![]() |
ক্লাস 10 বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর |
উঃ-
পরিচয়ঃ বর্ধমানের বহড়া গ্রামের নিবাসী গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য ছিলেন প্রথম বাঙালি পুস্তক বিক্রেতা, পুস্তক ব্যবসায়ী এবং মুদ্রাকার। গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য একসময় কাজের খোঁজে তিনি শ্রীরামপুর মিশনারিদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। শ্রীরামপুর মিশনারীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করার পর, তিনি সেখানে মুদ্রণ সম্পর্কে অনেক কিছু শেখেন এবং প্রচুর অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এভাবেই গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের শ্রীরামপুর মিশনারীদের সঙ্গে মুদ্রণ শিল্প এবং প্রকাশনার দুনিয়ায় প্রথম জীবন শুরু হয়।
বাংলায় মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের ভূমিকাঃ গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য শ্রীরামপুর মিশনারীদের সঙ্গে কাজ করে যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, তা হয়েছিল শ্রীরামপুর মিশনারীদের ছাপাখানার বিকাশের জন্য। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি নিজ উদ্যোগে ছাপাখানার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।
বিভিন্ন পুস্তক এবং পত্রিকা প্রকাশঃ শ্রীরামপুর ব্যাপ্টিস্ট মিশন প্রেসের একজন কর্মীর সঙ্গে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের মতভেদের কারণে তিনি শ্রীরামপুর প্রেস ত্যাগ করেন। তিনি শ্রীরামপুর প্রেস ত্যাগ করেন। কলকাতা থেকে প্রেস নিয়ে নিজের গ্রাম বহড়ায় চলে আসেন । তাঁর প্রেসের নাম ছিল 'বাঙলা গেজেটি যন্ত্রালয়'।। থেকেই তিনি সাপ্তাহিক 'বাঙলা গেজেটি' পত্রিকা প্রকাশ করতেন।
অবদানঃ 1816 সালে ফেরিস এন্ড কোম্পানি প্রেস থেকে গঙ্গো কিশোর কবি ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল কাব্যটি সচিত্র ছাপেন। এটি ছিল বাঙ্গালীদের সম্পাদনায় ছাপা প্রথম সচিত্র বই। অন্নদামঙ্গল ছাড়াও পরবর্তী সময়ে তিনি "দ্রব্যগুন","চিকিৎসার্ণব "শ্রীমদভাগবতগীতা "ইত্যাদি বইও প্রকাশ করেন। তার উদ্যোগে উদ্যোগে উৎসাহিত হয়ে বহু বাঙালি বই ছাপার সাহস পায় এবং মুদ্রণ শিল্পের সাথে নিজেদের জড়িয়ে ফেলে।
গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য সম্পাদিত বাঙ্গাল গেজেট নামের বাংলা ভাষায় মুদ্রিত সাপ্তাহিক পত্রিকাটি প্রথম বাংলা সংবাদপত্র বলে অনুমিত হয়। পত্রিকাটি ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই মে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।[২] এই কাজে হরচন্দ্র রায় নামে আর এক ব্যক্তি তার সহযোগী ছিলেন। 'বাঙ্গালা গেজেট' অধিককাল প্রকাশিত হয়নি। পত্রিকাটির প্রকাশ বন্ধ হয়ে গেলে গঙ্গাকিশোর তার মুদ্রণযন্ত্রটি নিজের গ্রামে নিয়ে যান। তার মৃত্যুর পরেও এটি বর্তমান ছিল এবং অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির বই এতে মুদ্রিত হয়েছিল।
Tags :