প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার সমাজিক এবং অর্থনৈতিক জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর

0

WB Class 11 history chapter 2 question answers in bengali | আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহ বড় প্রশ্ন উত্তর


WB Class 11 history chapter 2 question answers in bengali | আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহ বড় প্রশ্ন উত্তর
একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর

আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের ( WB Class 11 history chapter 2 question answers in bengali ) আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ( Class 11 history chapter 2 questions and answers ) " প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার সমাজিক এবং অর্থনৈতিক জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো। " প্রশ্নটির উওর ক্লাস 11 ইতিহাস নোট হিসাবে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।

প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার সমাজিক এবং অর্থনৈতিক জীবন সম্পর্কে আলোচনা করো। 

ভূমিকাঃ পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতা গুলির মধ্যে মিশরীয় সভ্যতা হলো একটি অন্যতম প্রাচীন সভ্যতা অনেকের মতে মিশরীয় সভ্যতাই হলো পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতা। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দ বা তারও আগে নীল নদের উভয় তীরে মিশরীয় সভ্যতা গড়ে উঠেছিল।। এতোকাল পূর্বে নীল নদের তীরে গড়ে ওঠা সেই মিশরীয় সভ্যতায় আমরা অন্যান্য সভ্যতার তুলনায় অনেক পৃথক ধরনের সমাজ ব্যবস্থা দেখতে পাই। যেমন- 

মাতৃতান্ত্রিক সমাজঃ মিশরীয় সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক। সম্পত্তির অধিকার ছিল মেয়েদের হাতে। প্রাচীন সভ্যতা হওয়া সত্ত্বেও মিশরীয় সভ্যতায় নারীদের সামাজিক ক্ষেত্রে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশেষ অধিকার ছিল। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ করা দরকার যে, সমাজের উচ্চবর্ণের নারীরা যে সমস্ত অধিকার ভোগ করতো,তার মধ্যে বেশিরভাগ অধিকার ই নিম্নসমাজের নারীরা ভোগ করতে পারত না। কিন্তু তা সত্ত্বেও নিম্নসমাজের নারীদের হাতেও অনেক ক্ষেত্রেই নানা ধরনের অধিকার ছিল।। মিসরীয় সভ্যতায় নারীদের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যথেষ্ট অধিকার থাকার কারণেই হাটাসু পৃথিবীর প্রথম মহিলা শাসক হতে পেরেছিলেন।।


ধনী-দরিদ্রের বৈষমঃ মিশরীয় সমাজ ছিল শ্রেণিবিভক্ত। এখানে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে তীব্র ব্যবধান ছিল। ফ্যারাওদের অধীনে প্রাচীন মিশরে কৌম বা গোষ্ঠীভিত্তিক সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। বিভিন্ন গোষ্ঠী বা দলের অধিপতি নিজ নিজ এলাকার সর্বময় কর্তা ছিলেন

শোষক ও শোষিতঃ মিশরীয় সমাজ ব্যবস্থায় সমাজে ন্যায়বিচার খুবই কম ছিল। সমাজে শোষক ও শোষিত শ্রেণির অস্তিত্ব ছিল। ফ্যারাও পুরোহিত, আঞ্চলিক প্রশাসক, রাজকর্মচারী, কারারক্ষক, প্রহরী প্রমুখ ছিল শোষক শ্রেণিভুক্ত এবং কৃষক, কারিগর ও ক্রীতদাসরা ছিল শোষিত শ্রেণিভুক্ত। প্রাক্‌-রাজবংশীয় যুগেই মিশরে উদ্ভব ঘটেছিল। 

ক্রীতদাসদের অবস্থাঃ ক্রীতদাসরাই মিশরীয় সমাজে সর্বাধিক শোষিত ছিল। মিশরীয় সমাজে ক্রীতদাসরা ছিল। 'লুটের মাল'। প্রভুরা তাদের অধীনস্থ ক্রীতদাসদের বিভিন্ন পরিশ্রমসাধ্য কাজে নিয়োগ হা করে নিজেদের জীবনের সুখ নিয়ে আসতেন।।

মিশরীয়দের অর্থনীতির জীবনঃ 

মিশরীয় সভ্যতায় সুপ্রাচীন কাল থেকেই একটি নির্দিষ্ট অর্থনীতির বিকাশ ঘটেছিল। মিসরীয়দের কৃষি,পশুপালন, শিল্প, ব্যবসা - বাণিজ্য প্রভৃতি ছিল মূলত তাদের অর্থনীতির মূলভীত। যেমন- 

