ভারতের উত্তরের বৃহৎ সমভূমির ভূ-প্রকৃতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। || রাজস্থান সমভূমি, সিন্ধু সমভূমি, গাঙ্গেয় সমভূমি এবং ব্রহ্মপুত্র সমভূমি সম্পর্কে আলোচনা

0

মাধ্যমিক ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর || WB Class 10 Geography Question Answer & Suggestion 2023

ভারতের উত্তরের বৃহৎ সমভূমির ভূ-প্রকৃতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। || রাজস্থান সমভূমি, সিন্ধু সমভূমি, গাঙ্গেয় সমভূমি এবং ব্রহ্মপুত্র সমভূমি সম্পর্কে আলোচনা
ভারতের প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর

ভারতের উত্তরের বৃহৎ সমভূমির ভূ-প্রকৃতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। || রাজস্থান সমভূমি, সিন্ধু সমভূমি, গাঙ্গেয় সমভূমি এবং ব্রহ্মপুত্র সমভূমি সম্পর্কে আলোচনা

উওর: উত্তরের সমভূমি অঞ্চলকে প্রধানত চারটি ভাগে ভাগ করা যায়।  প্রথমত - রাজস্থানের মরু অঞ্চল,  দ্বিতীয়ত - সিন্ধু সমভূমি, তৃতীয়তঃ গাঙ্গেয় সমভূমি এবং চতুর্থত - ব্রহ্মপুত্র সমভূমি।

রাজস্থানের মরূ অঞ্চলঃ


অবস্থান ও বিস্তারঃ আরাবল্লি পর্বতের পশ্চিমে রাজস্থানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে অবস্থিত মরু অঞ্চলটি থর মরুভূমি নামে পরিচিত এই মরুভূমির অতি সামান্য অংশ দক্ষিণে গুজরাত এবং উত্তরে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যে পড়ে।
• ভারতের মরু অঞ্চলটির ক্ষেত্রমান 1.75 লক্ষ বর্গকিমি।
• রাজস্থান মরুভূমির শুষ্ক ও গভীর খাদ গুলিকে ধান্দ বলা হয়।
• এখানকার চলমান বালিয়াড়ি গুলিকে ধ্রিয়ান বলা হয়।
ভূপ্রকৃতি অনুসারে রাজস্থানের মরুওঞ্চলকে 5 ভাগে ভাগ করা যায়।
যথা -
১ - বাগার : মরুভূমির পূর্বদিকে আরাবল্লী পর্বতের পাদদেশ ও মরুদ্যান অংশকে বাগার বলা হয়।
২- হামাদা :-  ক্ষুদ্র মরুর পশ্চিমে বালি ও শিলাখণ্ড গঠিত অঞ্চলকে হামাদা বলা হয়।
৩- রোহি : আরাবল্লী পর্বতের পশ্চিম এর নদীবিধৌত  কৃষি যোগ্য প্লাবনভূমি রোহি নামে পরিচিত।
৪- থালি :- রাজস্থানের লুনি নদীর উত্তর অংশে বালুকাময় ক্ষুদ্র মরু অংশ থালি নামে পরিচিত।
৫- মরুস্থলি : সর্ব পশ্চিমের বালি, পাথর, দ্বারা গঠিত শুষ্ক ও রুক্ষ ও উদ্ভিদহীন অঞ্চল মরুস্থলি নামে পরিচিত।( মরুস্থলি কথার অর্থ হল মৃতের দেশ)

সিন্ধু সমভূমিঃ 


আরাবল্লি পর্বতের পূর্বে
রাজস্থানের সামান্য অংশ, সমগ্র পাঞ্জাব ও হরিয়ানা নিয়ে এই সমভূমি গঠিত।
বৈশিষ্ট্য :
• এই সমভূমি দৈর্ঘ্যে প্রায় 640 কিমি ও
প্রস্থে প্রায় 300 কিমি প্রসারিত। এই অঞ্চলটির গড় উচ্চতা 250 মিটার।
• সিন্ধু সমভূমি অঞ্চলটি গঠিত হয়েছে মূলত বিপাশা, শতদ্রু,  ইরাবতী, বিতস্তা ও চন্দ্রভাগা নদীর পলি সঞ্চয়ের মাধ্যমে।
• উচ্চ গাঙ্গেয় সমভূমির পর্বতের পাদদেশের অঞ্চলকে ভাবর বলা হয়। এবং এর দক্ষিণ অংশকে তরাই বলা হয়।
• সিন্ধু সমভূমির নদীগুলির মধ্যবর্তী উঁচু স্থান নামে দোয়াব নামে পরিচিত।
পরিচিত।
• সিন্ধু সমভূমির নবীন পলি গঠিত মৃত্তিকা অঞ্চল বেট নামে পরিচিত।
• এই অঞ্চলের প্লাবনভূমি অঞ্চল ধায়া  এবং উত্তরের ক্ষয়প্রাপ্ত অংশ খোশ নামে পরিচিত।

