ পদ্ধতি শুধুমাত্র জঙ্গলের সাময়িক ক্ষতি করে। কারণ বর্ষা শেষ হলেই কৃষকরা সেই জমি ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যায়। এই দশ বছর সময়ে সেই আগুনে পোড় জমি বা জঙ্গল দ্রুত পুনরুত্থিত হয়। সুতরাং ঝুম চাষের মাধ্যমে একদিকে যেমন চাষীদের চাষ করার জন্য জমি তৈরি হয়,অন্যদিকে এই চাষের মাধ্যমে পরিবেশের কোনো ক্ষতিও হয় না যদি তারা সঠিকভাবে ঝুম চাষ করে।
ঝুম চাষের ক্ষতিকারক দিকঃ
• ঝুম চাষ যদি সঠিক নিয়ম মেনে এবং চাষিরা যদি সতর্কভাবে জুম চাষ করতে পারে,তাহলে কখনোই ঝুমচাষ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হয় না। কিন্তু চাষিরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঝুম চাষের সঠিক পদ্ধতি অথবা অসতর্কিতভাবে ঝুম চাষ করে। যার ফলে ঝুম চাষ একটি ক্ষতিকারক চাষ পদ্ধতি হিসেবে পরিণত। চাষিরা যদি দশ বছরের জন্য জঙ্গল ছেড়ে চলে যান, তবে এটি পুনরুত্থিত হবে। কিন্তু আজকাল কৃষকরা ফিরে আসে ৫ বছরে। বনের পুনর্জন্মের জন্য পর্যাপ্ত সময় নেই।
• চাষিরা জঙ্গলপুর পুড়িয়ে জমি উদ্ধার করে বলে জঙ্গলের মূল্যবান সম্পদ আগুনে পুড়েই নষ্ট হয়ে যায়।
• জুম চাষ করার ফলে বনের বড় বড় গাছপালা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। গাছপালা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে সেখানকার মাটি আলগাহয়ে পড়ে যার ফলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে সেই মাটি আলগা হয়ে ভূমিধ্বস বা ভুমিক্ষয়ের মাধ্যমে অপসারিত হয়।।
• ঝুম চাষী পরিবারগুলি সর্বদা খাদ্য, জ্বালানী এবং পশুখাদ্যের সমস্যায় ভোগে, যা দারিদ্র্য এবং অপুষ্টির দিকে পরিচালিত করে।
• বর্তমানে ঝুম চাষ পদ্ধতি গ্রীন হাউস গ্যাস বৃদ্ধির একটি অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাছ পোড়ানোর ফলে উচ্চতর CO2, NO2 এবং অন্যান্য গ্রীনহাউস গ্যাস (GHGs) খুব বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। গ্রিন হাউস গ্যাস গুলি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আমরা বর্তমানে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি এবং ভবিষ্যতে এর চেয়েও বড় সমস্যার সম্মুখীন হবো।।
Tags :