কৃষিকাজঃ মিশরীয়রা নীলনদের উভয় তীরে নতুন পলিমাটি দ্বারা গঠিত উর্বর জমি কৃষিজমি হিসেবে ব্যবহার করতো। সুপ্রাচীন কাল থেকেই সেগুলো তাদের কৃষিকাজের প্রধান অঞ্চল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। উর্বর জমি হওয়ায় সেখানে কৃষিকাজ সুপ্রাচীন কাল থেকেই কৃষিরর‍্যথেষ্ট উন্নতি ঘটেছিল এবং কৃষি জমির পাশে নীলনদের অবস্থান হওয়ায় তা কৃষিতে আরো উন্নতি আনতে সাহায্য করেছিল। মিশরীয়রা নীলনদের উভয় তীরে গম,যম, ভুট্টা,জোয়ার বিভিন্ন শাক সবজি চাষ করতো। এবং এটাই ছিল তাদের অর্থনীতির মূল ভীত।


পশুপালনঃ মিশরীয়দের একটি বিরাট অংশ প্রাচীনকাল থেকেই পশুপালনে নিজেদের নিয়োগ রেখেছিল। নীলনদের উপত্যাকায় সুবিশাল তৃণভূমি থাকার জন্য সেগুলো পশুপালনের যথেষ্ট সাহায্য করতো। সেই সমস্ত তৃণভূমিতে মিশরীয়রা গরু, ছাগল,ভেড়া, গাধা,রাজহাঁস ইত্যাদি লালন-পালন করতে পারতো। সেই সমস্ত পশু থেকে তারা মাংস,চামরা, দুধ ইত্যাদি কখনো নিজেরা এবং কখনো আবার ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতো।।

শিল্পঃ প্রাচীন মিশরের বিভিন্ন শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল এবং শিল্পের উপর ভিত্তি করে কারিগর শ্রেণীর উদ্ভব ঘটেছিল। প্রাচীন মিশরের বিভিন্ন ধরনের শিল্পের অগ্রগতি ঘটেছিল। যেমন -সময় বস্ত্রশিল্প,মৃৎশিল্প,দারুশিল্প ধাতুশিল্প, অলংকার শিল্প প্রভৃতি শিল্পের যথেষ্ট বিকাশ এবং উন্নতি ঘটেছিল।।

ব্যবসা-বাণিজ্যঃ প্রাচীন মিশরে মূলত দুই ধরনের ব্যবসা বাণিজ্য প্রচলিত ছিল। একটি হলো অভ্যন্তরীণ বা দেশীয় ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অপরটি হল বৈদেশিক ব্যবসা-বাণিজ্য। প্রাচীন মিশরে স্থল পথের মাধ্যমে মূলত দেশীয় বা অভ্যন্তরীণ ব্যবসা বাণিজ্য চলতো। এবং জাহাজ, নৌকার সাহায্যে বৈদেশিক ব্যবসা-বাণিজ্য চলতো। প্রাচীন মিশরের সঙ্গে মেসোপটেমিয়া? প্যালেস্টাইন, ক্রীট, আরব, সিন্ধু প্রভৃতি অঞ্চলের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য হতো। মিশর উৎপাদিত বিভিন্ন বস্ত্র, বিভিন্ন মাটির জিনিস, কাচের সামগ্রী,চামড়া এবং নানা ধরনের সামগ্রী,খাদ্যশস্য প্রভৃতি বিদেশে রপ্তানি করা হতো। অন্যদিকে বিদেশ থেকে সোনা,তামা, কাঠ,হাতির দাঁত,মসলা বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধি তেল এবং অন্যান্য জিনিসপত্র আমদানি করা হতো।।


অন্যান্য শিল্পঃ উপরোক্ত কিছু পেশা ছাড়াও প্রাচীন মিশরীয়দের একটি বড়ো অংশ অন্যান্য পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিল। যেমন -লোক গণনা,গবাদিপশু গণনা,আয়করের হিসাব রাখা, শিল্প-বাণিজ্যের তদারকি করা,দেহরক্ষী প্রাসাদরক্ষী,চিকিৎসক, জ্যোতির্বিদ রাজমিস্ত্রি অন্যান্য শিল্প কর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিল।।

Tags : একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর | আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহ বড় প্রশ্ন উত্তর | wb class 11 history question answer | class 11 history suggestion 2022 | Class 11 history chapter 2 questions answers in bengali | WB Class 11 history notes & Suggestion 2022 | wb class xi history question answer | ক্লাস 11 ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | ক্লাস ইলেভেন ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top