ইতালির ঐক্য আন্দোলনে কাউন্ট কাভুরের ভূমিকা আলোচনা করো। || নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর

0

 

ইতালির ঐক্য আন্দোলনে কাউন্ট কাভুরের ভূমিকা আলোচনা করো। || নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর
নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর 2022


আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় উনবিংশ শতকের ইউরোপ রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত (WBBSE Class 9 History Question Answer & Notes in Bengali ) অধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ 4 মার্কের প্রশ্ন 'ইতালির ঐক্য আন্দোলনে কাউন্ট কাভুরের ভূমিকা আলোচনা করো।' এর উওর (WBBSE Class 9 Question Answer & Suggestion 2023 ) তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। আর আমরা প্রতিদিন তোমাদের জন্য নোটস শেয়ার করে যাবো। তাই তোমরা আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিদিন ভিজিট করতে থাকো।।

ইতালির ঐক্য আন্দোলনে কাউন্ট কাভুরের ভূমিকা আলোচনা করো।


ভূমিকাঃ ইতালির ঐক্য আন্দোলন মূলত শুরু হয়েছিল 1815 খ্রিষ্টাব্দের ভিয়েনা সম্মেলনের পর থেকে।। ইতালিতে রিসর্জিমেন্টো অথবা জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ক্ষেত্রে কার্বোনারী দল এবং ইয়ং ইতালি দল গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু কার্বোনারী দলের দুটি আন্দোলন এবং ইয়ং ইতালি দলের সংগ্রাম দুটোই ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু ইতালিকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে কার্বোনারী দল এবং ইয়ং ইতালি দলের আন্দোলন থেকেই পরবর্তীতে ইতালিকে ঐক্যবদ্ধ করার চিন্তাভাবনা বা আন্দোলন আরও জোরালো হয়। এবং এই জোরালো ভাবনা থেকেই কাউন্ট কাভুরের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে ইতালি জাতীয় রাষ্ট্র গঠন করতে সক্ষম হয়।।

ইতালির ঐক্য আন্দোলনে কাউন্ট কাভুরের বিভিন্ন পদক্ষেপ বা ভূমিকা- 


সার্ডিনিয়া এবং পিয়েডমন্টের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাউন্ট কাভুরঃ জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য এবং সার্ডিনিয়া এবং পিয়েডমন্টের রাজা দ্বিতীয় ভিক্টর ইমানুয়েলের কাউন্ট কাভুরকে তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেন।।এবং এখান থেকে কাউন্ট কাভুরের জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ একটি জাতীয় রাষ্ট্র গঠন করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কার্যকলাপ শুরু হয়।।  

সার্ডিনিয়া এবং পিয়েডমন্টের উন্নতিঃ 


কাউন্ট কাভুর এটা বুঝতে পেরেছিলেন যে, জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় রাষ্ট্রে পরিণত করতে গেলে সার্ডিনিয়া এবং পিয়েডমন্টকেইবনেতৃত্ব দিতে হবে। এজন্য সার্ডিনিয়া এবং পিয়েডমন্টের হওয়া প্রয়োজন।। কাউন্ট কাভুর সার্ডিনিয়া এবং পিয়েডমন্টকে বিভিন্ন দিক থেকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য রেলপথ নির্মাণ,শিল্পের উন্নতি, কর ও শুল্ক কাঠামোর পরিবর্তন, সামরিক শক্তি বৃদ্ধি প্রভৃতি প্রগতিশীল ব্যবস্থা গ্রহণ করে সার্ডিনিয়া এবং পিয়েডমন্টকে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করেন।।

অস্ট্রিয়ার বিরোধিতাঃ 


অস্ট্রিয়া প্রথম থেকেই ইতালির শত্রু ছিল। তাই ইতালিকে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করতে গেলে অস্ট্রিয়ার থেকে মুক্তিলাভ একান্ত ভাবে প্রয়োজন ছিল। এজন্যই কাউন্ট ক্যাভুর অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত থেকে ইতালিকে অস্ট্রিয়াকে বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত নেয়।

বৈদেশিক সাহায্যঃ


কাউন্ট কাভুর এটা বুঝতে পেরেছিলেন যে,ইতালিকে একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী জাতীয় রাষ্ট্রের পরিণত করতে গেলে ইতালির বিদেশী শক্তির সাহায্য প্রয়োজন হবে। বিদেশি রাষ্ট্রের সাহায্য-সমর্থন ছাড়া ইতালি তার উদ্দেশ্য সফল করতে পারবে না ম এজন্য বিভিন্ন দেশের সমর্থন লাভ করার জন্য কাউন্ট কাভুর ইতালির বিভিন্ন সমস্যা গুলি সংবাদপত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রকাশ করতে থাকেন। এবং এভাবে কাউন্ট ক্যাভর তার উদ্দেশ্যে কিছুটা সফল হয়। ক্রিমিয়ার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং প্যারিসের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করে ইতালি ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সের সহানুভূতির লাভ করতে সমর্থ হয়েছিল।