গাঙ্গেয় সমভূমিঃ 


মধ্যভাগের সমভূমি অঞ্চলটি গঙ্গা, যমুনা এবং তাদের বিভিন্ন উপনদীর সঞয়কাজের ফলে গড়ে উঠেছে। গঙ্গা সমভূমিকে তাদের অবস্থান অনুসারে উচ্চ, মধ্যে ও নিম্ন গঙ্গা সমভূমিতে ভাগ করা হয়।

যথা - উচ্চ গঙ্গ সমভূমিঃ এই সমভূমি উত্তরে 300 মিটার সমােন্নতিরেখা ও দক্ষিণে উপদ্বীপীয় ভারত এবং পশ্চিমে যমুনা নদীর গতিপথ এবং পূর্বে 100 মিটার সমমান্নতিরেখার মধ্যে বিস্তৃত।
• এর গড় উচ্চতা 100-300 মিটার।
• রামগঙ্গা, যমুনা, গােমতী, ঘর্ঘরা হল প্রধান নদী।
•  এই অংশে তরাই ও ভাবর অঞ্চল দেখা
যায়।
• নদীবাঁক, পরিত্যক্ত নদীবাঁক, স্বাভাবিক বাঁধ, দোয়াব লক্ষ করা যায়, (c) নদীগুলি উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণ-
পূর্ব দিকে প্রবাহিত।

মধ্য গঙ্গা সমভূমিঃ এই সমভূমি উচ্চ গঙ্গা সমভূমির পূর্বাংশে উত্তরপ্রদেশ ও বিহার নিয়ে গঠিত।
• এর গড় উচ্চতা 150 মিটার।
• ঘর্ঘরা, গণ্ডক, কোশী হল প্রধান নদী।
•  এই অংশে সমভূমি গভীর। যার গড়
গভীরতা 2000 মিটার।
• নদীগুলি প্রায়ই গতিপথ পরিবর্তন করে।
• কোশী নদীকে বিহারের দুঃখ বলা হয়।

নিম্ন গঙ্গা সমভূমিঃ এই সমভূমি নিম্ন গঙ্গা সমভূমি (বিহারের পূর্ণিয়া জেলা এবং পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া বাদে) পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণভাগের জেলাগুলি নিয়ে গঠিত।
• এর গড় উচ্চতা 30 মিটার চুণি, জলঙ্গি, ভাগীরথী, হুগলি, বিদ্যাধরী, পদ্ম হল প্রধান নদী।
• এই অংশে - এই সমভূমির 2/3 অংশ বদ্বীপ সমভূমি নামে পরিচিত।
• গঙ্গা সমভূমির এই অংশে খাঁড়ি, ম্যানগ্রোভ বনভূমি, বালিয়ার দেখা যায়।

ব্রক্ষ্মপুত্র সমভূমিঃ 


ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার অপর নাম হল অসম উপত্যকা। উত্তর শিবালিক পর্বতমালা এবং দক্ষিণে মেঘালয় মালভূমির নাগা,গারো,খাসি, জয়ন্তিয়া পাহাড় এর মধ্যবর্তী অঞ্চলে অসমে ব্রহ্মপুত্র সমভূমি অবস্থিত।
বৈশিষ্ট্য :
• এই উপত্যকার ভূমির ঢাল অত্যন্ত কম।
•  ব্রম্মপুত্র সমভূমির দৈর্ঘ্য ৭২০ কিমি, প্রস্থ ৬০-১০০ কিমি, ক্ষেত্রফল
প্রায় ৫৬ হাজার ৫০০ বর্গকিমি।
• গড় উচ্চতা ৭০ মিটার।
• এই অঞ্চলের ব্রত্মপুত্র নদের মধ্যে বড়াে বড়াে বালুচর’ বা বদ্বীপ দেখতে পাওয়া যায়। এদের মধ্যে মাজুলি দ্বীপটি হল ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপ।

Tags :

ভারতের প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর | মাধ্যমিক ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | ক্লাস টেন ভূগোল প্রশ্ন উত্তর | দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন উত্তর | wb class 10 geography question answer | class 10 geography suggestion | class 10 geography notes

8888


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top