প্লমবিয়ার্স এর চুক্তিঃ


ক্রিমিয়ার যুদ্ধে এবং প্যারিসের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ইতালি যখন ফ্রান্সের সহানুভূতি লাভ করে, তখন সে সুযোগে তৃতীয় নেপোলিয়ন এবং ইতালির মধ্যে প্লমবিয়ার্স চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তি অনুসারে এটা বলা হয় যে,ইতালি যদি অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয় লাভ করে, তাহলে ফ্রান্সকে নিস ও স্যাভয় প্রদান করা হবে।।

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধঃ 


ইতালি অস্ট্রেলিয়াকে নানা ভাবে উত্তেজিত করে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে বাধ্য করে এবং অপরদিকে কাউন্ট ক্যাভুর তার নানা পরিকল্পনার মাধ্যমে একের পর এক যুদ্ধে জয়লাভ করতে থাকেন  কিন্তু অন্যদিকে তৃতীয় নেপোলিয়ন হঠাৎ করেই নিজ স্বার্থ বিবেচনা করে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি স্বাক্ষরিত করে অস্ট্রিয়া সঙ্গে তাদের সমস্ত সংঘর্ষ সেখানেই মিটিয়ে ফেলেন্ম কিন্তু এতে কাউন্ট ক্যাভুর যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষুব্ধ হয় এবং অপরদিকে  তিনি রাজাকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু রাজা ফ্রান্স বা তৃতীয় নেপোলিয়নের সাহায্য ছাড়া যুদ্ধ করতে রাজি ছিলেন না কিন্তু তবুও তিনি যুদ্ধ চালিয়ে নিয়ে যান।। 

মধ্য ইটালির সংযুক্তি সাধনঃ


কয়েকমাসের মধ্যেই কাতুর তাঁর ভুল সংশোধন করে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করেন (১৮৬০) এবং কিছুদিনের মধ্যেই মধ্য-ইটাপির মডেনা, পার্মা টাস্কানি ও রোমানার জনসাধারণ পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার সঙ্গে সংযুক্তির আন্দোলন শক্তিশালী করে তুললে কূটকৌশলী কাভুর তৃতীয় নেপোলিয়নকে স্যাভয় ও নিস প্রদান করে ওই রাজাগুলি পিতমন্ট-সার্জিনিয়ার সঙ্গে যুক্ত করে নেন। ফলে ইটালির ঐক্য বহুদূর অগ্রসর হয়।

দ্বিতীয় পর্যায়ঃ  


গ্যারিবন্ডির সিসিলি ও নেপলস্ অভিযান ও দখলকে কাউন্ট কাভুর কূটনৈতিক কারণে প্রকাশ্যে সমর্থন করতে না পারলেও, গোপনে নানাভাবে সাহায্য করেছিলেন। বিভিন্ন কারণে গ্যারিবল্ডি সিসিলি ও নেপলস্-এর দায়িত্ব রাজা ইমান্যুয়েলের হাতে ছেড়ে দেন এবং এরপর বিপুল গণভোটে নেপলস্, সিসিলি, উমরিয়া ও মার্চেস পিডমন্টের সঙ্গে যুক্ত হয়। কেবলনার রোম ও ভেনেশিয়া ছাড়া সমস্ত ইটালিকে কাতুর ঐক্যবন্ধ করতে সক্ষম হন। 


মুল্যায়ন সুতরাং দেখা যায় যে, ইটালির ঐক্যসাধনের মূলে বিভিন্ন নেতার অবদান থাকলেও, কাভুরের ভূমিকা ছিল সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য। কাভুররের নেতৃত্ব, নীতি ও কর্মপন্থা অনুসরণের ফলেই ইটালির ঐক্যসাধন সম্ভব হয়েছিল এবং তিনি এক্ষেত্রে ম্যাৎসিনি ও গ্যারিবন্ডির কার্যাবলীর মধ্যে সমন্বয় সাধন করেছিলেন। একদিকে তিনি ম্যাৎসিনির ঐক্য ও স্বাধীনতার আদর্শকে বাস্তবে রূপায়িত করেন, অন্যদিকে গ্যারিবল্ডির সামরিক বিজয়কে সঠিকভাবে দেশের ঐক্যসাধনে নিয়োজিত করেছিলেন।


আশাকরি যে, আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় ( WBBSE Class 9 History Question Answer & Notes in Bengali ) থেকে যে 'ইতালির ঐক্য আন্দোলনে কাউন্ট কাভুরের ভূমিকা আলোচনা করো।' এর উওর দেওয়া হয়েছে তা তোমাদের ভালো লেগেছে। যদি ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিও।।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top